সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ক্ষুদ্রঋণ এখন দারিদ্র্য কমানোর একটি হাতিয়ার
কিছু সীমাবদ্ধতার পরও ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য হ্রাসের একটি হাতিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর তাই এর পরিধিও অনেক বেড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় মাইক্রোফিন্যান্স ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক কর্মশালায় অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা ক্ষুদ্রঋণের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে এ রকম অভিমতই তুলে ধরেন।
এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর হচ্ছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু এটি এক ধরনের উদ্ভাবনী ব্যাংকিং। প্রচলিত ব্যাংকিং যেখানে গরিব মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না সেখানে তারা ক্ষুদ্রঋণের সেবা পাচ্ছে।
রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে সাংবাদিকদের জন্য এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যের উলস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস আর ওসমানী, কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ এম আহসান, পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মহাব্যবস্থাপক ফজলুল কাদের, যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা ডিএফআইডির ইন্টারন্যাশনাল টিম লিডার এম আমানুল্লাহ খান, ক্ষুদ্রঋণ বিশেষজ্ঞ দেওয়ান এ এইচ আলমগীর প্রমুখ। কর্মশালায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান
নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল।
ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার সম্পর্কে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণের জন্য যে তহবিল আসে তা বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদের হারে দিতে হবে—বিষয়টি তা নয়। বরং ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার এমন জায়গায় রাখতে হবে তা দিয়ে ঋণের পরিচালন ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হয়।
এটা কখনোই মুনাফাভিত্তিক হতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এমন ধরনের ক্ষুদ্রঋণই বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে। এবং এটা মুনাফার জন্য নয়।
ওয়াহিদ মাহমুদ আরও বলেন, ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার হিসেবে দেখলে বিনিয়োগ ফেরত আসা কিংবা পরিচালন ব্যয়—এসব বিষয় গৌণ হয়ে পড়ে। দারিদ্র্য বিমোচন কতটা হচ্ছে সেটাই দেখার বিষয়। এখানে কিছু ভর্তুকি থাকলেও ক্ষতি নেই।
এই অর্থনীতিবিদ এ প্রসঙ্গে আরও জানান যে সামাজিক নিরাপত্তার নামে দারিদ্র্য বিমোচনের স্বার্থে রাষ্ট্রের উদ্যোগগুলো সবই ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া হয়।
ক্ষুদ্রঋণের জালে গরিবেরা আটকা পড়ে যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে ওয়াহিদ মাহমুদ বলেন, ঋণ ক্রমান্বয়ে বাড়তে পারে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতার সম্পদ বাড়ছে কি না তাও দেখতে হবে। দেখতে হবে নিট সম্পদে ওই ব্যক্তি আরও দরিদ্র হলো কি না।
ঋণ আদায় করতে ঘরের টিনের চাল খুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে—এ প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, ঋণ আদায় করতে কারও বাড়ির ভেতরে যাওয়া আইনে নিষেধ রয়েছে। প্রশ্ন হলো, দুই কোটি ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতার মধ্যে কয়জনের বাড়ির টিন খুলে নেওয়া হয়েছে।
ওয়াহিদ মাহমুদ আরও বলেন, ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক প্রতিবেদন বা গবেষণা করা উচিত নয়। বরং, প্রকৃত চিত্রই তুলে ধরা উচিত। তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, দারিদ্র্য বিমোচন মানে কি গরিব লোককে ধনী বানানো?
এস আর ওসমানী বলেন, ক্ষুদ্রঋণের টাকা নিয়ে কেউ যদি উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার না করে পারিবারিক কাজে ব্যয়ও করে ফেলে, তাতেও একধরনের ইতিবাচক দিক রয়েছে। কেননা, ওই গরিব মানুষটি যদি ঋণ না পেত, তাহলে তাকে তার সম্পদ বিক্রি করতে হতো।
ক্ষুদ্রঋণ একধরনের সঞ্চয়ী মনোভাবও তৈরি করে বলে অভিমত দেন ওসমানী।
দেওয়ান এ এইচ আলমগীর জানান, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিতে এখন আর শুধু টাকা দিয়ে সহায়তা দেওয়া হয় না। বরং ঋণগ্রহীতার পণ্যের বাজার সুবিধা, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাগুলোও নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঋণগ্রহীতার সঞ্চয়, বিমাসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
ফজলুল কাদের জানান, বর্তমান বিশ্বে দুই ধরনের ক্ষুদ্রঋণ চালু রয়েছে। একটি হলো উন্নয়ন ধ্যান-ধারণায়, আর অন্যটি বাণিজ্যিক মূল্যবোধে। বাংলাদেশে উন্নয়ন ধ্যান-ধারণায় ক্ষুদ্রঋণ প্রচলিত রয়েছে। আর লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ ও ভারতের একটি রাজ্যে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ক্ষুদ্রঋণ চালু রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় মাইক্রোফিন্যান্স ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক কর্মশালায় অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা ক্ষুদ্রঋণের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে এ রকম অভিমতই তুলে ধরেন।
এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর হচ্ছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু এটি এক ধরনের উদ্ভাবনী ব্যাংকিং। প্রচলিত ব্যাংকিং যেখানে গরিব মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না সেখানে তারা ক্ষুদ্রঋণের সেবা পাচ্ছে।
রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে সাংবাদিকদের জন্য এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যের উলস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস আর ওসমানী, কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ এম আহসান, পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মহাব্যবস্থাপক ফজলুল কাদের, যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা ডিএফআইডির ইন্টারন্যাশনাল টিম লিডার এম আমানুল্লাহ খান, ক্ষুদ্রঋণ বিশেষজ্ঞ দেওয়ান এ এইচ আলমগীর প্রমুখ। কর্মশালায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান
নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল।
ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার সম্পর্কে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণের জন্য যে তহবিল আসে তা বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদের হারে দিতে হবে—বিষয়টি তা নয়। বরং ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার এমন জায়গায় রাখতে হবে তা দিয়ে ঋণের পরিচালন ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হয়।
এটা কখনোই মুনাফাভিত্তিক হতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এমন ধরনের ক্ষুদ্রঋণই বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে। এবং এটা মুনাফার জন্য নয়।
ওয়াহিদ মাহমুদ আরও বলেন, ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার হিসেবে দেখলে বিনিয়োগ ফেরত আসা কিংবা পরিচালন ব্যয়—এসব বিষয় গৌণ হয়ে পড়ে। দারিদ্র্য বিমোচন কতটা হচ্ছে সেটাই দেখার বিষয়। এখানে কিছু ভর্তুকি থাকলেও ক্ষতি নেই।
এই অর্থনীতিবিদ এ প্রসঙ্গে আরও জানান যে সামাজিক নিরাপত্তার নামে দারিদ্র্য বিমোচনের স্বার্থে রাষ্ট্রের উদ্যোগগুলো সবই ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া হয়।
ক্ষুদ্রঋণের জালে গরিবেরা আটকা পড়ে যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে ওয়াহিদ মাহমুদ বলেন, ঋণ ক্রমান্বয়ে বাড়তে পারে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতার সম্পদ বাড়ছে কি না তাও দেখতে হবে। দেখতে হবে নিট সম্পদে ওই ব্যক্তি আরও দরিদ্র হলো কি না।
ঋণ আদায় করতে ঘরের টিনের চাল খুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে—এ প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, ঋণ আদায় করতে কারও বাড়ির ভেতরে যাওয়া আইনে নিষেধ রয়েছে। প্রশ্ন হলো, দুই কোটি ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতার মধ্যে কয়জনের বাড়ির টিন খুলে নেওয়া হয়েছে।
ওয়াহিদ মাহমুদ আরও বলেন, ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক প্রতিবেদন বা গবেষণা করা উচিত নয়। বরং, প্রকৃত চিত্রই তুলে ধরা উচিত। তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, দারিদ্র্য বিমোচন মানে কি গরিব লোককে ধনী বানানো?
এস আর ওসমানী বলেন, ক্ষুদ্রঋণের টাকা নিয়ে কেউ যদি উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার না করে পারিবারিক কাজে ব্যয়ও করে ফেলে, তাতেও একধরনের ইতিবাচক দিক রয়েছে। কেননা, ওই গরিব মানুষটি যদি ঋণ না পেত, তাহলে তাকে তার সম্পদ বিক্রি করতে হতো।
ক্ষুদ্রঋণ একধরনের সঞ্চয়ী মনোভাবও তৈরি করে বলে অভিমত দেন ওসমানী।
দেওয়ান এ এইচ আলমগীর জানান, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিতে এখন আর শুধু টাকা দিয়ে সহায়তা দেওয়া হয় না। বরং ঋণগ্রহীতার পণ্যের বাজার সুবিধা, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাগুলোও নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঋণগ্রহীতার সঞ্চয়, বিমাসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
ফজলুল কাদের জানান, বর্তমান বিশ্বে দুই ধরনের ক্ষুদ্রঋণ চালু রয়েছে। একটি হলো উন্নয়ন ধ্যান-ধারণায়, আর অন্যটি বাণিজ্যিক মূল্যবোধে। বাংলাদেশে উন্নয়ন ধ্যান-ধারণায় ক্ষুদ্রঋণ প্রচলিত রয়েছে। আর লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ ও ভারতের একটি রাজ্যে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ক্ষুদ্রঋণ চালু রয়েছে।
No comments