এখন ভেবে দেখার সময় by আলী কবীর
হরতাল কথাটার আভিধানিক অর্থ সব জায়গায়
তালা। শব্দটি হিন্দুস্তানি (হিন্দি+উর্দু) ভাষা থেকে উদ্ভূত। এটির প্রচলন
কে কবে করেছিলেন তা সঠিক বলা মুশকিল।
তবে ইংরেজ আমলে
ব্রিটিশ ভারতে রাজনৈতিক তৎপরতা শুরুর পর শোভাযাত্রা, মিছিল বা মোর্চা,
ধরনা, ধর্মঘট, ঘেরাও, হরতাল ইত্যাদি কর্মকাণ্ড শুরু হয় বলে সাধারণভাবে
ধারণা করা হয়। দল হিসেবে ১৮৮৫ সালে গঠিত ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দল এবং
রাজনীতিক হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রপিতা মহাত্মা গান্ধীর নাম এসব রাজনৈতিক
কর্মকাণ্ড প্রবর্তনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের
পুরোধাও গান্ধীজি এবং তাঁর এ কর্মকাণ্ডের বিখ্যাত নজির হচ্ছে ভারত ছাড়
আন্দোলন বা Quit India Movement, যা তাঁকে অহিংস সত্যাগ্রহ আন্দোলনের
প্রবর্তক হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এনে দিয়েছিল।
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের লোকসংখ্যা ও আয়তনের ৮০ শতাংশ ভারতে রেখে ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের ফলে পাকিস্তানের জন্ম হলেও এর রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গান্ধী তথা ভারতবর্ষের রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো স্বাভাবিক কারণেই রয়ে যায়। বিশেষ করে পূর্ব বাংলা (পরে পূর্ব পাকিস্তান) নামক পাকিস্তানের প্রদেশটিতে কলকাতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপাদানগুলো সুস্পষ্টভাবেই রয়ে যায়। কারণ কলকাতা ব্রিটিশ রাজত্বের ১৯০ বছরের মধ্যে ১৫৪ বছরই ছিল সমগ্র ভারতের রাজধানী এবং ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার রাজধানী। সুতরাং স্বাভাবিক কারণেই সাধারণভাবে সারা ভারতে এবং বিশেষভাবে সারা বাংলায় একই ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকশিত হয়।
পাকিস্তানি সেনাশাসক তথাকথিত লৌহমানব আইয়ুব খানের ১০ বছরব্যাপী স্বৈরশাসনের শেষ পর্যায়ে ১৯৬৮ সালের ডিসেম্বর থেকে যে অভূতপূর্ব গণ-আন্দোলন গড়ে ওঠে তার একটা উল্লেখযোগ্য দিক ছিল জনসমর্থনধন্য হরতাল। এই আন্দোলনের প্রথম হরতালটি আহ্বান করেন মওলানা ভাসানী, হরতালের আগের দিন ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক জনসভা থেকে। স্বতঃস্ফূর্ত ওই হরতালে ঢাকায় তিনজন নিহত হয়। এই ঘটনার পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে গণ-আন্দোলন তীব্রতা লাভ করে। ২০ জানুয়ারি ১৯৬৯ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন রাস্তায় ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর ঊনসত্তরের আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে এবং একপর্যায়ে তা ২৪ জানুয়ারিতে গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হয়।
১৯৬৯ সালের আন্দোলনের ফলে বঙ্গবন্ধু, মণি সিংহ, মতিয়া চৌধুরীসহ সব রাজবন্দি ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ মুক্তিলাভ করেন, মিথ্যা মামলা আগরতলা প্রত্যাহার করা হয় এবং স্বৈরশাসক আইয়ুবের পতন ঘটে।
হরতালের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনামলে পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশের হরতালগুলো ছিল অর্থবহ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই হরতালগুলো পালিত হতো। হরতালে বাধা দিয়ে দমন-পীড়ন চালালে জনগণ তা প্রতিরোধের চেষ্টা করত। এ রকম ক্ষেত্রে ছাড়া হরতাল পালনকারী মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে সহিংসতায় লিপ্ত হতো না। অর্থাৎ তারা কেবল আক্রান্ত হলে প্রতিআক্রমণ করার চেষ্টা করত। ঠাণ্ডা মাথায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কেউ আক্রমণ করত না। ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের সম্পদ ধ্বংস করার জন্য ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতো না।
কিন্তু এখন সেই রামও নেই, সেই অযোধ্যাও নেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে হরতাল সংস্কৃতির মানের ক্রমেই অবনতি হয়েছে। আগে হরতাল হতো কালেভদ্রে, যাকে বলে Once in a blue moon- এখন হরতাল ডাকা হয় কথায় কথায়।
হরতালের দুষ্টচক্র হতে মুক্তির উপায় কী? হরতালকে বেআইনি ঘোষণা করা? সেই চেষ্টা কেউ করবেন বলে মনে হয় না। তেমন কোনো চেষ্টার লক্ষণ দেখা গেলেই এক শ্রেণীর মানুষ আকাশ বিদীর্ণ করে চিৎকার করে বলবে, হরতাল গণতান্ত্রিক অধিকার। আমি জানি না, এ কোন গণতন্ত্র? এমন গণতন্ত্র পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে আছে কি না সে ব্যাপারে আমার ঘোর সন্দেহ রয়েছে। না হয় তর্কের খাতিরে মেনে নেওয়া গেল যে হরতাল করা গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু জোর করে হরতাল পালনে বাধ্য করা, পিকেটিংয়ের নামে ভাঙচুর, লুটপাট করা, গাড়ি-স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা, দেশের সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করা, এমনকি রোগী বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স আক্রমণ করে অসুস্থ রোগীকে মেরে ফেলা কি গণতান্ত্রিক অধিকার হতে পারে?
হরতাল আহ্বান করা গণতন্ত্রচর্চার মধ্যে পড়ে কি না আমি জানি না। কিন্তু একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত, হরতালকেন্দ্রিক সহিংসতা ও নাশকতা অবশ্যই গণতন্ত্র নয়। বরং তা ফৌজদারি অপরাধ। এসব অপরাধে অপরাধীদের দমনে রাষ্ট্র তথা সরকারকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। দেশবাসী তাতে পরিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানাবে।
বাংলাদেশের বয়স এখন ৪২ বছর চলছে। এর প্রায় অর্ধেক বয়সে পাকিস্তান নামক জঙ্গি রাষ্ট্রটি এই অঞ্চল থেকে ধুয়েমুছে গেছে।
বাংলাদেশের বয়স হয়েছে। এখন সময় হয়েছে এসব পুরনো পচা ঘা সারিয়ে তোলার। সেই উদ্যোগ রাষ্ট্রকে নিতে হবে। রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে, হরতাল আহ্বান করা গেলেও পিকেটিং, মিছিল, সভা, সমাবেশ করা চলবে না। হরতাল মানে সর্বত্র তালা। সব কাজ বন্ধ। সুতরাং গরিব মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে তার কাজ বন্ধ রাখলে সবার সব কাজ বন্ধ রাখতে হবে, হরতাল আহ্বানকারীদেরও। তারা মিছিল, সমাবেশ করতে পারবে না। তাদের মালিকানাধীন কলকারখানা খোলা রাখা যাবে না, যা তারা করে।
আরেকটা কথা। হরতাল ডাকা গণতান্ত্রিক অধিকার হলে, হরতালের ডাক না শোনাটাও গণতান্ত্রিক অধিকার। এর ফলে সংঘাত হলে রাষ্ট্রকে তা নিরসন করে শান্তি বজায় রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে।
কোনো ব্যক্তি বা দল নাশকতায় লিপ্ত হলে, সহিংসতায় লিপ্ত হলে সেই ব্যক্তি ও দলের বিরুদ্ধে নির্ভীক চিত্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার সময় হয়ে গেছে। কারণ কোনো রাষ্ট্র এভাবে চলতে পারে না। বাসে আগুন দিলে দায়ী ব্যক্তির জেল-জরিমানার পাশাপাশি হরতাল আহ্বানকারী দলকেও জরিমানা করতে হবে। তাদের এর দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের সবাইকে দায়িত্ববান হতে হবে। কারণ আমাদের স্বাধীনতার বয়স এখন ৪২ বছর। আর আমাদের গণতন্ত্রের বয়স ২৩। আমরা যাই করি, পাকিস্তানিদের মতো আত্মঘাতী মরণব্যাধিতে ভুগতে পারি না।
লেখক : সাবেক সংস্থাপন সচিব, লেখক, কবি
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের লোকসংখ্যা ও আয়তনের ৮০ শতাংশ ভারতে রেখে ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের ফলে পাকিস্তানের জন্ম হলেও এর রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গান্ধী তথা ভারতবর্ষের রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো স্বাভাবিক কারণেই রয়ে যায়। বিশেষ করে পূর্ব বাংলা (পরে পূর্ব পাকিস্তান) নামক পাকিস্তানের প্রদেশটিতে কলকাতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপাদানগুলো সুস্পষ্টভাবেই রয়ে যায়। কারণ কলকাতা ব্রিটিশ রাজত্বের ১৯০ বছরের মধ্যে ১৫৪ বছরই ছিল সমগ্র ভারতের রাজধানী এবং ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার রাজধানী। সুতরাং স্বাভাবিক কারণেই সাধারণভাবে সারা ভারতে এবং বিশেষভাবে সারা বাংলায় একই ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকশিত হয়।
পাকিস্তানি সেনাশাসক তথাকথিত লৌহমানব আইয়ুব খানের ১০ বছরব্যাপী স্বৈরশাসনের শেষ পর্যায়ে ১৯৬৮ সালের ডিসেম্বর থেকে যে অভূতপূর্ব গণ-আন্দোলন গড়ে ওঠে তার একটা উল্লেখযোগ্য দিক ছিল জনসমর্থনধন্য হরতাল। এই আন্দোলনের প্রথম হরতালটি আহ্বান করেন মওলানা ভাসানী, হরতালের আগের দিন ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক জনসভা থেকে। স্বতঃস্ফূর্ত ওই হরতালে ঢাকায় তিনজন নিহত হয়। এই ঘটনার পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে গণ-আন্দোলন তীব্রতা লাভ করে। ২০ জানুয়ারি ১৯৬৯ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন রাস্তায় ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর ঊনসত্তরের আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে এবং একপর্যায়ে তা ২৪ জানুয়ারিতে গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হয়।
১৯৬৯ সালের আন্দোলনের ফলে বঙ্গবন্ধু, মণি সিংহ, মতিয়া চৌধুরীসহ সব রাজবন্দি ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ মুক্তিলাভ করেন, মিথ্যা মামলা আগরতলা প্রত্যাহার করা হয় এবং স্বৈরশাসক আইয়ুবের পতন ঘটে।
হরতালের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনামলে পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশের হরতালগুলো ছিল অর্থবহ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই হরতালগুলো পালিত হতো। হরতালে বাধা দিয়ে দমন-পীড়ন চালালে জনগণ তা প্রতিরোধের চেষ্টা করত। এ রকম ক্ষেত্রে ছাড়া হরতাল পালনকারী মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে সহিংসতায় লিপ্ত হতো না। অর্থাৎ তারা কেবল আক্রান্ত হলে প্রতিআক্রমণ করার চেষ্টা করত। ঠাণ্ডা মাথায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কেউ আক্রমণ করত না। ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের সম্পদ ধ্বংস করার জন্য ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতো না।
কিন্তু এখন সেই রামও নেই, সেই অযোধ্যাও নেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে হরতাল সংস্কৃতির মানের ক্রমেই অবনতি হয়েছে। আগে হরতাল হতো কালেভদ্রে, যাকে বলে Once in a blue moon- এখন হরতাল ডাকা হয় কথায় কথায়।
হরতালের দুষ্টচক্র হতে মুক্তির উপায় কী? হরতালকে বেআইনি ঘোষণা করা? সেই চেষ্টা কেউ করবেন বলে মনে হয় না। তেমন কোনো চেষ্টার লক্ষণ দেখা গেলেই এক শ্রেণীর মানুষ আকাশ বিদীর্ণ করে চিৎকার করে বলবে, হরতাল গণতান্ত্রিক অধিকার। আমি জানি না, এ কোন গণতন্ত্র? এমন গণতন্ত্র পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে আছে কি না সে ব্যাপারে আমার ঘোর সন্দেহ রয়েছে। না হয় তর্কের খাতিরে মেনে নেওয়া গেল যে হরতাল করা গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু জোর করে হরতাল পালনে বাধ্য করা, পিকেটিংয়ের নামে ভাঙচুর, লুটপাট করা, গাড়ি-স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা, দেশের সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করা, এমনকি রোগী বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স আক্রমণ করে অসুস্থ রোগীকে মেরে ফেলা কি গণতান্ত্রিক অধিকার হতে পারে?
হরতাল আহ্বান করা গণতন্ত্রচর্চার মধ্যে পড়ে কি না আমি জানি না। কিন্তু একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত, হরতালকেন্দ্রিক সহিংসতা ও নাশকতা অবশ্যই গণতন্ত্র নয়। বরং তা ফৌজদারি অপরাধ। এসব অপরাধে অপরাধীদের দমনে রাষ্ট্র তথা সরকারকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। দেশবাসী তাতে পরিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানাবে।
বাংলাদেশের বয়স এখন ৪২ বছর চলছে। এর প্রায় অর্ধেক বয়সে পাকিস্তান নামক জঙ্গি রাষ্ট্রটি এই অঞ্চল থেকে ধুয়েমুছে গেছে।
বাংলাদেশের বয়স হয়েছে। এখন সময় হয়েছে এসব পুরনো পচা ঘা সারিয়ে তোলার। সেই উদ্যোগ রাষ্ট্রকে নিতে হবে। রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে, হরতাল আহ্বান করা গেলেও পিকেটিং, মিছিল, সভা, সমাবেশ করা চলবে না। হরতাল মানে সর্বত্র তালা। সব কাজ বন্ধ। সুতরাং গরিব মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে তার কাজ বন্ধ রাখলে সবার সব কাজ বন্ধ রাখতে হবে, হরতাল আহ্বানকারীদেরও। তারা মিছিল, সমাবেশ করতে পারবে না। তাদের মালিকানাধীন কলকারখানা খোলা রাখা যাবে না, যা তারা করে।
আরেকটা কথা। হরতাল ডাকা গণতান্ত্রিক অধিকার হলে, হরতালের ডাক না শোনাটাও গণতান্ত্রিক অধিকার। এর ফলে সংঘাত হলে রাষ্ট্রকে তা নিরসন করে শান্তি বজায় রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে।
কোনো ব্যক্তি বা দল নাশকতায় লিপ্ত হলে, সহিংসতায় লিপ্ত হলে সেই ব্যক্তি ও দলের বিরুদ্ধে নির্ভীক চিত্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার সময় হয়ে গেছে। কারণ কোনো রাষ্ট্র এভাবে চলতে পারে না। বাসে আগুন দিলে দায়ী ব্যক্তির জেল-জরিমানার পাশাপাশি হরতাল আহ্বানকারী দলকেও জরিমানা করতে হবে। তাদের এর দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের সবাইকে দায়িত্ববান হতে হবে। কারণ আমাদের স্বাধীনতার বয়স এখন ৪২ বছর। আর আমাদের গণতন্ত্রের বয়স ২৩। আমরা যাই করি, পাকিস্তানিদের মতো আত্মঘাতী মরণব্যাধিতে ভুগতে পারি না।
লেখক : সাবেক সংস্থাপন সচিব, লেখক, কবি
No comments