দিলশানকে উদাহরণ মানছেন আশরাফুল
সাড়ে ১১ বছর আগে এই শ্রীলঙ্কাতেই তাঁর দুনিয়া কাঁপানো টেস্ট অভিষেক। সেই শ্রীলঙ্কাতেই আবার নতুন করে শুরু করতে চান মোহাম্মদ আশরাফুল। প্রত্যাশাভঙ্গের বেদনা আর অপ্রাপ্তির হাহাকার ঘুচিয়ে লিখতে চান ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায়।
সেই লক্ষ্য পূরণে সামনে একটা উদাহরণও রেখেছেন। ঘটনাচক্রে তিনিও এই শ্রীলঙ্কারই এক ব্যাটসম্যান। তিলকরত্নে দিলশান। ‘বিপিএলের সময় দিলশানের সঙ্গে কথা হলো। ও বলল, ২০০৯ সালে ওপেন করার সিদ্ধান্তই ওর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমিও অমন কিছুই করতে চাই’—প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পর বললেন আশরাফুল।
মিডল অর্ডারে খেলে প্রথম ৫৮ টেস্টে যাঁর আটটি সেঞ্চুরি, ২০০৯ সালে ওপেনারের ভূমিকায় আবির্ভূত হওয়ার পর সেই দিলশানেরই ২৭ টেস্টে সাতটি সেঞ্চুরি। আশরাফুলও কি তাহলে টেস্টে ওপেন করার কথা ভাবছেন?
ক্যারিয়ারের শুরুতে ওপেনারই ছিলেন। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে অনেকবারই ওপেন করেছেন। মাঝখানে টেস্টেও ওপেনার হিসেবে ফেরার চিন্তা থেকে জাতীয় লিগে ওপেন করতে শুরু করেছিলেন। আপাতত অবশ্য সেই চিন্তা নেই। প্রস্তুতি ম্যাচে ৩ নম্বরে খেলেছেন। সেঞ্চুরি করে প্রথম টেস্টের দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তাও দূর হয়েছে। ৩ নম্বরে খেলার মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছেন।
১৫১ বলে ১০২ রানের ইনিংসটিতে যেটি সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো, তিনি নিজেও সেটিকেই বললেন এটির বিশেষত্ব, ‘আমি ইনিংস গড়তে চেয়েছি। সবচেয়ে বেশি চেষ্টা করেছি কোনো বোলার যেন আমাকে টানা বেশি বল করতে না পারে। যে কারণে সিঙ্গেল নিয়ে নন স্ট্রাইকার প্রান্তে চলে যেতে চেয়েছি।’
প্রথম সেশনে যত বল খেলেছেন, ছেড়েছেন তার বেশি। একটা সময় বলতেন, ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই দু-তিনটি চার মারলে নিজেকে তাঁর উইকেটে সেট বলে মনে হয়। সেই মতাদর্শ থেকে মনে হয় সরে এসেছেন, ‘এখনো শুরুতেই দু-তিনটি চার মারতে পারলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তবে এখন আমি একটু সময় নিতে চাই।’
গত মৌসুমে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে সেঞ্চুরি করেছেন। সেঞ্চুরি করেছেন বিপিএলেও। আধুনিক যুগের ক্রিকেটারদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ এক ফরম্যাট থেকে আরেক ফরম্যাটে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া। আশরাফুল অবশ্য সেটিকে খুব কঠিন বলে মনে করেন না, ‘কয়েক দিন প্র্যাকটিস করলে আর দু-তিনটি ইনিংস খেললেই ঠিক হয়ে যায়। বিপিএলের পর এখানে আসার আগে আমি দুটি ফার্স্ট ক্লাস ইনিংস (বিসিএল ফাইনালে) খেলেছি, এটি খুব কাজে এসেছে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার তিনি। একসময় ছিলেন দেশের মানুষের নয়নমণি। প্রত্যাশাভঙ্গের বেদনা সইতে সইতে বাংলাদেশ এখন আশরাফুলকে নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। এক দল এখনো পুরোনো দিনের আশরাফুল আবার ফিরে আসবেন বলে আশায় বুক বাঁধে। আরেক দল আশরাফুলের নাম শুনলেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে। বাংলাদেশের আর কোনো ক্রিকেটার মানুষের মনে এমন পুরো বিপরীতমুখী অনুভূতির জন্ম দেননি কখনো। শুধু বাংলাদেশ কেন, ক্রিকেট-বিশ্বেই এমন আরেকটি উদাহরণ খুঁজে পাওয়া কঠিন। আশরাফুল নিজেও তা জানেন। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তিতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য তাঁকেও খুব পোড়ায়। গত কিছুদিন কথায় কথায় নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে নেন। দিলশানের উদাহরণটা দেওয়ার সময়ও যেমন বললেন, ‘১০-১১ বছরে কিছুই তো দিতে পারিনি, আবার একটু চেষ্টা করে দেখি।’
একেবারেই কিছু দেননি, তা নয়। টেস্টে পাঁচটি সেঞ্চুরি, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রথম দিকের বড় বড় প্রায় সব কটি জয়েই আশরাফুলের জাদুর ছোঁয়া আছে। সেসব এখন আশরাফুলের কাছেও দূর অতীত বলে মনে হয়। যে কারণে আবার এই নতুন করে শুরুর প্রতিজ্ঞা। সেই নতুন শুরুর জন্য শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো প্রতিপক্ষ আর পেতে পারতেন না, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার সময় আমার মনে বাড়তি একটা আত্মবিশ্বাস কাজ করে। ওদের সঙ্গে খেলতে আমার খুব মজাও। যখন মুরালি ছিল, তখনো মনে হতো আমি ওদের বিপক্ষে রান করবই। যে বার (২০০৭ সালে) অধিনায়ক হয়ে শ্রীলঙ্কায় এলাম, জানতাম আমি একটা হানড্রেড মারবই। চতুর্থ ইনিংসে গিয়ে হলেও ঠিকই মেরেছি।’
এবারও কি তেমন কিছুই মনে হচ্ছে? আশরাফুল শুধু হাসেন।
সেই লক্ষ্য পূরণে সামনে একটা উদাহরণও রেখেছেন। ঘটনাচক্রে তিনিও এই শ্রীলঙ্কারই এক ব্যাটসম্যান। তিলকরত্নে দিলশান। ‘বিপিএলের সময় দিলশানের সঙ্গে কথা হলো। ও বলল, ২০০৯ সালে ওপেন করার সিদ্ধান্তই ওর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমিও অমন কিছুই করতে চাই’—প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পর বললেন আশরাফুল।
মিডল অর্ডারে খেলে প্রথম ৫৮ টেস্টে যাঁর আটটি সেঞ্চুরি, ২০০৯ সালে ওপেনারের ভূমিকায় আবির্ভূত হওয়ার পর সেই দিলশানেরই ২৭ টেস্টে সাতটি সেঞ্চুরি। আশরাফুলও কি তাহলে টেস্টে ওপেন করার কথা ভাবছেন?
ক্যারিয়ারের শুরুতে ওপেনারই ছিলেন। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে অনেকবারই ওপেন করেছেন। মাঝখানে টেস্টেও ওপেনার হিসেবে ফেরার চিন্তা থেকে জাতীয় লিগে ওপেন করতে শুরু করেছিলেন। আপাতত অবশ্য সেই চিন্তা নেই। প্রস্তুতি ম্যাচে ৩ নম্বরে খেলেছেন। সেঞ্চুরি করে প্রথম টেস্টের দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তাও দূর হয়েছে। ৩ নম্বরে খেলার মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছেন।
১৫১ বলে ১০২ রানের ইনিংসটিতে যেটি সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো, তিনি নিজেও সেটিকেই বললেন এটির বিশেষত্ব, ‘আমি ইনিংস গড়তে চেয়েছি। সবচেয়ে বেশি চেষ্টা করেছি কোনো বোলার যেন আমাকে টানা বেশি বল করতে না পারে। যে কারণে সিঙ্গেল নিয়ে নন স্ট্রাইকার প্রান্তে চলে যেতে চেয়েছি।’
প্রথম সেশনে যত বল খেলেছেন, ছেড়েছেন তার বেশি। একটা সময় বলতেন, ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই দু-তিনটি চার মারলে নিজেকে তাঁর উইকেটে সেট বলে মনে হয়। সেই মতাদর্শ থেকে মনে হয় সরে এসেছেন, ‘এখনো শুরুতেই দু-তিনটি চার মারতে পারলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তবে এখন আমি একটু সময় নিতে চাই।’
গত মৌসুমে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে সেঞ্চুরি করেছেন। সেঞ্চুরি করেছেন বিপিএলেও। আধুনিক যুগের ক্রিকেটারদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ এক ফরম্যাট থেকে আরেক ফরম্যাটে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া। আশরাফুল অবশ্য সেটিকে খুব কঠিন বলে মনে করেন না, ‘কয়েক দিন প্র্যাকটিস করলে আর দু-তিনটি ইনিংস খেললেই ঠিক হয়ে যায়। বিপিএলের পর এখানে আসার আগে আমি দুটি ফার্স্ট ক্লাস ইনিংস (বিসিএল ফাইনালে) খেলেছি, এটি খুব কাজে এসেছে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার তিনি। একসময় ছিলেন দেশের মানুষের নয়নমণি। প্রত্যাশাভঙ্গের বেদনা সইতে সইতে বাংলাদেশ এখন আশরাফুলকে নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। এক দল এখনো পুরোনো দিনের আশরাফুল আবার ফিরে আসবেন বলে আশায় বুক বাঁধে। আরেক দল আশরাফুলের নাম শুনলেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে। বাংলাদেশের আর কোনো ক্রিকেটার মানুষের মনে এমন পুরো বিপরীতমুখী অনুভূতির জন্ম দেননি কখনো। শুধু বাংলাদেশ কেন, ক্রিকেট-বিশ্বেই এমন আরেকটি উদাহরণ খুঁজে পাওয়া কঠিন। আশরাফুল নিজেও তা জানেন। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তিতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য তাঁকেও খুব পোড়ায়। গত কিছুদিন কথায় কথায় নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে নেন। দিলশানের উদাহরণটা দেওয়ার সময়ও যেমন বললেন, ‘১০-১১ বছরে কিছুই তো দিতে পারিনি, আবার একটু চেষ্টা করে দেখি।’
একেবারেই কিছু দেননি, তা নয়। টেস্টে পাঁচটি সেঞ্চুরি, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রথম দিকের বড় বড় প্রায় সব কটি জয়েই আশরাফুলের জাদুর ছোঁয়া আছে। সেসব এখন আশরাফুলের কাছেও দূর অতীত বলে মনে হয়। যে কারণে আবার এই নতুন করে শুরুর প্রতিজ্ঞা। সেই নতুন শুরুর জন্য শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো প্রতিপক্ষ আর পেতে পারতেন না, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার সময় আমার মনে বাড়তি একটা আত্মবিশ্বাস কাজ করে। ওদের সঙ্গে খেলতে আমার খুব মজাও। যখন মুরালি ছিল, তখনো মনে হতো আমি ওদের বিপক্ষে রান করবই। যে বার (২০০৭ সালে) অধিনায়ক হয়ে শ্রীলঙ্কায় এলাম, জানতাম আমি একটা হানড্রেড মারবই। চতুর্থ ইনিংসে গিয়ে হলেও ঠিকই মেরেছি।’
এবারও কি তেমন কিছুই মনে হচ্ছে? আশরাফুল শুধু হাসেন।
No comments