ভারতের হোমে আটক ৩ সন্তানকে পেতে ব্যাকুল মা-বাবা by অমর সাহা
নান্টু ফরাজির তিন সন্তান |
মা–বাবার
মুক্তি মিললেও প্রায় ছয় মাস ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হোমে বন্দী এক
দম্পতির তিন শিশুসন্তান। বাংলাদেশের পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার
রামচন্দ্রপুর গ্রামে তাঁদের বাড়ি। সন্তানদের জন্য এখন দিশেহারা বাবা নান্টু
ফরাজি ও মা লাকি বেগম।
জানা যায়, স্ত্রী ও তিন শিশুসন্তানকে (তানিয়া, হেনা ও রায়হান) নিয়ে ইন্দুরকানির রামচন্দ্রপুর গ্রামে বাস করছিলেন নান্টু ফরাজি। সংসারে অভাব–অনটন লেগেই থাকত। ছয় বছর আগে দালালদের খপ্পরে পড়ে পরিবার নিয়ে ভারতের উদ্দেশে পাড়ি জমান তিনি। এখানকার ভিটেমাটি সব বিক্রি করে দেন। বাংলাদেশের সীমান্ত অবৈধভাবে পেরিয়ে চলে যান দিল্লিতে। একটা বস্তিতে ওঠেন। হোটেলে কাজ নেন। স্ত্রী লাকি বেগমের জোটে পরিচারিকার কাজ। কিছুটা স্থায়ী হন তাঁরা। সবাই বেশ ভালো হিন্দি ভাষাও শিখে যান। স্কুলে ভর্তি হয় সন্তানেরা।
গত বছর দিল্লিতে বাংলাভাষীদের তাড়াতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। আসামেও বাংলাদেশিদের তাড়ানো হচ্ছে—এমন খবর পান তিনি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নান্টু ফরাজি। ভারতে বসবাসের কোনো বৈধ কাগজ নেই তাঁদের হাতে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার চেয়ে দেশে ফিরে আসাই শ্রেয় বলে মনে করেন তিনি।
২০১৮ সালের নভেম্বরে দালাল ধরে দেশে আসার পথ খুঁজে পান নান্টু। দিল্লি থেকে ট্রেনে করে কলকাতায় যান। এরপর উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার সীমান্তপথে বেআইনিভাবে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। গোপালনগর যাওয়ার জন্য বাসে ওঠেন তাঁরা। চাকদার সড়কপথে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আটকায় তাঁদের বাস। ওই বাসে আরও কয়েকজন বাংলাদেশি ছিলেন। লাকি বেগমের এক ভাইও ছিলেন। তাঁদেরও বাংলাদেশের ফেরার উদ্দেশ্য ছিল। গ্রেপ্তার হন সবাই। গোপালনগর থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আদালতে তোলা হয় নান্টু ফরাজির পরিবারের সদস্যদের। আদালত সবাইকে দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন। তাঁদের চার মাসের কারাদণ্ড হয়। নান্টু ফরাজির তিন শিশুসন্তানকে পাঠানো হয় পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হোমে। ওদের বিচার হয় জুভেনাইল কোর্টে। সন্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান নান্টু ফরাজি দম্পতি।
কারাভোগ করে এ বছরের ১৯ মার্চ মুক্তি পান নান্টু ও তাঁর স্ত্রী। এরপর পুশব্যাক করে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে ভারত ছাড়ার আগে সন্তানদের খোঁজ নিতে পারেননি তিনি। তারা কোন সরকারি হোমে আছে, তা–ও জানতে পারেননি।
পিরোজপুরে ফিরে সেখানকার সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নান্টু। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আমি জানি না আমার তিন সন্তান এখন কোথায় রয়েছে। কোন হোমে রয়েছে তারা। আপনারা তাদের খুঁজে দিন, দেশে এনে দিন।’ তাঁর বড় মেয়ে তানিয়া আখতারের বয়স ১৩ বছর, ছোট মেয়ে হেনা আখতারের বয়স ১১ বছর ও ছেলে রায়হানের বয়স ৭ বছর।
এই খবর প্রচার হওয়ার পর তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন ঢাকার মানবাধিকার খবর পত্রিকার সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন। তিনি কলকাতায় যান। কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিছুদিন পর ওই তিন শিশুর খোঁজ পান। নান্টু ফরাজির ছেলে রায়হান আছে কলকাতা শহরের উপকণ্ঠ বারাসাতের ‘কিশলয়’ হোমে এবং দুই মেয়ে আছে সল্টলেকের ‘সুকন্যা’ হোমে। রিয়াজ উদ্দিন দুই হোমে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন।
রিয়াজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশন থেকে এই শিশুদের ফেরত পাঠানোর চিঠি পেলে এদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর এ বিষয়ে রিয়াজ উদ্দিন কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের হেড অব চ্যান্সারি বি এম জামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনিও কথা দিয়েছেন, এই তিন শিশুকে অবিলম্বে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবেন।
জানা যায়, স্ত্রী ও তিন শিশুসন্তানকে (তানিয়া, হেনা ও রায়হান) নিয়ে ইন্দুরকানির রামচন্দ্রপুর গ্রামে বাস করছিলেন নান্টু ফরাজি। সংসারে অভাব–অনটন লেগেই থাকত। ছয় বছর আগে দালালদের খপ্পরে পড়ে পরিবার নিয়ে ভারতের উদ্দেশে পাড়ি জমান তিনি। এখানকার ভিটেমাটি সব বিক্রি করে দেন। বাংলাদেশের সীমান্ত অবৈধভাবে পেরিয়ে চলে যান দিল্লিতে। একটা বস্তিতে ওঠেন। হোটেলে কাজ নেন। স্ত্রী লাকি বেগমের জোটে পরিচারিকার কাজ। কিছুটা স্থায়ী হন তাঁরা। সবাই বেশ ভালো হিন্দি ভাষাও শিখে যান। স্কুলে ভর্তি হয় সন্তানেরা।
গত বছর দিল্লিতে বাংলাভাষীদের তাড়াতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। আসামেও বাংলাদেশিদের তাড়ানো হচ্ছে—এমন খবর পান তিনি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নান্টু ফরাজি। ভারতে বসবাসের কোনো বৈধ কাগজ নেই তাঁদের হাতে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার চেয়ে দেশে ফিরে আসাই শ্রেয় বলে মনে করেন তিনি।
২০১৮ সালের নভেম্বরে দালাল ধরে দেশে আসার পথ খুঁজে পান নান্টু। দিল্লি থেকে ট্রেনে করে কলকাতায় যান। এরপর উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার সীমান্তপথে বেআইনিভাবে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। গোপালনগর যাওয়ার জন্য বাসে ওঠেন তাঁরা। চাকদার সড়কপথে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আটকায় তাঁদের বাস। ওই বাসে আরও কয়েকজন বাংলাদেশি ছিলেন। লাকি বেগমের এক ভাইও ছিলেন। তাঁদেরও বাংলাদেশের ফেরার উদ্দেশ্য ছিল। গ্রেপ্তার হন সবাই। গোপালনগর থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আদালতে তোলা হয় নান্টু ফরাজির পরিবারের সদস্যদের। আদালত সবাইকে দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন। তাঁদের চার মাসের কারাদণ্ড হয়। নান্টু ফরাজির তিন শিশুসন্তানকে পাঠানো হয় পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হোমে। ওদের বিচার হয় জুভেনাইল কোর্টে। সন্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান নান্টু ফরাজি দম্পতি।
কারাভোগ করে এ বছরের ১৯ মার্চ মুক্তি পান নান্টু ও তাঁর স্ত্রী। এরপর পুশব্যাক করে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে ভারত ছাড়ার আগে সন্তানদের খোঁজ নিতে পারেননি তিনি। তারা কোন সরকারি হোমে আছে, তা–ও জানতে পারেননি।
পিরোজপুরে ফিরে সেখানকার সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নান্টু। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আমি জানি না আমার তিন সন্তান এখন কোথায় রয়েছে। কোন হোমে রয়েছে তারা। আপনারা তাদের খুঁজে দিন, দেশে এনে দিন।’ তাঁর বড় মেয়ে তানিয়া আখতারের বয়স ১৩ বছর, ছোট মেয়ে হেনা আখতারের বয়স ১১ বছর ও ছেলে রায়হানের বয়স ৭ বছর।
এই খবর প্রচার হওয়ার পর তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন ঢাকার মানবাধিকার খবর পত্রিকার সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন। তিনি কলকাতায় যান। কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিছুদিন পর ওই তিন শিশুর খোঁজ পান। নান্টু ফরাজির ছেলে রায়হান আছে কলকাতা শহরের উপকণ্ঠ বারাসাতের ‘কিশলয়’ হোমে এবং দুই মেয়ে আছে সল্টলেকের ‘সুকন্যা’ হোমে। রিয়াজ উদ্দিন দুই হোমে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন।
রিয়াজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশন থেকে এই শিশুদের ফেরত পাঠানোর চিঠি পেলে এদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর এ বিষয়ে রিয়াজ উদ্দিন কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের হেড অব চ্যান্সারি বি এম জামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনিও কথা দিয়েছেন, এই তিন শিশুকে অবিলম্বে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবেন।
No comments