পবিত্র কোরআনের আলো-স্বপ্ন ব্যাখ্যায় ইউসুফ (আ.)-এর অলৌকিক জ্ঞান ও যোগ্যতা ছিল
৪৫. ওয়া কা-লাল্লাযী নাজা- মিনহুমা- ওয়াদ্দাকারা বা'দা উম্মাতিন আনা উনাব্বিউকুম বিতা'বীলিহী ফা আরসিলূনি। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ৪৫. দুই কারাবন্দির মধ্যে যে ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পর (ইউসুফ আ.-এর কথা) স্মরণ হলো,
অনুবাদ : ৪৫. দুই কারাবন্দির মধ্যে যে ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পর (ইউসুফ আ.-এর কথা) স্মরণ হলো,
সে বলল, আমি আপনাদের এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা বাতলে দিতে পারব। এ জন্য আপনারা
আমাকে (কারাগারে বন্দি ইউসুফের কাছে) পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।*
তাফসির : * বাদশাহর এই অদ্ভুত স্বপ্নকে ঘিরে এমন আয়োজন-আলোচনার প্রেক্ষাপটে মুক্তিপ্রাপ্ত যুবকের হঠাৎ মনে হলো হজরত ইউসুফ (আ.)-এর কথা। সে আগ বাড়িয়ে বলল, আমি এ স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বলতে পারব। এরপর সে ইউসুফ (আ.)-এর গুণাবলি, স্বপ্নব্যাখ্যায় পারদর্শিতা এবং মজলুম হয়ে তাঁর কারারুদ্ধ থাকার কথা বর্ণনা করে অনুরোধ করল, আমাকে কারাগারে গিয়ে ইউসুফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করা হোক। বাদশাহ কারাগারে ইউসুফের সঙ্গে আবেদনকারীর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করল। সে গিয়ে হাজির হলো ইউসুফ (আ.)-এর কাছে। কোরআন শরিফে এসব ঘটনা মাত্র একটি শব্দ 'ফাআরসিলূনি' দ্বারা বোঝানো হয়েছে। এর অর্থ আমাকে পাঠিয়ে দিন। এখান থেকে ইউসুফ (আ.)-এর নাম উল্লেখ করা, সরকারি অনুমোদন এবং কারাগারে পৌঁছা সব কিছুই আপনাআপনি বোঝা যায়। ফলে এগুলো পরিষ্কার করে আলোচনা করা হয়নি। বরং বলা হয়েছে, যুবকটি কারাগারে পৌঁছেই ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বললেন, 'ইউসুফ, হে সম্পূর্ণ সত্যবাদী'। এখানে প্রথমেই স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, ইউসুফ (আ.) সত্যবাদী। তিনি যা বলেন, সবই বাস্তব হয়ে দেখা দেয়। এই জন্যই ইউসুফ নাম উল্লেখ করেই সঙ্গে সঙ্গে 'সিদ্দিক' গুণবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ হলো, আপনি কথা ও কাজে পুরোপুরি সত্যবাদী। এরপর যুবক ইউসুফ (আ.)-এর কাছে বাদশাহর স্বপ্ন তুলে ধরে এর ব্যাখ্যা জানাতে অনুরোধ করল। বলল, বাদশাহ সাতটি মোটাতাজা গাভী দেখতে পেয়েছেন। আবার এগুলোকেই অন্য সাতটি শীর্ণকায় গাভী খেয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো সাতটি গমের সবুজ শীষ এবং সাতটি শুকনো শীষ দেখেছেন। আপনি দয়া করে এর সঠিক ব্যাখ্যা বাতলে দিলে তা নিয়ে আমি ফিরে যাব। তাদের সামনে স্বপ্নের ব্যাখ্যা বর্ণনা করব। এতে আশা করা যায়, তারা আপনার জ্ঞান-গরিমা সম্পর্কে অবগত হবে।
আলমে মিছালা তথা প্রত্যাকৃতি জগতে ঘটনাবলি যে আকারে থাকে, স্বপ্নে তা-ই দৃষ্টিগোচর হয়। এ জগতের প্রত্যাকৃতিগুলোর বিশেষ অর্থ আছে। স্বপ্নব্যাখ্যা শাস্ত্র পুরোপুরি এসব অর্থ জানার ওপর নির্ভরশীল। আল্লাহ তায়ালা হজরত ইউসুফ (আ.)-কে এ শাস্ত্র পুরোপুরি শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি স্বপ্নের বিবরণ শুনে বুঝে নিলেন, সাতটি মোটাতাজা গাভী ও সাতটি সবুজ শীষের অর্থ হচ্ছে প্রচুর ফলনসম্পন্ন সাত বছর। কারণ, মাটিতে চাষাবাদের ক্ষেত্রে গাভীর বিশেষ ভূমিকা থাকে। সাতটি শীর্ণ গাভী ও সাতটি শুকনো শীষের অর্থ হলো, প্রথম সাতটি গাভীকে খেয়ে ফেলার মাধ্যমে পূর্ববর্তী সাতটি বছরে খাদ্যদ্রব্যের যে ভাণ্ডার সঞ্চিত থাকবে, তা সবই দুর্ভিক্ষের সাত বছরে নিঃশেষ হয়ে যাবে। শুধু বীজের জন্য কিছু খাদ্যশস্য বেঁচে যাবে।
তাফসিরে মাজহারি ও ইবনে কাছির অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * বাদশাহর এই অদ্ভুত স্বপ্নকে ঘিরে এমন আয়োজন-আলোচনার প্রেক্ষাপটে মুক্তিপ্রাপ্ত যুবকের হঠাৎ মনে হলো হজরত ইউসুফ (আ.)-এর কথা। সে আগ বাড়িয়ে বলল, আমি এ স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বলতে পারব। এরপর সে ইউসুফ (আ.)-এর গুণাবলি, স্বপ্নব্যাখ্যায় পারদর্শিতা এবং মজলুম হয়ে তাঁর কারারুদ্ধ থাকার কথা বর্ণনা করে অনুরোধ করল, আমাকে কারাগারে গিয়ে ইউসুফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করা হোক। বাদশাহ কারাগারে ইউসুফের সঙ্গে আবেদনকারীর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করল। সে গিয়ে হাজির হলো ইউসুফ (আ.)-এর কাছে। কোরআন শরিফে এসব ঘটনা মাত্র একটি শব্দ 'ফাআরসিলূনি' দ্বারা বোঝানো হয়েছে। এর অর্থ আমাকে পাঠিয়ে দিন। এখান থেকে ইউসুফ (আ.)-এর নাম উল্লেখ করা, সরকারি অনুমোদন এবং কারাগারে পৌঁছা সব কিছুই আপনাআপনি বোঝা যায়। ফলে এগুলো পরিষ্কার করে আলোচনা করা হয়নি। বরং বলা হয়েছে, যুবকটি কারাগারে পৌঁছেই ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বললেন, 'ইউসুফ, হে সম্পূর্ণ সত্যবাদী'। এখানে প্রথমেই স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, ইউসুফ (আ.) সত্যবাদী। তিনি যা বলেন, সবই বাস্তব হয়ে দেখা দেয়। এই জন্যই ইউসুফ নাম উল্লেখ করেই সঙ্গে সঙ্গে 'সিদ্দিক' গুণবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ হলো, আপনি কথা ও কাজে পুরোপুরি সত্যবাদী। এরপর যুবক ইউসুফ (আ.)-এর কাছে বাদশাহর স্বপ্ন তুলে ধরে এর ব্যাখ্যা জানাতে অনুরোধ করল। বলল, বাদশাহ সাতটি মোটাতাজা গাভী দেখতে পেয়েছেন। আবার এগুলোকেই অন্য সাতটি শীর্ণকায় গাভী খেয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো সাতটি গমের সবুজ শীষ এবং সাতটি শুকনো শীষ দেখেছেন। আপনি দয়া করে এর সঠিক ব্যাখ্যা বাতলে দিলে তা নিয়ে আমি ফিরে যাব। তাদের সামনে স্বপ্নের ব্যাখ্যা বর্ণনা করব। এতে আশা করা যায়, তারা আপনার জ্ঞান-গরিমা সম্পর্কে অবগত হবে।
আলমে মিছালা তথা প্রত্যাকৃতি জগতে ঘটনাবলি যে আকারে থাকে, স্বপ্নে তা-ই দৃষ্টিগোচর হয়। এ জগতের প্রত্যাকৃতিগুলোর বিশেষ অর্থ আছে। স্বপ্নব্যাখ্যা শাস্ত্র পুরোপুরি এসব অর্থ জানার ওপর নির্ভরশীল। আল্লাহ তায়ালা হজরত ইউসুফ (আ.)-কে এ শাস্ত্র পুরোপুরি শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি স্বপ্নের বিবরণ শুনে বুঝে নিলেন, সাতটি মোটাতাজা গাভী ও সাতটি সবুজ শীষের অর্থ হচ্ছে প্রচুর ফলনসম্পন্ন সাত বছর। কারণ, মাটিতে চাষাবাদের ক্ষেত্রে গাভীর বিশেষ ভূমিকা থাকে। সাতটি শীর্ণ গাভী ও সাতটি শুকনো শীষের অর্থ হলো, প্রথম সাতটি গাভীকে খেয়ে ফেলার মাধ্যমে পূর্ববর্তী সাতটি বছরে খাদ্যদ্রব্যের যে ভাণ্ডার সঞ্চিত থাকবে, তা সবই দুর্ভিক্ষের সাত বছরে নিঃশেষ হয়ে যাবে। শুধু বীজের জন্য কিছু খাদ্যশস্য বেঁচে যাবে।
তাফসিরে মাজহারি ও ইবনে কাছির অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments