ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জরিমানার ভাগ দেওয়ার প্রস্তাব
পুঁজিবাজারের আইন লঙ্ঘনের কারণে কোনো বিনিয়োগকারী যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাহলে সেই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
শেয়ারবাজারে এমন বিধান চালু করতে চাইছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। কিন্তু এসইসির এই প্রস্তাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ সম্মত নয়।
উভয় স্টক এক্সচেঞ্জই বলছে, প্রস্তাবটি করার আগে তাদের বিষয়টি জানানোই হয়নি। স্টক এক্সচেঞ্জের মতে, জরিমানার ভাগ যদি বিনিয়োগকারীদের দিতেই হয়, সে ব্যাপারে স্পষ্টতা থাকতে হবে। অর্থাৎ কত টাকা, কী হারে বা কীভাবে দেওয়া হবে ইত্যাদি বিষয় নির্ধারিত থাকতে হবে।
এসইসি সূত্র আরও জানায়, দোষী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান জরিমানা না দিয়ে উল্টো এসইসির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। বছরের পর বছর চলতে থাকে এ মামলা। এসইসি চাইছে, এসইসির বিরুদ্ধে মামলা করার আগে আরোপিত জরিমানার অন্তত ২৫ শতাংশ সংস্থাটির তহবিলে জমা রাখতে হবে। ডিএসই-ডিএসই এতেও রাজি নয়।
এসইসি বলেছে, আইন লঙ্ঘনের দায়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যে জরিমানা আদায় করা হয়, তার ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরাও পাবেন। বিদ্যমান ১৯৬৯ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশে এমন কোনো ধারা নেই। তবে ধারাটি সংযোজন করে অধ্যাদেশ সংশোধন করতে চায় এসইসি।
সম্প্রতি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের সংশোধনী চেয়ে উল্লিখিত দুই প্রস্তাবসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আরও কিছু প্রস্তাব জমা দিয়েছে এসইসি। এসইসির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিলের শুরুর দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব অমলেন্দু মুখার্জি এতে সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ডিএসই এবং সিএসইর প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাকিস্তান আমলের এ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের বিভিন্ন অসংগতির কথা গত পাঁচ বছর আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু তা সংশোধনের উদ্যোগ আর নেওয়া হয়নি। এসইসি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সংশোধনের মাধ্যমে অধ্যাদেশটিকে যুগোপযোগী করার জন্য কয়েক দফা প্রস্তাবও পাঠিয়েছে। কিন্তু কোনোবারই তা আমলে নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি বাজার ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে বিদ্যমান বিভিন্ন আইনকানুনের সংশোধনের তাগিদ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তার পরই অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রকাশের দিনও অর্থমন্ত্রী যে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন, তার মধ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের সংশোধনীর বিষয়টিও রয়েছে।
জানা গেছে, এরই মধ্যে ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ (সংশোধন), ২০১১’ নামে একটি খসড়া তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। অনুমোদনের জন্য তা অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপিতও হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। খসড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী-বান্ধব বেশ কিছু নতুন ধারা সংযোজন এবং বিদ্যমান কিছু ধারার সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের জন্য দোষী প্রমাণিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনেক সময় জরিমানা করা হয়। আদায় করা জরিমানার অর্থ জমা হয় এসইসি তথা সরকারি কোষাগারে। এ জরিমানার একটি অংশ মাত্রাভেদে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে দেওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, অর্থঋণ আদালতে রিট মামলা করতে গেলে ব্যাংকের ঋণখেলাপি গ্রাহকদের আগে ব্যাংকের অনুকূলে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা রাখতে হয়।
এসইসির প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে সংঘটিত অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তাধীন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যে ব্যাংকে লেনদেন করে, সেই ব্যাংক ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য এসইসিকে দেয় না। কারণ, আইনে সুযোগ না থাকায় এসইসির নিয়োজিত তদন্ত কমিটির কাছে চাহিদা অনুসারে ব্যাংকগুলো কোনো তথ্য দিতে বাধ্য নয়। তাই তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশে সংযোজন করা যেতে পারে।
বিদ্যমান আইনে ১৪ দিনের জন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার লেনদেন স্থগিত রাখতে পারে এসইসি। প্রয়োজনে তা আরও ১৪ দিন পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে আইনে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে লেনদেন স্থগিতের সময়সীমা ৯০ দিন এবং প্রয়োজনে তা আরও ৪৫ দিন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
বর্তমানে শুধু ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের অধীনে গঠিত কোম্পানির শেয়ার বা ঋণপত্র (ডিবেঞ্চার) ইস্যুর ক্ষেত্রে এসইসির সম্মতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোম্পানি আইন অনুযায়ী গঠিত নয়, এমন কৃত্রিম আইনগত সত্তাসম্পন্ন কোম্পানিও এসইসির অনুমতি নিয়ে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে।
বিদ্যমান সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশে ব্যাংকের সংজ্ঞা নির্ধারিত রয়েছে ১৯৬২ সালের ব্যাংকিং কোম্পানি অধ্যাদেশ অনুযায়ী। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বলেন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ যে কতটা অনাধুনিক এ থেকেই তা বোঝা যায়। ৫০ বছর ধরে এ নিয়ে কেউ ভাবেইনি। সংশোধনী প্রস্তাবে তাই বলা হয়েছে, ব্যাংক বলতে ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসরণ করতে হবে।
যোগাযোগ করলে এসইসির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৬৯ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশটি যুগোপযোগী ও অধিকতর বিনিয়োগকারী-বান্ধব করতে সরকারের কাছে তা সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অধ্যাদেশটি যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, আইন সংশোধনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, বাজারের স্বার্থে অবশ্যই তা শুভ উদ্যোগ। তবে জরিমানার অঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা কীভাবে পাবেন, সেই প্রক্রিয়াটির স্পষ্টতা থাকতে হবে।
তদন্তের প্রয়োজনে ব্যাংক হিসাবের তথ্য এবং লেনদেন বন্ধের সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দুটিও বাস্তবোচিত ও সময়োচিত বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ খান।
সিএসইর সভাপতি ফখরউদ্দিন আলী আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যাদেশটি সংশোধনীর উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও প্রস্তাবগুলো দিয়েছে এসইসি নিজের মতো করে। এ ব্যাপারে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জেরই যে কিছু বলার থাকতে পারে, এসইসি তা মনেই করেনি।
তবে বাজার ছোট হলেও বিশ্ব পুঁজিবাজারে যে ধরনের নিয়মকানুন চালু রয়েছে, তা থেকে বাইরে থাকতে চান না বলে জানান সিএসইর সভাপতি।
শেয়ারবাজারে এমন বিধান চালু করতে চাইছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। কিন্তু এসইসির এই প্রস্তাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ সম্মত নয়।
উভয় স্টক এক্সচেঞ্জই বলছে, প্রস্তাবটি করার আগে তাদের বিষয়টি জানানোই হয়নি। স্টক এক্সচেঞ্জের মতে, জরিমানার ভাগ যদি বিনিয়োগকারীদের দিতেই হয়, সে ব্যাপারে স্পষ্টতা থাকতে হবে। অর্থাৎ কত টাকা, কী হারে বা কীভাবে দেওয়া হবে ইত্যাদি বিষয় নির্ধারিত থাকতে হবে।
এসইসি সূত্র আরও জানায়, দোষী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান জরিমানা না দিয়ে উল্টো এসইসির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। বছরের পর বছর চলতে থাকে এ মামলা। এসইসি চাইছে, এসইসির বিরুদ্ধে মামলা করার আগে আরোপিত জরিমানার অন্তত ২৫ শতাংশ সংস্থাটির তহবিলে জমা রাখতে হবে। ডিএসই-ডিএসই এতেও রাজি নয়।
এসইসি বলেছে, আইন লঙ্ঘনের দায়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যে জরিমানা আদায় করা হয়, তার ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরাও পাবেন। বিদ্যমান ১৯৬৯ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশে এমন কোনো ধারা নেই। তবে ধারাটি সংযোজন করে অধ্যাদেশ সংশোধন করতে চায় এসইসি।
সম্প্রতি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের সংশোধনী চেয়ে উল্লিখিত দুই প্রস্তাবসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আরও কিছু প্রস্তাব জমা দিয়েছে এসইসি। এসইসির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিলের শুরুর দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব অমলেন্দু মুখার্জি এতে সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ডিএসই এবং সিএসইর প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাকিস্তান আমলের এ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের বিভিন্ন অসংগতির কথা গত পাঁচ বছর আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু তা সংশোধনের উদ্যোগ আর নেওয়া হয়নি। এসইসি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সংশোধনের মাধ্যমে অধ্যাদেশটিকে যুগোপযোগী করার জন্য কয়েক দফা প্রস্তাবও পাঠিয়েছে। কিন্তু কোনোবারই তা আমলে নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি বাজার ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে বিদ্যমান বিভিন্ন আইনকানুনের সংশোধনের তাগিদ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তার পরই অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রকাশের দিনও অর্থমন্ত্রী যে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন, তার মধ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের সংশোধনীর বিষয়টিও রয়েছে।
জানা গেছে, এরই মধ্যে ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ (সংশোধন), ২০১১’ নামে একটি খসড়া তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। অনুমোদনের জন্য তা অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপিতও হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। খসড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী-বান্ধব বেশ কিছু নতুন ধারা সংযোজন এবং বিদ্যমান কিছু ধারার সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের জন্য দোষী প্রমাণিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনেক সময় জরিমানা করা হয়। আদায় করা জরিমানার অর্থ জমা হয় এসইসি তথা সরকারি কোষাগারে। এ জরিমানার একটি অংশ মাত্রাভেদে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে দেওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, অর্থঋণ আদালতে রিট মামলা করতে গেলে ব্যাংকের ঋণখেলাপি গ্রাহকদের আগে ব্যাংকের অনুকূলে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা রাখতে হয়।
এসইসির প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে সংঘটিত অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তাধীন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যে ব্যাংকে লেনদেন করে, সেই ব্যাংক ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য এসইসিকে দেয় না। কারণ, আইনে সুযোগ না থাকায় এসইসির নিয়োজিত তদন্ত কমিটির কাছে চাহিদা অনুসারে ব্যাংকগুলো কোনো তথ্য দিতে বাধ্য নয়। তাই তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশে সংযোজন করা যেতে পারে।
বিদ্যমান আইনে ১৪ দিনের জন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার লেনদেন স্থগিত রাখতে পারে এসইসি। প্রয়োজনে তা আরও ১৪ দিন পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে আইনে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে লেনদেন স্থগিতের সময়সীমা ৯০ দিন এবং প্রয়োজনে তা আরও ৪৫ দিন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
বর্তমানে শুধু ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের অধীনে গঠিত কোম্পানির শেয়ার বা ঋণপত্র (ডিবেঞ্চার) ইস্যুর ক্ষেত্রে এসইসির সম্মতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোম্পানি আইন অনুযায়ী গঠিত নয়, এমন কৃত্রিম আইনগত সত্তাসম্পন্ন কোম্পানিও এসইসির অনুমতি নিয়ে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে।
বিদ্যমান সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশে ব্যাংকের সংজ্ঞা নির্ধারিত রয়েছে ১৯৬২ সালের ব্যাংকিং কোম্পানি অধ্যাদেশ অনুযায়ী। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বলেন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ যে কতটা অনাধুনিক এ থেকেই তা বোঝা যায়। ৫০ বছর ধরে এ নিয়ে কেউ ভাবেইনি। সংশোধনী প্রস্তাবে তাই বলা হয়েছে, ব্যাংক বলতে ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসরণ করতে হবে।
যোগাযোগ করলে এসইসির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৬৯ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশটি যুগোপযোগী ও অধিকতর বিনিয়োগকারী-বান্ধব করতে সরকারের কাছে তা সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অধ্যাদেশটি যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, আইন সংশোধনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, বাজারের স্বার্থে অবশ্যই তা শুভ উদ্যোগ। তবে জরিমানার অঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা কীভাবে পাবেন, সেই প্রক্রিয়াটির স্পষ্টতা থাকতে হবে।
তদন্তের প্রয়োজনে ব্যাংক হিসাবের তথ্য এবং লেনদেন বন্ধের সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দুটিও বাস্তবোচিত ও সময়োচিত বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ খান।
সিএসইর সভাপতি ফখরউদ্দিন আলী আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যাদেশটি সংশোধনীর উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও প্রস্তাবগুলো দিয়েছে এসইসি নিজের মতো করে। এ ব্যাপারে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জেরই যে কিছু বলার থাকতে পারে, এসইসি তা মনেই করেনি।
তবে বাজার ছোট হলেও বিশ্ব পুঁজিবাজারে যে ধরনের নিয়মকানুন চালু রয়েছে, তা থেকে বাইরে থাকতে চান না বলে জানান সিএসইর সভাপতি।
No comments