এপিএসের লেখা প্রতিবেদনে প্রতিমন্ত্রীর সই নিয়ম নেই তবুও... by দীন ইসলাম
নিজের
সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. আতিকুর রহমানের লেখা প্রাথমিক বিদ্যালয়
পরিদর্শন প্রতিবেদনে সই করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির
হোসেন। শুধু তাই নয়, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রতিমন্ত্রীর এপিএস প্রাথমিক
বিদ্যালয় পরিদর্শন করে চলেছেন। অনুপস্থিত শিক্ষকদের নিয়ে নানা মন্তব্য
লিখছেন। এনিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা
ক্ষুব্ধ। প্রতিমন্ত্রী ও এপিএসের স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন যাচাই করে দেখা যায়,
দুটি প্রতিবেদনই একজন ব্যক্তির হাতের লেখা। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া
তথ্যে জানা গেছে, গত ৯ই মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির
হোসেন নাখালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান।
পরিদর্শনে গিয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন লিখতে এপিএসকে ডাকেন প্রতিমন্ত্রী। তার নির্দেশনা অনুযায়ি প্রতিমন্ত্রী’র নাম ও পদবী উল্লেখ করে এপিএস লেখেন, ০৯/০৩/২০১৯ হঠাৎ বিদ্যালয় পরির্দশন করে দেখতে পেলাম রিতা রানী সরকার, সহকারি শিক্ষিকা ২০১৭ সাল থেকে অদ্য পর্যন্ত অনুপস্থিত।
হাজিরা খাতায় দেখা যায় তিনি মুন্সিগঞ্জে ডেপুটেশনে আছেন। কিন্তু কোন কাগজপত্র অফিসিয়ালি নেই।
রিতা রানী সরকার মুন্সিগঞ্জের ডিপিইও-এর স্ত্রী। ডিপিইও-এর স্ত্রী হিসেবে সে খুব ক্ষমতাধর তাই তিনি স্বামীর সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। ঘটনা ফাঁস হওয়ায় ডিপিইও মুন্সিগঞ্জ তাপস কুমার অধিকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপ-পরিচালক (ডিডি)- কে দিয়ে ব্যাকডেটে একটি আদেশ করিয়েছেন। জেলা চেঞ্জ-এ ডিডি’র ডেপুটেশন দেয়ার ক্ষমতা নেই। তাই ডিপিইও ঢাকা জরুরি ভিত্তিতে রিতাকে সাসপেন্ড করুন এবং টিইও +এটিইওকে শোকজ করুন।’ প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রীর প্রতিবেদন লেখার পর তাতে এপিএস নিজেই সিল মারেন। বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে চাইলে এপিএস আতিকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে প্রতিবেদনটি আমি লিখে দিয়েছি। সেখানেই প্রতিমন্ত্রী সই করেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি রিতাকে এরই মধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একই সঙ্গে টিইও ও এটিইওকে শোকজ করা হয়েছে। এখন তারা শোকজের জবাব দেননি। এদিকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব (এপিএস)-দের সরকারি অফিস পরিদর্শনের নিয়ম নেই। এ নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে ১৩ই মার্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর এপিএস মো. আতিকুর রহমান। এরপর বিদ্যালয়ের পরিদর্শন বইতে নিজের নাম ও পদবী উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশিত হয়ে ১৩/৩/১৯ ইং দুপুর ১টা ২০ মিনিটে বিজি প্রেস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতা পর্যালোচনা করে দেখতে পাই, অত্র বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা হাফসা তামান্না চৈতি গত ০১/১০/২০১৮ ইং থেকে অদ্য ১৩/৩/২০১৯ ইং পর্যন্ত স্কুলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত রয়েছেন।
তেজগাঁও থানা শিক্ষা অফিসার মইনুল হোসেন সাহেবের মাধ্যমে জানতে পারলাম শিক্ষিকতা তামান্না চৈতি এখন পর্যন্ত সাসপেন্ড হয় নাই। তাই এ বিষয়ে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে ফোনে আমি বিষয়টি অবহিত করলে তিনি আমাকে পরির্দশন খাতায় বিষয়টি লিপিবদ্ধ করে তামান্না চৈতিকে সাসপেন্ড করে পরবর্তী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ডিপিইও ঢাকাকে অনুরোধ করতে বলেন। বিধায় আমি ডিপিইও ঢাকাকে অনুরোধ করছি জরুরি ভিত্তিতে তামান্না চৈতিকে সাসপেন্ড করে পরবর্তী বিভাগীয় ব্যবস্থা নিন এবং মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরকে অবহিত করুন। এদিকে বিদ্যালয়টি’র হাজিরা খাতায় হাফসা তামান্না চৈতির ঘরে এপিএস লিখেছেন, বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত, ফাঁকিবাজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাফসা তামান্না চৈতি এরই মধ্যে চাকুরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে ডিপিইও’র কাছে চিঠি দিয়েছেন। এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে এপিএস আতিকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে বিদ্যালয়টি আমি পরির্দশনে যাই। আমি পরিদর্শন প্রতিবেদনেও সেই কথাটি উল্লেখ করি।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এপিএসদের মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কাজের তদারকিতে কোন ভূমিকা থাকবে না। তারা মন্ত্রীসভার সদস্যদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করবেন। এর আগে একান্ত সচিব (পিএস)রা মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীদের পক্ষে নোট লিখতেন। এজন্য ২০০৩ সালের ৩ রা সেপ্টেম্বর একটি আদেশ জারি করে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়, কতিপয় মন্ত্রণালয়ের নথিতে সচিবের নোটের উপর মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীদের একান্ত সচিবরা নোট লিখেন; সচিবকে নির্দেশ দেন। এটা সচিবালয়ের রীতি-পদ্ধতির পরিপন্থি। এই আচরণ প্রশাসনিক শৃঙ্খলার সংহারক। এই ধরনের গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীর একান্ত সচিবদের অনুরোধ করা হল। কোন একান্ত সচিব এই ধরনের নোট লিখলে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীর নজরে আনবেন এবং একান্ত সচিবকে নথিতে নোট না লেখার জন্য উপদেশ দেবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের এমন নির্দেশনার কথা জানা নেই মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্যদের পিএস-এপিএসদের।
পরিদর্শনে গিয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন লিখতে এপিএসকে ডাকেন প্রতিমন্ত্রী। তার নির্দেশনা অনুযায়ি প্রতিমন্ত্রী’র নাম ও পদবী উল্লেখ করে এপিএস লেখেন, ০৯/০৩/২০১৯ হঠাৎ বিদ্যালয় পরির্দশন করে দেখতে পেলাম রিতা রানী সরকার, সহকারি শিক্ষিকা ২০১৭ সাল থেকে অদ্য পর্যন্ত অনুপস্থিত।
হাজিরা খাতায় দেখা যায় তিনি মুন্সিগঞ্জে ডেপুটেশনে আছেন। কিন্তু কোন কাগজপত্র অফিসিয়ালি নেই।
রিতা রানী সরকার মুন্সিগঞ্জের ডিপিইও-এর স্ত্রী। ডিপিইও-এর স্ত্রী হিসেবে সে খুব ক্ষমতাধর তাই তিনি স্বামীর সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। ঘটনা ফাঁস হওয়ায় ডিপিইও মুন্সিগঞ্জ তাপস কুমার অধিকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপ-পরিচালক (ডিডি)- কে দিয়ে ব্যাকডেটে একটি আদেশ করিয়েছেন। জেলা চেঞ্জ-এ ডিডি’র ডেপুটেশন দেয়ার ক্ষমতা নেই। তাই ডিপিইও ঢাকা জরুরি ভিত্তিতে রিতাকে সাসপেন্ড করুন এবং টিইও +এটিইওকে শোকজ করুন।’ প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রীর প্রতিবেদন লেখার পর তাতে এপিএস নিজেই সিল মারেন। বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে চাইলে এপিএস আতিকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে প্রতিবেদনটি আমি লিখে দিয়েছি। সেখানেই প্রতিমন্ত্রী সই করেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি রিতাকে এরই মধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একই সঙ্গে টিইও ও এটিইওকে শোকজ করা হয়েছে। এখন তারা শোকজের জবাব দেননি। এদিকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব (এপিএস)-দের সরকারি অফিস পরিদর্শনের নিয়ম নেই। এ নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে ১৩ই মার্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর এপিএস মো. আতিকুর রহমান। এরপর বিদ্যালয়ের পরিদর্শন বইতে নিজের নাম ও পদবী উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশিত হয়ে ১৩/৩/১৯ ইং দুপুর ১টা ২০ মিনিটে বিজি প্রেস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতা পর্যালোচনা করে দেখতে পাই, অত্র বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা হাফসা তামান্না চৈতি গত ০১/১০/২০১৮ ইং থেকে অদ্য ১৩/৩/২০১৯ ইং পর্যন্ত স্কুলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত রয়েছেন।
তেজগাঁও থানা শিক্ষা অফিসার মইনুল হোসেন সাহেবের মাধ্যমে জানতে পারলাম শিক্ষিকতা তামান্না চৈতি এখন পর্যন্ত সাসপেন্ড হয় নাই। তাই এ বিষয়ে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে ফোনে আমি বিষয়টি অবহিত করলে তিনি আমাকে পরির্দশন খাতায় বিষয়টি লিপিবদ্ধ করে তামান্না চৈতিকে সাসপেন্ড করে পরবর্তী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ডিপিইও ঢাকাকে অনুরোধ করতে বলেন। বিধায় আমি ডিপিইও ঢাকাকে অনুরোধ করছি জরুরি ভিত্তিতে তামান্না চৈতিকে সাসপেন্ড করে পরবর্তী বিভাগীয় ব্যবস্থা নিন এবং মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরকে অবহিত করুন। এদিকে বিদ্যালয়টি’র হাজিরা খাতায় হাফসা তামান্না চৈতির ঘরে এপিএস লিখেছেন, বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত, ফাঁকিবাজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাফসা তামান্না চৈতি এরই মধ্যে চাকুরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে ডিপিইও’র কাছে চিঠি দিয়েছেন। এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে এপিএস আতিকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে বিদ্যালয়টি আমি পরির্দশনে যাই। আমি পরিদর্শন প্রতিবেদনেও সেই কথাটি উল্লেখ করি।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এপিএসদের মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কাজের তদারকিতে কোন ভূমিকা থাকবে না। তারা মন্ত্রীসভার সদস্যদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করবেন। এর আগে একান্ত সচিব (পিএস)রা মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীদের পক্ষে নোট লিখতেন। এজন্য ২০০৩ সালের ৩ রা সেপ্টেম্বর একটি আদেশ জারি করে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়, কতিপয় মন্ত্রণালয়ের নথিতে সচিবের নোটের উপর মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীদের একান্ত সচিবরা নোট লিখেন; সচিবকে নির্দেশ দেন। এটা সচিবালয়ের রীতি-পদ্ধতির পরিপন্থি। এই আচরণ প্রশাসনিক শৃঙ্খলার সংহারক। এই ধরনের গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীর একান্ত সচিবদের অনুরোধ করা হল। কোন একান্ত সচিব এই ধরনের নোট লিখলে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীর নজরে আনবেন এবং একান্ত সচিবকে নথিতে নোট না লেখার জন্য উপদেশ দেবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের এমন নির্দেশনার কথা জানা নেই মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্যদের পিএস-এপিএসদের।
No comments