নিষিদ্ধ হচ্ছে ‘খাত’, গোয়েন্দা নজরে ৫০ সিন্ডিকেট by শুভ্র দেব
গ্রিন
টি হিসেবে আমদানি করা নতুন মাদক এনপিএস বা খাতকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ইতিমধ্যে খাতকে মাদকের
তালিকাভুক্তির আবেদন করা হয়েছে। তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেলেই আইনগতভাবে
নিষিদ্ধ করা হবে। মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, এনপিএস নতুন মাদক
হওয়াতে এটি এখনো মাদকের তালিকাভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই এটিকে নিষিদ্ধ
করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ডিএনসি আশা করছে
খুব তাড়াতাড়ি এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা আসবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার বলেন, মাদক হিসেবে খাতকে খুব শিগগিরই তালিকাভুক্ত করা হবে। আমরা ল্যাবে পরীক্ষা করে খাতের মধ্যে মাদকের উপস্থিতি পেয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
সেখান থেকে অনুমোদন আসার পর নিষিদ্ধ করা হবে খাতকে। তিনি বলেন, এর আগেও এ খাত বাংলাদেশে এসেছে। গ্রিন টির ব্যবসার আড়ালে ব্যবসায়ীরা আমদানি করে বিভিন্ন দেশে চালান করেছেন। কিন্তু ইদানীং ডিএনসিসহ অন্যান্য সংস্থার অভিযানে বেশ কিছু চালান আটক হওয়ার পর ব্যবসায়ীরা একটু সতর্ক হয়েছেন। কৌশল পাল্টিয়ে হয়তো চালান আনছেন। কিন্তু আমাদের দিক থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আমাদের গোয়েন্দারা খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কিছু ব্যবসায়ীকে নজরদারিতে রেখেছেন।
ডিএনসি গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার মাদক কারবারিরা এনপিএস বা খাতের কারবার করতে বাংলাদেশে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। গ্রিন টি আমদানি-রপ্তানির নামে এই মাদকের কারবারে জড়িয়ে পড়েছেন প্রায় অর্ধশত সিন্ডিকেট। তাদের মধ্যে ৩৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ১৬ই সেপ্টেম্বর ১৯ কেজি খাতসহ এস এম বাবুল আহমেদ নামের এক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল জানিয়েছে ইথিওপিয়া থেকে ‘চালা নুরি’ নামের এক কারবারি তার কাছে খাত পাঠায়। ওই নুরি দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। গ্রেপ্তার হওয়ার আগেও তার কাছে ১৯৬ কেজি খাত এসেছিলো। ওই খাত বাবুল যুক্তরাজ্য পাঠিয়েছিলেন। বাবুলের মালিকাধীন সেনিন করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে গ্রিন টি পণ্যও বিক্রি করা হয়। আর এই গ্রিন টি ব্যবসার আড়ালেই সে খাত বিক্রি করতেন।
এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন (সিআইডি) ও পুলিশের অভিযানে বেশ কয়েকটি খাতের চালান জব্দ করা হয়েছে। গত ৩১শে আগস্ট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশের ইতিহাসে প্রথম খাত চালান আটক করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দারা। ওইদিন বিমানবন্দর ও শান্তিনগর প্লাজা থেকে ৮৬০ কেজি খাতসহ নাজিম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। উদ্ধারকৃত খাত সায়েন্স ল্যাবে পরীক্ষা করে এতে মাদকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। এরপর ৫ই সেপ্টেম্বর আবার বিমানবন্দর থেকে ২০ কেজি খাত উদ্ধার করা হয়। ৮ই সেপ্টেম্বর ১৬০ কেজি এবং ১০ই সেপ্টেম্বর ১৪৫ কেজি উদ্ধার করা হয়। ৯ই সেপ্টেম্বর বৈদেশিক পার্সেল শাখা থেকে দেশের সবচেয়ে বড় খাতের চালান উদ্ধার করা হয়। ১ হাজার ৫৮৬ কেজি খাত জব্দ করে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। এরপর ১২ই সেপ্টেম্বর ১৯৩ কেজি, ১৪ই সেপ্টেম্বর ১২০ কেজি ও ১৮ই সেপ্টেম্বর ১০৭ কেজি জব্দ করে সিআইডি।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গত কয়েক বছর ধরে এনপিএস বা খাতের চালান বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। মূলত বাংলাদেশ একটি নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন সিন্ডিকেটরা। বাংলাদেশে আসা এসব খাতের চালান ইউরোপ বা আমেরিকা পাঠানো হয়। কারণ এসব দেশে খাতের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তবে দেশের মধ্যে যারা খাতের কারবারের সঙ্গে জড়িত তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারবারি মাহবুবুল আলম হাওলাদার। নামে বেনামে, ভুয়া ঠিকানায় তিনি খাত আমদানি করেন। পোশাক কারখানার আড়ালে তিনি খাতের মজুত করেন। সময় সুযোগ মতো চালান করেন বিদেশে।
এই কারবার করতে দুই বছর আগে তার ভাই কামাল হাওলাদার ইথিওপিয়ায় পাড়ি জমান। সেখান থেকে কামালই দেশে খাতের চালান পাঠাতেন। কিছুদিন আগে ৩৯৫ কেজি খাতসহ উত্তরার একটি বাড়ি থেকে নাজমুল ইসলাম তালুকদার ও মাহবুবুর রহমান পলাশ নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যে গুদাম থেকে এই খাত জব্দ করা হয়েছে এটি এশা এন্টারপ্রাইজের। এর আগেও এই প্রতিষ্ঠানের নামে আসা তিনটি চালান জব্দ করা হয়েছিল। সিআইডি সূত্র জানায়, খাতের সবচেয়ে বড় চালানটি জব্দ করা হয় ৯ই সেপ্টেম্বর। এ ঘটনায় পল্টন থানায় অন্তত ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে ওই সপ্তাহে মতিঝিলের ব্যবসায়ী মুন্না ও দক্ষিণখানের রাশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে তিন কার্টন খাত জব্দ করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, খাত আমদানি করে আবার বিদেশে রপ্তানির সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গোয়েন্দারা তদন্ত করছেন। তিনি বলেন, এতদিন আমাদের কোনো ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন না। এখন দুজন ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিগগিরই তারা মাঠে নামবেন। খাতসহ অন্যান্য মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামলে সুফল পাওয়া যাবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার বলেন, মাদক হিসেবে খাতকে খুব শিগগিরই তালিকাভুক্ত করা হবে। আমরা ল্যাবে পরীক্ষা করে খাতের মধ্যে মাদকের উপস্থিতি পেয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
সেখান থেকে অনুমোদন আসার পর নিষিদ্ধ করা হবে খাতকে। তিনি বলেন, এর আগেও এ খাত বাংলাদেশে এসেছে। গ্রিন টির ব্যবসার আড়ালে ব্যবসায়ীরা আমদানি করে বিভিন্ন দেশে চালান করেছেন। কিন্তু ইদানীং ডিএনসিসহ অন্যান্য সংস্থার অভিযানে বেশ কিছু চালান আটক হওয়ার পর ব্যবসায়ীরা একটু সতর্ক হয়েছেন। কৌশল পাল্টিয়ে হয়তো চালান আনছেন। কিন্তু আমাদের দিক থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আমাদের গোয়েন্দারা খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কিছু ব্যবসায়ীকে নজরদারিতে রেখেছেন।
ডিএনসি গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার মাদক কারবারিরা এনপিএস বা খাতের কারবার করতে বাংলাদেশে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। গ্রিন টি আমদানি-রপ্তানির নামে এই মাদকের কারবারে জড়িয়ে পড়েছেন প্রায় অর্ধশত সিন্ডিকেট। তাদের মধ্যে ৩৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ১৬ই সেপ্টেম্বর ১৯ কেজি খাতসহ এস এম বাবুল আহমেদ নামের এক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল জানিয়েছে ইথিওপিয়া থেকে ‘চালা নুরি’ নামের এক কারবারি তার কাছে খাত পাঠায়। ওই নুরি দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। গ্রেপ্তার হওয়ার আগেও তার কাছে ১৯৬ কেজি খাত এসেছিলো। ওই খাত বাবুল যুক্তরাজ্য পাঠিয়েছিলেন। বাবুলের মালিকাধীন সেনিন করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে গ্রিন টি পণ্যও বিক্রি করা হয়। আর এই গ্রিন টি ব্যবসার আড়ালেই সে খাত বিক্রি করতেন।
এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন (সিআইডি) ও পুলিশের অভিযানে বেশ কয়েকটি খাতের চালান জব্দ করা হয়েছে। গত ৩১শে আগস্ট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশের ইতিহাসে প্রথম খাত চালান আটক করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দারা। ওইদিন বিমানবন্দর ও শান্তিনগর প্লাজা থেকে ৮৬০ কেজি খাতসহ নাজিম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। উদ্ধারকৃত খাত সায়েন্স ল্যাবে পরীক্ষা করে এতে মাদকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। এরপর ৫ই সেপ্টেম্বর আবার বিমানবন্দর থেকে ২০ কেজি খাত উদ্ধার করা হয়। ৮ই সেপ্টেম্বর ১৬০ কেজি এবং ১০ই সেপ্টেম্বর ১৪৫ কেজি উদ্ধার করা হয়। ৯ই সেপ্টেম্বর বৈদেশিক পার্সেল শাখা থেকে দেশের সবচেয়ে বড় খাতের চালান উদ্ধার করা হয়। ১ হাজার ৫৮৬ কেজি খাত জব্দ করে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। এরপর ১২ই সেপ্টেম্বর ১৯৩ কেজি, ১৪ই সেপ্টেম্বর ১২০ কেজি ও ১৮ই সেপ্টেম্বর ১০৭ কেজি জব্দ করে সিআইডি।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গত কয়েক বছর ধরে এনপিএস বা খাতের চালান বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। মূলত বাংলাদেশ একটি নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন সিন্ডিকেটরা। বাংলাদেশে আসা এসব খাতের চালান ইউরোপ বা আমেরিকা পাঠানো হয়। কারণ এসব দেশে খাতের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তবে দেশের মধ্যে যারা খাতের কারবারের সঙ্গে জড়িত তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারবারি মাহবুবুল আলম হাওলাদার। নামে বেনামে, ভুয়া ঠিকানায় তিনি খাত আমদানি করেন। পোশাক কারখানার আড়ালে তিনি খাতের মজুত করেন। সময় সুযোগ মতো চালান করেন বিদেশে।
এই কারবার করতে দুই বছর আগে তার ভাই কামাল হাওলাদার ইথিওপিয়ায় পাড়ি জমান। সেখান থেকে কামালই দেশে খাতের চালান পাঠাতেন। কিছুদিন আগে ৩৯৫ কেজি খাতসহ উত্তরার একটি বাড়ি থেকে নাজমুল ইসলাম তালুকদার ও মাহবুবুর রহমান পলাশ নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যে গুদাম থেকে এই খাত জব্দ করা হয়েছে এটি এশা এন্টারপ্রাইজের। এর আগেও এই প্রতিষ্ঠানের নামে আসা তিনটি চালান জব্দ করা হয়েছিল। সিআইডি সূত্র জানায়, খাতের সবচেয়ে বড় চালানটি জব্দ করা হয় ৯ই সেপ্টেম্বর। এ ঘটনায় পল্টন থানায় অন্তত ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে ওই সপ্তাহে মতিঝিলের ব্যবসায়ী মুন্না ও দক্ষিণখানের রাশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে তিন কার্টন খাত জব্দ করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, খাত আমদানি করে আবার বিদেশে রপ্তানির সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গোয়েন্দারা তদন্ত করছেন। তিনি বলেন, এতদিন আমাদের কোনো ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন না। এখন দুজন ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিগগিরই তারা মাঠে নামবেন। খাতসহ অন্যান্য মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামলে সুফল পাওয়া যাবে।
No comments