দুদকের ভুল স্বীকার, বড় চক্রের শিকার জাহালম
সোনালী
ব্যাংকের ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা ৩৩টি মামলায় নিরপরাধ
জাহালমের তিন বছর কারাভোগের ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা দেশজুড়ে। যে আবু
সালেকের কারণে জাহালমের জীবন থেকে তিনটি বছর হারিয়ে গেছে কোনো হদিস মিলছে
না তার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবু সালেক একা নয়, অর্থ আত্মসাতের এই ঘটনার
সঙ্গে রয়েছে একটি বড় চক্র। এদিকে নিরপরাধ জাহালমের কারাভোগে নিজেদের ভুলের
কথা স্বীকার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে এই আত্মসাতের
ঘটনায় তদন্তে দুদক ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের গাফলতি ছিল কি না তা জানতে পুনরায়
এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল সংস্থাটির সচিব ড. শামসুল
আরেফিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পরিচালক আবু হাসনাত মো. আব্দুল ওয়াদুদকে
তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। অন্যদিকে দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলামও গতকাল
সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে জানান, দুদকের কিছু ভুলে জাহালমকে কারাভোগ করতে
হয়েছে। তার কারাভোগে কার গাফলতি ছিল তা ২০ কর্মদিবসের মধ্যে এক সদস্য
বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
যে বা যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান দুদক কমিশনার। এসময় তিনি কীভাবে জাহালম এই মামলায় ফেঁসেছেন তারও সারমর্ম তুলে ধরেন।
আমিনুল ইসলাম জানান, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে একটি টিভি চ্যানেলে জাহালমকে নিয়ে রিপোর্ট করার পর বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। যেদিন ওই রিপোর্টটি দেখেছি তার পরদিন থেকেই আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করি। একই সঙ্গে গত বছরের মার্চ মাসেই ৯ কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য নিয়োগ করি। পাশাপাশি মামলাগুলো স্থগিত রাখার জন্য আদালতে পিপিগণকে চিঠি পাঠানো হয়।
তিনি জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন থেকে জানা যায় জাহালম নির্দোষ। তিনি প্রকৃত আবু সালেক নন। পরবর্তী সময়ে আমরা দ্রুত এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক জাহালমকে মামলা থেকে অব্যাহতি এবং মুক্তি দেয়া হয়। নির্দোষ এই ব্যক্তি যার কারণে কারাভোগ করলেন সেই আবু সালেকের বিষয়ে দুদক কমিশনার জানান, আবু সালেকের ব্যাপারে কমিশন নতুন করে তদন্ত করবে। তবে এরই মধ্যে যেটা কমিশন পেয়েছে তা হলো- আবু সালেক এক সময় এনআইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) প্রকল্পে কাজ করতো। সেখান থেকেই কীভাবে আইডি কার্ড জাল করা যায় সেসব রপ্ত করেছেন। জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে তিনি শুধু ছবি পরিবর্তন করে ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটান। যে কারণে ব্যাংক কর্মকর্তারা জাহালমকেই চিহ্নিত করেন। একই সঙ্গে দুদকে অনুসন্ধানের সময়ও নিরীহ ব্যক্তিটিই আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত হয়।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিনা অপরাধে জাহালমের কারাভোগের পেছনে শুধু আবু সালেকই জড়িত নয়। একটি চক্র কাজ করেছে। আর তাতে গোলাম মর্তুজা নামের আরো একজনের নাম উঠে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গোলাম মর্তুজার বর্তমান আবাস নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা সদরের দক্ষিণপাড়া (পাইলট স্কুলের পূর্ব পাশে) হলেও তার আসল বাড়ি পার্শ্ববর্তী মল্লিকপুর ইউনিয়নের জোগিয়া গ্রামে। এই গ্রামের মধ্যপাড়ার মৃত ছামাদ মোল্লার ছেলে তিনি। তার বড় ভাই মৃত তবিবুর রহমান রুনু ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। আর মর্তুজার তিন সন্তানের মধ্যে দুজন ছেলে ও একজন মেয়ে। তারা সবাই কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে পড়ছেন এবং স্ত্রী কালনা সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে এখন লোহাগড়াতেই আছেন গোলাম মর্তুজা। জড়িয়েছেন স্থানীয় রাজনীতিতেও।
গোলাম মর্তুজার আরো একটি পরিচয় হচ্ছে- তিনি একটি বড় ধরনের জালিয়াতি চক্রের সদস্য। তার প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৩টি চেকে ১৮ কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে লুট হয়েছে। এই চক্রটির অনুসন্ধানের নামে ভুল তদন্তে প্রায় তিন বছর জেল খেটেছেন ঘোড়াশালের একটি পাটকল শ্রমিক টাঙ্গাইলের নাগরপুরের জাহালম। অথচ, কোনো মামলার চার্জশিটে জাহালমের নামই নেই। আবার কোনোটিতে আছে জাহালম ওরফে আবু সালেক ওরফে গোলাম মর্তুজা (৩০)। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই তিনজনের বাড়ি তিন জেলায়। বয়সেরও ফারাক রাত আর দিন। কোনো মামলায় আবার জাহালমের বাড়ি টাঙ্গাইল, আবু সালেকের বাড়ি ঠাকুরগাঁও ও গোলাম মর্তুজার বাড়ি নড়াইলে দেখানো হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের সব মামলার এজাহার, চার্জশিট ও সম্পূরক চার্জশিটে গোলাম মর্তুজা ‘মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্সে’র প্রোপাইটার বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানায় বলা হয়েছে- গ্রাম: লোহাগড়া (দক্ষিণ পাড়া), নড়াইল। আবার অন্য একটি মামলার অধিকতর তদন্তে মর্তুজার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেছে দুদক। এছাড়া কোনো কোনো মামলায় মর্তুজার বাড়ি দেখানো হয়েছে, টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। মামলার নথিপত্র, দুদকের এজাহার ও চার্জশিট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আবু সালেক ‘মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্সে’র প্রোপাইটার মর্তুজাকে ৩৩টি অ্যাকাউন্ট পে চেক দিয়েছেন। যদিও তার ওই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই ছিল না। এরপরও ‘চেক বাউন্স’ না হয়ে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকে থাকা গোলাম মর্তুজার মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্স’র হিসাবে ১৮ কোটি টাকা যোগ হয়েছে। পরে এই টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে চক্রটি। তবে এসব ঘটনার তদন্তে নেমে আবু সালেককেই জাহালম হিসেবে চিহ্নিত করেন দুদক কর্মকর্তারা। আবু সালেক জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) জালিয়াতির মাধ্যমে জাহালমের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। ঠিকানা জালিয়াতির এ ঘটনায় তিন বছর কারা ভোগ করেছেন জাহালম।
উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের এপ্রিলে ৩৩টি মামলা করে দুদক। দুদক তদন্ত করে বলে, জালিয়াত চক্র সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখায় আবু সালেকসহ তিনজনের হিসাব থেকে ১০৬টি চেক ইস্যু করে। চেকগুলো ১৮টি ব্যাংকের ১৩টি হিসাবে ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে জমা করে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের কর্মচারী মাইনুল হক জালিয়াতির ব্যাপারে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন। ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যাপারে সালেককে সহায়তাও করেন মাইনুল। সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখার কর্মচারী মাইনুল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিস (মতিঝিল) থেকে ভাউচার, চেক, কম্পিউটার প্রিন্ট আনা-নেয়া করতেন। আনা-নেয়ার পথে আবু সালেক স্বাক্ষরিত চেকগুলো সরিয়ে আলাদা রাখতেন। ওই চেকগুলো ছাড়া বাকি চেকের জন্য আলাদা ভুয়া ভাউচার তৈরি করে তা ক্যান্টনমেন্ট শাখায় দাখিল করতেন। লোকাল অফিসের কর্মকর্তা শাখা অফিসের কর্মকর্তার স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই না করে পুরো অর্থ ক্লিয়ারিং হাউসে পাঠাতেন। এভাবে ক্লিয়ারিং হাউসের সোনালী ব্যাংকের হিসাব থেকে ভুয়া ভাউচার তৈরির মাধ্যমে সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
যে বা যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান দুদক কমিশনার। এসময় তিনি কীভাবে জাহালম এই মামলায় ফেঁসেছেন তারও সারমর্ম তুলে ধরেন।
আমিনুল ইসলাম জানান, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে একটি টিভি চ্যানেলে জাহালমকে নিয়ে রিপোর্ট করার পর বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। যেদিন ওই রিপোর্টটি দেখেছি তার পরদিন থেকেই আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করি। একই সঙ্গে গত বছরের মার্চ মাসেই ৯ কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য নিয়োগ করি। পাশাপাশি মামলাগুলো স্থগিত রাখার জন্য আদালতে পিপিগণকে চিঠি পাঠানো হয়।
তিনি জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন থেকে জানা যায় জাহালম নির্দোষ। তিনি প্রকৃত আবু সালেক নন। পরবর্তী সময়ে আমরা দ্রুত এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক জাহালমকে মামলা থেকে অব্যাহতি এবং মুক্তি দেয়া হয়। নির্দোষ এই ব্যক্তি যার কারণে কারাভোগ করলেন সেই আবু সালেকের বিষয়ে দুদক কমিশনার জানান, আবু সালেকের ব্যাপারে কমিশন নতুন করে তদন্ত করবে। তবে এরই মধ্যে যেটা কমিশন পেয়েছে তা হলো- আবু সালেক এক সময় এনআইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) প্রকল্পে কাজ করতো। সেখান থেকেই কীভাবে আইডি কার্ড জাল করা যায় সেসব রপ্ত করেছেন। জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে তিনি শুধু ছবি পরিবর্তন করে ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটান। যে কারণে ব্যাংক কর্মকর্তারা জাহালমকেই চিহ্নিত করেন। একই সঙ্গে দুদকে অনুসন্ধানের সময়ও নিরীহ ব্যক্তিটিই আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত হয়।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিনা অপরাধে জাহালমের কারাভোগের পেছনে শুধু আবু সালেকই জড়িত নয়। একটি চক্র কাজ করেছে। আর তাতে গোলাম মর্তুজা নামের আরো একজনের নাম উঠে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গোলাম মর্তুজার বর্তমান আবাস নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা সদরের দক্ষিণপাড়া (পাইলট স্কুলের পূর্ব পাশে) হলেও তার আসল বাড়ি পার্শ্ববর্তী মল্লিকপুর ইউনিয়নের জোগিয়া গ্রামে। এই গ্রামের মধ্যপাড়ার মৃত ছামাদ মোল্লার ছেলে তিনি। তার বড় ভাই মৃত তবিবুর রহমান রুনু ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। আর মর্তুজার তিন সন্তানের মধ্যে দুজন ছেলে ও একজন মেয়ে। তারা সবাই কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে পড়ছেন এবং স্ত্রী কালনা সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে এখন লোহাগড়াতেই আছেন গোলাম মর্তুজা। জড়িয়েছেন স্থানীয় রাজনীতিতেও।
গোলাম মর্তুজার আরো একটি পরিচয় হচ্ছে- তিনি একটি বড় ধরনের জালিয়াতি চক্রের সদস্য। তার প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৩টি চেকে ১৮ কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে লুট হয়েছে। এই চক্রটির অনুসন্ধানের নামে ভুল তদন্তে প্রায় তিন বছর জেল খেটেছেন ঘোড়াশালের একটি পাটকল শ্রমিক টাঙ্গাইলের নাগরপুরের জাহালম। অথচ, কোনো মামলার চার্জশিটে জাহালমের নামই নেই। আবার কোনোটিতে আছে জাহালম ওরফে আবু সালেক ওরফে গোলাম মর্তুজা (৩০)। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই তিনজনের বাড়ি তিন জেলায়। বয়সেরও ফারাক রাত আর দিন। কোনো মামলায় আবার জাহালমের বাড়ি টাঙ্গাইল, আবু সালেকের বাড়ি ঠাকুরগাঁও ও গোলাম মর্তুজার বাড়ি নড়াইলে দেখানো হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের সব মামলার এজাহার, চার্জশিট ও সম্পূরক চার্জশিটে গোলাম মর্তুজা ‘মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্সে’র প্রোপাইটার বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানায় বলা হয়েছে- গ্রাম: লোহাগড়া (দক্ষিণ পাড়া), নড়াইল। আবার অন্য একটি মামলার অধিকতর তদন্তে মর্তুজার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেছে দুদক। এছাড়া কোনো কোনো মামলায় মর্তুজার বাড়ি দেখানো হয়েছে, টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। মামলার নথিপত্র, দুদকের এজাহার ও চার্জশিট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আবু সালেক ‘মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্সে’র প্রোপাইটার মর্তুজাকে ৩৩টি অ্যাকাউন্ট পে চেক দিয়েছেন। যদিও তার ওই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই ছিল না। এরপরও ‘চেক বাউন্স’ না হয়ে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকে থাকা গোলাম মর্তুজার মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্স’র হিসাবে ১৮ কোটি টাকা যোগ হয়েছে। পরে এই টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে চক্রটি। তবে এসব ঘটনার তদন্তে নেমে আবু সালেককেই জাহালম হিসেবে চিহ্নিত করেন দুদক কর্মকর্তারা। আবু সালেক জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) জালিয়াতির মাধ্যমে জাহালমের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। ঠিকানা জালিয়াতির এ ঘটনায় তিন বছর কারা ভোগ করেছেন জাহালম।
উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের এপ্রিলে ৩৩টি মামলা করে দুদক। দুদক তদন্ত করে বলে, জালিয়াত চক্র সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখায় আবু সালেকসহ তিনজনের হিসাব থেকে ১০৬টি চেক ইস্যু করে। চেকগুলো ১৮টি ব্যাংকের ১৩টি হিসাবে ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে জমা করে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের কর্মচারী মাইনুল হক জালিয়াতির ব্যাপারে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন। ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যাপারে সালেককে সহায়তাও করেন মাইনুল। সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখার কর্মচারী মাইনুল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিস (মতিঝিল) থেকে ভাউচার, চেক, কম্পিউটার প্রিন্ট আনা-নেয়া করতেন। আনা-নেয়ার পথে আবু সালেক স্বাক্ষরিত চেকগুলো সরিয়ে আলাদা রাখতেন। ওই চেকগুলো ছাড়া বাকি চেকের জন্য আলাদা ভুয়া ভাউচার তৈরি করে তা ক্যান্টনমেন্ট শাখায় দাখিল করতেন। লোকাল অফিসের কর্মকর্তা শাখা অফিসের কর্মকর্তার স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই না করে পুরো অর্থ ক্লিয়ারিং হাউসে পাঠাতেন। এভাবে ক্লিয়ারিং হাউসের সোনালী ব্যাংকের হিসাব থেকে ভুয়া ভাউচার তৈরির মাধ্যমে সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
No comments