হাইকমান্ডের অরণ্যে রোদন
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক, মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বিরোধ ৩০ বছরের পুরনো। সম্প্রতি তারা ফের বাকযুদ্ধে নেমেছেন। দুই নেতার বিরোধ বর্তমানে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন দলের নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, এ দুই নেতার কারণে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিষ্ক্রিয় হয়েছেন এবং দল ছেড়েছেন অনেক ত্যাগী নেতা। বিরোধের জের ধরে খুন হয়েছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। তাদের দ্বন্দ্ব মেটাতে স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয়ভাবে দফায় দফায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ দলের সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রামে এসে দু’জন নিয়ে বসেছেন। কিন্তু স্থায়ীভাবে সমাধান হয়নি। কোনো কোনো সময় বিভিন্ন ইস্যুতে দু’জন এক হয়েছেন। একে অপরের বাসায় গেছেন। মিষ্টিমুখ হয়েছে। গড়ে ওঠে ঐক্য। কিন্তু তা স্থায়ী হয়নি। ‘বালির বাঁধের’ মতোই ভেঙে গেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতে, বর্তমানে সেই আগের অবস্থা শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে দুই নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। সম্পর্ক দাঁড়িয়েছে সাপে-নেউলে।
একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলছেন। একজন অপরজনকে বলছেন ‘খুনি’। এই বাকযুদ্ধে বিব্রত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এ ধরনের বক্তব্য নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছড়াচ্ছে উত্তাপ। এতে টালমাটাল হয়ে উঠেছে নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এ পরিস্থিতিতে অতীতের মতো এবারও বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বুধবার ক্ষমতাসীন দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দু’নেতাকে ঢাকায় তলবের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর থেকে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এরপরও বিরোধিতা ও আপত্তিকর বক্তব্য দেয়া থেকে তাদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। শীর্ষ নেতারা বলছেন, এর আগে বহুবার বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হলেও কোনো কাজে আসেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছেন। এবার কি হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ শনিবার যুগান্তরকে বলেন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীনকে ঢাকায় ডেকে কথা বলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভুটান সফরের (১৮ এপ্রিল) আগে-পরে যে কোনোদিন তাদের ডাকা হবে। চট্টগ্রামের দুই নেতাকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কি ডেকে পাঠাবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণ সম্পাদক নিজে অথবা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা তাদের ঢাকায় আসার কথা বলতে পারেন। এটা দুই দিক থেকেই হতে পারে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম রোববার যুগান্তরকে বলেন, তাদের দু’জনের সঙ্গে আমার এবং সাধারণ সম্পাদকের কথা হয়েছে।
আমরা ২২ এপ্রিল চট্টগ্রামে যাচ্ছি। সেখানেও কথা হবে। বারবার উদ্যোগ নেয়ার পরও কেন দুই নেতার বিরোধ নিরসন করা যাচ্ছে না? এমন প্রশ্নের উত্তরে শামীম বলেন, তাদের বিরোধ রাজনৈতিক নয়। বিষয়টি ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে গেছে। যদি এ দ্বন্দ্ব থানা, ওয়ার্ড কমিটি বা অন্য কোনো সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে হতো তাহলে তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারতেন বলে মন্তব্য করেন। এদিকে বিভিন্ন সময়ে দুই নেতার এই বিরোধ নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হলেও খুব বেশি সাফল্য আসেনি। অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু খুব অল্প সময়ের জন্য তা স্থায়ী হয়েছে। এ বিষয়ে অনেকেই দুই নেতার পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক গণপরিষদ সদস্য ইসহাক মিয়া বলেন, মহিউদ্দিন ও নাছিরের এই বিরোধ দলের জন্য বিব্রতকর। নাছির ছোট। মহিউদ্দিন চৌধুরীর তাকে সহযোগিতা করা উচিত। মেয়রকে ‘খুনি’ বলাটা মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছে সাধারণ নেতা-কর্মীরা কখনই আশা করেনি। নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন যুগান্তরকে বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীকে অপমান করার জন্য মেয়রের অনুসারী কিছু কাউন্সিলরকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। যারা সংবাদ সম্মেলন করে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো মানুষকে ‘খুনি’ হিসেবে অভিহিত করার স্পর্ধা দেখিয়েছে। এটা দলের জন্য শুভ নয়। কেন দুই নেতার মধ্যে এমন সাপে-নেউলে সম্পর্কের নিরসন হচ্ছে না এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে খোদ আওয়ামী লীগেই। তাদের মধ্যে কেন স্থায়ী ঐক্য গড়ে উঠছে না? এমন প্রশ্নের উত্তরে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসা-বাণিজ্য, নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে বিরোধ হয়। এ বিরোধ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। সুষ্ঠু রাজনীতির স্বার্থে এ বিরোধ দ্রুত স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে নগর বিএনপির সধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল দুই নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে যে ভাষায় কথা বলছেন, ব্যক্তিগত বিষয়কে যেভাবে রাজনীতিতে টেনে এনে একে অপরকে আক্রমণ করছেন, তা রাজনীতির জন্য শুভ নয়। এতে করে সাধারণ মানুষ সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়বে। এটা সামগ্রিকভাবে রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত।
৩০ বছরের বিরোধ : দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালেই আ জ ম নাছিরের প্রতি বৈরী ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। এক আওয়ামী লীগ নেতার অনুসারী হয়ে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন আ জ ম নাছির। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম কমার্স কলেজসহ নগরীর সরকারি-বেসরকারি একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আ জ ম নাছিরের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগের আ জ ম নাছির গ্রুপ শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ১৯৯৭ সালে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন আ জ ম নাছির। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে মহিউদ্দিন চৌধুরী বের হয়ে যাওয়ার সময় আ জ ম নাছিরকে জড়িয়ে ধরেন। নিয়ে যান তার বাসায়। ওই সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হবেন এমন আশায় ছিলেন আ জ ম নাছির। বিকালের অধিবেশনে দেখা যায়, এমএ মান্নানকে (প্রয়াত) সভাপতি ও মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কমিটিতে সদস্য করা হয় আ জ ম নাছিরকে। ২০০১ সালে আ জ ম নাছিরকে সদস্য পদ থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে কেন্দ্রে চিঠি পাঠান মহিউদ্দিন চৌধুরী। ২০০৬ সালে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। ওই সময়ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন আ জ ম নাছির। এ সম্মেলনে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও কাজী ইনামুল হক দানুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালে কেন্দ থেকে ঘোষিত কমিটিতে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আ জ ম নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। মূলত তখনই আ জ ম নাছির নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুনরূপে আবির্ভূত হন বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করে। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েই আ জ ম নাছির ছুটে যান মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমা হিলের বাসভবনে। সেখানে মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রতিপক্ষ আ জ ম নাছিরকে মিষ্টিমুখ করান। নির্বাচনের একদিন পর শুভেচ্ছা জানাতে আ জ ম নাছিরের আন্দরকিল্লার বাসভবনে আসেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।
৩০ বছরের বিরোধ : দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালেই আ জ ম নাছিরের প্রতি বৈরী ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। এক আওয়ামী লীগ নেতার অনুসারী হয়ে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন আ জ ম নাছির। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম কমার্স কলেজসহ নগরীর সরকারি-বেসরকারি একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আ জ ম নাছিরের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগের আ জ ম নাছির গ্রুপ শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ১৯৯৭ সালে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন আ জ ম নাছির। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে মহিউদ্দিন চৌধুরী বের হয়ে যাওয়ার সময় আ জ ম নাছিরকে জড়িয়ে ধরেন। নিয়ে যান তার বাসায়। ওই সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হবেন এমন আশায় ছিলেন আ জ ম নাছির। বিকালের অধিবেশনে দেখা যায়, এমএ মান্নানকে (প্রয়াত) সভাপতি ও মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কমিটিতে সদস্য করা হয় আ জ ম নাছিরকে। ২০০১ সালে আ জ ম নাছিরকে সদস্য পদ থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে কেন্দ্রে চিঠি পাঠান মহিউদ্দিন চৌধুরী। ২০০৬ সালে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। ওই সময়ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন আ জ ম নাছির। এ সম্মেলনে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও কাজী ইনামুল হক দানুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালে কেন্দ থেকে ঘোষিত কমিটিতে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আ জ ম নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। মূলত তখনই আ জ ম নাছির নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুনরূপে আবির্ভূত হন বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করে। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েই আ জ ম নাছির ছুটে যান মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমা হিলের বাসভবনে। সেখানে মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রতিপক্ষ আ জ ম নাছিরকে মিষ্টিমুখ করান। নির্বাচনের একদিন পর শুভেচ্ছা জানাতে আ জ ম নাছিরের আন্দরকিল্লার বাসভবনে আসেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।
দু’জনের মধ্যে এ আসা-যাওয়া ও ভাববিনিমিয়ের কারণে সবাই ধরে নিয়েছিলেন সম্পর্কের বরফ গলেছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, পরে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন কেনা-কাটা, টেন্ডার প্রক্রিয়া ও শ্রমিক রাজনীতি নিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছিরের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার অপারেটর নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনে নামেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ‘চট্টগ্রাম বন্দর ৫ মাফিয়া ও ডাকাতের হাতে জিম্মি’ উল্লেখ করে বন্দর গেটে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘এই ডাকাতদের সর্দার আঁরার (আমাদের) নাছির।’ অন্যদিকে আ জ ম নাছির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় নিয়োজিত সিটি কর্পোরেশনের ১২ কর্মচারীকে প্রত্যাহার করে নেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিলবোর্ড ব্যবসায় হাত দেন আ জ ম নাছির। সৌন্দর্য ঢেকে ফেলার কারণে নগরীর সব বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে বাদ দেয়া হয়। মহিউদ্দিন চৌধুরী আইনি লড়াইয়ে জিতে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত হন। এরপর কর্পোরেশন থেকে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাতে চলে যায়। সর্বশেষ গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামে ছুটে আসেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমা হিলের বাসভবনে দুই নেতাকে দুই পাশে নিয়ে বসেন। বিরোধ ভুলে এক হয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। কিন্তু এ উদ্যোগও কাজে আসেনি। যার সর্বশেষ প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে মহিউদ্দিন-নাছিরের পরস্পর বিরোধী মারমুখী অবস্থান।
সংঘর্ষ-খুন : স্থানীয় দলীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে এ দু’নেতার বিরোধ ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের কারণে ৩০ বছরে অসংখ্য নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী নিজেই অভিযোগ করেছেন আ জ ম নাছির ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী খুনে জড়িত। অন্যদিকে আ জ ম নাছির অনুসারী কাউন্সিলররাও সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৩ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ৫ খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন। নগরীর এমইএস কলেজ ও সিটি কলেজের নিয়ন্ত্রণ ছিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের। কমার্স কলেজ ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিয়ন্ত্রণ ছিল আ জ ম নাছির অনুসারীদের। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই নেতার অনুসারীরা নিয়ন্ত্রণ করেন। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাব-প্রতিপত্তি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খুনাখুনির ঘটনা ঘটে। ১৯৯৩ সালের ২৭ জানুয়ারি আ জ ম নাছির অনুসারী কমার্স কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মোমিন খুন হন। লালদীঘি মাঠে ২৪ জানুয়ারির সমাবেশে নাছির অনুসারীরা হামলা করে। তিন দিন পর ওই খুনের ঘটনা ঘটে। মিজান নামে মাদারবাড়ী ছাত্রলীগের আরও এক নেতা খুন হন এর কিছু দিন পর। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দিদারুল আলম মাসুমসহ মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৪ সাল থেকে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছির অনুসারী দুটি গ্রুপের অবস্থান। সর্বশেষ ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ও ছাত্রলীগ নেতা তাপস সরকার খুনের ঘটনাটি আলোচিত। ১৯৮৪ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ষোলোশহর চশমা হিলের বাসায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন স্ত্রী সাহেদা মহিউদ্দিন, কাজের মেয়ে রানু, ছাত্রলীগ নেতা সন্তোষ, রবি ও ওয়াজিউল্লাহ। এটি কি হামলা, না অন্য কোনো ঘটনা- সেই রহস্যের কূলকিনারা হয়নি ৩১ বছরেও। ১৩ এপ্রিল আ জ ম নাছির অনুসারী চসিকের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন। তারা এ ঘটনার সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরী জড়িত বলে অভিযোগ করেন। ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা হয় মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী ও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসিম আহমেদ সোহেলকে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কে হবেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী না আ জ ম নাছির- এ দ্বন্দ্বে দু’নেতার অনুসারীরা বিরোধে জড়ায়। ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একই গ্রুপের গুলিতে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী তাপস সরকার। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার শেরশাহ এলাকায় খুন হন যুবলীগ নেতা মেহেদি হাসান বাদল। ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর সিআরবি এলাকায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় সাত বছরের শিশু আরমান এবং সাজু পালিত নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী।
মহিউদ্দিন-নাছিরের সাম্প্রতিক বিরোধ : গত ১০ এপ্রিল চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য সমবায় সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত একটি সমাবেশে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে ‘খুনি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সংশোধনের পরামর্শ দেন। তাকে দখলবাজ, মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা বলা হয়। পরের দিন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে নাছির ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী খুনে জড়িত বলে মহিউদ্দিন চৌধুরী উল্লেখ করে বলেন, এর প্রমাণপত্র তার কাছে আছে। শহরের মানুষের ওপর জুলম করে গৃহকর বাড়ানোর অভিযোগও আনেন তিনি। পরের দিন ১১ এপ্রিল সিটি কর্পোরেশনে অনানুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে আ জ ম নাছির বলেন, আমি নাকি ১২টা খুন করেছি। তার কাছে কি এমন কোনো তথ্যপ্রমাণ আছে? নাছির বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকার অন্তর্জ¡ালা থেকেই মহিউদ্দিন চৌধুরী পাগলের প্রলাপ বকছেন। কোনো সুস্থ মানুষের মুখে এ ধরনের বক্তব্য উচ্চারিত হওয়ার কথা নয়। উনি নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমি সাধারণ সম্পাদক। আমাদের ফোরাম আছে। ফোরামে উনার বক্তব্য দিতে পারতেন। যদি ফোরামে আলোচনার সুযোগ না পান তবে কেন্দ্রকে জানাতে পারতেন।
দুই নেতার বক্তব্য : ৫ খুনসহ আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি যা করছি তা চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থে করছি। দলের স্বার্থে করছি। একজন অথর্ব ও অযোগ্য লোক দলের ক্ষতি করবে, মেয়রের চেয়ারে বসে নগরবাসীর স্বার্থের ক্ষতি করবে, তা আমি চেয়ে চেয়ে দেখতে পরি না। শুধু নাছিরের বিরুদ্ধেই নয়; যারাই চট্টগ্রাম নগরবাসীর স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, দলের ক্ষতি হয় এমন কাজ করেছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার ছিলাম। এখনও আছি। ভবিষ্যতেও থাকব। তিনি বলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে নাছির প্রমাণ করুক। কিন্তু আমি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণ করতে পারব। ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী খুনসহ মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিভিন্ন অভিযোগ প্রসেঙ্গ চসিক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন যুগান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগই উনি (মহিউদ্দিন চৌধুরী) প্রমাণ করতে পারবেন না। আমাকে উনি ৩০ বছর ধরেই ছলে-বলে কৌশলে দাবিয়ে রাখতে চেয়েছেন। কিন্তু পারেননি। ভবিষ্যতেও পারবেন না। কারণ আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে সত্য ও ন্যায়ের রাজনীতি করছি। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে আমি বিশ্বাস করি না। কখনও করিনি। ভবিষ্যতেও করব না। তিনি বলেন, এত কিছুর পরও আমি মহিউদ্দিন চৌধুরীকে দলের মুরব্বি হিসেবে শ্রদ্ধা করে এসেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে নগ্নভাবে কথা বলছেন, মিথ্যাচার করছেন। যা শুধু আমাকেই না, দল এবং সরকারকে অপমান করছেন। এ অপমানের বিচারের ভার আমি নগরবাসী ও দলের শীর্ষনেতাদের ওপর ছেড়ে দিলাম।
সংঘর্ষ-খুন : স্থানীয় দলীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে এ দু’নেতার বিরোধ ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের কারণে ৩০ বছরে অসংখ্য নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী নিজেই অভিযোগ করেছেন আ জ ম নাছির ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী খুনে জড়িত। অন্যদিকে আ জ ম নাছির অনুসারী কাউন্সিলররাও সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৩ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ৫ খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন। নগরীর এমইএস কলেজ ও সিটি কলেজের নিয়ন্ত্রণ ছিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের। কমার্স কলেজ ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিয়ন্ত্রণ ছিল আ জ ম নাছির অনুসারীদের। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই নেতার অনুসারীরা নিয়ন্ত্রণ করেন। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাব-প্রতিপত্তি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খুনাখুনির ঘটনা ঘটে। ১৯৯৩ সালের ২৭ জানুয়ারি আ জ ম নাছির অনুসারী কমার্স কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মোমিন খুন হন। লালদীঘি মাঠে ২৪ জানুয়ারির সমাবেশে নাছির অনুসারীরা হামলা করে। তিন দিন পর ওই খুনের ঘটনা ঘটে। মিজান নামে মাদারবাড়ী ছাত্রলীগের আরও এক নেতা খুন হন এর কিছু দিন পর। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দিদারুল আলম মাসুমসহ মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৪ সাল থেকে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছির অনুসারী দুটি গ্রুপের অবস্থান। সর্বশেষ ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ও ছাত্রলীগ নেতা তাপস সরকার খুনের ঘটনাটি আলোচিত। ১৯৮৪ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ষোলোশহর চশমা হিলের বাসায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন স্ত্রী সাহেদা মহিউদ্দিন, কাজের মেয়ে রানু, ছাত্রলীগ নেতা সন্তোষ, রবি ও ওয়াজিউল্লাহ। এটি কি হামলা, না অন্য কোনো ঘটনা- সেই রহস্যের কূলকিনারা হয়নি ৩১ বছরেও। ১৩ এপ্রিল আ জ ম নাছির অনুসারী চসিকের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন। তারা এ ঘটনার সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরী জড়িত বলে অভিযোগ করেন। ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা হয় মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী ও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসিম আহমেদ সোহেলকে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কে হবেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী না আ জ ম নাছির- এ দ্বন্দ্বে দু’নেতার অনুসারীরা বিরোধে জড়ায়। ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একই গ্রুপের গুলিতে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী তাপস সরকার। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার শেরশাহ এলাকায় খুন হন যুবলীগ নেতা মেহেদি হাসান বাদল। ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর সিআরবি এলাকায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় সাত বছরের শিশু আরমান এবং সাজু পালিত নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী।
মহিউদ্দিন-নাছিরের সাম্প্রতিক বিরোধ : গত ১০ এপ্রিল চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য সমবায় সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত একটি সমাবেশে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে ‘খুনি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সংশোধনের পরামর্শ দেন। তাকে দখলবাজ, মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা বলা হয়। পরের দিন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে নাছির ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী খুনে জড়িত বলে মহিউদ্দিন চৌধুরী উল্লেখ করে বলেন, এর প্রমাণপত্র তার কাছে আছে। শহরের মানুষের ওপর জুলম করে গৃহকর বাড়ানোর অভিযোগও আনেন তিনি। পরের দিন ১১ এপ্রিল সিটি কর্পোরেশনে অনানুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে আ জ ম নাছির বলেন, আমি নাকি ১২টা খুন করেছি। তার কাছে কি এমন কোনো তথ্যপ্রমাণ আছে? নাছির বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকার অন্তর্জ¡ালা থেকেই মহিউদ্দিন চৌধুরী পাগলের প্রলাপ বকছেন। কোনো সুস্থ মানুষের মুখে এ ধরনের বক্তব্য উচ্চারিত হওয়ার কথা নয়। উনি নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমি সাধারণ সম্পাদক। আমাদের ফোরাম আছে। ফোরামে উনার বক্তব্য দিতে পারতেন। যদি ফোরামে আলোচনার সুযোগ না পান তবে কেন্দ্রকে জানাতে পারতেন।
দুই নেতার বক্তব্য : ৫ খুনসহ আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি যা করছি তা চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থে করছি। দলের স্বার্থে করছি। একজন অথর্ব ও অযোগ্য লোক দলের ক্ষতি করবে, মেয়রের চেয়ারে বসে নগরবাসীর স্বার্থের ক্ষতি করবে, তা আমি চেয়ে চেয়ে দেখতে পরি না। শুধু নাছিরের বিরুদ্ধেই নয়; যারাই চট্টগ্রাম নগরবাসীর স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, দলের ক্ষতি হয় এমন কাজ করেছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার ছিলাম। এখনও আছি। ভবিষ্যতেও থাকব। তিনি বলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে নাছির প্রমাণ করুক। কিন্তু আমি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণ করতে পারব। ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী খুনসহ মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিভিন্ন অভিযোগ প্রসেঙ্গ চসিক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন যুগান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগই উনি (মহিউদ্দিন চৌধুরী) প্রমাণ করতে পারবেন না। আমাকে উনি ৩০ বছর ধরেই ছলে-বলে কৌশলে দাবিয়ে রাখতে চেয়েছেন। কিন্তু পারেননি। ভবিষ্যতেও পারবেন না। কারণ আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে সত্য ও ন্যায়ের রাজনীতি করছি। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে আমি বিশ্বাস করি না। কখনও করিনি। ভবিষ্যতেও করব না। তিনি বলেন, এত কিছুর পরও আমি মহিউদ্দিন চৌধুরীকে দলের মুরব্বি হিসেবে শ্রদ্ধা করে এসেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে নগ্নভাবে কথা বলছেন, মিথ্যাচার করছেন। যা শুধু আমাকেই না, দল এবং সরকারকে অপমান করছেন। এ অপমানের বিচারের ভার আমি নগরবাসী ও দলের শীর্ষনেতাদের ওপর ছেড়ে দিলাম।
No comments