মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ইরান ও ইইউ’র নয়া ‘ব্যবস্থা’
মার্কিন
নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ইরানের সঙ্গে স্বাভাবিক বাণিজ্য অব্যাহত রাখার জন্য
অভিনব এক ‘ব্যবস্থা’ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
নতুন এ ব্যবস্থার মাধ্যমে ইরানের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা
নিষেধাজ্ঞা কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব বলে দাবি ইইউ’র। সোমবার নিউ ইয়র্কে এক
সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইইউ’র বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা
মোঘোরিনি।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে সোমবার বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ইইউ’র বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান। রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে ইরান চুক্তির অংশীদার দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে কিভাবে ইরানের সঙ্গে বৈধ বাণিজ্যিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে তারা একটি সমঝোতায় পৌঁছান। পরে ফেডেরিকা মোঘেরিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইরানের সঙ্গে তেল ও অন্য বাণিজ্যিক চুক্তিগুলো অব্যাহত রাখার জন্য ইইউ অর্থ পরিশোধের নতুন মাধ্যম (পেমেন্ট চ্যানেল) ব্যবহার করবে। তিনি বলেন, ‘এর মানে হলো, ইইউ’র সদস্য দেশগুলো এমন একটি ব্যবস্থা চালু করবে যার মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে বৈধভাবে আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব হবে। ফলে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারবে। পাশাপাশি বিশ্বের অন্য দেশগুলোও এ ব্যবস্থার সুযোগ নিতে পারবে।’
পরে ইইউ, চীন ও রাশিয়া একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। এতে যুক্তরাষ্ট্রকে বাইরে রেখে অন্য অংশীদার দেশগুলো ইরান চুক্তির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা পুনর্ব্যক্ত করে। তারা পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে কার্যকরভাবে ইরান পারমাণবিক চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন। বৈঠকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর জন্য অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে ‘বিশেষ মাধ্যম’ (স্পেশ্যাল পারপাস ভেহিকল) চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে ফেডেরিকা মোঘেরিনি বলেন, নতুন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য সব পক্ষের বিশেষজ্ঞরা দ্রুতই বৈঠকে বসবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন এ পদ্ধতি অনেকটা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে। আল জাজিরার নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি বলেন, ইতালিয়ান কোনো কোম্পানি যদি ইরানের থেকে তেল কিনতে চায়, নতুন প্রবর্তিত ব্যবস্থা উভয়পক্ষের মধ্যে লেনদেন করার জন্য মধ্যস্থতাকারীর কাজ করবে। আর অর্থ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে কোনো বাণিজ্যিক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। ফলে ইরানের সঙ্গে লেনদেন করার দায়ে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হবে না। অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক নীতি বিষয়ক গবেষক রজার শেনাহান বলেন, ইউরোপিয়ানরা ইরান চুক্তি বহাল রাখতে চায়। সোমবারের সিদ্ধান্তে তাদের সে মানসিকতারই প্রতিফলন ঘটে। তারা চুক্তি রক্ষার শেষ সুযোগ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওবামা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাক্ষরিত এ চুক্তি ইরান চুক্তি নামে পরিচিত পায়। এতে পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার শর্তে ইরানের ওপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। কিন্তু এ বছরের ৮ই মে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। তার দাবি, চুক্তির শর্ত যথাযথভাবে মেনে চলছে না ইরান। এই অভিযোগে তিনি নতুন করে ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। চুক্তির প্রভাবশালী অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার ফলে ইরান চুক্তি হুমকির মুখে পড়ে। তবে, রাশিয়া ও চীনসহ ইউরোপীয় অংশীদাররা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই চুক্তি এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটির সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর বাণিজ্য বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। ইরানের সঙ্গে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর স্বাক্ষরিত বিলিয়ন ডলারের একাধিক চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে ইরান ইইউ’কে জানিয়ে দেয় যে, আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ব্যতীত পারমাণবিক চুক্তি এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরেই ইইউ ও ইরানের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। দফায় দফায় আলোচনা শেষে সোমবার অবশেষে চুক্তির অংশীদাররা একটি সমঝোতায় পৌঁছতে সক্ষম হলেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে সোমবার বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ইইউ’র বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান। রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে ইরান চুক্তির অংশীদার দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে কিভাবে ইরানের সঙ্গে বৈধ বাণিজ্যিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে তারা একটি সমঝোতায় পৌঁছান। পরে ফেডেরিকা মোঘেরিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইরানের সঙ্গে তেল ও অন্য বাণিজ্যিক চুক্তিগুলো অব্যাহত রাখার জন্য ইইউ অর্থ পরিশোধের নতুন মাধ্যম (পেমেন্ট চ্যানেল) ব্যবহার করবে। তিনি বলেন, ‘এর মানে হলো, ইইউ’র সদস্য দেশগুলো এমন একটি ব্যবস্থা চালু করবে যার মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে বৈধভাবে আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব হবে। ফলে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারবে। পাশাপাশি বিশ্বের অন্য দেশগুলোও এ ব্যবস্থার সুযোগ নিতে পারবে।’
পরে ইইউ, চীন ও রাশিয়া একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। এতে যুক্তরাষ্ট্রকে বাইরে রেখে অন্য অংশীদার দেশগুলো ইরান চুক্তির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা পুনর্ব্যক্ত করে। তারা পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে কার্যকরভাবে ইরান পারমাণবিক চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন। বৈঠকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর জন্য অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে ‘বিশেষ মাধ্যম’ (স্পেশ্যাল পারপাস ভেহিকল) চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে ফেডেরিকা মোঘেরিনি বলেন, নতুন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য সব পক্ষের বিশেষজ্ঞরা দ্রুতই বৈঠকে বসবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন এ পদ্ধতি অনেকটা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে। আল জাজিরার নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি বলেন, ইতালিয়ান কোনো কোম্পানি যদি ইরানের থেকে তেল কিনতে চায়, নতুন প্রবর্তিত ব্যবস্থা উভয়পক্ষের মধ্যে লেনদেন করার জন্য মধ্যস্থতাকারীর কাজ করবে। আর অর্থ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে কোনো বাণিজ্যিক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। ফলে ইরানের সঙ্গে লেনদেন করার দায়ে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হবে না। অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক নীতি বিষয়ক গবেষক রজার শেনাহান বলেন, ইউরোপিয়ানরা ইরান চুক্তি বহাল রাখতে চায়। সোমবারের সিদ্ধান্তে তাদের সে মানসিকতারই প্রতিফলন ঘটে। তারা চুক্তি রক্ষার শেষ সুযোগ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওবামা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাক্ষরিত এ চুক্তি ইরান চুক্তি নামে পরিচিত পায়। এতে পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার শর্তে ইরানের ওপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। কিন্তু এ বছরের ৮ই মে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। তার দাবি, চুক্তির শর্ত যথাযথভাবে মেনে চলছে না ইরান। এই অভিযোগে তিনি নতুন করে ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। চুক্তির প্রভাবশালী অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার ফলে ইরান চুক্তি হুমকির মুখে পড়ে। তবে, রাশিয়া ও চীনসহ ইউরোপীয় অংশীদাররা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই চুক্তি এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটির সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর বাণিজ্য বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। ইরানের সঙ্গে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর স্বাক্ষরিত বিলিয়ন ডলারের একাধিক চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে ইরান ইইউ’কে জানিয়ে দেয় যে, আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ব্যতীত পারমাণবিক চুক্তি এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরেই ইইউ ও ইরানের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। দফায় দফায় আলোচনা শেষে সোমবার অবশেষে চুক্তির অংশীদাররা একটি সমঝোতায় পৌঁছতে সক্ষম হলেন।
No comments