সরকারি কাজে জি-মেইল ইয়াহু, আউটলুক ব্যবহার বন্ধ: মন্ত্রিসভায় কাল উঠছে ই-মেইল নীতিমালা by দীন ইসলাম
সরকারি
কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ইচ্ছেমতো ই-মেইল ব্যবহারে বিধি-নিষেধ আসছে।
ইলেকট্রনিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে তাদের একটি অভিন্ন নীতিমালার আওতায় আনা
হচ্ছে। সরকারি ই-মেইল নীতিমালা-২০১৮ আগামীকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে
অনুমোদনের জন্য উঠবে। নীতিমালাটি অনুমোদন হলে সরকারি কর্মকর্তা ও
কর্মচারীরা সরকারি কাজে ইলেকট্রনিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে জি-মেইল, ইয়াহু,
আউটলুকসহ অন্যান্য ই-মেইল ব্যবহার করতে পারবেন না। সূত্রে জানা গেছে,
সরকারি কার্যক্রমের গোপনীয়তা রক্ষা, অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা ও সাইবার
নিরাপত্তার জন্য ই-মেইল ব্যবহারের এ নীতিমালা করা হচ্ছে। সরকারি,
আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও
কর্মচারীদের ই-মেইল ব্যবহারকে সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে আনতে এ উদ্যোগ নেয়া
হয়েছে। নীতিমালার খসড়ায় একটি অভিন্ন ডোমেইন ‘ডট বিডি’র ঠিকানা যুক্ত
ই-মেইল ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নীতিমালাটি অনুমোদন
পেলে সরকারি কোনো কাজে আর ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহার করা যাবে না। তখন
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যেকেই মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার
নামসহ ‘ডট বিডি’ ডোমেইনে একটি ই-মেইল আইডি তৈরি করে সেটা দিয়ে সরকারি কাজে
মেইল আদান- প্রদান করতে হবে। এ ই-মেইল আইডি দিয়ে তারা শুধু সরকারি
প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। ব্যক্তিগত বা সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে না। অপরদিকে অভিন্ন ডোমেইনে এই ই-মেইল সেবা দেবে
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। তারা ই-মেইল
সার্ভিস প্রোভাইডার (ইএসপি) হিসেবে কাজ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,
সরকারি কাজে গোপনীয়তা রক্ষা ও অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং সাইবার
নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্য ও প্রযুক্তি
মন্ত্রণালয়কে একটি নির্দেশনা দেন। ওই নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রতিটি সরকারি
প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রনিক যোগাযোগের জন্য ই- মেইল ব্যবহারকারীদের একই নিয়মের
অধীনে আনতে ই- মেইল নীতিমালা করা হয়েছে। নীতিমালাটি তৈরির পর এটি প্রথমে
ওয়েবসাইটে মতামতের জন্য প্রকাশ করা হয়। মতামত পেয়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে
নীতিমালায় সংযোজন-বিয়োজন করে খসড়া চূড়ান্ত করে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের
কমিটি। এরপর এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ই-মেইল ব্যবহার নীতিমালায় যা বলা
হয়েছে তা কর্মকর্তাদের অবশ্যই মানতে হবে। কেউ না মানলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ
তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। তবে এ নীতিমালা জাতীয় নিরাপত্তার
কাজে নিয়োজিত সংস্থা, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসহ স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
তারা ইলেকট্রনিক যোগাযোগের জন্য তাদের কর্তৃপক্ষের নিয়মে ই-মেইল ব্যবহার
করবে। এদিকে মন্ত্রিসভায় পাঠানো খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, প্রত্যেক কর্মকর্তা
ও কর্মচারী দুটি করে ই-মেইল আইডি খুলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে একটি হবে তার
পদবি দিয়ে এবং অন্যটি নাম দিয়ে। তবে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও আইডি দুটি দুই
ধরনের কাজে ব্যবহার করতে হবে তাদের। আবার যেসব কর্মকর্তা অবসরে যাবেন বা
চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হবে, তারা পরবর্তী এক বছর পর্যন্ত ওই নামের মেইল
সরকারি যোগাযোগে ব্যবহার করতে পারবেন। এক বছর পর তাদের থেকে ওই আইডি ও
পাসওয়ার্ড বাজেয়াপ্ত করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
No comments