বাঁশ-দড়ির জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি! by কাজী আনিছ
দড়ি আর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দীর্ঘ
সিঁড়ি। দেখে মনে হবে, কোনো ভবন রং করতে নির্মাণশ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য তা
তৈরি করা হয়েছে। আসলে এটি সাততলা একটি ভবনে থাকা তিনটি পোশাক কারখানার
শ্রমিকদের জরুরি বহির্গমন পথ।
আগুন লাগলে বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁরা এই পথ দিয়েই জীবন রক্ষার চেষ্টা করবেন।
রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোড এলাকায় ‘নাদিয়া কমপ্লেক্স’ নামের এই বহুতল ভবনটি অবস্থিত। এই ভবনের সেই অবিশ্বাস্য ‘জরুরি বহির্গমন পথ’ নিয়ে করা উদ্বেগকে মামুলি বলেই উড়িয়ে দিয়েছে কারখানাগুলোর কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, ‘সিঁড়ি’টি জানালা বরাবর। জানালাগুলো খুলে ওই ‘সিঁড়ি’ বেয়ে নিচে নেমে আসতে পারবেন শ্রমিকেরা।
সরেজমিন জানা গেছে, সাততলা ভবনটির প্রতিটি তলায় ভিন্ন ভিন্ন নামে তিনটি পোশাক কারখানা রয়েছে। সেখানে এক হাজারের অধিক শ্রমিক কাজ করেন। পুরুষ ও নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা দুটি প্রবেশপথ। তার মাঝামাঝি সাততলা থেকে নিচতলা পর্যন্ত জানালা বরাবর আড়াআড়িভাবে ওই বাঁশ-দড়ির ‘সিঁড়ি’টি ঝুলে আছে।
গতকাল বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, দুই শতাধিক শ্রমিক টিফিন খরচ বৃদ্ধি, দুপুরের খাবার বাবদ টাকা প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন। দাবির অন্তর্ভুক্ত না হলেও কয়েকজন শ্রমিক এই প্রতিবেদককে ওই সিঁড়ি দেখিয়ে বলেন, ভবনটি বেশ পুরোনো। সিঁড়ির মতোই নড়বড়ে। রানা প্লাজা ধসের পর তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে, বিশেষ করে আগুন লাগলে কীভাবে বের হবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা।
আন্দোলন চলাকালে গতকাল কয়েকজন শ্রমিককে ওই সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। কাছে গিয়ে দেখা যায়, পাটের মোটা দড়ি দিয়ে বাঁশ বেঁধে সিঁড়িটি তৈরি করা হয়েছে।
কয়েকজন শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন লাগার পর কর্তৃপক্ষ ওই ‘সিঁড়ি’ ঝুলিয়েছে। রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে দড়িগুলো ইতিমধ্যে বেশ দুর্বল হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর মুহম্মদ মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, ভবনে পাঁচ শ-এর কম লোক থাকলে সর্বনিম্ন দুটি, পাঁচ শ থেকে এক হাজার লোক থাকলে সর্বনিম্ন তিনটি এবং এক হাজারের ঊর্ধ্বে হলে সর্বনিম্ন চারটি জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি থাকতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, শুধু সিঁড়ি থাকলেই হবে না, বরং লোক অনুপাতে সিঁড়ির প্রস্থও যথাযথ হতে হবে। প্রতিটি তলায় সিঁড়িতে ওঠার জন্য কক্ষ থাকবে (এনক্লোজড রুম) এবং দরজাগুলো হবে স্বয়ংক্রিয়। এতে আগুন লাগলেও নিমেষেই রুমে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে নামা যাবে।
‘বাঁশ-দড়ির সিঁড়ি’ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পোশাক কারখানার প্রশাসনিক শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) সিরাজুল হক বলেন, যে দুটি প্রবেশপথ আছে, তা-ও বহির্গমন পথ হিসেবে ব্যবহূত হয়। আর ওই ‘বাঁশ-দড়ির সিঁড়ি’টি জরুরি বহির্গমন পথ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, দুর্ঘটনা ঘটলে জানালা খুলে অতি সহজেই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে পারবেন শ্রমিকেরা।
যোগাযোগ করা হলে এনভয় গ্রুপের অন্যতম মালিক আবদুস সালাম মুর্শেদী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাঁশ-দড়ির কোনো সিঁড়ি জরুরি বহির্গমন পথ হিসেবে নেই।’
—কিন্তু এজিএম সিরাজুল হক তো বলেছেন, বাঁশ-দড়ির সিঁড়িটি জরুরি বহির্গমনের জন্য তৈরি।
—‘তিনি যদি বলে থাকেন, তাহলে আমি তা জানি না।...উনি হয়তো বুঝতে পারেননি, কী জন্য আপনি সিঁড়ির ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন।’
ওই সিঁড়ি নিয়ে শ্রমিকদের উদ্বেগের কথা জানালে পরে সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘যদি বলে থাকেন, তাহলে ঠিক আছে। আসলে আমরাও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ চাই। অবশ্যই আমরা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেব।’
রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোড এলাকায় ‘নাদিয়া কমপ্লেক্স’ নামের এই বহুতল ভবনটি অবস্থিত। এই ভবনের সেই অবিশ্বাস্য ‘জরুরি বহির্গমন পথ’ নিয়ে করা উদ্বেগকে মামুলি বলেই উড়িয়ে দিয়েছে কারখানাগুলোর কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, ‘সিঁড়ি’টি জানালা বরাবর। জানালাগুলো খুলে ওই ‘সিঁড়ি’ বেয়ে নিচে নেমে আসতে পারবেন শ্রমিকেরা।
সরেজমিন জানা গেছে, সাততলা ভবনটির প্রতিটি তলায় ভিন্ন ভিন্ন নামে তিনটি পোশাক কারখানা রয়েছে। সেখানে এক হাজারের অধিক শ্রমিক কাজ করেন। পুরুষ ও নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা দুটি প্রবেশপথ। তার মাঝামাঝি সাততলা থেকে নিচতলা পর্যন্ত জানালা বরাবর আড়াআড়িভাবে ওই বাঁশ-দড়ির ‘সিঁড়ি’টি ঝুলে আছে।
গতকাল বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, দুই শতাধিক শ্রমিক টিফিন খরচ বৃদ্ধি, দুপুরের খাবার বাবদ টাকা প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন। দাবির অন্তর্ভুক্ত না হলেও কয়েকজন শ্রমিক এই প্রতিবেদককে ওই সিঁড়ি দেখিয়ে বলেন, ভবনটি বেশ পুরোনো। সিঁড়ির মতোই নড়বড়ে। রানা প্লাজা ধসের পর তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে, বিশেষ করে আগুন লাগলে কীভাবে বের হবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা।
আন্দোলন চলাকালে গতকাল কয়েকজন শ্রমিককে ওই সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। কাছে গিয়ে দেখা যায়, পাটের মোটা দড়ি দিয়ে বাঁশ বেঁধে সিঁড়িটি তৈরি করা হয়েছে।
কয়েকজন শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন লাগার পর কর্তৃপক্ষ ওই ‘সিঁড়ি’ ঝুলিয়েছে। রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে দড়িগুলো ইতিমধ্যে বেশ দুর্বল হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর মুহম্মদ মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, ভবনে পাঁচ শ-এর কম লোক থাকলে সর্বনিম্ন দুটি, পাঁচ শ থেকে এক হাজার লোক থাকলে সর্বনিম্ন তিনটি এবং এক হাজারের ঊর্ধ্বে হলে সর্বনিম্ন চারটি জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি থাকতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, শুধু সিঁড়ি থাকলেই হবে না, বরং লোক অনুপাতে সিঁড়ির প্রস্থও যথাযথ হতে হবে। প্রতিটি তলায় সিঁড়িতে ওঠার জন্য কক্ষ থাকবে (এনক্লোজড রুম) এবং দরজাগুলো হবে স্বয়ংক্রিয়। এতে আগুন লাগলেও নিমেষেই রুমে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে নামা যাবে।
‘বাঁশ-দড়ির সিঁড়ি’ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পোশাক কারখানার প্রশাসনিক শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) সিরাজুল হক বলেন, যে দুটি প্রবেশপথ আছে, তা-ও বহির্গমন পথ হিসেবে ব্যবহূত হয়। আর ওই ‘বাঁশ-দড়ির সিঁড়ি’টি জরুরি বহির্গমন পথ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, দুর্ঘটনা ঘটলে জানালা খুলে অতি সহজেই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে পারবেন শ্রমিকেরা।
যোগাযোগ করা হলে এনভয় গ্রুপের অন্যতম মালিক আবদুস সালাম মুর্শেদী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাঁশ-দড়ির কোনো সিঁড়ি জরুরি বহির্গমন পথ হিসেবে নেই।’
—কিন্তু এজিএম সিরাজুল হক তো বলেছেন, বাঁশ-দড়ির সিঁড়িটি জরুরি বহির্গমনের জন্য তৈরি।
—‘তিনি যদি বলে থাকেন, তাহলে আমি তা জানি না।...উনি হয়তো বুঝতে পারেননি, কী জন্য আপনি সিঁড়ির ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন।’
ওই সিঁড়ি নিয়ে শ্রমিকদের উদ্বেগের কথা জানালে পরে সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘যদি বলে থাকেন, তাহলে ঠিক আছে। আসলে আমরাও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ চাই। অবশ্যই আমরা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেব।’
No comments