সামনে চ্যালেঞ্জ!
কিছুদিন
পর পর প্রশ্ন ওঠে কোথায় চলেছে বাংলাদেশ? এরশাদ আমলে বলা হতো, অদ্ভুত উটের
পিঠে চলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরকম প্রশ্নের মধ্যে
জিডিপি স্বাস্থ্যবান হয়। জাতির ললাটে মধ্যম আয়ের দেশের তকমা লাগে।
গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন সোয়া ৫ হাজার টাকা থেকে আট হাজার টাকা ছাড়িয়ে
যায়।
এমনকি নাগরিকদের আয়ুষ্কালও বেড়ে যায়। এটা একটা বাস্তবতা। কিন্তু এটাই শেষ নয়।
কারণ প্রশ্ন উঠছে, শান্তি কোথায়? টাকা পয়সা বাড়ছে, শান্তি বাড়ছে কিনা। টাকা দিয়ে প্রতিদিন যত খাবার, ফলমূল, শাকসবজি তারা কিনছে, সেসবে ভেজাল এতটাই ভয়াল ও কুটিল হয়ে উঠছে যে, তা শনাক্ত করা যাচ্ছে না। খাদ্যদ্রব্য সেফ নয়, জেনেও মানুষ তা এড়াতে পারছে না। কারণ তার সামনে কোনো বিকল্প নেই। রমজান আসছে। মানুষ খাদ্যদ্রব্যের বিষয়ে বাড়তি সংবেদনশীল হবেন। যত্ন ও সতর্কতা থাকবে, ভেজালমুক্ত খাবার কেনা ও তা আহারের। কিন্তু তার সামনে বিকল্প সীমিত।
সবশেষ টিআইবি’র নতুন গবেষণা বলছে, ওয়াসার পানি পানে ঢাকার ৬৩ ভাগ মানুষ ডায়রিয়ায় ভোগে। জন্ডিসে ৩৪, চর্মরোগে ৩৭, টাইফয়েডে ১৯ ও কলেরায় আরো ১৩ শতাংশ মানুষ যে ভোগে তারও পেছনে ঢাকা ওয়াসার দূষিত পানি। এরকম একটি ভয়াবহ খবরের পর উন্নত বিশ্ব হলে হুলস্থূল কাণ্ড ঘটে যেত। কিন্তু বাংলাদেশ নীরব থাকে। কারণ তার সামনে কোনো বিকল্প নেই। পানি খেলেও মরণ, না খেলেও মরণ। দুটির মধ্যে তফাৎ হলো, পানি খাওয়া বন্ধ করে দিলে তাৎক্ষণিক মরণ, আর খেলে তিলে তিলে নিঃশব্দে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাওয়া।
তাই কে কোথায় নিরাপদ, আর কে অনিরাপদ, সেটা কমবেশি প্রতিটি পরিবারের জিজ্ঞাসা। ঘরে থাকলেও নিস্তার নেই। রাস্তায় বেরুলেই দুর্ঘটনায় কারো অঙ্গহানি, প্রাণহানি ঘটতে পারে। কিন্তু কোথাও যেন কারো কিছুই দেখার নেই। আইনের অভাব নেই। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অভাব নেই। লোক-লস্করের অভাব নেই। তাদের বর্ধিত বেতন-ভাতার অভাব নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত আক্ষেপ করে বলেছেন, এত বেশি বেতন-ভাতা দেয়ার পরেও জনপ্রশাসনের সদস্যরা দুর্নীতি করছেন কেন?
রাস্তায় আবরাররা মরছে। চকবাজারে, এফ আর টাওয়ারে মানুষ পুড়ে মরছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নুসরাতদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু কোথাও অতি বড় অপরাধের পরেও দ্রুত বিচারের ধারণা জনপ্রিয় হচ্ছে না। কেউ কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং অন্যকিছু অপরাধের বিচারের দ্রুততা এবং সেই বিষয়ে জনগণের সামনে প্রতি ঘণ্টায় হালনাগাদ তথ্য প্রদানে রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিবর্গের উৎসাহের দিকটি এ প্রসঙ্গে স্মরণে রাখছেন।
প্রতিদিন রাস্তায় ২০ জনের মতো মানুষ প্রাণ হারায়। কত মানুষের অঙ্গহানি ঘটে, তা জানা যায় না।
সবাই জানেন, বাংলাদেশ এনালগে নেই। আছে ডিজিটালে। কিন্তু কোন কারণে কত মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে, তার পরিষ্কার হিসাব কোথাও কেউ প্রকাশ করে না। কেউ রাখে না। যেমন, পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইট। এখানে ধর্ষণের পরিসংখ্যান নেই। ধর্ষণ করে কত নারীকে প্রতিবছর হত্যা করা হয়, কিংবা কতগুলো গণধর্ষণ ঘটে, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই।
বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটে সড়কে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পরে ২০১৮ সালের সড়ক আইন পাস হলো। এই আইনে ভয়ঙ্কর বিধান করা হয়েছে যে, মানুষের জীবনের দাম মাত্র তিন লাখ টাকা। অবহেলাজনিত কারণে দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু ঘটলে আদালত ঘাতক চালককে কোনো জেলদণ্ড না দিয়ে শুধু তিন লাখ টাকা জরিমানা করতে পারেন।
অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, সড়কে গড়ে ২০ জন মানুষ হত্যা এবং তাদের জীবনের দাম জাতীয় সংসদ যেদেশে মাত্র তিন লাখ টাকা নির্দিষ্ট করে আইন পাস করতে পারে, সেই দেশের উচ্চ আদালত কতিপয় ক্ষেত্রে বেশি অঙ্কের ক্ষতিপূরণ নির্দিষ্ট করে দিলেই পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি কিংবা বেপরোয়া মালিক-চালকদের রাশ টানতে তা কার্যকর হতে পারে না। ক্ষতিপূরণ আদায়ের হাতেগোনা কিছু উদাহরণ তৈরি হয়েছে, কিন্তু সড়ক হত্যাকাণ্ডের তুলনায় বিচারের পরিসংখ্যান অত্যন্ত ধূসর। মিশুক মুনির ও তারেক মাসুদ হত্যাকাণ্ডের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন হয়েছে, কিন্তু তার বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে। ক্ষতিপূরণের সাড়ে চার কোটি টাকা করে তাদের প্রত্যেকের পরিবার কবে পাবে, তা কারো জানা নেই। সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মন্টুর পরিবার তো আইনি লড়াইয়ে জিতেও ক্ষতিপূরণের টাকা পেলো না।
কিন্তু ঘরে-বাইরে মৃত্যু ও বিচারহীনতার এত হাতছানির মধ্যেও মানুষ তাই বলে ঘরে বসে থাকে না। থাকতে পারে না। সবাই দেখে, মানুষ ছুটছে। আয় করছে। আয় বাড়ছেও অনেকের। অল্প মানুষের বাড়ছে রকেট গতিতে। স্বীকৃতমতেই চার লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে গেছে দেশ থেকে। যারা লুটপাট করছেন, তাদের ভরসা নেই বাংলাদেশের জলবায়ুতে। তাই তারা টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন।
সাবেক মন্ত্রী ও মহাজোট সরকারের হেভিওয়েট নেতা রাশেদ খান মেনন সম্প্রতি সংসদে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অতি ধনী চীনের থেকেও বেড়েছে। দেশের শীর্ষ ৫ শতাংশ ধনীর সম্পদ ১২১ গুণ বেড়েছে। অন্যদিকে সব থেকে গরিব ৫ শতাংশের কাছে থাকা মাত্র ১ শতাংশ সম্পদ চার ভাগের এক ভাগের কমে দাঁড়িয়েছে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও বছরে ৮ লাখ করে বেকার বাড়া সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতির জন্য বিরাট হুমকি।’
কিন্তু এটাও ঠিক যে, বাংলাদেশের ছবিটি শুধুই মলিন নয়। গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে আস্থাহীনতার মধ্যেও অনেকগুলো ফ্লাইওভার জটের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু এই প্রকল্প ভবিষ্যতে কতটা কি বর্তমানের অসহনীয় যানজট (গুগলের সাবেক একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলীর নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার পাঠক জরিপ বলেছে, বাংলাদেশেই এখন যানজটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন) থেকে দীর্ঘমেয়াদে পরিত্রাণ দেয়, তা অনিশ্চিত।
নীরবে মেট্রোরেলের কাজ এগুচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেই যানজট মিটে যাবে, এমন আশ্বাস হাঁকডাক দিয়ে নাগরিকদের কেউ দিচ্ছে না।
অন্যদিকে আরেক বহুল আলোচিত মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর মূল প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে বাস্তব ব্যয় শনৈ শনৈ বৃদ্ধির মধ্যে এটির নির্মাণ চলছে। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রাশানদের থেকে ভারতীয় ব্যবস্থাপনায় উতরে গেছে কোনো বিতর্ক ছাড়াই। কক্সবাজার অঞ্চলে ২৫টির বেশি মেগা প্রকল্পে তিন লাখ কোটি টাকা খরচের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে এবং তার বাস্তবায়ন এগিয়ে চলেছে। এবিষয়ে কক্সবাজারের একজন সংসদ সদস্য সম্প্রতি একটি জনসভায় নির্দিষ্টভাবে তথ্য দেন। কিন্তু যখন তার কাছে নির্দিষ্ট ভাবে জানতে চাওয়া হয়, প্রকল্পের মোট খরচের কত অংশ গত ৫ বা ১০ বছরে ব্যয় করা হয়েছে, তখন তিনি ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটা ঠিক দেশে একসঙ্গে মোটামুটি অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে। যা বাংলাদেশ আগে দেখেনি।
কিন্তু কেউ কেউ যেটা দেখছে না, সেটা হলো নাগরিকরা শান্তিতে নেই। স্বস্তিতে নেই। একটা ভয়, একটা উদ্বেগ, একটা অশান্তি তাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। অনেকের দাবি, সর্বত্র সুশাসনের ঘাটতি প্রকট হচ্ছে।
সামাজিক নিরাপত্তা তলানিতে। সড়কে, ইমারতে, মাদরাসার ছাদে সর্বত্র মৃত্যুর ভয়াল থাবাগুলো ওত পেতে আছে। ব্যাংকগুলোতে যা ঘটে চলেছে, তাতে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আস্থা কি দিন দিন বাড়ছে নাকি কমছে? এর উত্তর সম্ভবত মুখ ফুটে বলা নিরর্থক। এক লাখ কোটির বেশি টাকা ঋণ খেলাপিদের কব্জায়।
অন্যদিকে নীরবে সমাজে রাজনীতির প্রতি মানুষের নিরাসক্তি বাড়ছে। জনসভার ধারণাই উবে যেতে বসেছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা কমছে।
প্রশাসন ও সংসদ সহ সর্বত্রই নিরঙ্কুশ ধারণা জেঁকে বসেছে। গত ৩০শে ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ এবং সন্দেহ-সংশয় ছিলই। তেমন কেউ আশা করেনি, বিএনপি সরকার গঠন করে ফেলবে। কিন্তু অনেকেই যা ভাবেন নি, সেটা হলো দেশের প্রধান বিরোধী দল ৩শ’ আসনের মধ্যে ১০টি আসনও পাবে না।
ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হলে কী হতে পারতো সেটা অনেকের কাছেই পরিষ্কার। কিন্তু বাস্তবতা হলো মধ্যরাত পেরোনো ফলটা সবাইকে মানতে হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্ন তুলে কোন লাভ নেই। সেলফ সেন্সরশিপে কাবু মিডিয়া। রিপোটার্স উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে আর ৪ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। গতবছর থাকা ১৪৬ তম থেকে এ বছর ৪ ধাপ পিছিয়ে ১৫০-এ নেমেছে বাংলাদেশ।
কিন্তু যে কারণে কেউ কেউ বলেন, সামনে ঘোর বিপদ, সেটা দেশের বিরোধী দল তৈরি করবে না। বিরোধী দল নির্মূল করতে গিয়ে কারো মতে রাজনীতি নির্মূল হচ্ছে কিনা। গত উপজেলা নির্বাচনে কোনো উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল না। এখন উৎসবে যোগ দিতে মাইকিং করতে হয়। কিন্তু এটা তো বাংলাদেশের ছবি নয়।
দলের বিদ্রোহের সংজ্ঞা পাল্টাচ্ছে। এখানে আর শুধুই বিদ্রোহ নয়। এখন তা রূপ নিচ্ছে সশস্ত্র সংঘাতে, সশস্ত্র বিদ্রোহে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গত তিন মাসে দেশে দৃশ্যত রাজনীতি না থাকলেও রাজনৈতিক সংঘাত থেমে নেই। এই তিন মাসে রাজনৈতিক মারামারিতে মারা গেছেন ২৩ জন। হাত-পা ভেঙে কিংবা গুলি খেয়ে হাসপাতালে গেছেন ১ হাজার ২৪ জন। এই সব ‘অংশগ্রহণমূলক কাইজ্যা’ হয়েছে মূলত সরকারপন্থি দলের নেতাকর্মীদের নিজেদের ভেতর।
গত ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের পরের তিন মাসে কমপক্ষে ৯২টি রাজনৈতিক সংঘাত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে ১৪টি সংঘাত হয়েছে। এতে ১৯০ জন আহত ও ৪ জন নিহত হয়েছেন। যুবলীগের নিজেদের মধ্যে সংঘাত হয়েছে চারটি। এতে ২৭ জন আহত ও ১ জন নিহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যেও চারটি সংঘাতে ১ জন নিহত ও ২২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যুবলীগের সঙ্গে পুলিশের সংঘাতে ১ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।
এভাবে বাংলাদেশে একটা সহিংস রূপান্তরকরণ চলছে। কারো মতে এটাই চ্যালেঞ্জ। আইনের শাসন ও সুশাসন বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রশাসনে ও সমাজে প্রভাবশালীরা যার যার বলয় তৈরি করে নিচ্ছেন। সর্বশেষ অধ্যক্ষ সিরাজের গ্রেপ্তারের পরে অনেকটা ঘোষণা দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় অনেকেই শঙ্কিত। তারা বলছেন, এটা একটা অশনিসংকেত। এটিকে এখনো পর্যন্ত একটি সাধারণ যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি তা নয়। ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশের প্রকাশ্য ও বেপরোয়া সমর্থনের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আততায়ীরা থানা পুলিশের কেয়ার কম করেছে। কেউ ভয়ে প্রশ্ন তুলছেন, এটা একটা ফেনোমেনার সূচনা কিনা? একটা বিভীষিকাপূর্ণ মডেল কিনা। আততায়ীরা জানতো, সাময়িক ঝামেলা হতে পারে, বিচার হবে না। সামাজিক মিডিয়ায় বিচার না হওয়ার আশংকাই বেশি প্রকাশ পাচ্ছে।
সব থেকে মোক্ষম প্রশ্নটি তুলেছেন মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল। বলেছেন, প্রতিটি যৌন নির্যাতনের মামলার আসামিদের বিচার শুধু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হবে কিনা?
কেউ বলেন, এই প্রশ্নের মধ্যেই তিনি প্রকৃতপক্ষে ‘সামনে ঘোর বিপদের’ চিত্র এঁকে দিয়েছেন। কারণ এভাবে তো সমাজ চলতে পারে না।
তদুপরি কেউ কেউ বলছেন, এই সীমাবদ্ধতা, এইসব জ্বলন্ত প্রশ্ন, এইসব বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ থামবে না। তারা বিশ্বাস করেন, তারা আশাবাদী থাকেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয় এমন একটি বিহীত ব্যবস্থা নেবেন, যাতে নাগরিকগণ শঙ্কামুক্ত হতে পারেন।
এমনকি নাগরিকদের আয়ুষ্কালও বেড়ে যায়। এটা একটা বাস্তবতা। কিন্তু এটাই শেষ নয়।
কারণ প্রশ্ন উঠছে, শান্তি কোথায়? টাকা পয়সা বাড়ছে, শান্তি বাড়ছে কিনা। টাকা দিয়ে প্রতিদিন যত খাবার, ফলমূল, শাকসবজি তারা কিনছে, সেসবে ভেজাল এতটাই ভয়াল ও কুটিল হয়ে উঠছে যে, তা শনাক্ত করা যাচ্ছে না। খাদ্যদ্রব্য সেফ নয়, জেনেও মানুষ তা এড়াতে পারছে না। কারণ তার সামনে কোনো বিকল্প নেই। রমজান আসছে। মানুষ খাদ্যদ্রব্যের বিষয়ে বাড়তি সংবেদনশীল হবেন। যত্ন ও সতর্কতা থাকবে, ভেজালমুক্ত খাবার কেনা ও তা আহারের। কিন্তু তার সামনে বিকল্প সীমিত।
সবশেষ টিআইবি’র নতুন গবেষণা বলছে, ওয়াসার পানি পানে ঢাকার ৬৩ ভাগ মানুষ ডায়রিয়ায় ভোগে। জন্ডিসে ৩৪, চর্মরোগে ৩৭, টাইফয়েডে ১৯ ও কলেরায় আরো ১৩ শতাংশ মানুষ যে ভোগে তারও পেছনে ঢাকা ওয়াসার দূষিত পানি। এরকম একটি ভয়াবহ খবরের পর উন্নত বিশ্ব হলে হুলস্থূল কাণ্ড ঘটে যেত। কিন্তু বাংলাদেশ নীরব থাকে। কারণ তার সামনে কোনো বিকল্প নেই। পানি খেলেও মরণ, না খেলেও মরণ। দুটির মধ্যে তফাৎ হলো, পানি খাওয়া বন্ধ করে দিলে তাৎক্ষণিক মরণ, আর খেলে তিলে তিলে নিঃশব্দে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাওয়া।
তাই কে কোথায় নিরাপদ, আর কে অনিরাপদ, সেটা কমবেশি প্রতিটি পরিবারের জিজ্ঞাসা। ঘরে থাকলেও নিস্তার নেই। রাস্তায় বেরুলেই দুর্ঘটনায় কারো অঙ্গহানি, প্রাণহানি ঘটতে পারে। কিন্তু কোথাও যেন কারো কিছুই দেখার নেই। আইনের অভাব নেই। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অভাব নেই। লোক-লস্করের অভাব নেই। তাদের বর্ধিত বেতন-ভাতার অভাব নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত আক্ষেপ করে বলেছেন, এত বেশি বেতন-ভাতা দেয়ার পরেও জনপ্রশাসনের সদস্যরা দুর্নীতি করছেন কেন?
রাস্তায় আবরাররা মরছে। চকবাজারে, এফ আর টাওয়ারে মানুষ পুড়ে মরছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নুসরাতদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু কোথাও অতি বড় অপরাধের পরেও দ্রুত বিচারের ধারণা জনপ্রিয় হচ্ছে না। কেউ কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং অন্যকিছু অপরাধের বিচারের দ্রুততা এবং সেই বিষয়ে জনগণের সামনে প্রতি ঘণ্টায় হালনাগাদ তথ্য প্রদানে রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিবর্গের উৎসাহের দিকটি এ প্রসঙ্গে স্মরণে রাখছেন।
প্রতিদিন রাস্তায় ২০ জনের মতো মানুষ প্রাণ হারায়। কত মানুষের অঙ্গহানি ঘটে, তা জানা যায় না।
সবাই জানেন, বাংলাদেশ এনালগে নেই। আছে ডিজিটালে। কিন্তু কোন কারণে কত মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে, তার পরিষ্কার হিসাব কোথাও কেউ প্রকাশ করে না। কেউ রাখে না। যেমন, পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইট। এখানে ধর্ষণের পরিসংখ্যান নেই। ধর্ষণ করে কত নারীকে প্রতিবছর হত্যা করা হয়, কিংবা কতগুলো গণধর্ষণ ঘটে, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই।
বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটে সড়কে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পরে ২০১৮ সালের সড়ক আইন পাস হলো। এই আইনে ভয়ঙ্কর বিধান করা হয়েছে যে, মানুষের জীবনের দাম মাত্র তিন লাখ টাকা। অবহেলাজনিত কারণে দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু ঘটলে আদালত ঘাতক চালককে কোনো জেলদণ্ড না দিয়ে শুধু তিন লাখ টাকা জরিমানা করতে পারেন।
অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, সড়কে গড়ে ২০ জন মানুষ হত্যা এবং তাদের জীবনের দাম জাতীয় সংসদ যেদেশে মাত্র তিন লাখ টাকা নির্দিষ্ট করে আইন পাস করতে পারে, সেই দেশের উচ্চ আদালত কতিপয় ক্ষেত্রে বেশি অঙ্কের ক্ষতিপূরণ নির্দিষ্ট করে দিলেই পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি কিংবা বেপরোয়া মালিক-চালকদের রাশ টানতে তা কার্যকর হতে পারে না। ক্ষতিপূরণ আদায়ের হাতেগোনা কিছু উদাহরণ তৈরি হয়েছে, কিন্তু সড়ক হত্যাকাণ্ডের তুলনায় বিচারের পরিসংখ্যান অত্যন্ত ধূসর। মিশুক মুনির ও তারেক মাসুদ হত্যাকাণ্ডের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন হয়েছে, কিন্তু তার বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে। ক্ষতিপূরণের সাড়ে চার কোটি টাকা করে তাদের প্রত্যেকের পরিবার কবে পাবে, তা কারো জানা নেই। সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মন্টুর পরিবার তো আইনি লড়াইয়ে জিতেও ক্ষতিপূরণের টাকা পেলো না।
কিন্তু ঘরে-বাইরে মৃত্যু ও বিচারহীনতার এত হাতছানির মধ্যেও মানুষ তাই বলে ঘরে বসে থাকে না। থাকতে পারে না। সবাই দেখে, মানুষ ছুটছে। আয় করছে। আয় বাড়ছেও অনেকের। অল্প মানুষের বাড়ছে রকেট গতিতে। স্বীকৃতমতেই চার লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে গেছে দেশ থেকে। যারা লুটপাট করছেন, তাদের ভরসা নেই বাংলাদেশের জলবায়ুতে। তাই তারা টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন।
সাবেক মন্ত্রী ও মহাজোট সরকারের হেভিওয়েট নেতা রাশেদ খান মেনন সম্প্রতি সংসদে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অতি ধনী চীনের থেকেও বেড়েছে। দেশের শীর্ষ ৫ শতাংশ ধনীর সম্পদ ১২১ গুণ বেড়েছে। অন্যদিকে সব থেকে গরিব ৫ শতাংশের কাছে থাকা মাত্র ১ শতাংশ সম্পদ চার ভাগের এক ভাগের কমে দাঁড়িয়েছে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও বছরে ৮ লাখ করে বেকার বাড়া সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতির জন্য বিরাট হুমকি।’
কিন্তু এটাও ঠিক যে, বাংলাদেশের ছবিটি শুধুই মলিন নয়। গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে আস্থাহীনতার মধ্যেও অনেকগুলো ফ্লাইওভার জটের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু এই প্রকল্প ভবিষ্যতে কতটা কি বর্তমানের অসহনীয় যানজট (গুগলের সাবেক একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলীর নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার পাঠক জরিপ বলেছে, বাংলাদেশেই এখন যানজটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন) থেকে দীর্ঘমেয়াদে পরিত্রাণ দেয়, তা অনিশ্চিত।
নীরবে মেট্রোরেলের কাজ এগুচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেই যানজট মিটে যাবে, এমন আশ্বাস হাঁকডাক দিয়ে নাগরিকদের কেউ দিচ্ছে না।
অন্যদিকে আরেক বহুল আলোচিত মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর মূল প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে বাস্তব ব্যয় শনৈ শনৈ বৃদ্ধির মধ্যে এটির নির্মাণ চলছে। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রাশানদের থেকে ভারতীয় ব্যবস্থাপনায় উতরে গেছে কোনো বিতর্ক ছাড়াই। কক্সবাজার অঞ্চলে ২৫টির বেশি মেগা প্রকল্পে তিন লাখ কোটি টাকা খরচের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে এবং তার বাস্তবায়ন এগিয়ে চলেছে। এবিষয়ে কক্সবাজারের একজন সংসদ সদস্য সম্প্রতি একটি জনসভায় নির্দিষ্টভাবে তথ্য দেন। কিন্তু যখন তার কাছে নির্দিষ্ট ভাবে জানতে চাওয়া হয়, প্রকল্পের মোট খরচের কত অংশ গত ৫ বা ১০ বছরে ব্যয় করা হয়েছে, তখন তিনি ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটা ঠিক দেশে একসঙ্গে মোটামুটি অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে। যা বাংলাদেশ আগে দেখেনি।
কিন্তু কেউ কেউ যেটা দেখছে না, সেটা হলো নাগরিকরা শান্তিতে নেই। স্বস্তিতে নেই। একটা ভয়, একটা উদ্বেগ, একটা অশান্তি তাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। অনেকের দাবি, সর্বত্র সুশাসনের ঘাটতি প্রকট হচ্ছে।
সামাজিক নিরাপত্তা তলানিতে। সড়কে, ইমারতে, মাদরাসার ছাদে সর্বত্র মৃত্যুর ভয়াল থাবাগুলো ওত পেতে আছে। ব্যাংকগুলোতে যা ঘটে চলেছে, তাতে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আস্থা কি দিন দিন বাড়ছে নাকি কমছে? এর উত্তর সম্ভবত মুখ ফুটে বলা নিরর্থক। এক লাখ কোটির বেশি টাকা ঋণ খেলাপিদের কব্জায়।
অন্যদিকে নীরবে সমাজে রাজনীতির প্রতি মানুষের নিরাসক্তি বাড়ছে। জনসভার ধারণাই উবে যেতে বসেছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা কমছে।
প্রশাসন ও সংসদ সহ সর্বত্রই নিরঙ্কুশ ধারণা জেঁকে বসেছে। গত ৩০শে ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ এবং সন্দেহ-সংশয় ছিলই। তেমন কেউ আশা করেনি, বিএনপি সরকার গঠন করে ফেলবে। কিন্তু অনেকেই যা ভাবেন নি, সেটা হলো দেশের প্রধান বিরোধী দল ৩শ’ আসনের মধ্যে ১০টি আসনও পাবে না।
ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হলে কী হতে পারতো সেটা অনেকের কাছেই পরিষ্কার। কিন্তু বাস্তবতা হলো মধ্যরাত পেরোনো ফলটা সবাইকে মানতে হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্ন তুলে কোন লাভ নেই। সেলফ সেন্সরশিপে কাবু মিডিয়া। রিপোটার্স উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে আর ৪ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। গতবছর থাকা ১৪৬ তম থেকে এ বছর ৪ ধাপ পিছিয়ে ১৫০-এ নেমেছে বাংলাদেশ।
কিন্তু যে কারণে কেউ কেউ বলেন, সামনে ঘোর বিপদ, সেটা দেশের বিরোধী দল তৈরি করবে না। বিরোধী দল নির্মূল করতে গিয়ে কারো মতে রাজনীতি নির্মূল হচ্ছে কিনা। গত উপজেলা নির্বাচনে কোনো উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল না। এখন উৎসবে যোগ দিতে মাইকিং করতে হয়। কিন্তু এটা তো বাংলাদেশের ছবি নয়।
দলের বিদ্রোহের সংজ্ঞা পাল্টাচ্ছে। এখানে আর শুধুই বিদ্রোহ নয়। এখন তা রূপ নিচ্ছে সশস্ত্র সংঘাতে, সশস্ত্র বিদ্রোহে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গত তিন মাসে দেশে দৃশ্যত রাজনীতি না থাকলেও রাজনৈতিক সংঘাত থেমে নেই। এই তিন মাসে রাজনৈতিক মারামারিতে মারা গেছেন ২৩ জন। হাত-পা ভেঙে কিংবা গুলি খেয়ে হাসপাতালে গেছেন ১ হাজার ২৪ জন। এই সব ‘অংশগ্রহণমূলক কাইজ্যা’ হয়েছে মূলত সরকারপন্থি দলের নেতাকর্মীদের নিজেদের ভেতর।
গত ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের পরের তিন মাসে কমপক্ষে ৯২টি রাজনৈতিক সংঘাত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে ১৪টি সংঘাত হয়েছে। এতে ১৯০ জন আহত ও ৪ জন নিহত হয়েছেন। যুবলীগের নিজেদের মধ্যে সংঘাত হয়েছে চারটি। এতে ২৭ জন আহত ও ১ জন নিহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যেও চারটি সংঘাতে ১ জন নিহত ও ২২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যুবলীগের সঙ্গে পুলিশের সংঘাতে ১ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।
এভাবে বাংলাদেশে একটা সহিংস রূপান্তরকরণ চলছে। কারো মতে এটাই চ্যালেঞ্জ। আইনের শাসন ও সুশাসন বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রশাসনে ও সমাজে প্রভাবশালীরা যার যার বলয় তৈরি করে নিচ্ছেন। সর্বশেষ অধ্যক্ষ সিরাজের গ্রেপ্তারের পরে অনেকটা ঘোষণা দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় অনেকেই শঙ্কিত। তারা বলছেন, এটা একটা অশনিসংকেত। এটিকে এখনো পর্যন্ত একটি সাধারণ যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি তা নয়। ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশের প্রকাশ্য ও বেপরোয়া সমর্থনের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আততায়ীরা থানা পুলিশের কেয়ার কম করেছে। কেউ ভয়ে প্রশ্ন তুলছেন, এটা একটা ফেনোমেনার সূচনা কিনা? একটা বিভীষিকাপূর্ণ মডেল কিনা। আততায়ীরা জানতো, সাময়িক ঝামেলা হতে পারে, বিচার হবে না। সামাজিক মিডিয়ায় বিচার না হওয়ার আশংকাই বেশি প্রকাশ পাচ্ছে।
সব থেকে মোক্ষম প্রশ্নটি তুলেছেন মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল। বলেছেন, প্রতিটি যৌন নির্যাতনের মামলার আসামিদের বিচার শুধু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হবে কিনা?
কেউ বলেন, এই প্রশ্নের মধ্যেই তিনি প্রকৃতপক্ষে ‘সামনে ঘোর বিপদের’ চিত্র এঁকে দিয়েছেন। কারণ এভাবে তো সমাজ চলতে পারে না।
তদুপরি কেউ কেউ বলছেন, এই সীমাবদ্ধতা, এইসব জ্বলন্ত প্রশ্ন, এইসব বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ থামবে না। তারা বিশ্বাস করেন, তারা আশাবাদী থাকেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয় এমন একটি বিহীত ব্যবস্থা নেবেন, যাতে নাগরিকগণ শঙ্কামুক্ত হতে পারেন।
No comments