এআই দিয়ে তৈরি হবে সাপের বিষের ওষুধ

প্রতি বছর সাপের কামড়ে বহু মানুষ মারা যায়। সাপের বিষ নিয়ে নতুন কোনও ওষুধ তেমনভাবে আবিষ্কার হয়নি। কয়েকটি চিরাচরিত ওষুধ দেয়া হলেও যাদের সাপে কেটেছে, তাদের দেহে অনেক সময় কাজ করেনি সেই অ্যান্টিভেনম। তাই এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে সাপের বিষের ওষুধ তৈরির পরীক্ষা শুরু হয়েছে। যদি এই পরীক্ষা সফল হয়ে যায় তাহলে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।

বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে যদি সাপের বিষের ওষুধ সকলের ঘরে সর্দি-জ্বরের মতোই থাকে তাহলে সাপ নিয়ে চিন্তা কমবে। সাপ কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই তার ওষুধ দেওয়া হবে। ফলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগেই রোগী প্রাথমিকভাবে ভেঙে পড়বেন না। তার দেহে সাপের বিষের ওষুধ আগেই পৌঁছে যাবে। এআই ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এমন প্রোটিন ডিজাইন করেছেন যা কোবরা এবং অন্যান্য বিষাক্ত সাপ কামড়ালে অ্যান্টি ভেনমের কাজ করবে।  

গবেষকরা ১৫ জানুয়ারি নেচার পত্রিকায় জানিয়েছেন, এই প্রোটিনগুলো ইতিমধ্যেই ল্যাব পরীক্ষায় ইঁদুরের জীবন বাঁচিয়েছে। জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ব্রাউনসউইগের একজন অ্যান্টিবডি গবেষক জানাচ্ছেন, এই প্রোটিনগুলো সত্যিই তাদের কাজ করছে। সাপে কামড়ানোর পর ইঁদুরগুলো বেঁচে আছে।

পরীক্ষাটির বাস্তব-জীবনের প্রয়োগের প্রতিনিধিত্ব করে রসায়নে ২০২৪ সালে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনজন বিজ্ঞানী। বর্তমান অ্যান্টিভেনম উৎপাদনকারীরা সাপকে দুধ দিয়ে তাদের মুখ থেকে বিষ বের করে আনেন। সেই বিষের একটি ছোট ডোজ ঘোড়া বা অন্যান্য বড় প্রাণীর মধ্যে ইনজেকশন করে দেওয়া হয়, যেখান থেকে উৎপাদকরা পরে অ্যান্টিবডি সংগ্রহ করে। অ্যান্টিভেনম তৈরি করা ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ, তাই বিজ্ঞানীরা অন্যান্য পদ্ধতির সন্ধান করছেন। বেকার এবং জেনকিন্স এআই দিয়ে এমন প্রোটিন ডিজাইন করেছেন যা সাপের বিষের ক্ষতিকারক প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে। কোবরা টক্সিনের প্রাণঘাতী ডোজের পর গবেষক দলটি ২০টি ইঁদুরকে কাস্টম প্রোটিন দিয়ে ইনজেকশন দেয়।

জেনকিন্স বলছেন, আমরা পরীক্ষার ফল সম্পর্কে খুব খুব উত্তেজিত ছিলাম। এআই নির্মিত প্রোটিন ইঁদুরগুলোর দেহে কাজ করতে শুরু করেছিল।’

তবে জেনকিন্স এও জানিয়েছেন, নতুন অধ্যয়নটি সাপের বিষ প্রতিকারের প্রথম পদক্ষেপ মাত্র। আরো পরীক্ষা এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সফলতা আসবে বলে মনে করেন এই বিজ্ঞানী। সূত্র: সায়েন্স নিউজ

mzamin

No comments

Powered by Blogger.