ভাসমান পেয়ারা বাজার মাসে কোটি টাকা লেনদেন by মোহাম্মদ ওমর ফারুক
খালের
একটি মোহনা। ভিমরুলি ভাসমান হাট। তিন দিক থেকে তিনটি খাল এসে মিশেছে
এখানে। অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত এ মোহনায় ফলচাষিরা নৌকা বোঝাই ফল নিয়ে ক্রেতা
খুঁজে বেড়ান। এই হাটের আশেপাশের সব গ্রামেই ভরপুর পেয়ারা বাগান। এসব বাগান
থেকে চাষিরা নৌকায় করে সরাসরি এই বাজারে পেয়ারা নিয়ে আসেন। পেয়ারা বোঝাই
শত শত নৌকা। বিক্রেতারা এই খালে খুঁজে বেড়ান ক্রেতা।
আর ক্রেতাদের বেশিরভাগই হল পাইকার। বড় ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে তারা বাজারে আসেন। এখান থেকে পেয়ারা কিনে ঢাকা কিংবা অন্য কোনো বড় শহরে চালান করে দেন তারা। এটি প্রতিদিনের দৃশ্য ভিমরুলি ভাসমান হাটের। ভাসমান পানির উপরে বসে এই হাট। প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি।
দক্ষিণাঞ্চলের ঝালকাঠী ও স্বরূপকাঠীর বিভিন্ন জায়গায় ভাসমান এই হাট বসে। এ রকম কাছাকাছি রয়েছে তিনটি হাট ভিমরুলি, আটঘর এবং কুড়িয়ানা। জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলি গ্রামের ছোট্ট খালজুড়ে সারা বছরই বসে ভাসমান হাট। হাটটি বেশী জমে পেয়ারা মৌসূমে। পেয়ারা মৌসুম শেষ হলে আসে আমড়ার মৌসুম। এ অঞ্চলে আমড়ার ফলনও সর্বত্র। আর সবশেষে আসে সুপারি। সবজি তো আছেই। ভাসমান বাজারের উত্তর প্রান্তে খালের উপরে ছোট একটি সেতু। সেখান থেকে বাজারটি খুব ভালো করে দেখা যায়। ভিমরুলি বাজারের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় দুপর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। ঝালকাঠী জেলা সদর থেকে মোটরবাইকে এই হাটে আসতে সময় লাগে প্রায় আধাঘণ্টা। আর ইঞ্জিন নৌকায় আসলে সময় লাগে ঘণ্টাখানেক। এই ভাসমান হাটে শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে কেনাবেচা হয় কোটি কোটি টাকার পেয়ারা। কথা হয় ব্যবসায়ীদের সাথে। তারা জানান, বরিশাল বিভাগের এই অঞ্চলে দেশের অন্য জায়গার চেয়ে বেশি পেয়ারা পাওয়া যায়। যা পরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হয়। এখানে নদী ও খালকেন্দ্রীক ব্যবসার প্রসার ঘটায় মালামাল পরিবহনে খরচ কম। একইসঙ্গে পরিবহন সহজও। তবে ইচ্ছে করলে সড়ক পথেও পণ্য পরিবহন করা সম্ভব। তবে সময়, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সঙ্গে নৌকায় যাতায়াত আর যোগাযোগ ব্যবস্থাটা এখানকার মানুষের সঙ্গে মিশে গেছে। বরিশালের বানারীপাড়া, পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর-কুরিয়ানা এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলার কৃর্ত্তিপাশা ও নবগ্রাম ইউনিয়নজুড়ে রয়েছে দেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম পেয়ারার বাগান। প্রায় ৩শ বছর ধরে এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ হয়ে আসছে।
বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগান থেকে ছোট ছোট নৌকায় পেয়ারা তুলে ভাসমান বাজারে আনেন কৃষকরা। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌপথে পেয়ারা প্যাকেটজাত করে পাইকাররা নিয়ে যায়। তবে, পেয়ারা পাকার দুই একদিনের মধ্যে বিক্রি করতে না পারলে পচে যায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হন কৃষকরা। এ অঞ্চলে হিমাগার অথবা জ্যাম জেলির কারখানা না থাকায় বাগানেই প্রচুর পরিমাণ পেয়ারা নষ্ট হয়ে যায় বলে আক্ষেপ পেয়ারা চাষিদের।
বাজারে আসা পেয়ারা চাষী তরুণ চন্দ্র বলেন, পেয়ারা যখন একসাথে পাকা শুরু করে ,তখন অনেক পেয়ারা একসাথে পাকে। যার কারনে বাধ্য হয়ে কম দামে পেয়ারা বিক্রি করতে হয়। এখানে পেয়ারা প্রক্রিয়াজাত করার মতো কোনো জায়গা নেই। ফলে অনেক সময় বড় ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয় আমাদের।
এই এলাকার ফার্মেসী দোকানদার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উজ্জল দাস বলেন, শত বছর ধরে ভিমরুলি ভাসমান হাট বসে। হাজার হাজার মানুষ এখানে পেয়ারা কিনে বিক্রি করে। এখানে পেয়ারা আনা নেয়ার সুবিধা থাকলেও নেই কোনো সংক্ষরন ব্যবস্থা । এতে করে প্রচুর পেয়ারা নষ্ট হয়। চাষীরা ন্যায্য মূল্য পায় না।
এদিকে, প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা এ জলের হাটের দৃশ্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্তের হাজারও পর্যটক প্রতিদিন ভিড় করছেন এ পেয়ারা হাটে। কিন্তু এত বছরেও সরকারি বা বেসরকারিভাবে গড়ে উঠেনি বিশ্রামাগারসহ কোনও সুযোগ সুবিধা । থাকা খাওয়ায়ও নেই কোনো সুব্যবস্থা। ফলে নারী পর্যটকরা একটু বেশিই বিপাকে পড়েন।
রাজধানীতে থেকে আসা পর্যটক তৌহিদ হাসান বলেন, এই বাজার খুবই চমৎকার পরিবেশ। নৌকায় ঘুরে পুরো বাজার ঘুরে দেখা যায়। কিন্তু এখানে পর্যটকদের জন্য নেই কোনো থাকার ব্যবস্থা। তবে নিরাপত্তার জন্য কয়েকজন পুলিশ দেখেছি। এটা অবশ্য ভালো একটি লক্ষন। তবে নিরাপত্তার জন্য আরো ভালো পরিবেশ তৈরী করা উচিৎ।
আরেক পর্যটক তানভীর আহাম্মেদ সিদ্দিকী বলেন, এই হাটে প্রতিদিন যে পরিমান কেনাবেচা দেখলাম, এখানে সেই পরিমান উন্নতি নেই। থাকা-খাওয়া বা ভালো কোনো শৌচাগার নেই। ফলে, নারী পর্যটকদের বিপদে পড়তে হয়।
পর্যটক অরভিন হাসান অনিক জানান, এখানে ঘন্টার নৌকা ভাড়া করে ঘুরা যায়। তবে অনেক সময় নৌকার মালিকরা দর্শনার্থীদের সাথে নানা ভাবে প্রতারনা করেন। সেখান থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
আর ক্রেতাদের বেশিরভাগই হল পাইকার। বড় ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে তারা বাজারে আসেন। এখান থেকে পেয়ারা কিনে ঢাকা কিংবা অন্য কোনো বড় শহরে চালান করে দেন তারা। এটি প্রতিদিনের দৃশ্য ভিমরুলি ভাসমান হাটের। ভাসমান পানির উপরে বসে এই হাট। প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি।
দক্ষিণাঞ্চলের ঝালকাঠী ও স্বরূপকাঠীর বিভিন্ন জায়গায় ভাসমান এই হাট বসে। এ রকম কাছাকাছি রয়েছে তিনটি হাট ভিমরুলি, আটঘর এবং কুড়িয়ানা। জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলি গ্রামের ছোট্ট খালজুড়ে সারা বছরই বসে ভাসমান হাট। হাটটি বেশী জমে পেয়ারা মৌসূমে। পেয়ারা মৌসুম শেষ হলে আসে আমড়ার মৌসুম। এ অঞ্চলে আমড়ার ফলনও সর্বত্র। আর সবশেষে আসে সুপারি। সবজি তো আছেই। ভাসমান বাজারের উত্তর প্রান্তে খালের উপরে ছোট একটি সেতু। সেখান থেকে বাজারটি খুব ভালো করে দেখা যায়। ভিমরুলি বাজারের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় দুপর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। ঝালকাঠী জেলা সদর থেকে মোটরবাইকে এই হাটে আসতে সময় লাগে প্রায় আধাঘণ্টা। আর ইঞ্জিন নৌকায় আসলে সময় লাগে ঘণ্টাখানেক। এই ভাসমান হাটে শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে কেনাবেচা হয় কোটি কোটি টাকার পেয়ারা। কথা হয় ব্যবসায়ীদের সাথে। তারা জানান, বরিশাল বিভাগের এই অঞ্চলে দেশের অন্য জায়গার চেয়ে বেশি পেয়ারা পাওয়া যায়। যা পরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হয়। এখানে নদী ও খালকেন্দ্রীক ব্যবসার প্রসার ঘটায় মালামাল পরিবহনে খরচ কম। একইসঙ্গে পরিবহন সহজও। তবে ইচ্ছে করলে সড়ক পথেও পণ্য পরিবহন করা সম্ভব। তবে সময়, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সঙ্গে নৌকায় যাতায়াত আর যোগাযোগ ব্যবস্থাটা এখানকার মানুষের সঙ্গে মিশে গেছে। বরিশালের বানারীপাড়া, পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর-কুরিয়ানা এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলার কৃর্ত্তিপাশা ও নবগ্রাম ইউনিয়নজুড়ে রয়েছে দেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম পেয়ারার বাগান। প্রায় ৩শ বছর ধরে এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ হয়ে আসছে।
বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগান থেকে ছোট ছোট নৌকায় পেয়ারা তুলে ভাসমান বাজারে আনেন কৃষকরা। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌপথে পেয়ারা প্যাকেটজাত করে পাইকাররা নিয়ে যায়। তবে, পেয়ারা পাকার দুই একদিনের মধ্যে বিক্রি করতে না পারলে পচে যায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হন কৃষকরা। এ অঞ্চলে হিমাগার অথবা জ্যাম জেলির কারখানা না থাকায় বাগানেই প্রচুর পরিমাণ পেয়ারা নষ্ট হয়ে যায় বলে আক্ষেপ পেয়ারা চাষিদের।
বাজারে আসা পেয়ারা চাষী তরুণ চন্দ্র বলেন, পেয়ারা যখন একসাথে পাকা শুরু করে ,তখন অনেক পেয়ারা একসাথে পাকে। যার কারনে বাধ্য হয়ে কম দামে পেয়ারা বিক্রি করতে হয়। এখানে পেয়ারা প্রক্রিয়াজাত করার মতো কোনো জায়গা নেই। ফলে অনেক সময় বড় ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয় আমাদের।
এই এলাকার ফার্মেসী দোকানদার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উজ্জল দাস বলেন, শত বছর ধরে ভিমরুলি ভাসমান হাট বসে। হাজার হাজার মানুষ এখানে পেয়ারা কিনে বিক্রি করে। এখানে পেয়ারা আনা নেয়ার সুবিধা থাকলেও নেই কোনো সংক্ষরন ব্যবস্থা । এতে করে প্রচুর পেয়ারা নষ্ট হয়। চাষীরা ন্যায্য মূল্য পায় না।
এদিকে, প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা এ জলের হাটের দৃশ্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্তের হাজারও পর্যটক প্রতিদিন ভিড় করছেন এ পেয়ারা হাটে। কিন্তু এত বছরেও সরকারি বা বেসরকারিভাবে গড়ে উঠেনি বিশ্রামাগারসহ কোনও সুযোগ সুবিধা । থাকা খাওয়ায়ও নেই কোনো সুব্যবস্থা। ফলে নারী পর্যটকরা একটু বেশিই বিপাকে পড়েন।
রাজধানীতে থেকে আসা পর্যটক তৌহিদ হাসান বলেন, এই বাজার খুবই চমৎকার পরিবেশ। নৌকায় ঘুরে পুরো বাজার ঘুরে দেখা যায়। কিন্তু এখানে পর্যটকদের জন্য নেই কোনো থাকার ব্যবস্থা। তবে নিরাপত্তার জন্য কয়েকজন পুলিশ দেখেছি। এটা অবশ্য ভালো একটি লক্ষন। তবে নিরাপত্তার জন্য আরো ভালো পরিবেশ তৈরী করা উচিৎ।
আরেক পর্যটক তানভীর আহাম্মেদ সিদ্দিকী বলেন, এই হাটে প্রতিদিন যে পরিমান কেনাবেচা দেখলাম, এখানে সেই পরিমান উন্নতি নেই। থাকা-খাওয়া বা ভালো কোনো শৌচাগার নেই। ফলে, নারী পর্যটকদের বিপদে পড়তে হয়।
পর্যটক অরভিন হাসান অনিক জানান, এখানে ঘন্টার নৌকা ভাড়া করে ঘুরা যায়। তবে অনেক সময় নৌকার মালিকরা দর্শনার্থীদের সাথে নানা ভাবে প্রতারনা করেন। সেখান থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
No comments