পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়েনি প্রকৃতপক্ষে কমেছে -টিআইবি’র প্রতিবেদন
তৈরি
পোশাক খাতে ২০১৮ সালের নতুন কাঠামোয় মজুরি বাড়েনি, প্রকৃতপক্ষে ২৬ শতাংশ
কমেছে বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি বলেছে পোশাক শিল্প মালিক পক্ষের মজুরি বৃদ্ধির দাবির মধ্যে
শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি
কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। ‘তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন:
অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ
সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১৩ সালে
মজুরি কাঠামো অনুযায়ী প্রতিবছর পাঁচ শতাংশ হারে মজুরি বাড়ানোর নিয়ম রয়েছে। এ
হিসেবে মজুরি বাড়েনি, সার্বিকভাবে ২৬ শতাংশ কমেছে। যদিও মালিক পক্ষের দাবি
২০১৮ সালের বেতন কাঠামোতে ২৩ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু তা
নামেমাত্র প্রকৃত অর্থে নয়।
টিআইবি তাদের গবেষণা পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানায়, ২০১৩ সালের ঘোষিত মজুরি অনুযায়ী প্রথম গ্রেডে মজুরি ছিল ৮ হাজার ৫০০ টাকা। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ঘোষিত প্রথম গ্রেডে নতুন মজুরি করা হয়েছে ১০ হাজার ৯৩৮ টাকা।
কিন্তু প্রতিবছর ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টসহ ২০১৩ সালের বেতন কাঠামো অনুসারে ২০১৮ সালেই এ গ্রেডে মজুরি হওয়ার কথা ছিল ১৩ হাজার ৩৪৩ টাকা। সেই হিসেবে এ মজুরি ২৮ শতাংশ তথা ২ হাজার ৪০৫ টাকা কমেছে। একইভাবে প্রতিটি গ্রেডে নতুন কাঠামোতে ২৫ থেকে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত মজুরি কমেছে। যা গড়ে ২৬ শতাংশ মজুরি কমেছে।
এছাড়া জিডিপির হারে তুলনাযোগ্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশে মজুরি সব থেকে কম। বাংলাদেশে নূন্যতম মজুরি ১০১ ডলার। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ কম্বোডিয়ায় ১৯৭ ডলার, ভারতে ১৬০ ডলার, ভিয়েতনামে ১৩৬ ডলার, ফিলিপাইনে ১৭০ ডলার। কম্বোডিয়ার সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশে নূন্যতম মজুরি হওয়ার কথা ২০২ ডলার। এছাড়া অসঙ্গত মজুরি বৃদ্ধির কারণে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত ৫ হাজার শ্রমিকের বিরুদ্ধে ৩৫ টি মামলা করা হয়েছে। আরো নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে তাদের। এছাড়া এ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৬৮টি কারখানায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত, ৪০ বছরের ঊর্ধের শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত ও জোর করে ইস্তফাপত্রে সাক্ষর নেয়া হয়। এসব কারাখানায় আবার চাকুরিচ্যুতের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে কাজ করানো হচ্ছে।
অন্যদিকে টিআইবি তাদের গবেষণায় বলেছে, গবেষণার আওতাযুক্ত বেশির ভাগ কারখানায় মজুরি বৃদ্ধির জন্য উৎপাদন টার্গেট ৩০ থেকে ৩৬ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব কারখানায় টার্গেট পূরণ করতে গিয়ে শ্রমিকরা তাদের কাজ ও টয়লেটে পর্যন্ত যেতে পারছে না। অনেক কারখানায় আবার টার্গেট পূরণ করতে মজুরিবিহীন অতিরিক্ত সময় কাজ করিয়ে নেয়। এছাড়া শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, গালমন্দ করার অভিযোগ তো রয়েছেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে মার্তৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস কার্যকর হলেও শ্রম আইনে সেটি ১৬ সপ্তাহ রয়ে গেছে। যদিও প্রসবকালীন সময়ের ৮ সপ্তাহ আগে ছুটি সুবিধা কার্যকর হতে শুরু করেছে। এরপরেও অনেক কারখানার বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন সময়ে শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত করার অভিযোগ রয়ে গেছে। এর বাইরে অধিকাংশ শ্রমিক তার প্রাপ্য ছুটি সম্পর্কে জানে না। কারখানাগুলোও তাদের প্রাপ্য ছুটি সম্পর্কে জানায় না এবং ছুটি প্রদান করে না। এদিকে পোশাক খাতের সব থেকে বড় ট্রাজেডি রানা প্লাজা ধ্বসের (২৪শে এপ্রিল) ঘটনার বার্ষিকী সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় করা এ গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত সব শ্রমিককে ন্যায্য পাওনা ও পুনর্বাসন করা হয়নি। এখনও রানা প্লাজার ৫১ শতাংশ শ্রমিক বেকার রয়েছে। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণও যথাযথভাবে দেয়া হয়নি। রানা প্লাজার মালিক ও কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে ফোজদারি ও শ্রমিক আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হলেও কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি। রানা প্লাজার মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিতের কথা বলা হয়। এছাড়া তাজরিন ফ্যাশনের মালিকের বিরুদ্ধে মামলার ২০১৫ সালে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হলেও এ পর্যন্ত ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। একইভাবে স্পেকট্রাম ফ্যাশন মালিকের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে মামলা করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষমান রাখা হয়। মামলার অগ্রগতি না হলে মালিকপক্ষ মনে করবে, আইন অমান্য করে পার পাওয়া যায়।
এছাড়া কারখানাগুলোয় অগ্নি নির্বাপন বিধিমালা, ২০১৪ মালিকপক্ষের চাপে বিধিমালা অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা, অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঝুঁকি অব্যাহত, মাসুল হালনাগাদ না হওয়াতে সরকার বিপুল রাজস্ব হারিয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজউকভুক্ত অঞ্চলে রাজউকের এখতিয়ারকে পাশ কাটিয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ভবন নকশা অনুমোদনের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে রাজউক নিজেরা এ ধরনের নকশা তদারকি ও ভবন পরিদর্শন করছে না।
তিনি আরে বলেন, ট্রেড ইউনিয়নের ক্ষেত্রে আইনি ও প্রায়োগিক দুর্বলতা রয়েছে। মাত্র ৩ শতাংশ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। যার অধিকাংশ আবার মালিকদের দ্বারা প্রভাবিত। নের্তৃত্বের কোন্দল ও রাজনৈতিক আশ্রয়ও রয়েছে। টিআইবি তাদের গবেষণায় পোশাক খাতের আরো নানা অসঙ্গতি ও অগ্রগতি উপস্থাপনের পাশাপাশি ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরে। গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করেন সংস্থার সহকারি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) নাজমুল হুদা মিনা ও ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মো. মোস্তফা কামাল।
টিআইবি তাদের গবেষণা পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানায়, ২০১৩ সালের ঘোষিত মজুরি অনুযায়ী প্রথম গ্রেডে মজুরি ছিল ৮ হাজার ৫০০ টাকা। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ঘোষিত প্রথম গ্রেডে নতুন মজুরি করা হয়েছে ১০ হাজার ৯৩৮ টাকা।
কিন্তু প্রতিবছর ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টসহ ২০১৩ সালের বেতন কাঠামো অনুসারে ২০১৮ সালেই এ গ্রেডে মজুরি হওয়ার কথা ছিল ১৩ হাজার ৩৪৩ টাকা। সেই হিসেবে এ মজুরি ২৮ শতাংশ তথা ২ হাজার ৪০৫ টাকা কমেছে। একইভাবে প্রতিটি গ্রেডে নতুন কাঠামোতে ২৫ থেকে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত মজুরি কমেছে। যা গড়ে ২৬ শতাংশ মজুরি কমেছে।
এছাড়া জিডিপির হারে তুলনাযোগ্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশে মজুরি সব থেকে কম। বাংলাদেশে নূন্যতম মজুরি ১০১ ডলার। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ কম্বোডিয়ায় ১৯৭ ডলার, ভারতে ১৬০ ডলার, ভিয়েতনামে ১৩৬ ডলার, ফিলিপাইনে ১৭০ ডলার। কম্বোডিয়ার সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশে নূন্যতম মজুরি হওয়ার কথা ২০২ ডলার। এছাড়া অসঙ্গত মজুরি বৃদ্ধির কারণে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত ৫ হাজার শ্রমিকের বিরুদ্ধে ৩৫ টি মামলা করা হয়েছে। আরো নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে তাদের। এছাড়া এ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৬৮টি কারখানায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত, ৪০ বছরের ঊর্ধের শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত ও জোর করে ইস্তফাপত্রে সাক্ষর নেয়া হয়। এসব কারাখানায় আবার চাকুরিচ্যুতের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে কাজ করানো হচ্ছে।
অন্যদিকে টিআইবি তাদের গবেষণায় বলেছে, গবেষণার আওতাযুক্ত বেশির ভাগ কারখানায় মজুরি বৃদ্ধির জন্য উৎপাদন টার্গেট ৩০ থেকে ৩৬ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব কারখানায় টার্গেট পূরণ করতে গিয়ে শ্রমিকরা তাদের কাজ ও টয়লেটে পর্যন্ত যেতে পারছে না। অনেক কারখানায় আবার টার্গেট পূরণ করতে মজুরিবিহীন অতিরিক্ত সময় কাজ করিয়ে নেয়। এছাড়া শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, গালমন্দ করার অভিযোগ তো রয়েছেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে মার্তৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস কার্যকর হলেও শ্রম আইনে সেটি ১৬ সপ্তাহ রয়ে গেছে। যদিও প্রসবকালীন সময়ের ৮ সপ্তাহ আগে ছুটি সুবিধা কার্যকর হতে শুরু করেছে। এরপরেও অনেক কারখানার বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন সময়ে শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত করার অভিযোগ রয়ে গেছে। এর বাইরে অধিকাংশ শ্রমিক তার প্রাপ্য ছুটি সম্পর্কে জানে না। কারখানাগুলোও তাদের প্রাপ্য ছুটি সম্পর্কে জানায় না এবং ছুটি প্রদান করে না। এদিকে পোশাক খাতের সব থেকে বড় ট্রাজেডি রানা প্লাজা ধ্বসের (২৪শে এপ্রিল) ঘটনার বার্ষিকী সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় করা এ গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত সব শ্রমিককে ন্যায্য পাওনা ও পুনর্বাসন করা হয়নি। এখনও রানা প্লাজার ৫১ শতাংশ শ্রমিক বেকার রয়েছে। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণও যথাযথভাবে দেয়া হয়নি। রানা প্লাজার মালিক ও কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে ফোজদারি ও শ্রমিক আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হলেও কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি। রানা প্লাজার মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিতের কথা বলা হয়। এছাড়া তাজরিন ফ্যাশনের মালিকের বিরুদ্ধে মামলার ২০১৫ সালে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হলেও এ পর্যন্ত ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। একইভাবে স্পেকট্রাম ফ্যাশন মালিকের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে মামলা করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষমান রাখা হয়। মামলার অগ্রগতি না হলে মালিকপক্ষ মনে করবে, আইন অমান্য করে পার পাওয়া যায়।
এছাড়া কারখানাগুলোয় অগ্নি নির্বাপন বিধিমালা, ২০১৪ মালিকপক্ষের চাপে বিধিমালা অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা, অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঝুঁকি অব্যাহত, মাসুল হালনাগাদ না হওয়াতে সরকার বিপুল রাজস্ব হারিয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজউকভুক্ত অঞ্চলে রাজউকের এখতিয়ারকে পাশ কাটিয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ভবন নকশা অনুমোদনের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে রাজউক নিজেরা এ ধরনের নকশা তদারকি ও ভবন পরিদর্শন করছে না।
তিনি আরে বলেন, ট্রেড ইউনিয়নের ক্ষেত্রে আইনি ও প্রায়োগিক দুর্বলতা রয়েছে। মাত্র ৩ শতাংশ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। যার অধিকাংশ আবার মালিকদের দ্বারা প্রভাবিত। নের্তৃত্বের কোন্দল ও রাজনৈতিক আশ্রয়ও রয়েছে। টিআইবি তাদের গবেষণায় পোশাক খাতের আরো নানা অসঙ্গতি ও অগ্রগতি উপস্থাপনের পাশাপাশি ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরে। গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করেন সংস্থার সহকারি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) নাজমুল হুদা মিনা ও ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মো. মোস্তফা কামাল।
No comments