যে কারণে ওবামার আফ্রিকা সম্মেলন
ওয়াশিংটনে গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র-আফ্রিকান নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের একটি অধিবেশনে আফ্রিকার কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ছবি: এএফপি |
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আয়োজনে গত বুধবার ওয়াশিংটনে শেষ হয়ে গেল তিন দিনব্যাপী আফ্রিকা সম্মেলন। যার আনুষ্ঠানিক নাম ছিল যুক্তরাষ্ট্র-আফ্রিকান নেতাদের সম্মেলন। মার্কিন কোনো প্রেসিডেন্টের আয়োজনে এ ধরনের সম্মেলন এটাই প্রথম। সম্মেলনে আফ্রিকার ৫০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান যোগ দেন। সম্মেলনে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা ইস্যু। খবর আল-জাজিরা ও এপির। প্রশ্ন হলো, আফ্রিকার নেতাদের নিয়ে ওবামার এই সম্মেলনের আয়োজন কেন? এই সম্মেলনের কয়েক দিন আগেই আফ্রিকার ৫০০ মেধাবী তরুণকে নিয়েও এ ধরনের আয়োজন করেছিলেন ওবামা। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিবেচনা করলে ওবামার এই আয়োজন ‘অত্যন্ত গুরুত্ববহ’, বিশেষ করে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বিবেচনায়। সম্মেলনের প্রথম দিন কংগ্রেস বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদলের প্রধানদের জন্য ক্যাপিটল হিলে অভ্যর্থনার আয়োজন করে। আফ্রিকার নেতারা সম্মেলনে অংশ নিতে ওয়াশিংটনে যাওয়া শুরু করলে ওবামা বলেন,
‘আমরা সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছি, আমি আশাবাদী, এই আয়োজন দারুণ সফল হবে।’ সম্মেলন শেষে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্মেলনে ভবিষ্যৎ আফ্রিকায় বিনিয়োগ, শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বিনিয়োগ, নারীদের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ, তরুণদের জন্য সুযোগ তৈরি ও তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির মতো বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। যে বিষয়গুলো বিবেচনা করে ওবামা এই আয়োজন করেন, তার অন্যতম হলো নিরাপত্তা সহযোগিতা। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার চেষ্টা করছে। আরেকটি কারণ হতে পারে অর্থনীতি। বিশ্ব অর্থনীতিতে এখন প্রতিযোগিতা আগের চেয়ে অনেকে বেড়েছে। আফ্রিকার দেশগুলোতে বিনিয়োগ করা ছাড়াও আফ্রিকার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির বিষয়টি হয়তো বিবেচনা করেছে ওয়াশিংটন। বিশ্বের ১০টি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশের মধ্যে ছয়টিই আফ্রিকায়। আবার সম্মেলন আয়োজনের পেছনে চীনের প্রভাব থেকে আফ্রিকাকে বের করে আনার বিষয়টিও কাজ করতে পারে। কারণ, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে এখন চীন ব্যাপক হারে বিনিয়োগ করছে। ওবামার আফ্রিকা সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট, ভবিষ্যতে ওয়াশিংটন আফ্রিকাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে যাচ্ছে।
No comments