নিষিদ্ধা কিন্তু ‘নিষিদ্ধ নয়’ এর নিষিদ্ধ কথন!
দাস সমাজে পিতৃ সত্ত্বা বা পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা
থাকলেও সামন্তবাদী সমাজে এসে পিতৃ সত্ত্বা বা পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমাজে
তার স্থায়ী আসন পাকাপোক্ত করে নেয়। ফলে এক বা বহু বিবাহের সাথে নারীর দেহ
বিক্রি বা বেশ্যাবৃত্তির প্রচলন ঘটে।খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ থেকে সতেরশো শতকের
মাঝামাঝি পর্যন্ত ছিল এই সামন্তবাদী সমাজের ব্যাপ্তি। এ সমাজে এসে আগেকার
পৌত্তিলকতা বা জড় বাদী ধর্মের স্থলে আসে একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং এই
একেশ্বরবাদী ধর্ম দর্শনেও আমরা নারীকে দেখি পুণ্যবান পুরুষের পুণ্যের
প্রতিদানে পুরস্কার স্বরূপ পারলৌকিক মনোরঞ্জনে; হুর, অপ্সরা ইত্যাদি নানা
অভিধায় পারলৌকিক যৌন কর্মী রূপে।
সে যাইহোক নারীর এই বেশ্যা বৃত্তির ইতিহাসের সাথে হাজার বছরের মানব ইতিহাস জড়িয়ে আছে। আমাদের এই উপমহাদেশে ‘বাঈ’ বা ‘বাইজী’ নামে এক ধরণের রক্ষিতা ছিল যারা অর্থের বিনিময়ে শুধু দেহদান করত না; শিল্পকলায় যেমন নাচ গান ইত্যাদিতে তাঁরা ছিল খুবই দক্ষ। মিরা বাঈ, বসন্ত সেনা প্রমুখ বাইজিরা এমনি গুণী প্রতিভাধর! ঢাকার নবাবদের সাথেও কয়েকজন বাইজীর সম্পর্কের ইতিহাস জানতে পাওয়া যায়(ঠিক এ মুহূর্তে নামগুলো মনে আসছে না) ।
এসব বাইজীরা রাজা, মহারাজা, জমিদার, বড় ভূস্বামীর মনোরঞ্জনে তাঁদের মহল বা বাগান বাড়ীতে এসে আসর মাতিয়ে রাখত। এর পাশাপাশি নদীর বা জল যোগাযোগের বিভিন্ন কেন্দ্র স্থলে বিশেষ করে ব্যবসা কেন্দ্র, যাকে গঞ্জ নামে ডাকা হত সেখানে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের জন্য গড়ে উঠত যৌন পল্লী। সেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় নারীকে আজও বেশ্যার ভূমিকায় দেখা যায়। পুঁজিবাদী সমাজে এসে হারেমখানার বিলুপ্তি ঘটলেও বিলুপ্ত হয় নি নারীর এই বেশ্যা বৃত্তি। সাধারণ যৌন পল্লীর সংখ্যা কমছে তাঁদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। যৌন কর্মীর পেশার কোন পরিবর্তন হয় নি। পরিবর্তন হয়েছে তার অবস্থানের, পরিবর্তন এসেছে তার খদ্দেরে; রূপান্তর ঘটছে যৌন পল্লীর, পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় গড়ে উঠেছে শ্রেণীর পতিতালয়!
এই পুঁজিবাদী সমাজ নারীর বেশ্যা বৃত্তির রক্ষক-ভক্ষক ও পৃষ্টপোষকতাকারী।আমরা জানি অর্থনৈতিক কাঠামো ও সমাজব্যবস্থা নারীকে বেশ্যায় রূপান্তর করে। পশ্চিমা পুঁজিবাদী সমাজে ক্যসিনো, বার সহ যৌন পল্লী আছে। দক্ষিণ এশিয়ার বাড়ীর কাছে ‘শ্যাম-দেশ’ নামে খ্যাত পুঁজিবাদী দেশ থাইল্যান্ড; তাঁরা নারীর এই বেশ্যা বৃত্তিকে একাধারে রাষ্ট্রীয় ও প্রতিস্ঠানিক রূপ দিয়েছে। থাইল্যান্ডের জাতীয় আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস থাই নারীসহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে পাচার হয়ে আসা নারীদের বেশ্যা বৃত্তি।
তবে আমাদের সরকারের সাথে থাই বা পশ্চিমা দেশের পার্থক্যের দিক হলো, তাঁরা পতিতা বৃত্তিকে যেমন পেশা হিসাবে দেখে এবং তেমনি তাঁদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত অধিকার সহ অন্যান্য সামাজিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে।
আমরাও একটি পুঁজিবাদী দেশ। আমরাও একেকজন একেশ্বরবাদী ধর্মের ধ্বজাধারী পুণ্যবান বান্দা। আমাদের সমাজেও বর্তমানে যৌনকর্মীর অভাবও পরিলক্ষিত হয় না।দেশের আনাচে কানাচে নানা যৌনপল্লী সহ বিভিন্ন পাড়ায়, মহল্লায়, রাস্তা-ঘাটে, ঝোপে-জঙ্গলে, শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে অনেক যৌনকর্মী আছে।
কিন্তু …
আমরা সমাজের নামে, ধর্মের নামে, সভ্যতার নামে যৌনপল্লী ভাঙ্গি এবং গড়ে তুলি আধুনিক রক্ষিতালয়। মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্য বিত্ত, ও অভিজাতের যৌনতা চরিতার্থ করার জন্য গড়ে তুলি হাজার হাজার হোটেল - রেস্ট হাউজ। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান বনানীতে জরীপ করলে হাজারের উপর এ ধরণের রেস্ট হাউজ ও হোটেল পাওয়া যাবে। অবশ্যই এ ধরণের রেস্ট হাউজ ও হোটেলের সাথে পুঁজির সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত এবং লাভজনক ব্যবসা বটে!!
কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য…?
হা রাস্তা-ঘাটে,ঝোপে-জঙ্গলে ভাসমান যারা আছে তাঁদের দ্বারা এই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ন্যুনতম একটা অংশের যৌনতা পূরণ হয় বৈকি। কিন্তু এই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের একটা বিশাল অংশ নিজের অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও সামাজিক অক্ষমতার জন্য ভাসমান পতিতাকে নিজের বাসা বাড়ীতে যেমন নিয়ে আসতে পারে না তেমনি বাস্তব কারণে পারে না রাস্তা-ঘাটে,ঝোপে-জঙ্গলে নিজের যৌনতা চরিতার্থ করতে।
এই সাধারণ মানুষের জন্য একটি সহজ উপায় হল একটি নির্দিষ্ট যৌন পল্লী। ঢাকায় ও নারয়নগঞ্জেই একটা মূলত স্বল্প আয়ের শ্রমজীবীর বাস। এই ঢাকায় ও নারয়নগঞ্জেই দুটি যৌন পল্লী ছিল। বিশেষ করে নারয়নগঞ্জের টান বাজারে পল্লীটি ছিল দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ। ৮-১০ হাজার পতিতার বাস। কিন্তু এই দুটি পল্লী উচ্ছেদ হলো। এরাই এখন বিচ্ছিন্ন হয়ে আমাদের এই সমাজের অলি গলিতে এসে ঠাই নিয়ে তাঁদের পেশা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাঁদের ঠিকানা এই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জানা নাই। কিন্তু বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতা- কর্মী, পুলিশের ইনফরমার থেকে কর্তা ব্যক্তি,পাড়া-মহল্লার টাউট, রংবাজ-মাস্তান, বিশেষ শ্রেণী ব্যক্তি তথা মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্য বিত্ত, অভিজাতের জন্য এদের ঠিকানা যেমন জানা তেমনি তাঁদের জন্য পতিতার দরজা উন্মুক্ত। এই শ্রেণী ব্যক্তিকে কখনো তার যৌনতাকে অবদমিত করতে হয় না। সোজা হিসাব, ক্রয় কর এবং ভোগ কর।
কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য অন্যান্য নানা সুযোগ সুবিধা কমে আসার মতোই যৌনতা ভোগ করার সুযোগও কমে এসেছে। অবদমিত যৌনতায় দিনানিপাত করতে করতে এক সময়ে সে হয়ে পরে ধর্ষকামী পশু। চাচাত বোন, মামাতো বোন, পাড়ার মেয়ে, কর্মস্থলের নারী সহকর্মী থেকে শুরু করে আসে পাশের কোন নারীকেই সে কিন্তু তখন ভোগের বাইরে বিবেচনা করে না, ধর্ষণ করে বসে।
ধর্ষকামীতা এক জটিল মনস্তাত্ত্বিক রোগই নয়, ধর্ষকামীতা পুরুষতন্ত্রের বিকৃত রূপ এবং সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোর সৃষ্ট এক উপজাত ক্ষত! নারী যতদিন সর্বহারা থেকে যাবে, যতদিন পর্যন্ত একজন মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি না পাবে ; ততদিন পর্যন্ত ধর্ষণের মত কিছু ঘটে যাবে। কিন্তু তারপরেও যে হারে ধর্ষণের মহামারি লেগেছে, তখন এই মহামারির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ভিন্ন এক বিশ্লেষণ চলে আসে। যখন কোন সাধারণ মানুষ ধর্ষণ করে, কোন নারী যখন ধর্ষণের শিকার হয় ; তখন মনে হয় অন্য একটি নারীই পারত তাকে রক্ষা করত; নারীই হতে পারে পরোক্ষভাবে নারীর রক্ষক। সে নারী হল যৌন পল্লীর একজন পতিতা।
একটি নিষিদ্ধ কবিতা
আপনি জেনে থাকবেন নিশ্চয়ই,
আপনার অজান্তেই আমি আপনাকে দেখি।
গল্পের বইয়ের মত আপনার ব্যাবচ্ছেদ করি,
মলাটের বাঁধন থেকে শুরু করে প্রকাশকের কথা,
প্রতিটি পৃষ্ঠা ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি, চোখ বন্ধ করে।
আপনার “ঘুমন্ত আমি”কে নিয়ে আমি কবিতা লিখি,
প্রতিটি শব্দ আপনার খাসা শরীরে আমি ঠোট চেপে
স্থাপন করি,
আমার চোখ আপনাকে সর্বদা দেখে, আপনার
আড়ালেও।
আপনার শাড়ি, শাড়ির ভিতরে জেগে থাকা ভরাট
যুগল স্তন,
স্তনের শীর্ষে হঠাৎ মুক্ত হওয়া সূচাল চূড়া,
অথবা সাদা ব্লাউজের আঙিনা থেকে উঁকি মারা
সিল্কের ব্রা,
রান্নাঘড়ের গরমে আপনার ভিজে যাওয়া পিঠের
মুদ্রন প্রকাশনা,
বগল উঁচিয়ে আপনার খোলা চুলের স্বভাবসুলভ খোপা
করা,
আপনার চিবুক থেকে গড়ানো ঘামের স্তনমুখী
যাত্রা,
গ্রীষ্মের দুপুরে জামা ফেটে বেড়িয়ে আসা নিরেট
দেহ খানা,
অথবা আপনার মাংসল পেটের নাভীতে মুখ রেখে
একবার বলতে চাই,
আমি আপনার প্রতিটি পরিচ্ছেদ পড়ি,
যৌবনদন্ডের শিশ্নে মশাল জ্বালিয়ে আমি আপনার
দুই উড়ুর ভিতরে প্রবেশ করি।
আপনি আমার জীবনের প্রথম জীবন্ত কবিতা।
সে যাইহোক নারীর এই বেশ্যা বৃত্তির ইতিহাসের সাথে হাজার বছরের মানব ইতিহাস জড়িয়ে আছে। আমাদের এই উপমহাদেশে ‘বাঈ’ বা ‘বাইজী’ নামে এক ধরণের রক্ষিতা ছিল যারা অর্থের বিনিময়ে শুধু দেহদান করত না; শিল্পকলায় যেমন নাচ গান ইত্যাদিতে তাঁরা ছিল খুবই দক্ষ। মিরা বাঈ, বসন্ত সেনা প্রমুখ বাইজিরা এমনি গুণী প্রতিভাধর! ঢাকার নবাবদের সাথেও কয়েকজন বাইজীর সম্পর্কের ইতিহাস জানতে পাওয়া যায়(ঠিক এ মুহূর্তে নামগুলো মনে আসছে না) ।
এসব বাইজীরা রাজা, মহারাজা, জমিদার, বড় ভূস্বামীর মনোরঞ্জনে তাঁদের মহল বা বাগান বাড়ীতে এসে আসর মাতিয়ে রাখত। এর পাশাপাশি নদীর বা জল যোগাযোগের বিভিন্ন কেন্দ্র স্থলে বিশেষ করে ব্যবসা কেন্দ্র, যাকে গঞ্জ নামে ডাকা হত সেখানে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের জন্য গড়ে উঠত যৌন পল্লী। সেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় নারীকে আজও বেশ্যার ভূমিকায় দেখা যায়। পুঁজিবাদী সমাজে এসে হারেমখানার বিলুপ্তি ঘটলেও বিলুপ্ত হয় নি নারীর এই বেশ্যা বৃত্তি। সাধারণ যৌন পল্লীর সংখ্যা কমছে তাঁদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। যৌন কর্মীর পেশার কোন পরিবর্তন হয় নি। পরিবর্তন হয়েছে তার অবস্থানের, পরিবর্তন এসেছে তার খদ্দেরে; রূপান্তর ঘটছে যৌন পল্লীর, পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় গড়ে উঠেছে শ্রেণীর পতিতালয়!
এই পুঁজিবাদী সমাজ নারীর বেশ্যা বৃত্তির রক্ষক-ভক্ষক ও পৃষ্টপোষকতাকারী।আমরা জানি অর্থনৈতিক কাঠামো ও সমাজব্যবস্থা নারীকে বেশ্যায় রূপান্তর করে। পশ্চিমা পুঁজিবাদী সমাজে ক্যসিনো, বার সহ যৌন পল্লী আছে। দক্ষিণ এশিয়ার বাড়ীর কাছে ‘শ্যাম-দেশ’ নামে খ্যাত পুঁজিবাদী দেশ থাইল্যান্ড; তাঁরা নারীর এই বেশ্যা বৃত্তিকে একাধারে রাষ্ট্রীয় ও প্রতিস্ঠানিক রূপ দিয়েছে। থাইল্যান্ডের জাতীয় আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস থাই নারীসহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে পাচার হয়ে আসা নারীদের বেশ্যা বৃত্তি।
তবে আমাদের সরকারের সাথে থাই বা পশ্চিমা দেশের পার্থক্যের দিক হলো, তাঁরা পতিতা বৃত্তিকে যেমন পেশা হিসাবে দেখে এবং তেমনি তাঁদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত অধিকার সহ অন্যান্য সামাজিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে।
আমরাও একটি পুঁজিবাদী দেশ। আমরাও একেকজন একেশ্বরবাদী ধর্মের ধ্বজাধারী পুণ্যবান বান্দা। আমাদের সমাজেও বর্তমানে যৌনকর্মীর অভাবও পরিলক্ষিত হয় না।দেশের আনাচে কানাচে নানা যৌনপল্লী সহ বিভিন্ন পাড়ায়, মহল্লায়, রাস্তা-ঘাটে, ঝোপে-জঙ্গলে, শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে অনেক যৌনকর্মী আছে।
কিন্তু …
আমরা সমাজের নামে, ধর্মের নামে, সভ্যতার নামে যৌনপল্লী ভাঙ্গি এবং গড়ে তুলি আধুনিক রক্ষিতালয়। মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্য বিত্ত, ও অভিজাতের যৌনতা চরিতার্থ করার জন্য গড়ে তুলি হাজার হাজার হোটেল - রেস্ট হাউজ। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান বনানীতে জরীপ করলে হাজারের উপর এ ধরণের রেস্ট হাউজ ও হোটেল পাওয়া যাবে। অবশ্যই এ ধরণের রেস্ট হাউজ ও হোটেলের সাথে পুঁজির সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত এবং লাভজনক ব্যবসা বটে!!
কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য…?
হা রাস্তা-ঘাটে,ঝোপে-জঙ্গলে ভাসমান যারা আছে তাঁদের দ্বারা এই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ন্যুনতম একটা অংশের যৌনতা পূরণ হয় বৈকি। কিন্তু এই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের একটা বিশাল অংশ নিজের অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও সামাজিক অক্ষমতার জন্য ভাসমান পতিতাকে নিজের বাসা বাড়ীতে যেমন নিয়ে আসতে পারে না তেমনি বাস্তব কারণে পারে না রাস্তা-ঘাটে,ঝোপে-জঙ্গলে নিজের যৌনতা চরিতার্থ করতে।
এই সাধারণ মানুষের জন্য একটি সহজ উপায় হল একটি নির্দিষ্ট যৌন পল্লী। ঢাকায় ও নারয়নগঞ্জেই একটা মূলত স্বল্প আয়ের শ্রমজীবীর বাস। এই ঢাকায় ও নারয়নগঞ্জেই দুটি যৌন পল্লী ছিল। বিশেষ করে নারয়নগঞ্জের টান বাজারে পল্লীটি ছিল দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ। ৮-১০ হাজার পতিতার বাস। কিন্তু এই দুটি পল্লী উচ্ছেদ হলো। এরাই এখন বিচ্ছিন্ন হয়ে আমাদের এই সমাজের অলি গলিতে এসে ঠাই নিয়ে তাঁদের পেশা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাঁদের ঠিকানা এই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জানা নাই। কিন্তু বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতা- কর্মী, পুলিশের ইনফরমার থেকে কর্তা ব্যক্তি,পাড়া-মহল্লার টাউট, রংবাজ-মাস্তান, বিশেষ শ্রেণী ব্যক্তি তথা মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্য বিত্ত, অভিজাতের জন্য এদের ঠিকানা যেমন জানা তেমনি তাঁদের জন্য পতিতার দরজা উন্মুক্ত। এই শ্রেণী ব্যক্তিকে কখনো তার যৌনতাকে অবদমিত করতে হয় না। সোজা হিসাব, ক্রয় কর এবং ভোগ কর।
কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য অন্যান্য নানা সুযোগ সুবিধা কমে আসার মতোই যৌনতা ভোগ করার সুযোগও কমে এসেছে। অবদমিত যৌনতায় দিনানিপাত করতে করতে এক সময়ে সে হয়ে পরে ধর্ষকামী পশু। চাচাত বোন, মামাতো বোন, পাড়ার মেয়ে, কর্মস্থলের নারী সহকর্মী থেকে শুরু করে আসে পাশের কোন নারীকেই সে কিন্তু তখন ভোগের বাইরে বিবেচনা করে না, ধর্ষণ করে বসে।
ধর্ষকামীতা এক জটিল মনস্তাত্ত্বিক রোগই নয়, ধর্ষকামীতা পুরুষতন্ত্রের বিকৃত রূপ এবং সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোর সৃষ্ট এক উপজাত ক্ষত! নারী যতদিন সর্বহারা থেকে যাবে, যতদিন পর্যন্ত একজন মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি না পাবে ; ততদিন পর্যন্ত ধর্ষণের মত কিছু ঘটে যাবে। কিন্তু তারপরেও যে হারে ধর্ষণের মহামারি লেগেছে, তখন এই মহামারির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ভিন্ন এক বিশ্লেষণ চলে আসে। যখন কোন সাধারণ মানুষ ধর্ষণ করে, কোন নারী যখন ধর্ষণের শিকার হয় ; তখন মনে হয় অন্য একটি নারীই পারত তাকে রক্ষা করত; নারীই হতে পারে পরোক্ষভাবে নারীর রক্ষক। সে নারী হল যৌন পল্লীর একজন পতিতা।
একটি নিষিদ্ধ কবিতা
আপনি জেনে থাকবেন নিশ্চয়ই,
আপনার অজান্তেই আমি আপনাকে দেখি।
গল্পের বইয়ের মত আপনার ব্যাবচ্ছেদ করি,
মলাটের বাঁধন থেকে শুরু করে প্রকাশকের কথা,
প্রতিটি পৃষ্ঠা ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি, চোখ বন্ধ করে।
আপনার “ঘুমন্ত আমি”কে নিয়ে আমি কবিতা লিখি,
প্রতিটি শব্দ আপনার খাসা শরীরে আমি ঠোট চেপে
স্থাপন করি,
আমার চোখ আপনাকে সর্বদা দেখে, আপনার
আড়ালেও।
আপনার শাড়ি, শাড়ির ভিতরে জেগে থাকা ভরাট
যুগল স্তন,
স্তনের শীর্ষে হঠাৎ মুক্ত হওয়া সূচাল চূড়া,
অথবা সাদা ব্লাউজের আঙিনা থেকে উঁকি মারা
সিল্কের ব্রা,
রান্নাঘড়ের গরমে আপনার ভিজে যাওয়া পিঠের
মুদ্রন প্রকাশনা,
বগল উঁচিয়ে আপনার খোলা চুলের স্বভাবসুলভ খোপা
করা,
আপনার চিবুক থেকে গড়ানো ঘামের স্তনমুখী
যাত্রা,
গ্রীষ্মের দুপুরে জামা ফেটে বেড়িয়ে আসা নিরেট
দেহ খানা,
অথবা আপনার মাংসল পেটের নাভীতে মুখ রেখে
একবার বলতে চাই,
আমি আপনার প্রতিটি পরিচ্ছেদ পড়ি,
যৌবনদন্ডের শিশ্নে মশাল জ্বালিয়ে আমি আপনার
দুই উড়ুর ভিতরে প্রবেশ করি।
আপনি আমার জীবনের প্রথম জীবন্ত কবিতা।
>>>নিশীথ@মুক্ত আকাশ
No comments