দুই শতাধিক পোশাক কারখানা বন্ধের নির্দেশ ডিআইএফই’র by এম এম মাসুদ
সারা
দেশের ছোট-বড় দুই শতাধিক পোশাক কারখানা সংস্কারে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না
হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কল-কারখানা ও
প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র কাছে এসব
কারখানাকে ইউডি (ইউটিলিটি ডিকারেশন বা কাঁচামালের প্রাপ্যতার ঘোষণা)
সংক্রান্ত সেবা প্রদানে নিষেধাজ্ঞার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ডিআইএফই সূত্রে জানা গেছে, যেসব কারখানার সংস্কার ২০ শতাংশের নিচে, তাদের ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কারখানাগুলো সংস্কারে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি করতে পারলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে। বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কারখানাগুলোর রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। অবশ্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেনি বলেই জানা গেছে। সংগঠন দুটির মতে, হঠাৎ করে এতগুলো কারখানা বন্ধ করা যাবে না। কারণ, এখানে শ্রমিকদের স্বার্থ জড়িত।
তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া বন্ধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই বন্ধ করা হবে বলে মনে করে তারা।
জানা গেছে, কমপ্লায়েন্স মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে না পারা, কার্যাদেশ না থাকা ও আর্থিক লোকসানের কারণে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। কারখানা বন্ধের আনুষঙ্গিক কারণের মধ্যে আরো রয়েছে আর্থিক অসচ্ছলতা, ব্যাংকিং দায়, কর্মপরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত না হওয়া, গ্যাস সংকট, অগ্নিকাণ্ড, মালিকপক্ষের মতপার্থক্য ও কোন্দল, পর্যাপ্ত মূলধনের অভাব ও শ্রমিক অসন্তোষ। বস্ত্র অধিদপ্তরের খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠন ১৩টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৭টি সংগঠন হলো- বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ, বিএলএমইএ, বিজিএপিএমইএ ও বিএসটিএমপিআইএ। এর মধ্যে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্য কারখানাই সবচেয়ে বেশি বন্ধ হয়েছে। আর কমপ্লায়েন্স ইস্যুই এসব কারখানা বন্ধের মূল কারণ বলে মনে করে সংস্থাটি।
বস্ত্র অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ঢাকায় ৩ হাজার ৪১৬টি কারখানা। গাজীপুরে বস্ত্র ও পোশাক খাতের কারখানা ১ হাজার ৯২৩টি। নারায়ণগঞ্জে আছে ১ হাজার ২৯৯টি কারখানা। এছাড়া চট্টগ্রামে ৯১০টি ও নরসিংদীতে ৪০২টি কারখানা সক্রিয় আছে।
ডিআইএফই’র উপ-মহাপরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, দুই শতাধিক কারখানার ইউডি বা ইউটিলিটি ডিকারেশন বাতিল করার জন্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’কে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে বড় বড় প্রায় ৫০টির বেশি কারখানা রয়েছে। বাকিগুলো এগুলো ক্ষুদ্র গার্মেন্টস ও অনেকেই সাব কন্ট্রাক্টে কাজ করে। তিনি বলেন, যারা সংস্কার কাজ করছে তাদের অনেককেই আগামী নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দেয়া হয়েছে। কারখানার শ্রমিকের নিরাপত্তা, দেশের ভাবমূর্তির স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের সংস্কারের কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। এমনকি কোনো পদক্ষেপও নেইনি তারা। তিনি বলেন, কেননা এসব কারখানার কোনো একটিতে দুর্ঘটনা ঘটলে এবং তাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হলে, তার দায় পুরো গার্মেন্টস খাতকেই নিতে হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এক সঙ্গে হঠাৎ করে এতগুলো কারখানা বন্ধ করা ঠিক হবে না। পাশাপাশি ইউডি বন্ধ করাও ঠিক হবে না। কারণ, এখানে শ্রমিকদের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, যারা সংস্কারকাজ চালিয়ে যাবে তাদের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর বন্ধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই বন্ধ করা হবে। চেষ্টার ঘাটতি নেই। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে বিপুলসংখ্যক কারখানা বন্ধ হয়েছে কর্মপরিবেশের মানদণ্ড বজায় রাখতে না পেরে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এখন কমপ্লায়েন্স মেনেই ব্যবসা করতে হবে। কারণ অনিরাপদ কারখানা সচল রেখে এখন আর ব্যবসা করা যাচ্ছে না।
নিট খাতের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গত কয়েক বছরে পোশাক কারখানা বন্ধে বিভিন্ন কারণ থাকলেও কমপ্লায়েন্স ইস্যুই মুখ্য। এছাড়া অনেক কারখানা উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে বন্ধ হয়েছে।
শ্রমিক নেতারা মনে করেন, হঠাৎ করেই বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। শ্রমিকরা বেকার হোক- সেটা চাই না। আবার ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কারখানায় কোনো শ্রমিক কাজ করুক- সেটাও চাই না।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, কারখানাগুলোর মালিক কিংবা প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত বছরের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩২টি সভা করা হয়েছে এবং দুই দফা চিঠি দেয়া হয়েছে। ডিআইএফই‘র চিঠি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কারখানার প্রনিতিধিদের সঙ্গে সভা করেছে বিজিএমইএ।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বহু শ্রমিক হতাহতের পর দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের পোশাক কারখানা সংস্কারের জোর দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরই ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতাদের কাছে রপ্তানি করে এমন দুই হাজার দুইশ কারখানা সংস্কারে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নামে দুটি জোট গঠিত হয়। তাদের কার্যক্রম এখন শেষ হওয়ার পথে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সভুক্ত কারখানাগুলোর সংস্কারে অগ্রগতি ৯০ শতাংশের ওপরে।
ডিআইএফই সূত্রে জানা গেছে, যেসব কারখানার সংস্কার ২০ শতাংশের নিচে, তাদের ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কারখানাগুলো সংস্কারে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি করতে পারলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে। বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কারখানাগুলোর রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। অবশ্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেনি বলেই জানা গেছে। সংগঠন দুটির মতে, হঠাৎ করে এতগুলো কারখানা বন্ধ করা যাবে না। কারণ, এখানে শ্রমিকদের স্বার্থ জড়িত।
তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া বন্ধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই বন্ধ করা হবে বলে মনে করে তারা।
জানা গেছে, কমপ্লায়েন্স মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে না পারা, কার্যাদেশ না থাকা ও আর্থিক লোকসানের কারণে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। কারখানা বন্ধের আনুষঙ্গিক কারণের মধ্যে আরো রয়েছে আর্থিক অসচ্ছলতা, ব্যাংকিং দায়, কর্মপরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত না হওয়া, গ্যাস সংকট, অগ্নিকাণ্ড, মালিকপক্ষের মতপার্থক্য ও কোন্দল, পর্যাপ্ত মূলধনের অভাব ও শ্রমিক অসন্তোষ। বস্ত্র অধিদপ্তরের খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠন ১৩টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৭টি সংগঠন হলো- বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ, বিএলএমইএ, বিজিএপিএমইএ ও বিএসটিএমপিআইএ। এর মধ্যে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্য কারখানাই সবচেয়ে বেশি বন্ধ হয়েছে। আর কমপ্লায়েন্স ইস্যুই এসব কারখানা বন্ধের মূল কারণ বলে মনে করে সংস্থাটি।
বস্ত্র অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ঢাকায় ৩ হাজার ৪১৬টি কারখানা। গাজীপুরে বস্ত্র ও পোশাক খাতের কারখানা ১ হাজার ৯২৩টি। নারায়ণগঞ্জে আছে ১ হাজার ২৯৯টি কারখানা। এছাড়া চট্টগ্রামে ৯১০টি ও নরসিংদীতে ৪০২টি কারখানা সক্রিয় আছে।
ডিআইএফই’র উপ-মহাপরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, দুই শতাধিক কারখানার ইউডি বা ইউটিলিটি ডিকারেশন বাতিল করার জন্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’কে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে বড় বড় প্রায় ৫০টির বেশি কারখানা রয়েছে। বাকিগুলো এগুলো ক্ষুদ্র গার্মেন্টস ও অনেকেই সাব কন্ট্রাক্টে কাজ করে। তিনি বলেন, যারা সংস্কার কাজ করছে তাদের অনেককেই আগামী নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দেয়া হয়েছে। কারখানার শ্রমিকের নিরাপত্তা, দেশের ভাবমূর্তির স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের সংস্কারের কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। এমনকি কোনো পদক্ষেপও নেইনি তারা। তিনি বলেন, কেননা এসব কারখানার কোনো একটিতে দুর্ঘটনা ঘটলে এবং তাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হলে, তার দায় পুরো গার্মেন্টস খাতকেই নিতে হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এক সঙ্গে হঠাৎ করে এতগুলো কারখানা বন্ধ করা ঠিক হবে না। পাশাপাশি ইউডি বন্ধ করাও ঠিক হবে না। কারণ, এখানে শ্রমিকদের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, যারা সংস্কারকাজ চালিয়ে যাবে তাদের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর বন্ধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই বন্ধ করা হবে। চেষ্টার ঘাটতি নেই। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে বিপুলসংখ্যক কারখানা বন্ধ হয়েছে কর্মপরিবেশের মানদণ্ড বজায় রাখতে না পেরে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এখন কমপ্লায়েন্স মেনেই ব্যবসা করতে হবে। কারণ অনিরাপদ কারখানা সচল রেখে এখন আর ব্যবসা করা যাচ্ছে না।
নিট খাতের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গত কয়েক বছরে পোশাক কারখানা বন্ধে বিভিন্ন কারণ থাকলেও কমপ্লায়েন্স ইস্যুই মুখ্য। এছাড়া অনেক কারখানা উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে বন্ধ হয়েছে।
শ্রমিক নেতারা মনে করেন, হঠাৎ করেই বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। শ্রমিকরা বেকার হোক- সেটা চাই না। আবার ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কারখানায় কোনো শ্রমিক কাজ করুক- সেটাও চাই না।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, কারখানাগুলোর মালিক কিংবা প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত বছরের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩২টি সভা করা হয়েছে এবং দুই দফা চিঠি দেয়া হয়েছে। ডিআইএফই‘র চিঠি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কারখানার প্রনিতিধিদের সঙ্গে সভা করেছে বিজিএমইএ।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বহু শ্রমিক হতাহতের পর দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের পোশাক কারখানা সংস্কারের জোর দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরই ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতাদের কাছে রপ্তানি করে এমন দুই হাজার দুইশ কারখানা সংস্কারে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নামে দুটি জোট গঠিত হয়। তাদের কার্যক্রম এখন শেষ হওয়ার পথে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সভুক্ত কারখানাগুলোর সংস্কারে অগ্রগতি ৯০ শতাংশের ওপরে।
No comments