আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছেঃ বারাক ওবামা
‘আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে।’ বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বারাক ওবামা যখন এ কথা বলছিলেন, তাঁর চোখ দুটো ভরে ওঠে অশ্রুতে। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই রাষ্ট্রনায়ক এই অনুভূতি প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটের ঘটনায়।
ওই অঙ্গরাজ্যে গতকাল শুক্রবার একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে ২০ জন শিশুসহ ২৮ জন নিহত হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের নিউটাউনের স্যান্ডি হুক প্রাথমিক স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। সরকারি স্কুলটিতে কিন্ডারগার্টেন থেকে চতুর্থ গ্রেড পর্যন্ত ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, স্কুলে ঢুকে অ্যাডাম লানজা নামের ২০ বছর বয়সী একজন বন্দুকধারী গুলি ছুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য এ হত্যাযজ্ঞ ঘটান। বন্দুকধারী পরে গুলিতে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর গতকাল হোয়াইট হাউস থেকে ওবামা টেলিভিশনে ভাষণ দেন। গভীর মনঃকষ্ট নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওবামা বলেন, ছোট্ট শিশুদের বাবা-মা, দাদা-দাদি, ভাই-বোন ও নিহত প্রাপ্তবয়স্কদের পরিবারগুলোর জন্য আজ আমাদের হূদয় ভেঙে গেছে।’
ওবামা বলেন, ‘এর আগে গত কয়েক সপ্তাহে আমরা এ ধরনের দুঃখজনক বিপর্যয়ের ঘটনা অনেক সহ্য করেছি।’ এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার কমাতে কার্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা দেন তিনি।
এদিকে গতকালের ঘটনার পর হোয়াইট হাউসের বাইরে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।
গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন অঙ্গরাজ্যের এক বিপণিবিতানে এক বন্দুকধারী দুজনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করে। ওই ঘটনার তিন দিন পরই কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যে আবার এই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটল।
১৯৯৯ সালে কলোরাডোর কলাম্বিয়ান হাইস্কুলে দুই টিনএজার নিজেদের হত্যার আগে গুলি করে ১৩ জন শিক্ষার্থী ও কর্মীকে হত্যা করে। ২০০৭ সালে ভার্জিনিয়ার টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিতে ৩২ জন নিহত হয়। চলতি বছরের জুলাইয়ে কলোরাডোয় ১২ জন নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়।
গতকালের ঘটনার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদে দুঃখ ও শোক প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনও এ ঘটনায় গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে গুলির ঘটনায় ২৮ জনের নিহত হওয়ার খবরে ভীতি নেমে এসেছে ইউরোপে। ইউরোপের গণমাধ্যমে এ ঘটনাকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানি, ফ্রান্স, নরওয়ে, ব্রিটেন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঘটনা বেড়ে চলছে।
No comments