বিদেশ মন্ত্রণালয়ে ১০০ দিন by মিজানুর রহমান
“এটা
সত্য, বর্ডার সিল করা ছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা কিছুই করতে পারিনি। তবে
কথা-বার্তা বলছি, বলবো, দেখি কী হয়।” সরকারের ১০০ দিনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
হিসাবে নিজের কাজের মূল্যায়ন এভাবেই তুলে ধরলেন ড. একে আবদুল মোমেন।
জীবনের প্রথম সংসদ সদস্য হয়ে সরকারের বিদেশনীতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়া
শিক্ষাবিদ কাম কূটনীতিক ড. মোমেন অবশ্য মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে তার
সীমাবদ্ধতার কথা যেমন বলেন তেমনি উদ্যোগ এবং চেষ্টার কথাও জানান। বলেন,
আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের চেষ্টা ও উদ্যোগের ফল
পেতে সময় লাগবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছরের ৭ই জানুয়ারি যাত্রা শুরু করা সরকারের মূল প্রাধিকার নির্ধারিত হয়েছিল ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি বা অর্থনৈতিক কূটনীতি। যার ফোকাসে ছিল ৪টি বিষয়। বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ আকর্ষণ, শ্রমবাজারের উন্নয়ন এবং কনস্যুলার সেবার মান বৃদ্ধি।
বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে জার্মানী এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে অন্তত ৫টি করে চুক্তি সই হয়েছে। সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে। দেশটির বড় বিনিয়োগ আশা করছে ঢাকা।
৬ বছর ধরে বাংলাদেশীদের জন্য বন্ধ আমিরাতের শ্রমবাজার পুরোপুরি উন্মুক্ত না হলেও ১৯ ক্যাটাগরিতে তারা কর্মী নিতে নতুন করে আগ্রহ দেখিয়েছে। এ সংক্রান্ত ঘোষণাও এসেছে। ভূটান বাংলাদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সদ্য সমাপ্ত সফরে। বিষয় দুটিকে কূটনৈতিক সাফল্য হিসাবে দেখছেন মন্ত্রীসহ অন্যরা। কনস্যুলার সেবায় খানিক পরিবর্তন এসেছে। বিদেশস্থ মিশনগুলোতে সপ্তাহ জুড়ে ২৪ ঘন্টা হট লাইন চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রবাসী হয়রানী বন্ধে সিসিটিভি লাগানো এবং মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। সেবায় গতি আনতে অ্যাপস চালু হয়েছে। ডকুমেন্ট সত্যায়নে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে আগে থেকে চলামান বা কূটনৈতিক কার্যক্রমের রুটিন বিষয়াদিতে নতুন সরকারের আমলে খুব একটা গতি যে আসেনি বা গতি এলেও ফল দৃশ্যমান না হওয়ার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন মন্ত্রী এবং অন্য কূটনীতিকরা। মোটা দাগে ওই বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকা বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি নিয়ে নতুন করে কোন আলোচনা শুরু না হওয়া। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর ড. মোমেন গুডউইল বা পরিচিতমূলক প্রথম বিদেশ সফরে ভারতে গেছেন। উভয়ের তরফে সফরটি ‘ফলপ্রসূ’ বলেও দাবি করা হয়েছে।
পূর্বের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনও চীন ও রাশিয়ার অবস্থানে কোন পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি ঢাকাইয়া কূটনীতি। তবে পূর্বের দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও জোরদারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ‘লুক ইস্ট’ পলিসি বাস্তবায়নে সরকারের পূর্ণ মনোযোগ রয়েছে। এর অংশ হিসাবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বেইজিং সফর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মস্কো সফরের আমন্ত্রণ এবং প্রস্তাব আলোচনায় আছে।
পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে ‘শীতল ভাব’ বিরাজ করছে নানা কারণে। যদিও বাণিজ্য এবং অন্য রুটিন কার্যক্রমে বেশ গতি রয়েছে। কার্যকর গণতন্ত্র, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালীকরণ, মানবাধিকার পরিস্থিতি, মুক্তমতের চর্চা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার চাওয়া এবং বাংলাদেশের অবস্থান প্রশ্নে ভিন্নতা রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের উদ্বেগও আছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে কূটনৈতিক চেষ্টার কোন কমতিই ছিল না গত ১০০ দিনে।
ভোট প্রশ্নে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বিদেশী উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তাতে ‘উদ্বিগ্নদের’ অবস্থানে খুব একটা পরিবর্তন এসেছে মনে করেছেন না ঢাকার পেশাদাররা। বরং ট্রাম্পের চিঠি থেকে শুরু করে ঢাকা সফরকারী পশ্চিমা প্রতিনিধিরা প্রায় সবাই বিষয়গুলো জাগ্রত রাখার চেষ্টা করেছেন হয়ত টুইট বার্তায় কিংবা দূতাবাস মারফত প্রচারিত বিবৃতিতে। নির্বাচনের পরপরই ওয়াশিংটনে ‘রাজনৈতিক সফর’ করেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। তিনি এ নিয়ে তাদের উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা করেন।
চলতি মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। হোস্ট মাইক পম্পেও’র সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপ-প্রধান, সিনেটর এবং আমেরিকান দাতব্য সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক হয় তার। ওই সব বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্য মতে বৈঠকগুলোতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা সংকট এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মোকাবিলা, বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত আনাসহ ইস্যু ভিত্তিক অত্যন্ত কার্যকর এবং ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যার ফল বাংলাদেশ পাবে ধীরে ধীরে। কিন্তু ওই সফরে যে ৩ টি বিষয় ফোকাস ছিল প্রথমত: বাংলাদেশ প্রশ্নে মার্কিনীদের মনোভাবে পরিবর্তন। বিশেষতঃ ভোট এবং নতুন সরকারের কার্যক্রম বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা দেয়ার পাশাপাশি সম্পর্কের মতভিন্নতা দূর করে দেশটির বাজারে বাংলাদেশী পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের সূযোগ সৃষ্টি, বড় বিনিয়োগ আকর্ষণসহ বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মার্কিনীদের সমর্থন এবং সহযোগিতা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত: বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানো এবং তার বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া দণ্ড কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা পাওয়া। তৃতীয়ত: বাংলাদেশ যে মার্কিন নগরিকসহ সব বিদেশীদের জন্য নিরাপদ এবং এখানে যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে সেটি বুঝানো। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ড. মোমেন এ নিয়ে আলোচনা করেন এবং মার্কিনীদের তরফে অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক রেসপন্স বা জবাব রয়েছে বলে দাবি করেন। কিন্তু তিনি ওয়াশিংটনে থাকা অবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য অতি ঝুকিপূর্ণ ৩৫টি দেশকে ‘কে’ ক্যাটাগরিভুক্ত করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট নতুন করে যে ভ্রমণ সতর্কবার্তা জারি করে সেটাতে বাংলাদেশের নাম ওঠে যাওয়া এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরাতে প্রশাসনিক চেষ্টা না করে আইনী লড়াই শুরু করতে মার্কিনমন্ত্রীর নতুন পরামর্শ মন্ত্রীর সফরের অর্জনকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেয়। অবশ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিরাপত্তা সতর্কতাকে সামান্য বিষয় হিসবেই দেখছেন। গতকাল আলাপেও তিনি মানবজমিনকে বলেন, এটা কিছু না। আমাদের মধ্যে ভাল আলোচনা হয়েছে। তার দাবি কেবল পূর্ব নয়, পশ্চিমা দুনিয়া, কাছের এবং দূরের সবার সঙ্গেই বাংলাদেশের ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছরের ৭ই জানুয়ারি যাত্রা শুরু করা সরকারের মূল প্রাধিকার নির্ধারিত হয়েছিল ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি বা অর্থনৈতিক কূটনীতি। যার ফোকাসে ছিল ৪টি বিষয়। বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ আকর্ষণ, শ্রমবাজারের উন্নয়ন এবং কনস্যুলার সেবার মান বৃদ্ধি।
বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে জার্মানী এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে অন্তত ৫টি করে চুক্তি সই হয়েছে। সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে। দেশটির বড় বিনিয়োগ আশা করছে ঢাকা।
৬ বছর ধরে বাংলাদেশীদের জন্য বন্ধ আমিরাতের শ্রমবাজার পুরোপুরি উন্মুক্ত না হলেও ১৯ ক্যাটাগরিতে তারা কর্মী নিতে নতুন করে আগ্রহ দেখিয়েছে। এ সংক্রান্ত ঘোষণাও এসেছে। ভূটান বাংলাদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সদ্য সমাপ্ত সফরে। বিষয় দুটিকে কূটনৈতিক সাফল্য হিসাবে দেখছেন মন্ত্রীসহ অন্যরা। কনস্যুলার সেবায় খানিক পরিবর্তন এসেছে। বিদেশস্থ মিশনগুলোতে সপ্তাহ জুড়ে ২৪ ঘন্টা হট লাইন চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রবাসী হয়রানী বন্ধে সিসিটিভি লাগানো এবং মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। সেবায় গতি আনতে অ্যাপস চালু হয়েছে। ডকুমেন্ট সত্যায়নে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে আগে থেকে চলামান বা কূটনৈতিক কার্যক্রমের রুটিন বিষয়াদিতে নতুন সরকারের আমলে খুব একটা গতি যে আসেনি বা গতি এলেও ফল দৃশ্যমান না হওয়ার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন মন্ত্রী এবং অন্য কূটনীতিকরা। মোটা দাগে ওই বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকা বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি নিয়ে নতুন করে কোন আলোচনা শুরু না হওয়া। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর ড. মোমেন গুডউইল বা পরিচিতমূলক প্রথম বিদেশ সফরে ভারতে গেছেন। উভয়ের তরফে সফরটি ‘ফলপ্রসূ’ বলেও দাবি করা হয়েছে।
পূর্বের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনও চীন ও রাশিয়ার অবস্থানে কোন পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি ঢাকাইয়া কূটনীতি। তবে পূর্বের দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও জোরদারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ‘লুক ইস্ট’ পলিসি বাস্তবায়নে সরকারের পূর্ণ মনোযোগ রয়েছে। এর অংশ হিসাবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বেইজিং সফর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মস্কো সফরের আমন্ত্রণ এবং প্রস্তাব আলোচনায় আছে।
পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে ‘শীতল ভাব’ বিরাজ করছে নানা কারণে। যদিও বাণিজ্য এবং অন্য রুটিন কার্যক্রমে বেশ গতি রয়েছে। কার্যকর গণতন্ত্র, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালীকরণ, মানবাধিকার পরিস্থিতি, মুক্তমতের চর্চা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার চাওয়া এবং বাংলাদেশের অবস্থান প্রশ্নে ভিন্নতা রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের উদ্বেগও আছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে কূটনৈতিক চেষ্টার কোন কমতিই ছিল না গত ১০০ দিনে।
ভোট প্রশ্নে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বিদেশী উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তাতে ‘উদ্বিগ্নদের’ অবস্থানে খুব একটা পরিবর্তন এসেছে মনে করেছেন না ঢাকার পেশাদাররা। বরং ট্রাম্পের চিঠি থেকে শুরু করে ঢাকা সফরকারী পশ্চিমা প্রতিনিধিরা প্রায় সবাই বিষয়গুলো জাগ্রত রাখার চেষ্টা করেছেন হয়ত টুইট বার্তায় কিংবা দূতাবাস মারফত প্রচারিত বিবৃতিতে। নির্বাচনের পরপরই ওয়াশিংটনে ‘রাজনৈতিক সফর’ করেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। তিনি এ নিয়ে তাদের উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা করেন।
চলতি মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। হোস্ট মাইক পম্পেও’র সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপ-প্রধান, সিনেটর এবং আমেরিকান দাতব্য সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক হয় তার। ওই সব বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্য মতে বৈঠকগুলোতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা সংকট এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মোকাবিলা, বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত আনাসহ ইস্যু ভিত্তিক অত্যন্ত কার্যকর এবং ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যার ফল বাংলাদেশ পাবে ধীরে ধীরে। কিন্তু ওই সফরে যে ৩ টি বিষয় ফোকাস ছিল প্রথমত: বাংলাদেশ প্রশ্নে মার্কিনীদের মনোভাবে পরিবর্তন। বিশেষতঃ ভোট এবং নতুন সরকারের কার্যক্রম বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা দেয়ার পাশাপাশি সম্পর্কের মতভিন্নতা দূর করে দেশটির বাজারে বাংলাদেশী পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের সূযোগ সৃষ্টি, বড় বিনিয়োগ আকর্ষণসহ বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মার্কিনীদের সমর্থন এবং সহযোগিতা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত: বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানো এবং তার বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া দণ্ড কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা পাওয়া। তৃতীয়ত: বাংলাদেশ যে মার্কিন নগরিকসহ সব বিদেশীদের জন্য নিরাপদ এবং এখানে যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে সেটি বুঝানো। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ড. মোমেন এ নিয়ে আলোচনা করেন এবং মার্কিনীদের তরফে অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক রেসপন্স বা জবাব রয়েছে বলে দাবি করেন। কিন্তু তিনি ওয়াশিংটনে থাকা অবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য অতি ঝুকিপূর্ণ ৩৫টি দেশকে ‘কে’ ক্যাটাগরিভুক্ত করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট নতুন করে যে ভ্রমণ সতর্কবার্তা জারি করে সেটাতে বাংলাদেশের নাম ওঠে যাওয়া এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরাতে প্রশাসনিক চেষ্টা না করে আইনী লড়াই শুরু করতে মার্কিনমন্ত্রীর নতুন পরামর্শ মন্ত্রীর সফরের অর্জনকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেয়। অবশ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিরাপত্তা সতর্কতাকে সামান্য বিষয় হিসবেই দেখছেন। গতকাল আলাপেও তিনি মানবজমিনকে বলেন, এটা কিছু না। আমাদের মধ্যে ভাল আলোচনা হয়েছে। তার দাবি কেবল পূর্ব নয়, পশ্চিমা দুনিয়া, কাছের এবং দূরের সবার সঙ্গেই বাংলাদেশের ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে।
No comments