এখানে সংখ্যাই শক্তি by মাহমুদ মেনন
মোমের স্নিগ্ধ আলো প্রতিবাদের মহাশক্তিতে
পরিণত হলো নিমিষে। এক আলো থেকে জ্বলে উঠলো হাজার আলো। আর গাণিতিক গুণনের সব
হিসাবকে ব্যর্থ করে দিয়ে সে আলো নিমিষে লাখ ছাড়ালো।
এর পর লাখে লাখে। এতো শাহবাগের চিত্র। গোটা দেশের আকাশ ততক্ষণে মোমের লাল প্রতিবাদী আলোয় লাল। সে আলোর হিসাব কোটির অংকে।
পৃথিবীতে
কোনো কালে কে দেখেছে এত মোমের আলো এক যোগে? আলো দেখলেও দেখেছে কী সে আলোয়
এত প্রতিবাদের ভাষা? দেখেনি। যা বাঙ্গালি দেখাতে জানে তা জানে না আর কোনো
জাতি। বায়ান্ন, উনসত্তুর, একাত্তর, নব্বই, দুই হাজার তেরো যার জ্বলজ্বলে সব
উপমা।
এই বাঙ্গালি জোট বাঁধে প্রতিবাদের সব ভাষায়। হাত তুলে প্রাণ খুলে দাবির পক্ষে নেয় শক্ত অবস্থান।
শাহবাগের গণজাগরণ চত্বর ইতিহাসের খাতায় স্থান করে নেওয়া এক খন্ড বাংলাদেশ। আবার গোটা বাংলাদেশই এখন শাহবাগ চেতনার ধারক। এখানে এক শাহবাগের মধ্যেই খণ্ড খণ্ড কতো শাহবাগ। সেখানে প্রতিবাদের সব ভাষা, সব রং, রকমফের বর্তমান। এখানে একধারে ফাঁসি.. ফাঁসি... ফাঁসি চাই গানে ধরে তান এক দল যুবক। অন্যধারে নাট্যদল বানায় ফাঁসির নাটক। ফাসির মঞ্চেই মঞ্চস্থ হয় তা।
এখানে প্রতিটি মানুষই একেকটি শক্তি। আবার লাখো মানুষ মিলে একটি শক্তি। আবার একেক মানুষের মুখের অভিব্যক্তি, স্লোগান তোলা মুখে পেশীর কাঁপুনি, বজ্রমুষ্ঠি হাত বলে দেয় এতো এক মানুষের নয় এতো লাখো মানুষের শক্তি যেনো ভর করেছে এক মানুষের মুখে, চোখে, হাতে।
কাদের মোল্লার নামে ফাঁসির আদেশ না নিয়ে এই প্রতিবাদী মানুষগুলো শাহবাগ থেকে যাবেনা। রাষ্ট্রযন্ত্র বুজেছে তা। বৃহস্পতিবার ঘোষণাও দিয়েছে শাহবাগের আন্দোলনে কোনো ধরনের বাধা নয়। হোক সে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র। হোক তা দুই কোটির বেশি মানুষের বসবাসের নগরী ঢাকার নাগরিক ভোগান্তির কারণ। সব সয়ে নেবে সবাই। তবু রাজাকারের ফাঁসি চাই।
এ পর্যন্ত শোনা যায়নি কোনো অধিকারকর্মী বলেছে এখানে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। কেউ বলেনি এখানে মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে। বরং সব মানুষই ভীড় ঠেলে আরও ভীড় বাড়িয়ে নিজেকে করেছে আন্দোলনের অংশ। গর্বিত হয়েছে.. হচ্ছে।
টানা দশদিন একটি চত্বরে এমন আন্দোলন দেশকে গেঁথেছে এক সুতোয়। এখানে প্রচণ্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়ার প্রতিবাদ যেমন দেখা গেছে তেমনি দেখা গেছে টানা নিরবতার প্রতিবাদ। এখানে মশাল জ্বলে, মিছিল হয়, রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে বজ্র কঠোর স্লোগান হয়। স্লোগান পরিণত হয় শক্তিতে। এমনি করে এখানে প্রতিটি মানুষের মাঝে শক্তি বিলোয় নাটক, গান, চিত্রলেখা। এখানে এতটুকু ভয় নেই। এতটুকু দ্বিধা নেই। নেই এতটুকু দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ। এখানে আছে সাহস, শক্তি, সৌহার্দ্য ভালোবাসা আর সাথে আছে প্রচণ্ড শক্তির প্রতিবাদ।
শাহবাগ নিয়ে একটি গান লিখে যে যুবক বাংলানিউজের ক্যাম্প অফিসে এসে বলেন, আমার একটা গান আছে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। তার চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সরকারি চাকুরি পাওয়ার শেষ বছরটিও পার করে হতাশায় নিমজ্জিত মানুষটিও একইভাবে আসে শাহবাগে। আসে বন্ধুদের সঙ্গে। আসে বাংলানিউজের ক্যাম্পে। তারও একই কথা না পাই সরকারি চাকরি। গোটা দশেক দেশের গান লিখেছি এখন সেগুলোই আমার শক্তি। শাহবাগ এভাবে আরও কতজনকে যে শক্তি যোগাচ্ছে সে সংখ্যার হিসাব কষাও বৃথা। সবাই বলছে দেশকে একটি শক্তভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এই শক্তভিতে দাঁড়া হওয়া মানুষের অংকের হিসেব ১৬ কোটি ছাড়াবে।
স্কুল শেষে শিক্ষার্থী, অফিস শেষে চাকুরে, কাজের শেষে শ্রমিক সবারই যেনো গন্তব্য শাহবাগ। দশদিনেও একঘেয়েমী নেই। বরং প্রতিটি দিনই যেনো আলাদা কিছু। প্রতিদিনই নতুন মানুষের সমাগম। আবার একই মানুষ আসছে বার বার। এক জনের সঙ্গে আসে আরও অনেকে। একজনই শক্তিতে স্লোগানে হয়ে ওঠে হাজার জনের সমান। সেখানেও মেলেনা অংকের হিসাব।
এখানে মিলবে না আরও অনেক হিসাব। কতবার উচ্চারিত হয়েছে ফাঁসির দাবি। কতবার বলা হয়েছে তুই রাজাকার তুই রাজাকার। কতজন কতবার গাইছে আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালো বাসি। কত হাত উচ্চে তোলা হয়েছে, কত পা মেখে নিয়েছে প্রতিটি ধুলিকনা তার কোনো অংকই এখানে মেলানো যাবে না। এখানে সংখ্যাই শক্তি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাখির দৃষ্টি দিয়ে শাহবাগে তাকিয়ে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলোর শক্তি দেখা গেছে যে শক্তি বিস্তৃত ছিলো দেশজুড়ে। কিন্তু অতি দুর নরওয়ের বারগেন শহর থেকে যে গুটিকয় মানুষের একই প্রতিবাদ তাও কি কম। একই ধরনের প্রতিবাদের খবর ছবি তো আসছেই। যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলো স্টেট থেকে, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর কোন কোনায় কোথায় একজন বাঙ্গালীর বাস রয়েছে যেখানে নেই প্রতিবাদের উচ্চকিত স্বর। সে স্বর হয়তো কয়েক জনের কিন্তু সেই স্বরও শাহবাগের সমান শক্তিতে বলীয়ান। আবার সেই স্বর শাহবাগের শক্তিতে সুনামিতে রূপ দেয়। আর এসব কিছুই বিশ্ববাসীকে জানান দেয় বাঙ্গালীর শক্তি।
প্রতিদিনই মূল প্রতিবাদ মঞ্চে থাকছে অভিনব সব কর্মসূচি। জাগরণের গান, স্লোগানের ঝড়, নিরবতার শক্তি প্রদর্শণ শেষে মোমবাতির প্রজ্জ্বলন হয়ে গেলো। শুক্রবারে ডাক দেওয়া হয়েছে জাগরণ সমাবেশের। সে সমাবেশে লাখো মানুষের জমায়েত হবে। হবে স্লোগান, গান। শুক্রবারের জাগরণ সমাবেশে গণমানুষের পাশাপাশি সব সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে সেটাই প্রত্যাশা সবার।
এই বাঙ্গালি জোট বাঁধে প্রতিবাদের সব ভাষায়। হাত তুলে প্রাণ খুলে দাবির পক্ষে নেয় শক্ত অবস্থান।
শাহবাগের গণজাগরণ চত্বর ইতিহাসের খাতায় স্থান করে নেওয়া এক খন্ড বাংলাদেশ। আবার গোটা বাংলাদেশই এখন শাহবাগ চেতনার ধারক। এখানে এক শাহবাগের মধ্যেই খণ্ড খণ্ড কতো শাহবাগ। সেখানে প্রতিবাদের সব ভাষা, সব রং, রকমফের বর্তমান। এখানে একধারে ফাঁসি.. ফাঁসি... ফাঁসি চাই গানে ধরে তান এক দল যুবক। অন্যধারে নাট্যদল বানায় ফাঁসির নাটক। ফাসির মঞ্চেই মঞ্চস্থ হয় তা।
এখানে প্রতিটি মানুষই একেকটি শক্তি। আবার লাখো মানুষ মিলে একটি শক্তি। আবার একেক মানুষের মুখের অভিব্যক্তি, স্লোগান তোলা মুখে পেশীর কাঁপুনি, বজ্রমুষ্ঠি হাত বলে দেয় এতো এক মানুষের নয় এতো লাখো মানুষের শক্তি যেনো ভর করেছে এক মানুষের মুখে, চোখে, হাতে।
কাদের মোল্লার নামে ফাঁসির আদেশ না নিয়ে এই প্রতিবাদী মানুষগুলো শাহবাগ থেকে যাবেনা। রাষ্ট্রযন্ত্র বুজেছে তা। বৃহস্পতিবার ঘোষণাও দিয়েছে শাহবাগের আন্দোলনে কোনো ধরনের বাধা নয়। হোক সে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র। হোক তা দুই কোটির বেশি মানুষের বসবাসের নগরী ঢাকার নাগরিক ভোগান্তির কারণ। সব সয়ে নেবে সবাই। তবু রাজাকারের ফাঁসি চাই।
এ পর্যন্ত শোনা যায়নি কোনো অধিকারকর্মী বলেছে এখানে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। কেউ বলেনি এখানে মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে। বরং সব মানুষই ভীড় ঠেলে আরও ভীড় বাড়িয়ে নিজেকে করেছে আন্দোলনের অংশ। গর্বিত হয়েছে.. হচ্ছে।
টানা দশদিন একটি চত্বরে এমন আন্দোলন দেশকে গেঁথেছে এক সুতোয়। এখানে প্রচণ্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়ার প্রতিবাদ যেমন দেখা গেছে তেমনি দেখা গেছে টানা নিরবতার প্রতিবাদ। এখানে মশাল জ্বলে, মিছিল হয়, রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে বজ্র কঠোর স্লোগান হয়। স্লোগান পরিণত হয় শক্তিতে। এমনি করে এখানে প্রতিটি মানুষের মাঝে শক্তি বিলোয় নাটক, গান, চিত্রলেখা। এখানে এতটুকু ভয় নেই। এতটুকু দ্বিধা নেই। নেই এতটুকু দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ। এখানে আছে সাহস, শক্তি, সৌহার্দ্য ভালোবাসা আর সাথে আছে প্রচণ্ড শক্তির প্রতিবাদ।
শাহবাগ নিয়ে একটি গান লিখে যে যুবক বাংলানিউজের ক্যাম্প অফিসে এসে বলেন, আমার একটা গান আছে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। তার চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সরকারি চাকুরি পাওয়ার শেষ বছরটিও পার করে হতাশায় নিমজ্জিত মানুষটিও একইভাবে আসে শাহবাগে। আসে বন্ধুদের সঙ্গে। আসে বাংলানিউজের ক্যাম্পে। তারও একই কথা না পাই সরকারি চাকরি। গোটা দশেক দেশের গান লিখেছি এখন সেগুলোই আমার শক্তি। শাহবাগ এভাবে আরও কতজনকে যে শক্তি যোগাচ্ছে সে সংখ্যার হিসাব কষাও বৃথা। সবাই বলছে দেশকে একটি শক্তভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এই শক্তভিতে দাঁড়া হওয়া মানুষের অংকের হিসেব ১৬ কোটি ছাড়াবে।
স্কুল শেষে শিক্ষার্থী, অফিস শেষে চাকুরে, কাজের শেষে শ্রমিক সবারই যেনো গন্তব্য শাহবাগ। দশদিনেও একঘেয়েমী নেই। বরং প্রতিটি দিনই যেনো আলাদা কিছু। প্রতিদিনই নতুন মানুষের সমাগম। আবার একই মানুষ আসছে বার বার। এক জনের সঙ্গে আসে আরও অনেকে। একজনই শক্তিতে স্লোগানে হয়ে ওঠে হাজার জনের সমান। সেখানেও মেলেনা অংকের হিসাব।
এখানে মিলবে না আরও অনেক হিসাব। কতবার উচ্চারিত হয়েছে ফাঁসির দাবি। কতবার বলা হয়েছে তুই রাজাকার তুই রাজাকার। কতজন কতবার গাইছে আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালো বাসি। কত হাত উচ্চে তোলা হয়েছে, কত পা মেখে নিয়েছে প্রতিটি ধুলিকনা তার কোনো অংকই এখানে মেলানো যাবে না। এখানে সংখ্যাই শক্তি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাখির দৃষ্টি দিয়ে শাহবাগে তাকিয়ে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলোর শক্তি দেখা গেছে যে শক্তি বিস্তৃত ছিলো দেশজুড়ে। কিন্তু অতি দুর নরওয়ের বারগেন শহর থেকে যে গুটিকয় মানুষের একই প্রতিবাদ তাও কি কম। একই ধরনের প্রতিবাদের খবর ছবি তো আসছেই। যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলো স্টেট থেকে, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর কোন কোনায় কোথায় একজন বাঙ্গালীর বাস রয়েছে যেখানে নেই প্রতিবাদের উচ্চকিত স্বর। সে স্বর হয়তো কয়েক জনের কিন্তু সেই স্বরও শাহবাগের সমান শক্তিতে বলীয়ান। আবার সেই স্বর শাহবাগের শক্তিতে সুনামিতে রূপ দেয়। আর এসব কিছুই বিশ্ববাসীকে জানান দেয় বাঙ্গালীর শক্তি।
প্রতিদিনই মূল প্রতিবাদ মঞ্চে থাকছে অভিনব সব কর্মসূচি। জাগরণের গান, স্লোগানের ঝড়, নিরবতার শক্তি প্রদর্শণ শেষে মোমবাতির প্রজ্জ্বলন হয়ে গেলো। শুক্রবারে ডাক দেওয়া হয়েছে জাগরণ সমাবেশের। সে সমাবেশে লাখো মানুষের জমায়েত হবে। হবে স্লোগান, গান। শুক্রবারের জাগরণ সমাবেশে গণমানুষের পাশাপাশি সব সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে সেটাই প্রত্যাশা সবার।
No comments