আমার ব্যর্থতার ইতিহাস নেই
তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের প্রহসন আমরা দেখেছি। এই সময়ে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার অনুপস্থিত ছিল। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে দেড় হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। শুধু শিশুই নিহত হয়েছে ১৩০ জন। আর ২৫ থেকে ২৬ হাজার লোক আহত হয়েছেন। এদের রক্তের সঙ্গে ও ত্যাগের সঙ্গে বেইমানি করা যাবে না। আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবো একটা ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দেয়ার।
এএমএম নাসির উদ্দীন বলেন, এই ধরনের কাজে চ্যালেঞ্জ থাকবেই এবং আছে। অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে আসতে থাকবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই আমরা অভ্যস্ত। আমি তথ্য, জ্বালানি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চালিয়েছি, সেখানেও চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু আমি সেই চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করে মন্ত্রণালয়গুলো চালিয়েছি। চ্যালেঞ্জ মোবাকিলা করার সাহস এবং অভিজ্ঞতা আমার আছে। নির্বাচন সংক্রান্ত যত চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে সেই চ্যালেঞ্জ ইনশাআল্লাহ্ মোকাবিলা করবো। এছাড়া আমাদের জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। তারা সবাই সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে যেই ছেলেটার ১৮ বছর ছিল তার বয়স এখন ২৮ বছর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একটা ভোট দিতে পারেনি। মানুষের ভোটাধিকারের জন্য সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সুতরাং এখানে তেমন কোনো অসুবিধা হবে না।
আগে চ্যালেঞ্জ ছিল না জানিয়ে নতুন সিইসি বলেন, আগে হুকুম ছিল, কাজ হয়ে গেছে। এখন ইনশাআল্লাহ্ সেভাবে হবে না। মানুষের ভোটের অধিকার বলতে যা বোঝায় আমরা সেটা করার চেষ্টা করবো। আমরা সফল হবো। সেই আত্মবিশ্বাস আমার আছে।
তিনি বলেন, আমি নিজেও ভোট দিতে পারিনি। ২০১৪ সালে ভোটকেন্দ্রে যাইনি। ২০২৪ সালে তো যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। ২০১৮ সালে গিয়েছিলাম। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি ফাঁকা, কোনো লোকজন নাই। ধানমণ্ডিতে আমার সেন্টার ছিল। তবে এখন তো মানুষ ভোট চাচ্ছে। এজন্যই তো রক্ত দিয়েছে। এজন্যই তো গত ১৫ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত নির্বাচন কমিশনের উপর মানুষের আস্থা ছিল না। তারা জানতো যে, এটা দলীয় নির্বাচন কমিশন। এ রকম একটি অনুভূতি তখন ছিল, এজন্য ডাকা হলেও অনেক দল তাদের মিটিংয়ে যেতো না। তিনি বলেন, আমাদের চেষ্টা থাকবে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে করে, তাদের মতামত নিয়ে, নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক করা। আমার বিশ্বাস আমি কামিয়াব হবো। নিজের ওপরে আমার আস্থা আছে। আমি জীবনে ইনশাআল্লাহ্ ফেল করিনি কোথাও। আমার ব্যর্থতার ইতিহাস নাই।
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার সন্তান নাসির উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষক হিসেবে। দুই বছর পর তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। প্রশাসন ক্যাডারের এ ব্যাচটি বিসিএস ৭৯ ব্যাচ হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘ কর্মজীবনে তথ্য সচিব, জ্বালানি সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
No comments