বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ
১৯৯১
সালে আফ্রিকার দেশ নামিবিয়ার রাজধানী উইন্ডহুকে জড়ো হন মহাদেশটির তাবৎ সব
সাংবাদিক। ইউনেস্কোর এক সেমিনারে তারা ঘোষণা করেন মুক্ত গণমাধ্যম নীতিমালা।
পরবর্তীতে ইউনেস্কো সাধারণ সম্মেলনে ‘উইন্ডহুক ঘোষণাপত্রে’র প্রতি সমর্থন
জানানো হয়। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের
দিনটিকে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে
থেকে ৩রা মে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। এ বছর দিবসটির
প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে, ‘ক্রিটিক্যাল মাইন্ডস ফর ক্রিটিক্যাল টাইমস:
মিডিয়া’স রোল ইন অ্যাডভান্সিং পিসফুল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ সোসাইটিজ’
(শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক সমাজের অগ্রগতিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা)। জাতিসংঘ
মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস দিবসটি উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় ভুল তথ্য
মোকাবিলায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও নাগরিকদের আহ্বান জানিয়েছেন। আবেদন জানিয়েছেন
বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের ওপর হুমকি অবসানের। গুতেরেস বলেন, ‘মুক্ত গণমাধ্যম
সকলের জন্য শান্তি ও ন্যায়বিচারের অগ্রগতি ঘটায়।’
এদিকে দিবসটিকে সামনে রেখে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে মানবাধিকার সংস্থাটির কর্মকর্তারা রিপোর্টটি প্রকাশ করেছেন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার কেবল ভিন্নমতধারীদের সুরক্ষিত করতে বা হুমকিদাতা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতেই ব্যর্থ হয়নি। সরকার বিভিন্ন নির্যাতনমূলক কৌশল ও নতুন বেশ কয়েকটি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাক-স্বাধীনতার কণ্ঠ রোধ করেছে।
অপরদিকে কয়েকদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে সাংবাদিকদের বৈশ্বিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের (আরএসএফ) ‘বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক ২০১৭’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আগে কখনো এমন হুমকিতে পড়েনি।’ একনায়ক, অপপ্রচার ও ভুয়া সংবাদের (ফেক নিউজ) এই যুগে সাংবাদিকতা বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে এতে মন্তব্য করা হয়। গণতন্ত্রের ভিত শক্তিশালী রয়েছে এমন সব দেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর আক্রমণ নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় আরএসএফ’র রিপোর্টে। গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে জনতোষণবাদীদের (পপুলিস্ট) উত্থানে সংবাদমাধ্যম হুমকির সম্মুখীন বলেও উল্লেখ করা হয়। এর প্রতিফলন দেখা গেছে সূচকেও। যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের মতো দেশ এ বছরের সূচকে পিছিয়ে গেছে। পিছিয়েছে বাংলাদেশও। ১৮০টি দেশের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আগের বছরের চেয়ে দুই ধাপ পিছিয়ে ১৪৬তম।
দেশভিত্তিক বিবরণে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ঘরোয়া সহিংসতা ও দোষীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে দায়মুক্তি উপভোগ করায় মিডিয়ায় সেলফ সেন্সরশিপ বাড়ছে। ২০১৬ সালে সরকার তার সমালোচকদের প্রতি বিশেষ করে মিডিয়ার প্রতি কঠোরতর অবস্থান নিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে মিডিয়ার প্রতি বৈরী বক্তব্য প্রদান, কয়েক ডজন ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়া এবং অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার মাধ্যমে এ বিষয়টি সপষ্ট হয়েছে।
প্রায় একই ধরনের বক্তব্য রয়েছে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারদের সুরক্ষা দিতে ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতেই কেবল সরকার ব্যর্থ হয়নি। সরকার বিভিন্ন নির্যাতনমূলক কৌশল ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মানুষের বাক-স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করেছে। এসবের ফলে বাংলাদেশের একসময়কার প্রাণবন্ত সমাজ এখন সেলফ সেন্সরশিপের কবলে পড়েছে। এখনকার নিপীড়নকে ১৯৯১ সালে গণতন্ত্রে পদার্পণের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছেন সাংবাদিকরা। বলা হয়েছে, কিছু রেড লাইন সাংবাদিকরা কখনই অতিক্রম করতে পারেন না। সেক্ষেত্রে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই সংবাদ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া বা বিজ্ঞাপনদাতাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে। ২০০৬ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) সমালোচনা করা হয়। এ আইনে অসপষ্টভাবে বর্ণিত বিভিন্ন ধারা ব্যবহার করে মানুষকে আটক করার ক্ষমতা পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। নাজমুল হুদা সহ সাংবাদিকদের এ আইন ব্যবহার করে আটক করার বিষয়টিও তুলে ধরেছে অ্যামনেস্টি।
বলা হয়েছে, একই আইন ব্যবহার করে চার ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ গঠন করা হয়। কয়েকজন হাই প্রোফাইল সাংবাদিক ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৮৩টি মামলা দায়ের ও মৌচাকে ঢিল সাপ্তাহিকের সম্পাদক শফিক রহমানকে আটক করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, সমালোচক সাংবাদিকদের স্তব্ধ করতে সরকার বিভিন্ন উপনিবেশিক আমলের মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ব্যবহার করেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও লিবারেশন ওয়্যার ডিনায়্যাল ক্রাইমস অ্যাক্ট নিয়েও সমালোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ১লা মে আইসিটি আইনে দায়ের করা মামলায় আটক হয়েছেন সাংবাদিক আহমেদ রাজু।
এদিকে দিবসটিকে সামনে রেখে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে মানবাধিকার সংস্থাটির কর্মকর্তারা রিপোর্টটি প্রকাশ করেছেন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার কেবল ভিন্নমতধারীদের সুরক্ষিত করতে বা হুমকিদাতা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতেই ব্যর্থ হয়নি। সরকার বিভিন্ন নির্যাতনমূলক কৌশল ও নতুন বেশ কয়েকটি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাক-স্বাধীনতার কণ্ঠ রোধ করেছে।
অপরদিকে কয়েকদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে সাংবাদিকদের বৈশ্বিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের (আরএসএফ) ‘বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক ২০১৭’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আগে কখনো এমন হুমকিতে পড়েনি।’ একনায়ক, অপপ্রচার ও ভুয়া সংবাদের (ফেক নিউজ) এই যুগে সাংবাদিকতা বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে এতে মন্তব্য করা হয়। গণতন্ত্রের ভিত শক্তিশালী রয়েছে এমন সব দেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর আক্রমণ নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় আরএসএফ’র রিপোর্টে। গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে জনতোষণবাদীদের (পপুলিস্ট) উত্থানে সংবাদমাধ্যম হুমকির সম্মুখীন বলেও উল্লেখ করা হয়। এর প্রতিফলন দেখা গেছে সূচকেও। যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের মতো দেশ এ বছরের সূচকে পিছিয়ে গেছে। পিছিয়েছে বাংলাদেশও। ১৮০টি দেশের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আগের বছরের চেয়ে দুই ধাপ পিছিয়ে ১৪৬তম।
দেশভিত্তিক বিবরণে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ঘরোয়া সহিংসতা ও দোষীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে দায়মুক্তি উপভোগ করায় মিডিয়ায় সেলফ সেন্সরশিপ বাড়ছে। ২০১৬ সালে সরকার তার সমালোচকদের প্রতি বিশেষ করে মিডিয়ার প্রতি কঠোরতর অবস্থান নিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে মিডিয়ার প্রতি বৈরী বক্তব্য প্রদান, কয়েক ডজন ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়া এবং অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার মাধ্যমে এ বিষয়টি সপষ্ট হয়েছে।
প্রায় একই ধরনের বক্তব্য রয়েছে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারদের সুরক্ষা দিতে ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতেই কেবল সরকার ব্যর্থ হয়নি। সরকার বিভিন্ন নির্যাতনমূলক কৌশল ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মানুষের বাক-স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করেছে। এসবের ফলে বাংলাদেশের একসময়কার প্রাণবন্ত সমাজ এখন সেলফ সেন্সরশিপের কবলে পড়েছে। এখনকার নিপীড়নকে ১৯৯১ সালে গণতন্ত্রে পদার্পণের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছেন সাংবাদিকরা। বলা হয়েছে, কিছু রেড লাইন সাংবাদিকরা কখনই অতিক্রম করতে পারেন না। সেক্ষেত্রে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই সংবাদ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া বা বিজ্ঞাপনদাতাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে। ২০০৬ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) সমালোচনা করা হয়। এ আইনে অসপষ্টভাবে বর্ণিত বিভিন্ন ধারা ব্যবহার করে মানুষকে আটক করার ক্ষমতা পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। নাজমুল হুদা সহ সাংবাদিকদের এ আইন ব্যবহার করে আটক করার বিষয়টিও তুলে ধরেছে অ্যামনেস্টি।
বলা হয়েছে, একই আইন ব্যবহার করে চার ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ গঠন করা হয়। কয়েকজন হাই প্রোফাইল সাংবাদিক ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৮৩টি মামলা দায়ের ও মৌচাকে ঢিল সাপ্তাহিকের সম্পাদক শফিক রহমানকে আটক করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, সমালোচক সাংবাদিকদের স্তব্ধ করতে সরকার বিভিন্ন উপনিবেশিক আমলের মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ব্যবহার করেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও লিবারেশন ওয়্যার ডিনায়্যাল ক্রাইমস অ্যাক্ট নিয়েও সমালোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ১লা মে আইসিটি আইনে দায়ের করা মামলায় আটক হয়েছেন সাংবাদিক আহমেদ রাজু।
No comments