অন্যদের ওপর দায় চাপালেন পোশাকশিল্পের মালিকেরা
পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর প্রতিনিধিরা নিরাপদ
কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার দায় চাপালেন সরকার, বিদেশি ক্রেতা ও বেসরকারি
উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) ওপর। শ্রমিকদের কোনো কথাই তাঁরা শুনলেন না। গতকাল
শনিবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
আয়োজিত গণশুনানিতে তাঁরা এসেই বক্তব্য দিয়ে চলে যান। জাতীয় সংসদ ভবনে
আয়োজিত গণশুনানিতে বিজিএমইএ-বিকেএমইএর প্রতিনিধিরা ছাড়াও মার্কিন
রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, বিদেশি ক্রেতা,
শ্রমিক সংগঠন ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস
ট্রাস্ট-এর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। শ্রমিকদের কথা না শুনে চলে যাওয়ায়
সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভানেত্রী নাজমা আক্তার বলেন,
‘মালিক শ্রেণী এতই শক্তিশালী যে, তাঁরা কথা বলে চলে গেছেন। আইএলওর
(আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) ডিরেক্টর, ক্রেতারা সবাই বসে আছেন, কিন্তু তাঁরা
নেই। কেউ তাঁদের ধরে রাখার ক্ষমতা রাখেন না। মালিকেরা এত মার্ডার করেছেন,
কোনো দিন শুনেছেন তাঁদের বিচার হয়েছে?’ গণশুনানির প্রথম পর্বে বিজিএমইএর
প্রতিনিধি রিয়াজ বিন মাহমুদ বলেন, তাঁদের কমিটির মূল স্লোগান হচ্ছে
ঝুঁকিমুক্ত নিরাপদ কমপ্লায়েন্ট কারখানা গড়ে তোলা। তাঁর ভাষায় হাজারো
‘শ্রমিক ভাই’ রানা প্লাজায় নিহত হয়েছেন। তিনি দোষারোপের সংস্কৃতিতে
বিশ্বাসী নন। তবে তাঁর মতে, ইচ্ছে করলেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা
কারখানাগুলোকে ঢাকার বাইরে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর্থিক বিষয়টি
ভেবে দেখতে হচ্ছে। ঢাকার আশপাশে জমির এত দাম যে ‘প্রজেক্ট ভায়াবেল’ হয়
না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে শ্রমিক শোষণ, অনিরাপদ কাজের পরিবেশ
নিয়ে যে অভিযোগ ওঠে, তার দায় বিদেশি ক্রেতাদের ওপরও বর্তায়। তাঁরা এক
সেন্ট, দুই সেন্টের জন্য দর-কষাকষি করেন।
শুনানিতে বিকেএমইএর প্রতিনিধি মো. হাতেম বলেন, ভাড়া ভবনে যে কারখানা আছে, সেগুলো ঠিকভাবে তৈরি কি না, সেটা তাঁদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স দেওয়ার সময় সব বিষয় ভালোভাবে খতিয়ে দেখে সনদ দিতে পারে। তাঁদের অনেকেরই ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা’। হঠাৎ করে তাঁদের পক্ষে ঢাকার বাইরে কারখানা স্থাপন করা কঠিন। একতলা বা দোতলা ভবনের ওপর কারখানা করা যাবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ফোরামে যে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, তা-ও বাস্তবতাবর্জিত। কারণ, জায়গার স্বল্পতা আছে। তিনি আরও বলেন, সবাই কাজের পরিবেশের কথা বলেন, শ্রমিকদের বাড়ির পরিবেশ কেমন সেটাও দেখা দরকার। এনজিওগুলো এ দায়িত্ব নিতে পারে।
বিজিএমইএ-বিকেএইএর প্রতিনিধিরা নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিদেশি ক্রেতাদেরও মনোযোগী হওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তাতে সায় দিয়েছেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইস্রাফিল আলম। শুনানি চলাকালে তিনি একাধিকবার রিয়াজ-বিন-মাহমুদের কথার প্রশংসা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ক্রেতাদের প্রতিনিধি এইচএ্যান্ডএম-এর ডেভিড শ্যাডম্যানের কাছে বারবার জানতে চান, তাঁরা দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারেন কি না। একপর্যায়ে ডেভিড বলেন, তাঁরা শ্রমিকদের স্বার্থ মাথায় রেখে চুক্তি করেন। এ দেশের ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাঁরা পোশাক নেন। তিনি পাঁচ হাজার কারখানার দায়িত্ব নিতে পারবেন না।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা বলেন, বাংলাদেশে পোশাক শিল্প শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার দিতেই হবে। সম্প্রতি মন্ত্রিসভা শ্রম আইনের সংশোধনীর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সংশোধনীতে যেন ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সভাপতিকে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, জিএসপি-সুবিধা পাওয়ার জন্য যে শর্ত রয়েছে, বাংলাদেশ কি সেই শর্তগুলো মেনে চলছে? রানা প্লাজা ধস ও তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এসব কারখানায় যা ঘটেছে, তার চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আগুন লাগলে শ্রমিকেরা যেন বেরিয়ে যেতে পারেন, তাঁদের মাথার ওপর যেন ভবন ধসে না পড়ে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতেই শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশের ১০০ ভাগ কারখানাকেই কমপ্লায়েন্ট হতে হবে।
শুনানিতে আরও বক্তব্য দেন শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম, কর্মজীবী নারীর সভাপতি শিরীন আখতার প্রমুখ। এতে উপস্থিত ২০টিরও বেশি শ্রমিক সংগঠনের নেতা ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দাবি করেছেন। সংসদীয় কমিটি ইউএসএআইডির অর্থায়নে এই শুনানি করে। শুনানি থেকে পাওয়া সুপারিশ তারা পাঠিয়ে দেবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে।
শুনানিতে বিকেএমইএর প্রতিনিধি মো. হাতেম বলেন, ভাড়া ভবনে যে কারখানা আছে, সেগুলো ঠিকভাবে তৈরি কি না, সেটা তাঁদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স দেওয়ার সময় সব বিষয় ভালোভাবে খতিয়ে দেখে সনদ দিতে পারে। তাঁদের অনেকেরই ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা’। হঠাৎ করে তাঁদের পক্ষে ঢাকার বাইরে কারখানা স্থাপন করা কঠিন। একতলা বা দোতলা ভবনের ওপর কারখানা করা যাবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ফোরামে যে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, তা-ও বাস্তবতাবর্জিত। কারণ, জায়গার স্বল্পতা আছে। তিনি আরও বলেন, সবাই কাজের পরিবেশের কথা বলেন, শ্রমিকদের বাড়ির পরিবেশ কেমন সেটাও দেখা দরকার। এনজিওগুলো এ দায়িত্ব নিতে পারে।
বিজিএমইএ-বিকেএইএর প্রতিনিধিরা নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিদেশি ক্রেতাদেরও মনোযোগী হওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তাতে সায় দিয়েছেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইস্রাফিল আলম। শুনানি চলাকালে তিনি একাধিকবার রিয়াজ-বিন-মাহমুদের কথার প্রশংসা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ক্রেতাদের প্রতিনিধি এইচএ্যান্ডএম-এর ডেভিড শ্যাডম্যানের কাছে বারবার জানতে চান, তাঁরা দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারেন কি না। একপর্যায়ে ডেভিড বলেন, তাঁরা শ্রমিকদের স্বার্থ মাথায় রেখে চুক্তি করেন। এ দেশের ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাঁরা পোশাক নেন। তিনি পাঁচ হাজার কারখানার দায়িত্ব নিতে পারবেন না।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা বলেন, বাংলাদেশে পোশাক শিল্প শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার দিতেই হবে। সম্প্রতি মন্ত্রিসভা শ্রম আইনের সংশোধনীর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সংশোধনীতে যেন ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সভাপতিকে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, জিএসপি-সুবিধা পাওয়ার জন্য যে শর্ত রয়েছে, বাংলাদেশ কি সেই শর্তগুলো মেনে চলছে? রানা প্লাজা ধস ও তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এসব কারখানায় যা ঘটেছে, তার চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আগুন লাগলে শ্রমিকেরা যেন বেরিয়ে যেতে পারেন, তাঁদের মাথার ওপর যেন ভবন ধসে না পড়ে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতেই শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশের ১০০ ভাগ কারখানাকেই কমপ্লায়েন্ট হতে হবে।
শুনানিতে আরও বক্তব্য দেন শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম, কর্মজীবী নারীর সভাপতি শিরীন আখতার প্রমুখ। এতে উপস্থিত ২০টিরও বেশি শ্রমিক সংগঠনের নেতা ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দাবি করেছেন। সংসদীয় কমিটি ইউএসএআইডির অর্থায়নে এই শুনানি করে। শুনানি থেকে পাওয়া সুপারিশ তারা পাঠিয়ে দেবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে।
No comments