এরশাদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় ঐক্যজোট’
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আগামী ৭ মে ‘জাতীয় ঐক্যজোট’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এদিন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন তিনি। সোমবার মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে দিনক্ষণ নির্ধারণ করে জাপা চেয়ারম্যান জোট গঠনের এ ঘোষণা দেন। জানা গেছে, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান শেখ সেকেন্দার আলী মনির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ) এবং জাতীয় ইসলামী মহাজোট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন নয়া জোটের সঙ্গে থাকছে। এছাড়া আরও কয়েকটি ইসলামী দল নতুন এ জোটে শরিক হতে পারে বলে জানিয়েছেন জোটের সমন্বয়ক এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভ রায়। জানতে চাইলে তিনি এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, ‘৭ মে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের পার্টির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যজোট নামে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন করা হবে। বিএনএ, জাতীয় ইসলামী ঐক্যজোটসহ আরও কয়েকটি ইসলামী দল এ জোটের শরিক হিসেবে থাকছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চূড়ান্তভাবে কারা কারা এ জোটে থাকছেন, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তা চূড়ান্ত হবে।’ বাংলাদেশ জাতীয় জোট বিএনএ’র চেয়ারম্যান শেখ সেকেন্দার আলী মনি এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা জাতীয় রাজনীতিতে একটি গুণগত পরিবর্তন চাই। সেজন্য এরশাদের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিচ্ছি। আমরা মনে করি, এরশাদের নেতৃত্বে ৭ মে যে নতুন জোট গঠন হবে, সেই জোট এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’ জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারাও দলটির নেতৃত্বে নয়া জোট নিয়ে আশার কথা বলছেন। তারা বলছেন, এ জোট হবে আগামী দিনের ক্ষমতায় যাওয়ার নিয়ামক শক্তি। এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, ‘দেশে জোটের রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ আছে। কোন দলের কত ভোট আছে, সেটি মূল কথা নয়, দেশের মানুষ দেখতে চায় এরশাদের সঙ্গে কয়টি দল আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘২০ দলীয় জোট ও ১৪ দলীয় জোটের বেশিরভাগ শরিক দলের জনভিত্তি নেই। তারপরও শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া জোটের রাজনীতিকে গুরুত্ব সহকারে দেখেন।
দেশের সাধারণ মানুষও চান, আমাদের নেতা এরশাদের নেতৃত্বে নতুন একটি জোট হোক। তাই জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ৭ মে আমরা নতুন জোট গঠন করতে যাচ্ছি। আর এ জোট হবে আগামী দিনের ক্ষমতায় যাওয়ার নিয়ামক শক্তি।' এর আগে ১ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপস্থিতিতে ৩৫টি ইসলামী রাজনৈতিক দল নিয়ে জাতীয় ইসলামী ঐক্যজোট নামে একটি ইসলামী জোট গঠন করা হয়। এ জোটর শরিকরা হচ্ছে- ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, গণ-ইসলামিক জোট, পিপলস জাস্টিস পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ইসলামিক লিবারেল পার্টি, জাতীয় শরিয়া আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী জনকল্যাণ পার্টি, ইউনাইটেড ইসলামিক লীগ, জমিয়তে মুসলিমিন বাংলাদেশ, ন্যাপ- ভাসানী, খেলাফত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি, ইসলামী গণ-আন্দোলন, জাতীয় ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তুল ওলামা পার্টি, জাতীয় ইসলামিক মুভমেন্ট, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ, ইনসানিয়াত পার্টি, খেলাফত বাস্তবায়ন পার্টি, ইসলামী আকিদা সংরক্ষণ পার্টি, ইসলামী সংরক্ষণ পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, ইসলামী আকিদা সংরক্ষণ আন্দোলন, খেদমতে খালক পার্টি, ওলামা মাশায়েখ সমন্বয় পরিষদ, ইউনাইটেড ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী পার্টি, ইসলামী সমাজকল্যাণ আন্দোলন, বাংলাদেশ ইত্তেহাদুল মুসলিমিন, বাংলাদেশ খেলাফাতুল উম্মাহ, বাংলাদেশ আকিমুদ্দিন মজলিস, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জমিয়তুল হেদায়াহ মুভমেন্ট। জানা গেছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন নতুন জোটে এ দলগুলো শরিক হিসেবে থাকছে। এছাড়া যুক্ত হচ্ছে সেকেন্দার আলী মনির নেতৃত্বাধীন বিএনএ জোটের আরও ২১টি রাজনৈতিক দল।
No comments