হাসিনা-খালেদা টেলি সংলাপ
দেশের অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার টেলিফোন সংলাপ জনগণের মনে কার্যত কোনো আশা জাগাতে পারল না। টেলিফোন আলাপে প্রধানমন্ত্রী তিন দিনের হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধসহ বিরোধীদলীয় নেতাকে আগামীকাল সোমবার গণভবনে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানোর পর বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। দলটির পক্ষ থেকে হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং তিন দিনের হরতাল কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরই নৈশভোজ কিংবা এ ধরনের কিছু হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। তাদের এই সিদ্ধান্ত জনগণকে হতাশ করেছে। হরতাল মানেই সংঘাত-সহিংসতা এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। জনমনে তাই একধরনের আতঙ্কের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গতকাল দিনভর প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার টেলিফোনে আলাপের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে জনমনে এই প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল যে, দুজনের মধ্যে আলাপ হলে হয়তো হরতালের মতো কর্মসূচি প্রত্যাহার এবং আনুষ্ঠানিক আলোচনার পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
দিনের শেষে সেই আশাবাদ হতাশাতেই পরিণত হলো। বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে এবং নির্বাচন সামনে রেখে একটি ‘রাজনৈতিক তারিখ’ ছিল ২৫ অক্টোবর। শুক্রবার সেই দিনটি পার হয়েছে ঢাকায় বিরোধী দলের মহাসমাবেশ এবং সারা দেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। সংঘর্ষ ও গুলিতে সারা দেশে এই দিনটির বলি হয়েছেন পাঁচ-ছয়জন। খালেদা জিয়া শনিবারের মধ্যে কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া না হলে আজ রোববার থেকে টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল এবং এই দিনটি থেকে বর্তমান সরকারকে সম্পূর্ণ ‘অবৈধ’ বলে ঘোষণা করেছেন। শনিবার দুই নেত্রীর মধ্যে টেলিফোন আলাপের পরও বিরোধী দলের হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার না করা দুঃখজনক। এতে সমঝোতার যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ল, যার দায়দায়িত্ব বিরোধী দলের ওপরই পড়বে।
আজ থেকে যে হরতাল শুরু হতে যাচ্ছে, সেই কর্মসূচিকে সংঘাত ও সহিংসতামুক্ত রাখার কোনো নিশ্চয়তা কি হরতাল আহ্বানকারী দল বা জোট দিতে পারবে? ২৫ অক্টোবর কয়েকজনের মৃত্যুর পর আমরা কি তবে আরও মৃত্যু ও সহিংসতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সংঘাত ও সহিংসতার আশঙ্কাই বাড়ছে এবং অসহায় জনগণ এক দমবন্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে আটকে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক শাসনে একটি সরকার তার মেয়াদ পূর্ণ করার পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের পছন্দের সরকার বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে। কিন্তু প্রতিটি নির্বাচনের আগেই যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, তা আর যা-ই হোক, গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। গণতান্ত্রিক সমাজে যেকোনো বিরোধ মেটানোর পথ হচ্ছে আলাপ-আলোচনা। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক আস্থাহীনতা এবং আন্তরিকতার অভাব দেশকে আজ এ ধরনের অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে।
আজ থেকে যে হরতাল শুরু হতে যাচ্ছে, সেই কর্মসূচিকে সংঘাত ও সহিংসতামুক্ত রাখার কোনো নিশ্চয়তা কি হরতাল আহ্বানকারী দল বা জোট দিতে পারবে? ২৫ অক্টোবর কয়েকজনের মৃত্যুর পর আমরা কি তবে আরও মৃত্যু ও সহিংসতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সংঘাত ও সহিংসতার আশঙ্কাই বাড়ছে এবং অসহায় জনগণ এক দমবন্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে আটকে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক শাসনে একটি সরকার তার মেয়াদ পূর্ণ করার পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের পছন্দের সরকার বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে। কিন্তু প্রতিটি নির্বাচনের আগেই যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, তা আর যা-ই হোক, গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। গণতান্ত্রিক সমাজে যেকোনো বিরোধ মেটানোর পথ হচ্ছে আলাপ-আলোচনা। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক আস্থাহীনতা এবং আন্তরিকতার অভাব দেশকে আজ এ ধরনের অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে।
No comments