দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় প্লাস্টিকের বিকল্প কলাপাতা
বাজারে
প্লাস্টিকের ব্যাগের বদলে যদি কলাপাতায় মোড়ানো জিনিস পান, কেমন লাগবে?
আমাদের গ্রামগঞ্জে কলাপাতার এমন ব্যবহার এখনো দেখা যায়। পলিথিন আর
প্লাস্টিকের দাপটে কলাপাতার ব্যবহার এখন বিস্মৃত প্রায়। তবে এশিয়াজুড়ে
বিভিন্ন সুপারমার্কেটে প্রাকৃতিক উপাদান কলাপাতার ব্যবহার বাড়তে দেখা
যাচ্ছে। বিশেষ করে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের সুপারমার্কেটগুলোয় এখন কলাপাতার
ব্যবহার ব্যাপকভাবে চোখে পড়ে। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতেই এমন উদ্যোগ
নিয়েছে সেখানকার অভিজাত বিপণিকেন্দ্রগুলো।
পরিবেশবিষয়ক এক গবেষণায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে প্লাস্টিকজনিত দূষণ। অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে প্রতি সপ্তাহে একজন মানুষকে হজম করতে হচ্ছে ৫ গ্রাম পরিমাণ প্লাস্টিক! সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিনের খাবার ও বিভিন্ন পানীয়তে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা পাওয়া যাচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, এটি বৈশ্বিক সমস্যায় রূপ নিচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে পুরো বিশ্বে যে পরিমাণ প্লাস্টিক উৎপাদিত হচ্ছে, তা বিগত বছরগুলোর মোট পরিমাণের সমান। এর এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ সরাসরি প্রকৃতির সংস্পর্শে আসছে। প্লাস্টিক দূষণের তীব্রতা অঞ্চলভেদে কম–বেশি হয়। তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো স্থান এই পৃথিবীতে নেই, যেখানে প্লাস্টিক দূষণ দেখা যায়নি।
গবেষকেরা বলছেন, মাথাপিছু প্রতিটি মানুষ শুধু পানি থেকেই সপ্তাহে ১ হাজার ৭৬৯টি প্লাস্টিক কণা গ্রহণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে কলে সরবরাহ করা পানির ৯৪ শতাংশেই থাকে প্লাস্টিক ফাইবার। অর্থাৎ প্রতি লিটার পানিতে থাকে গড়ে ৯ দশমিক ৬টি প্লাস্টিক ফাইবার। তবে ইউরোপের পানিতে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দূষণ কম। সেখানে প্রতি লিটারে পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ৮টি প্লাস্টিক ফাইবার। সমুদ্রের পাণিতে প্লাস্টিক দূষণের দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। তাই তারা পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক ওয়েবসাইট ভাইস ডটকম জানায়, ভিয়েতনামের দোকানিদের সবজির মোড়ক হিসেবে প্লাস্টিকের বদলে কলাপাতা ব্যবহারসংক্রান্ত একটি সাম্প্রতিক পোস্টে তাদেরকে প্রশংসায় ভাসিয়েছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। দেশটির রাজধানী হ্যানয়ে সাইগন ইউনিয়ন অব ট্রেডিং কো-অপারেটিভস নামের একটি ভিয়েতনামভিত্তিক কোম্পানি ও থাইল্যান্ডের রিটেইল কোম্পানি বিগ সি সবজির মোড়ক হিসেবে কলাপাতার ব্যবহার শুরু করে।
থাইল্যান্ডের
চাইনমাই শহরে রিম্পিং সুপারমার্কেট প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারের ক্ষেত্রে
ব্যতিক্রম। কলাপাতায় বেঁধে পণ্য বিক্রির বিষয়টি তারাই প্রথম শুরু করে। এই
খবর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভিয়েতনামের বাজারে একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এতে তাদের
বিক্রিও বেড়েছে। মূলত এরপর থেকেই গোটা দেশে ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়া ছড়িয়ে
পড়তে শুরু করে।
দেশটির হো চি মিন শহরেও সবজির মোড়ক হিসেবে প্লাস্টিকের পরিবর্তে কলাপাতা ব্যবহার করছে লোটে মার্ট নামের ভিয়েতনামভিত্তিক একটি কোম্পানি। অবশ্য এসব কোম্পানি এখন পরীক্ষামূলকভাবে কলাপাতা ব্যবহার করছে। এর বাইরে সাইগন করপোরেশন, বিগ সির মতো প্রতিষ্ঠান থাইল্যান্ডের স্টোরগুলোকে অনুকরণ করে কলাপাতার প্যাকেজিং শুরু করেছে। বিকল্প প্যাকেজিং হিসেবে তাদের দোকানে প্রদর্শন করছে।
লোটে মার্টের এক প্রতিনিধি ভিয়েতনাম গণমাধ্যম ভিএনএক্সপ্রেসকে জানান, এখন পরীক্ষামূলকভাবে স্বল্প পরিসরে কলাপাতা ব্যবহার করা হলেও দ্রুতই এটি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এমনকি তারা মাংস বেচার ক্ষেত্রে কলাপাতা ব্যবহার করতে চায়।
তাদের এ প্রচেষ্টা ক্রেতাদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। হোয়া নামের এক স্থানীয় ক্রেতা বলেন, ‘যখন আমি সবজিগুলো কলাপাতা দিয়ে সুন্দরভাবে মোড়ানো অবস্থায় দেখলাম, তখন আমার অন্য দিনের চেয়ে একটু বেশি সবজি কেনার ইচ্ছা হলো। আমি মনে করি, এই পদক্ষেপ স্থানীয় লোকজনকে পরিবেশ সুরক্ষা সম্পর্কে আরও সচেতন করবে। মনে হচ্ছিল, কেনার উৎসাহ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।’
ভিএনএক্সপ্রেসের মতে, ভিয়েতনামে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবে কলাপাতার ব্যবহারকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। বিগ সির মতো প্রতিষ্ঠানে শস্যদানা থেকে তৈরি পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার করছে।
ভাইসের প্রতিবেদনে বলা হয়, এশিয়ায় বিভিন্ন সুপারমার্কেটে প্লাস্টিকের ব্যাগ প্রত্যাহারের প্রবণতা বাড়ছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া অপচনশীল প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সুপারমার্কেট ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোয় রিসাইকেলেবল কনটেইনার বসাতে বলা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সুপারমার্কেটে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার কমানোর ব্যাপারে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করছে। তাইওয়ানের দোকানগুলোয় প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে এর দাম বেশি ধরা হচ্ছে। চীনেও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার গত এক দশকে ৬৬ শতাংশ কমেছে। ২০০৮ সালে পাতলা প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে চীন। তথ্যসূত্র: ফোর্বস, ভাইস ডটকম।
পরিবেশবিষয়ক এক গবেষণায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে প্লাস্টিকজনিত দূষণ। অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে প্রতি সপ্তাহে একজন মানুষকে হজম করতে হচ্ছে ৫ গ্রাম পরিমাণ প্লাস্টিক! সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিনের খাবার ও বিভিন্ন পানীয়তে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা পাওয়া যাচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, এটি বৈশ্বিক সমস্যায় রূপ নিচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে পুরো বিশ্বে যে পরিমাণ প্লাস্টিক উৎপাদিত হচ্ছে, তা বিগত বছরগুলোর মোট পরিমাণের সমান। এর এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ সরাসরি প্রকৃতির সংস্পর্শে আসছে। প্লাস্টিক দূষণের তীব্রতা অঞ্চলভেদে কম–বেশি হয়। তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো স্থান এই পৃথিবীতে নেই, যেখানে প্লাস্টিক দূষণ দেখা যায়নি।
গবেষকেরা বলছেন, মাথাপিছু প্রতিটি মানুষ শুধু পানি থেকেই সপ্তাহে ১ হাজার ৭৬৯টি প্লাস্টিক কণা গ্রহণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে কলে সরবরাহ করা পানির ৯৪ শতাংশেই থাকে প্লাস্টিক ফাইবার। অর্থাৎ প্রতি লিটার পানিতে থাকে গড়ে ৯ দশমিক ৬টি প্লাস্টিক ফাইবার। তবে ইউরোপের পানিতে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দূষণ কম। সেখানে প্রতি লিটারে পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ৮টি প্লাস্টিক ফাইবার। সমুদ্রের পাণিতে প্লাস্টিক দূষণের দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। তাই তারা পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক ওয়েবসাইট ভাইস ডটকম জানায়, ভিয়েতনামের দোকানিদের সবজির মোড়ক হিসেবে প্লাস্টিকের বদলে কলাপাতা ব্যবহারসংক্রান্ত একটি সাম্প্রতিক পোস্টে তাদেরকে প্রশংসায় ভাসিয়েছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। দেশটির রাজধানী হ্যানয়ে সাইগন ইউনিয়ন অব ট্রেডিং কো-অপারেটিভস নামের একটি ভিয়েতনামভিত্তিক কোম্পানি ও থাইল্যান্ডের রিটেইল কোম্পানি বিগ সি সবজির মোড়ক হিসেবে কলাপাতার ব্যবহার শুরু করে।
ভিয়েতনামে কলাপাতায় মুড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে সবজি। ছবি: সংগৃহীত |
দেশটির হো চি মিন শহরেও সবজির মোড়ক হিসেবে প্লাস্টিকের পরিবর্তে কলাপাতা ব্যবহার করছে লোটে মার্ট নামের ভিয়েতনামভিত্তিক একটি কোম্পানি। অবশ্য এসব কোম্পানি এখন পরীক্ষামূলকভাবে কলাপাতা ব্যবহার করছে। এর বাইরে সাইগন করপোরেশন, বিগ সির মতো প্রতিষ্ঠান থাইল্যান্ডের স্টোরগুলোকে অনুকরণ করে কলাপাতার প্যাকেজিং শুরু করেছে। বিকল্প প্যাকেজিং হিসেবে তাদের দোকানে প্রদর্শন করছে।
লোটে মার্টের এক প্রতিনিধি ভিয়েতনাম গণমাধ্যম ভিএনএক্সপ্রেসকে জানান, এখন পরীক্ষামূলকভাবে স্বল্প পরিসরে কলাপাতা ব্যবহার করা হলেও দ্রুতই এটি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এমনকি তারা মাংস বেচার ক্ষেত্রে কলাপাতা ব্যবহার করতে চায়।
তাদের এ প্রচেষ্টা ক্রেতাদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। হোয়া নামের এক স্থানীয় ক্রেতা বলেন, ‘যখন আমি সবজিগুলো কলাপাতা দিয়ে সুন্দরভাবে মোড়ানো অবস্থায় দেখলাম, তখন আমার অন্য দিনের চেয়ে একটু বেশি সবজি কেনার ইচ্ছা হলো। আমি মনে করি, এই পদক্ষেপ স্থানীয় লোকজনকে পরিবেশ সুরক্ষা সম্পর্কে আরও সচেতন করবে। মনে হচ্ছিল, কেনার উৎসাহ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।’
ভিএনএক্সপ্রেসের মতে, ভিয়েতনামে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবে কলাপাতার ব্যবহারকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। বিগ সির মতো প্রতিষ্ঠানে শস্যদানা থেকে তৈরি পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার করছে।
ভাইসের প্রতিবেদনে বলা হয়, এশিয়ায় বিভিন্ন সুপারমার্কেটে প্লাস্টিকের ব্যাগ প্রত্যাহারের প্রবণতা বাড়ছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া অপচনশীল প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সুপারমার্কেট ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোয় রিসাইকেলেবল কনটেইনার বসাতে বলা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সুপারমার্কেটে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার কমানোর ব্যাপারে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করছে। তাইওয়ানের দোকানগুলোয় প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে এর দাম বেশি ধরা হচ্ছে। চীনেও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার গত এক দশকে ৬৬ শতাংশ কমেছে। ২০০৮ সালে পাতলা প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে চীন। তথ্যসূত্র: ফোর্বস, ভাইস ডটকম।
প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে কলাপাতায় সবজি বিক্রি করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত |
No comments