বার্ন ইউনিটের রাজনীতি
![]() |
তানজিমুল হক (অয়ন) |
লেখক
ও বিবিসিতে কর্মরত সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান। দেশের চলমান রাজনৈতিক
পরিস্থিতি নিয়ে ১৬ই জানুয়ারি তিনি ফেসবুকে লিখেছেন- গত ১০ দিনের সহিংসতায়
মারা গেছেন ২৩ জন। তার মধ্যে ১৭ জনই নিরীহ মানুষ যারা আমার ও আপনার মতো
মানুষেরই স্বজন কিম্বা আত্মীয়। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ র্যাব বিজিবি সবাই
নানা রকমের হুমকি (গুলি) দিচ্ছে। যদিও এসব বাহিনীর হুমকি দেওয়ার প্রয়োজন হয়
না, এরা এমনিতেই গুলি করে, চোখ বেধে অজ্ঞাত (ওরা জানে, আমরা জানি না)
স্থানে নিয়ে যায়, ওষুধ দিয়ে চেতনা নাশ করে, তারপর হত্যার পর পেট কেটে নদীতে
ডুবিয়ে দেয়। আমাদের ভাগ্য ভালো হলে তাদের লাশ নদীর ওপরে কচুরিপানার নিচে
খুজে পাই। না হলে অপেক্ষায় (ভুয়া আশা নিয়ে) থাকতে হয় সারা জীবন। আজ সকালে
ভাবছিলাম দেশে যে সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি বাহিনীগুলো এধরনের হুমকি
দিচ্ছে সেটা কি আইন শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা? এটাতো সবাই জানে যে এই সমস্যা
হচ্ছে রাজনৈতিক। তাহলে ওষুধ দিতে হবে রাজনীতির যে স্থানে জীবাণুর সংক্রমণ
হয়েছে সেখানে। গুলি করে ভয় দেখিয়ে হয়তো সাময়িকভাবে কিছুটা শান্তি ফিরিয়ে
আনা যাবে কিন্তু সেই শান্তি কি স্থায়ী হবে? ধরা যাক এখন যে অবরোধ চলছে সেটা
কদিন পর এমনিতেই নিস্তেজ (কদিন আর দম থাকবে বিরোধীদের) হয়ে আসবে, কিন্তু
এই হানাহানির কি অবসান ঘটবে? আজ যদি ওরা ঘরে ফিরে যায় আবার কয়েকদিন পর কি
তারা শক্তি সঞ্চয় করে ফিরে আসবে না? গত বছরের ৫ই জানুয়ারি কি হয়েছে আমরা
জানি। এবছরের ৫ই জানুয়ারি কি হয়েছে সেটাও আমরা জানি। তাহলে আগামী বছরের ৫ই
জানুয়ারি কি আবার এতোগুলো নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটবে? আমরা জানি ঘটবে।
এটা জানার জন্যে জ্যেতিষি হওয়ার দরকার হয় না। আমরা জানি এই সঙ্টকের কারণও
রাজনৈতিক। এটা জানার জন্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বা টকশোবিদ হতে হয় না। তাই
আপনারা এর গোড়ার দিকে তাকান। ওখান থেকে জীবাণুটা দূর করেন। মন্ত্রীরা,
সরকারি দলের রাজনীতিকরা বার্ন ইউনিটে যাচ্ছেন। পোড়া মানুষের ছবি প্রচার
করছেন আর বলছেন দেখুন ওরা কতো খারাপ। ওরা যে খারাপ সেটা নিয়ে কারো সন্দেহ
নেই। খারাপ না হলে ওরা নিজেদের বাপ মা ভাই বোনকে পেট্রোলের আগুনে এভাবে
পোড়াতে পারে না। কিন্তু আপনারা কি ভালো? একবার ভেবে দেখুনতো ওই বার্ন
ইউনিটের পেছনে কি কারণ? আজ পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া এই মানুষগুলো কি কারণে
মৃত্যুর মুখোমুখি?
No comments