নুসরাত হত্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন গ্রেপ্তার
অবশেষে
গ্রেপ্তার করা হয়েছে সোনাগাজী আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনকে। নুসরাতের
শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার পর থেকেই তার দিকে অভিযোগের তীর বিদ্ধ
হচ্ছিল। মামলার আসামিদের জবানিতেও নুসরাত হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে তার নাম
আসে। এত কিছুর পরও দীর্ঘ ১৩ দিন তিনি দিব্যি ঘরে ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে এ
ঘটনায় কটি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। তাকে ধরতে প্রশাসনের ছিল এক ধরনের
অনীহা। তবে, পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার একটি চ্যানেলের টক শোতে
বলেছিলেন, তার দিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে। প্রমাণ পেলে অবশ্যই তাকে
গ্রেপ্তার করবো।
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামালের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছিলেন। এরপরও পেরিয়ে গেছে ক’দিন।
গতকাল তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পিবিআই প্রধানের কথাই সত্যি প্রমাণিত হলো। তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নুসরাত জাহান রাফির শরীর কেরোসিন ঢেলে আগুন ও তাকে হত্যার সঙ্গে রুহুল আমিন জড়িত এমন প্রমাণ তাদের হাতে আসার পরই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলো। রুহুল আমীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গতকাল বিকাল চারটার দিকে সোনাগাজীর চর চান্দিয়া এলাকায় রুহুল আমিনের নিজের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই ফেনী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পিবিআই সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিকালে রুহুল আমিনকে ফেনী পিবিআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। নুসরাত হত্যায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রুহুল আমিনকে। জিজ্ঞাসাবাদে রুহুল আমিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। এর আগে, নুসরাত হত্যায় গ্রেপ্তার হওয়া একাধিক আসামি তাদের জবানবন্দিতে রুহুল আমিনের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করেন। তাদের দেয়া জবানবন্দিতে জানানো হয়, নুসরাতকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার ঘটনা শুরু থেকেই জানতেন মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন।
গত ১৫ই এপ্রিল নুসরাত হত্যায় জড়িত প্রধান দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের দীর্ঘ নয় ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি নেন ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসাইন। জবানবন্দিতে দুজনই নুসরাত হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন। যেখানে উঠে আসে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনীতিকসহ জড়িত অন্তত ২৮ জনের নাম। এজাহারের বাইরে উল্লেখ করা জড়িতদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রুহুল আমিন। জবানবন্দিতে সেদিন শামীম আদালতকে জানান, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর শাহাদাত দৌড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বের হয়ে যায়। এর মিনিট খানেকের মধ্যে নিরাপদ স্থানে গিয়ে রুহুল আমিনকে ফোনে নুসরাতকে আগুন দেয়ার বিষয়টি জানায়। তখন রুহুল আমিন শাহাদাতকে মুঠোফোনে বলে, আমি জানি। তোমরা চলে যাও। এমনকি নুসরাত হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে অনেকটা ক্রীড়নকের ভূমিকাও পালন করেন রুহুল আমিন।
শামীমের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে থানা ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করারও দায়িত্ব নেন উপজেলা সভাপতি। এর আগে, ২৭শে মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাহর কক্ষে যৌন হয়রানির শিকার হলে মামলা না নিতে অধ্যক্ষের পক্ষে তৎপরতা চালান রুহুল আমিন। পরে অবশ্য সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেকজন নেতার হস্তক্ষেপে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। এছাড়া হত্যার পর অধ্যক্ষের পক্ষে মানববন্ধন করতেও এই রুহুল আমিন ইন্ধন দেন বলে স্থানীয় কয়েকটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে, আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দোলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও রুহুল আমিন। নিহত নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাহর বিরুদ্ধে তিনি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭শে মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকিও দেয়া হয়। ৬ই এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে পাশের শেল্টার সেন্টার ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। চার দিন লড়াই করে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এই ঘটনায় নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলা তদন্ত করছে পিবিআই।
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামালের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছিলেন। এরপরও পেরিয়ে গেছে ক’দিন।
গতকাল তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পিবিআই প্রধানের কথাই সত্যি প্রমাণিত হলো। তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নুসরাত জাহান রাফির শরীর কেরোসিন ঢেলে আগুন ও তাকে হত্যার সঙ্গে রুহুল আমিন জড়িত এমন প্রমাণ তাদের হাতে আসার পরই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলো। রুহুল আমীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গতকাল বিকাল চারটার দিকে সোনাগাজীর চর চান্দিয়া এলাকায় রুহুল আমিনের নিজের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই ফেনী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পিবিআই সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিকালে রুহুল আমিনকে ফেনী পিবিআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। নুসরাত হত্যায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রুহুল আমিনকে। জিজ্ঞাসাবাদে রুহুল আমিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। এর আগে, নুসরাত হত্যায় গ্রেপ্তার হওয়া একাধিক আসামি তাদের জবানবন্দিতে রুহুল আমিনের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করেন। তাদের দেয়া জবানবন্দিতে জানানো হয়, নুসরাতকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার ঘটনা শুরু থেকেই জানতেন মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন।
গত ১৫ই এপ্রিল নুসরাত হত্যায় জড়িত প্রধান দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের দীর্ঘ নয় ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি নেন ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসাইন। জবানবন্দিতে দুজনই নুসরাত হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন। যেখানে উঠে আসে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনীতিকসহ জড়িত অন্তত ২৮ জনের নাম। এজাহারের বাইরে উল্লেখ করা জড়িতদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রুহুল আমিন। জবানবন্দিতে সেদিন শামীম আদালতকে জানান, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর শাহাদাত দৌড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বের হয়ে যায়। এর মিনিট খানেকের মধ্যে নিরাপদ স্থানে গিয়ে রুহুল আমিনকে ফোনে নুসরাতকে আগুন দেয়ার বিষয়টি জানায়। তখন রুহুল আমিন শাহাদাতকে মুঠোফোনে বলে, আমি জানি। তোমরা চলে যাও। এমনকি নুসরাত হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে অনেকটা ক্রীড়নকের ভূমিকাও পালন করেন রুহুল আমিন।
শামীমের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে থানা ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করারও দায়িত্ব নেন উপজেলা সভাপতি। এর আগে, ২৭শে মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাহর কক্ষে যৌন হয়রানির শিকার হলে মামলা না নিতে অধ্যক্ষের পক্ষে তৎপরতা চালান রুহুল আমিন। পরে অবশ্য সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেকজন নেতার হস্তক্ষেপে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। এছাড়া হত্যার পর অধ্যক্ষের পক্ষে মানববন্ধন করতেও এই রুহুল আমিন ইন্ধন দেন বলে স্থানীয় কয়েকটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে, আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দোলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও রুহুল আমিন। নিহত নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাহর বিরুদ্ধে তিনি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭শে মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকিও দেয়া হয়। ৬ই এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে পাশের শেল্টার সেন্টার ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। চার দিন লড়াই করে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এই ঘটনায় নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলা তদন্ত করছে পিবিআই।
No comments