সংযমশক্তিতে ভরে উঠুক হৃদয়কাবা
সংযম একটি মহাশক্তি। সিয়াম সাধনায় মুমিন বান্দা যে আত্মতৃপ্তিদায়ক শক্তিলাভ করে, চলার পথের পাথেয় অর্জন করে- সে শক্তি সাধনাই হল সংযম। সমগ্র জীবনেই সংযম এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি হয়ে আত্মায় বিরাজ করে। সিয়াম মাসের সংযম আলোর কণা হয়ে পথ চলতে সহায়তা করে। কেউ বিপদে পড়লে, সমস্যায় পড়লে, সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে না পেলে সংযম সাধনা তখন আলোকবর্তিকা হয়ে ওঠে। সংযমী মানুষ বেদনায় পড়ে পথ হারায় না। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেন, মহাকালের শপথ, মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত, কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্যের উপদেশ দেয়। (সূরা আসর : আয়াত ১-৪)। সংযমশক্তিতে বলীয়ান হওয়াই মুমিনের সার্থকতা? আমাদের চলার পথে পাপ হয়ে যায়। পাপ থেকে বেঁচে থাকতেই মুমিনের সংযমশক্তি গ্রহণ করতে হয়। ইবাদতের জন্য কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকারে যেমন সহনশীলতা প্রয়োজন বিপদে বিচলিত না হয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার এ চেষ্টা সংযমশক্তিতেই করতে হয়। এ জন্যই কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সূরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)।
এরকম সহনশীল বান্দাই মুত্তাকি হয়ে উঠতে পারেন। আল্লাহর পছন্দের বান্দায় পরিণত হন সংযম সাধনা করে। মহান আল্লাহ তায়ালা রোজাদারের জন্য যে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন, যা তিনি নিজ হাতে দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা তো ওই মুমিন-মুত্তাকির জন্যই। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি বেশি মর্যাদাসম্পন্ন, যে বেশি মুত্তাকি। (সূরা আল হুজুরাত : আয়াত ১৩) মূলত রোজা মুত্তাকির জন্য এক অফুরন্ত নেয়ামত। নবী কারিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাহে রমজানের রোজা পালন করতে গিয়ে রোজার সীমারেখা বুঝে নেবে এবং যে কর্তব্য রোজার ভেতর পালন করা জরুরি, তা সুন্দরভাবে পালন করে চলবে, তার এসব রোজা তার বিগত গুনাহের ক্ষমার কাফ্ফারা হয়ে যাবে। (বায়হাকি) আর এই মুত্তাকিরাই সব ধরনের লোভ-লালসা, হারাম, পরনিন্দা ও মিথ্যা অপবাদ, অহংকার, মিথ্যা, খোদপছন্দী, শত্রুতাপোষণ, লোক দেখান আমল করা, কৃপণতা, পরশ্রীকাতরতা থেকে সংযত থাকতে পারে। নিজেকে পাপাচারের জগত থেকে দূরে রাখতে পারে। এই ১০টি বদগুণ বর্জন করতে জীবনভর ধৈর্য, সহনশীলতা আর সংযম সাধনার প্রয়োজন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সিয়ামে সংযমী সাধক হওয়ার তাওফিক দিন। আমিন।
লেখক : বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও
ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম
লেখক : বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও
ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম
No comments