বাবাকে সেঞ্চুরি উৎসর্গ ইমরুলের
সেঞ্চুরি করার পর শূন্যে লাফ দেওয়ার সময় যাঁর মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠেছে, হোটেলে ফিরেই পেলেন তাঁর ফোন। কী বললেন বাবা? ‘খুব খুশি। বাবার কারণেই আমার ক্রিকেটার হওয়া। নিজে খেলতেন, বেশি দূর যেতে পারেননি। আমাকে নিয়ে তাঁর একটাই স্বপ্ন ছিল—বড় ক্রিকেটার হব, জাতীয় দলে খেলব’—ইমরুল কায়েসের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিটা যে বাবাকেই উত্সর্গিত, এতে আর আশ্চর্য কি!
যে স্যাটেলাইট চ্যানেলে খেলা দেখিয়েছে, মেহেরপুরের হুজুলপুর গ্রামে সেটি দেখা যায় না।
বনী আমিন বিশ্বাস তাই ছেলের সেঞ্চুরি দেখতে পারেননি। ঢাকায় ইমরুলের এক ফুফাতো ভাইকে একটু পর পর ফোন করে স্কোর জেনেছেন। ইমরুলের সেঞ্চুরির পরই গ্রামের লোকজন ঘিরে ধরেছে তাঁকে। এত বড় একটা ঘটনা উদ্যাপন করতে হবে। বনী আমিন বিশ্বাসকে তাই আয়োজন করতে হয়েছে ‘খানা’র।
ছেলের আনন্দটা অবশ্য অবিমিশ্র নয়। এত দিনের স্বপ্নপূরণের আনন্দ আছে, আবার একটা আক্ষেপও আছে। পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে চেয়েছিলেন, আউট হয়ে গেছেন ১৬ বল বাকি থাকতে। ‘বলটা ভালো ছিল’—এই বলে সান্ত্বনা দিচ্ছেন নিজেকে। জিততে না পারার দুঃখে অবশ্য কোনো সান্ত্বনা নেই, ‘আমি সেঞ্চুরি করলাম। দলও যদি জিতত, তাহলে আনন্দটা অনেক বেশি হতো। জেতার সুযোগ তো ছিলই।’
ক্যারিয়ারের মাত্র দশম ওয়ানডে। এই ১০টি ওয়ানডেও খেলেছেন প্রায় সোয়া দুই বছরে। ২০০৮ সালে এই চট্টগ্রামে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ওয়ানডে অভিষেক। এর পরই দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও দুটি ম্যাচ খেলে বাদ পড়লেন, ফিরলেন এই গত মাসে দেশে ত্রিদেশীয় সিরিজে। মাঝখানে শুধুই টেস্টের জন্য বিবেচিত হয়েছেন। ওয়ানডেতে অচল—চালু হয়ে গিয়েছিল এমন একটা ধারণাও। অথচ ইমরুল জানাচ্ছেন, স্ট্রোক খেলতেই পছন্দ তাঁর। সব সময় যে তা খেলেন না, সেটির কারণ উদ্বোধনী জুটিতে তামিমের সঙ্গে তাঁর রসায়ন, ‘তামিম যখন স্ট্রোক খেলে, আমি তখন একটু ধরে খেলার চেষ্টা করি।’
টেস্ট ক্রিকেটই ধ্যানজ্ঞান। সেই কৈশোর থেকে দুই চোখে স্বপ্ন এঁকেছেন, ‘বড় হয়ে এক দিন টেস্ট ক্রিকেটার হব।’ হয়েছেন। টেস্টে এখনো বড় কিছু করা হয়নি বলে দুঃখ আছে, তবে অন্য একটা কাজ মোটামুটি সেরে ফেললেন। ওয়ানডেতেও নিজেকে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। ত্রিদেশীয় সিরিজে ভারতের বিপক্ষে ৭০ রানের পর কালকের সেঞ্চুরি—প্রমাণ তো করলেনই।
প্রমাণের ছিল আরও কিছু। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনূদিত না হওয়ায় অনেকে তাঁকে ‘ডোমেস্টিক ক্রিকেটের প্লেয়ার’ নাম দিয়ে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও যে তাঁর সেঞ্চুরি করার ক্ষমতা আছে, এটাই কালকের ইনিংসটির বড় তৃপ্তি, ‘জাতীয় দলের পক্ষে একটা বড় ইনিংস খেলা ছিল আমার স্বপ্ন। ভারতের বিপক্ষে ৭০ রান করে আউট হয়ে যাওয়ায় সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আজ তা হলো।’
সেঞ্চুরি করার মুহূর্তে বাবার কথা মনে পড়েছে। আর পুরো মনে ছড়িয়ে পড়েছে একটা আত্মবিশ্বাস, ‘সেঞ্চুরিটা করে মনে হয়েছে, আমি এই পর্যায়ে খেলার যোগ্য। অনেকেই বলত ডোমেস্টিকে ভালো করি, কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারি না—এটা ভুল প্রমাণ করার একটা জেদ ছিল।’
সকালে বৃষ্টি হয়েছে, দুপুরে ব্যাটিং করার সময়ও আকাশ মেঘে ঢাকা। শুরুতে বল তাই ভালোই এ দিক-ও দিক করেছে। শট খেলার আগে কিছুক্ষণ উইকেটে টিকে থাকার দিকে মন দিয়েছিলেন। তার পরও হাফ সেঞ্চুরি করতে ৭৭ বলের বেশি লাগেনি। পরের ফিফটি ৫৭ বলে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরির মহিমা তো অন্যরকম হতে বাধ্য। ইমরুল কায়েসের এই সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে যাচ্ছে ব্যক্তিগত অনুভূতির সেই সীমানাও। নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম তিন ম্যাচে ব্যাটিং-ব্যর্থতার পর এমন উজ্জীবনী কিছুর প্রত্যাশাতেই ছিল বাংলাদেশ দল।
যে স্যাটেলাইট চ্যানেলে খেলা দেখিয়েছে, মেহেরপুরের হুজুলপুর গ্রামে সেটি দেখা যায় না।
বনী আমিন বিশ্বাস তাই ছেলের সেঞ্চুরি দেখতে পারেননি। ঢাকায় ইমরুলের এক ফুফাতো ভাইকে একটু পর পর ফোন করে স্কোর জেনেছেন। ইমরুলের সেঞ্চুরির পরই গ্রামের লোকজন ঘিরে ধরেছে তাঁকে। এত বড় একটা ঘটনা উদ্যাপন করতে হবে। বনী আমিন বিশ্বাসকে তাই আয়োজন করতে হয়েছে ‘খানা’র।
ছেলের আনন্দটা অবশ্য অবিমিশ্র নয়। এত দিনের স্বপ্নপূরণের আনন্দ আছে, আবার একটা আক্ষেপও আছে। পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে চেয়েছিলেন, আউট হয়ে গেছেন ১৬ বল বাকি থাকতে। ‘বলটা ভালো ছিল’—এই বলে সান্ত্বনা দিচ্ছেন নিজেকে। জিততে না পারার দুঃখে অবশ্য কোনো সান্ত্বনা নেই, ‘আমি সেঞ্চুরি করলাম। দলও যদি জিতত, তাহলে আনন্দটা অনেক বেশি হতো। জেতার সুযোগ তো ছিলই।’
ক্যারিয়ারের মাত্র দশম ওয়ানডে। এই ১০টি ওয়ানডেও খেলেছেন প্রায় সোয়া দুই বছরে। ২০০৮ সালে এই চট্টগ্রামে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ওয়ানডে অভিষেক। এর পরই দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও দুটি ম্যাচ খেলে বাদ পড়লেন, ফিরলেন এই গত মাসে দেশে ত্রিদেশীয় সিরিজে। মাঝখানে শুধুই টেস্টের জন্য বিবেচিত হয়েছেন। ওয়ানডেতে অচল—চালু হয়ে গিয়েছিল এমন একটা ধারণাও। অথচ ইমরুল জানাচ্ছেন, স্ট্রোক খেলতেই পছন্দ তাঁর। সব সময় যে তা খেলেন না, সেটির কারণ উদ্বোধনী জুটিতে তামিমের সঙ্গে তাঁর রসায়ন, ‘তামিম যখন স্ট্রোক খেলে, আমি তখন একটু ধরে খেলার চেষ্টা করি।’
টেস্ট ক্রিকেটই ধ্যানজ্ঞান। সেই কৈশোর থেকে দুই চোখে স্বপ্ন এঁকেছেন, ‘বড় হয়ে এক দিন টেস্ট ক্রিকেটার হব।’ হয়েছেন। টেস্টে এখনো বড় কিছু করা হয়নি বলে দুঃখ আছে, তবে অন্য একটা কাজ মোটামুটি সেরে ফেললেন। ওয়ানডেতেও নিজেকে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। ত্রিদেশীয় সিরিজে ভারতের বিপক্ষে ৭০ রানের পর কালকের সেঞ্চুরি—প্রমাণ তো করলেনই।
প্রমাণের ছিল আরও কিছু। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনূদিত না হওয়ায় অনেকে তাঁকে ‘ডোমেস্টিক ক্রিকেটের প্লেয়ার’ নাম দিয়ে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও যে তাঁর সেঞ্চুরি করার ক্ষমতা আছে, এটাই কালকের ইনিংসটির বড় তৃপ্তি, ‘জাতীয় দলের পক্ষে একটা বড় ইনিংস খেলা ছিল আমার স্বপ্ন। ভারতের বিপক্ষে ৭০ রান করে আউট হয়ে যাওয়ায় সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আজ তা হলো।’
সেঞ্চুরি করার মুহূর্তে বাবার কথা মনে পড়েছে। আর পুরো মনে ছড়িয়ে পড়েছে একটা আত্মবিশ্বাস, ‘সেঞ্চুরিটা করে মনে হয়েছে, আমি এই পর্যায়ে খেলার যোগ্য। অনেকেই বলত ডোমেস্টিকে ভালো করি, কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারি না—এটা ভুল প্রমাণ করার একটা জেদ ছিল।’
সকালে বৃষ্টি হয়েছে, দুপুরে ব্যাটিং করার সময়ও আকাশ মেঘে ঢাকা। শুরুতে বল তাই ভালোই এ দিক-ও দিক করেছে। শট খেলার আগে কিছুক্ষণ উইকেটে টিকে থাকার দিকে মন দিয়েছিলেন। তার পরও হাফ সেঞ্চুরি করতে ৭৭ বলের বেশি লাগেনি। পরের ফিফটি ৫৭ বলে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরির মহিমা তো অন্যরকম হতে বাধ্য। ইমরুল কায়েসের এই সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে যাচ্ছে ব্যক্তিগত অনুভূতির সেই সীমানাও। নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম তিন ম্যাচে ব্যাটিং-ব্যর্থতার পর এমন উজ্জীবনী কিছুর প্রত্যাশাতেই ছিল বাংলাদেশ দল।
No comments