ঠিকাদারের টাকায় মেয়র নির্বাচন! by শরিফুল হাসান ও আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ
রাজশাহীর মেয়র পদপ্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের নির্বাচনী খরচের
একটি বড় অংশই আসবে একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে। ওই ঠিকাদার গত পাঁচ বছরে সিটি
করপোরেশনের বড় দুটি উন্নয়নকাজ পেয়েছেন।আর বিএনপির নেতা মোসাদ্দেক হোসেন
তাঁর নির্বাচনী খরচের ১০ লাখ টাকা নিচ্ছেন সাত ব্যক্তির কাছ থেকে। তাঁরা
স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এই টাকা দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন মোসাদ্দেক।১২ মে
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দেওয়া হলফনামায় নির্বাচনী খরচ ও আয়ের
উৎস থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার প্রথম
আলোকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা
খরচ করতে পারবেন। কোত্থেকে এই টাকা আসবে, কারা এই টাকা দেবেন, কীভাবে
প্রার্থী খরচ করবেন—সবই হলফনামায় দেওয়া হয়েছে। আমরা জনগণকে এসব তথ্য
জানাব।’মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক মেয়র এ এইচ এম
খায়রুজ্জামান তাঁর নির্বাচনী খরচের সম্ভাব্য আয় হিসেবে যেসব তথ্য
দিয়েছেন, তা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিন লাখ টাকা আসবে তাঁর নিজের আয়
থেকে। আর শামসুজ্জামান নামের একজন ঠিকাদার তাঁকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে
দেবেন ১২ লাখ টাকা। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরের নিউমার্কেটের
পাশে দারুচিনি ও নগর ভবনের পাশে স্বপ্নচূড়া নামে আটতলা করে দুটি বাণিজ্যিক
ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন এই ঠিকাদার। সিটি করপোরেশনের জমিতে ভবন
দুটির নির্মাণকাজ চলছে। মেয়র পদপ্রার্থী খায়রুজ্জামানকে টাকা দেওয়া
প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঠিকাদার শামসুজ্জামান বলেন, ‘লিটন (খায়রুজ্জামান)
ভাইয়ের নির্বাচনের জন্য আমি ১২ লাখ টাকা দিচ্ছি, এটা সত্য। আর এই টাকা
পুরোটাই আমার বৈধ আয়ের টাকা।’
একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে নির্বাচনের টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খায়রুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার শামসুজ্জামান একই সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। তিনি দলের একজন বড় দাতাও। দলের বিভিন্ন প্রয়োজনে তিনি আর্থিক সহায়তা দেন। তারই অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় উৎসাহী হয়ে তিনি নির্বাচনী খরচের জন্য ১২ লাখ টাকা দিচ্ছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, নির্বাচনের জন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া ঠিক হচ্ছে না। কারণ, মেয়র নির্বাচিত হলে ভবিষ্যতে ওই ঠিকাদারের কাছে তাঁকে জিম্মি থাকতে হবে। বিভিন্ন সুবিধা দিতে হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন নির্বাচনী খরচের জন্য সম্ভাব্য যে আয় দেখিয়েছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিজের এবং স্ত্রীর ভাইয়ের কাছ থেকে নিচ্ছেন তিন লাখ টাকা। আত্মীয়স্বজনের বাইরে বিরাজ হোসেন, মুরাদুজ্জামান ও মিজানুর রহমান দুই লাখ করে ছয় লাখ এবং আহমেদুজ্জামান ইকবাল, আজিজা আক্তার, ফিরোজ রেজা খান ও জগলুর কবির দুই লাখ করে টাকা দিচ্ছেন।
স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এই সাতজন কেন টাকা দিচ্ছেন—জানতে চাইলে মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘আত্মীয়স্বজনের বাইরে যাঁরা আমাকে টাকা দিচ্ছেন, তাঁরা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী। তাঁদের সঙ্গে আমার কোনো ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো সম্পর্ক নেই।’
খায়রুজ্জামান তাঁর নির্বাচনী খরচের মধ্যে ৬৫ হাজার পোস্টারের জন্য এক লাখ ১০ হাজার টাকা, চারটি নির্বাচনী ক্যাম্প বানাতে এক লাখ ৩২ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ক্যাম্পে অফিস খরচে এক লাখ ৮৩ হাজার টাকা, যাতায়াত খরচ এক লাখ ৯০ হাজার টাকা, ঘরোয়া বৈঠকে ৬৫ হাজার টাকা, লিফলেটে ৬৫ হাজার টাকা, হ্যান্ডবিলে ৯৫ হাজার টাকা, ব্যানারে ৩৫ হাজার টাকা, ডিজিটাল ব্যানারে ৫৬ হাজার টাকা, পথসভায় ১২ হাজার, মাইকিংয়ে এক লাখ পাঁচ হাজার, পোর্ট্রেটে ১০ হাজার, প্রতীকের জন্য ৮০ হাজার, অফিস অ্যাপায়নে এক লাখ ২৭ হাজার, কর্মীদের জন্য ৫১ হাজার ও অন্যান্য খাতে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করবেন।
মোসাদ্দেক হোসেন তাঁর নির্বাচনী খরচের মধ্যে ৯০ হাজার পোস্টারের জন্য এক লাখ ৯৫ হাজার ৭০০ টাকা খরচ করবেন। চারটি নির্বাচনী অফিসের জন্য ৮২ হাজার, কেন্দ্রীয় অফিসের জন্য ৮৮ হাজার, যাতায়াত হিসেবে ৭৫ হাজার, সভার জন্য ৪০ হাজার, লিফলেটের জন্য দুই লাখ, হ্যান্ডবিল এক লাখ ৪০ হাজার, স্টিকারে দুই লাখ ১৫ হাজার, ব্যানারে ৪৬ হাজার ৫০০, ডিজিটাল ব্যানারে ১৯ হাজার ২০০, পথসভায় ৩০ হাজার, মাইকিংয়ে ৮৮ হাজার ২০০, পোর্ট্রেটে ৩৫ হাজার, প্রতীকে ৩০ হাজার, আপ্যায়নে ২১ হাজার ও বিবিধ খাতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করবেন। তবে কর্মীদের জন্য তিনি কোনো টাকা খরচ করবেন না। তাঁরা স্বেচ্ছায় কাজ করবেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।Untitled-45আলোচিত এই দুই মেয়র পদপ্রার্থীর বাইরে বিএনপির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক তাঁর নির্বাচনী খরচের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা নিজের ব্যবসা থেকে, ভাইয়ের কাছ থেকে দুই লাখ ও স্ত্রীর কাছ থেকে পাঁঁচ লাখ টাকা পাবেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিন লাখ টাকা তিনি মিজানুর রহমান নামের একজনের কাছ থেকে ধার হিসেবে নেবেন।জামায়াতের প্রার্থী রাজশাহী মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি নির্বাচনী খরচের আয়ের মধ্যে নিজের আয় থেকে নেবেন চার লাখ টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর কাছ থেকে এক লাখ, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার, স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে দেওয়া ৫০ হাজার এবং এক লাখ টাকা ধার করবেন।স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান নিজের আয় থেকে খরচ করবেন এক লাখ টাকা। মামাতো ভাই দেবেন দুই লাখ টাকা। এ ছাড়া তাঁর মা জমি বিক্রি করে তিন লাখ ও ভাই দুই লাখ টাকা দেবেন। চার লাখ টাকা ধার নেবেন তিনি। স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে নাজিমউদ্দিন নামের একজন তাঁকে এক লাখ ও প্রকৌশলী এম এ মুনায়েম এক লাখ টাকা দিচ্ছেন। এর বাইরে অন্যান্য উৎস থেকে আরও তিন লাখ টাকা পাবেন তিনি।স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী মোজাম্মেল আলী নিজের আয় থেকে চার লাখ ৮৩ হাজার টাকা খরচ করবেন। এ ছাড়া তাঁর দুই ভাই তাঁকে চার লাখ করে আট লাখ এবং স্ত্রী দুই লাখ টাকা দেবেন।
একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে নির্বাচনের টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খায়রুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার শামসুজ্জামান একই সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। তিনি দলের একজন বড় দাতাও। দলের বিভিন্ন প্রয়োজনে তিনি আর্থিক সহায়তা দেন। তারই অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় উৎসাহী হয়ে তিনি নির্বাচনী খরচের জন্য ১২ লাখ টাকা দিচ্ছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, নির্বাচনের জন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া ঠিক হচ্ছে না। কারণ, মেয়র নির্বাচিত হলে ভবিষ্যতে ওই ঠিকাদারের কাছে তাঁকে জিম্মি থাকতে হবে। বিভিন্ন সুবিধা দিতে হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন নির্বাচনী খরচের জন্য সম্ভাব্য যে আয় দেখিয়েছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিজের এবং স্ত্রীর ভাইয়ের কাছ থেকে নিচ্ছেন তিন লাখ টাকা। আত্মীয়স্বজনের বাইরে বিরাজ হোসেন, মুরাদুজ্জামান ও মিজানুর রহমান দুই লাখ করে ছয় লাখ এবং আহমেদুজ্জামান ইকবাল, আজিজা আক্তার, ফিরোজ রেজা খান ও জগলুর কবির দুই লাখ করে টাকা দিচ্ছেন।
স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এই সাতজন কেন টাকা দিচ্ছেন—জানতে চাইলে মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘আত্মীয়স্বজনের বাইরে যাঁরা আমাকে টাকা দিচ্ছেন, তাঁরা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী। তাঁদের সঙ্গে আমার কোনো ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো সম্পর্ক নেই।’
খায়রুজ্জামান তাঁর নির্বাচনী খরচের মধ্যে ৬৫ হাজার পোস্টারের জন্য এক লাখ ১০ হাজার টাকা, চারটি নির্বাচনী ক্যাম্প বানাতে এক লাখ ৩২ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ক্যাম্পে অফিস খরচে এক লাখ ৮৩ হাজার টাকা, যাতায়াত খরচ এক লাখ ৯০ হাজার টাকা, ঘরোয়া বৈঠকে ৬৫ হাজার টাকা, লিফলেটে ৬৫ হাজার টাকা, হ্যান্ডবিলে ৯৫ হাজার টাকা, ব্যানারে ৩৫ হাজার টাকা, ডিজিটাল ব্যানারে ৫৬ হাজার টাকা, পথসভায় ১২ হাজার, মাইকিংয়ে এক লাখ পাঁচ হাজার, পোর্ট্রেটে ১০ হাজার, প্রতীকের জন্য ৮০ হাজার, অফিস অ্যাপায়নে এক লাখ ২৭ হাজার, কর্মীদের জন্য ৫১ হাজার ও অন্যান্য খাতে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করবেন।
মোসাদ্দেক হোসেন তাঁর নির্বাচনী খরচের মধ্যে ৯০ হাজার পোস্টারের জন্য এক লাখ ৯৫ হাজার ৭০০ টাকা খরচ করবেন। চারটি নির্বাচনী অফিসের জন্য ৮২ হাজার, কেন্দ্রীয় অফিসের জন্য ৮৮ হাজার, যাতায়াত হিসেবে ৭৫ হাজার, সভার জন্য ৪০ হাজার, লিফলেটের জন্য দুই লাখ, হ্যান্ডবিল এক লাখ ৪০ হাজার, স্টিকারে দুই লাখ ১৫ হাজার, ব্যানারে ৪৬ হাজার ৫০০, ডিজিটাল ব্যানারে ১৯ হাজার ২০০, পথসভায় ৩০ হাজার, মাইকিংয়ে ৮৮ হাজার ২০০, পোর্ট্রেটে ৩৫ হাজার, প্রতীকে ৩০ হাজার, আপ্যায়নে ২১ হাজার ও বিবিধ খাতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করবেন। তবে কর্মীদের জন্য তিনি কোনো টাকা খরচ করবেন না। তাঁরা স্বেচ্ছায় কাজ করবেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।Untitled-45আলোচিত এই দুই মেয়র পদপ্রার্থীর বাইরে বিএনপির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক তাঁর নির্বাচনী খরচের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা নিজের ব্যবসা থেকে, ভাইয়ের কাছ থেকে দুই লাখ ও স্ত্রীর কাছ থেকে পাঁঁচ লাখ টাকা পাবেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিন লাখ টাকা তিনি মিজানুর রহমান নামের একজনের কাছ থেকে ধার হিসেবে নেবেন।জামায়াতের প্রার্থী রাজশাহী মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি নির্বাচনী খরচের আয়ের মধ্যে নিজের আয় থেকে নেবেন চার লাখ টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর কাছ থেকে এক লাখ, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার, স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে দেওয়া ৫০ হাজার এবং এক লাখ টাকা ধার করবেন।স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান নিজের আয় থেকে খরচ করবেন এক লাখ টাকা। মামাতো ভাই দেবেন দুই লাখ টাকা। এ ছাড়া তাঁর মা জমি বিক্রি করে তিন লাখ ও ভাই দুই লাখ টাকা দেবেন। চার লাখ টাকা ধার নেবেন তিনি। স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে নাজিমউদ্দিন নামের একজন তাঁকে এক লাখ ও প্রকৌশলী এম এ মুনায়েম এক লাখ টাকা দিচ্ছেন। এর বাইরে অন্যান্য উৎস থেকে আরও তিন লাখ টাকা পাবেন তিনি।স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী মোজাম্মেল আলী নিজের আয় থেকে চার লাখ ৮৩ হাজার টাকা খরচ করবেন। এ ছাড়া তাঁর দুই ভাই তাঁকে চার লাখ করে আট লাখ এবং স্ত্রী দুই লাখ টাকা দেবেন।
No comments