ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যা বললেন বন্ধুরা
দীর্ঘ
২০ বছর পর গত রোববার নিজের পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহ মেডিকেল
কলেজে গিয়েছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। ২০ বছরের ব্যবধানে অনেক
কিছুই বদলে গেছে। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। তবে সহপাঠীদের
সঙ্গে কাটানো এক ঘণ্টা তিনি আগের মতোই আড্ডাবাজি আর গল্পগুজব করে কাটালেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মূল বক্তব্য দেন লোটে শেরিং। এরপর আরেকটি অনুষ্ঠানে নিজের ৭৭ জন সহপাঠীর সঙ্গে আলাদা করে আড্ডা দেন তিনি। প্রাণখুলে অতীত স্মৃতির ঢালি মেলে ধরেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মূল বক্তব্য দেন লোটে শেরিং। এরপর আরেকটি অনুষ্ঠানে নিজের ৭৭ জন সহপাঠীর সঙ্গে আলাদা করে আড্ডা দেন তিনি। প্রাণখুলে অতীত স্মৃতির ঢালি মেলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে
উপস্থিত লোটে শেরিংয়ের সহপাঠী ও বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের চিকিৎসক শফিকুল বারি তুহিন ও আসাদুজ্জামান রতনের সঙ্গে কথা বলে
জানা যায়, লোটে শেরিং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ২ নম্বর গ্যালারির
মাঝামাঝিতে নির্দিষ্ট একটি আসনে নিয়মিত বসতেন। গতকাল তাঁর আগমন উপলক্ষে ৭৭
জন সহপাঠী মিলে ২ নম্বর গ্যালারিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। মূল
অনুষ্ঠানের বক্তব্যের পর লোটে শেরিং যান ২ নম্বর গ্যালারিতে। পুরোনো
বন্ধুরা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে লোটের শেরিংয়ের নির্দিষ্ট সেই আসনটি ফাঁকা
রাখেন। সহপাঠীদের চমকে দিয়ে তিনি পুরোনো স্মৃতি মনে রেখে নিজের আসনটিতেই
বসেন।
কথা
ছিল, লোটে শেরিং সহপাঠীদের সঙ্গে ১৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট থাকবেন।
কিন্তু সময় ভুলে গিয়ে তিনি এক ঘণ্টা বন্ধু-সহপাঠীর সঙ্গে থাকেন। বাংলা ও
ইংরেজি মিলিয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করলেন তিনি।
বাংলাদেশের
বিভিন্ন প্রান্তে থাকা লোটে শেরিংয়ের ৭৭ জন সহপাঠী চিকিৎসক গতকাল ময়মনসিংহ
মেডিকেল কলেজে গিয়েছিলেন। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে প্রত্যেকেই একটি নির্দিষ্ট
জার্সি পরেন। লোটে শেরিং যখন আসেন, তখন তাঁকেও এই জার্সি পরতে বলা হলে
অবলীলায় সেই জার্সি পরে নেন তিনি। এখানকার ছাত্র থাকার সময় লোটে শেরিং
সহপাঠীদের সঙ্গে একবার শিক্ষাসফরে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। সেসব স্মৃতিচারণ
করে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটান তিনি।
এক
সময়ের সহপাঠীদের সঙ্গে হাসি-আনন্দে সময় কাটালেও বলতে ভোলেননি গুরুত্বপূর্ণ
কথা। তিনি বলেন, এখনো সপ্তাহে দুই দিন তিনি নিজের দেশে বিনা মূল্যে
অস্ত্রোপচার করেন। নিজের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে নিজের
পরিকল্পনার কথাও বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন। জানান, চিকিৎসক পরিচয়েই
নিজের জীবনের শেষ দিনটি কাটাতে চান তিনি।
লোটে
শেরিং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ২৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৯১ সাল
থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ নেন। গত শুক্রবার
তিনি চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসেন। গতকাল নিজের এক সময়কার
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে যান। চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর
শেষে তিনি আজ সোমবার নিজের দেশে ফিরে যান।
No comments