স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে সংবাদ সম্মেলনের পরদিনই খুন হলেন সাজিদা খাতুন সাজু
স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করে ঝিনাইদহ
প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার একদিন পর শৈলকুপা উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামে
সাজিদা খাতুন ওরফে সাজু (৪৭) নামে এক মহিলাকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ
সময় তার ছেলে জিন্নাহ আলম (৩০)-কে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাকে মুমূর্ষু
অবস্থায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা সগির মিঞা জানান, সোমবার রাত ১টার দিকে ১০/১২ জনের একদল
দুর্বৃত্ত বাগুটিয়া রায়পাড়া গ্রামে সাজিদা খাতুনের বাড়ি ঢুকে মা ও ছেলেকে
তুলে নিয়ে যায়। তিনি আরর জানান, এ সময় দুর্বৃত্তরা জিন্নাহ আলমকে কুপিয়ে মা
সাজিদা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর একটি কলাগাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।
সামাজিক বিরোধ ও দলাদলির কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিক
ভাবে মনে করছে। গতকাল দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ
সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে শৈলকুপার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের
চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দীন বিশ্বাস জানান, নিহত সাজিদা এলাকার সাবেক
চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলামকে স্বামী হিসেবে দাবি করে আসছিল। তিনি
আরও জানান, এ ঘটনা নিয়ে এলাকার সামাজিক প্রতিপক্ষ সাজিদাকে ইন্ধন দিয়ে
সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমায় লিপ্ত হয়। তিনি
বলেন, নিহত সাজিদা স্বামী দাবি করার পক্ষে চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত
নাগরিক, প্রত্যয়নপত্র ও যে জন্ম সনদ দাখিল করেন তাতে আমি স্বাক্ষর করিনি।
আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। এ ব্যাপারে সাবেক
চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিপক্ষরা এই হত্যাকাণ্ড
ঘটিয়ে আমাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করছে। তিনি দাবি করেন গত রোববার যারা
সাজিদাকে নিয়ে ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিল তারাই তাকে হত্যা
করেছে। বিশেষ করে ওই মহিলার ভাই আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করলেই হত্যার
রহস্য উন্মোচিত হবে। উল্লেখ্য, গত রোববার ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবে এলাকার
সামাজিক দলের নেতা মুক্তার মৃধার লোকজন নিহত সাজিদাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ
সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সাজিদা দাবি করে ১৯৮৩ সালে মৌখিক ভাবে রফিকুল
তাকে বিয়ে করেন। ১৯৮৪ সালে তার জিন্না আলম নামে এক ছেলে সন্তান হয়। ১৯৮৫
সালে পিতৃত্বের দাবিতে তিনি আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন
রফিকুল। পরে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় স্ত্রী হিসেবে মেনে
নেয়ার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে মামলা তুলে নিই। সংবাদ সম্মেলন সুমন মৃধা, ইকবাল
হোসেন মেম্বর, রবিউল ইসলাম, আবু বকর বিশ্বাস, আবদুর রজ্জাক ও শহিদুল ইসলাম
প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
No comments