জিম্মি করতে চেয়েছিল হামলাকারীরা
আতাতুর্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মঙ্গলবারের বিস্ফোরণস্থলের কাছে গতকাল ভারী অস্ত্রে সজ্জিত পুলিশের বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক পাহারা। এএফপি |
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলাকারীরা সেখানে লোকজনকে জিম্মি করার পরিকল্পনা করছিলেন বলে সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন। গতকাল শুক্রবার তুরস্কের একটি সরকারপন্থী সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার তুরস্কের পুলিশ ১৬ জায়গায় অভিযান চালিয়ে ১৩ জন সন্দেহভাজন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিকে আটক করার পরদিন গতকাল আরও ১১ জনকে ধরা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ইস্তাম্বুলের বিমানবন্দরে গত মঙ্গলবার রাতে চালানো ভয়াবহ হামলায় ৪৪ জন নিহত ও প্রায় আড়াই শ মানুষ আহত হয়। ওই হামলা এ বছর ইস্তাম্বুলে সংঘটিত কয়েক দফা সন্ত্রাসী হামলার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। সরকারপন্থী সাবাহ পত্রিকা বলেছে, ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর আগে হামলাকারীরা বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। পরিকল্পনা করে বেশ কিছু যাত্রীকে জিম্মি করার। কিন্তু এ নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়লে একপর্যায়ে হামলা চালানো শুরু করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হামলাকারীরা বিস্ফোরক দ্রব্য লুকিয়ে রাখার জন্য গরমের মধ্যেও যে কোট পরেছিল,
তা এক পুলিশ কর্মকর্তা ও কয়েক ব্যক্তির নজরে পড়ে যায়।’ তুরস্কের কর্তৃপক্ষের ধারণা, এই হামলা ও হত্যাযজ্ঞের পেছনে আইএস দায়ী। তবে গতকাল পর্যন্ত কেউ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষ তিনজন হামলাকারীকে রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের নাগরিক বলে চিহ্নিত করার দাবি করেছে। তুর্কি গণমাধ্যমের খবরে গতকাল বলা হয়, তিনজনের একজন রাশিয়ার চেচনিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা আহমেত চাতায়েভ। হুরিয়াত পত্রিকার খবরে দাবি করা হয়, তিনিই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। এতে বলা হয়, আইএসের ইস্তাম্বুল শাখার প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। চলতি বছর ইস্তাম্বুলের প্রাণকেন্দ্রের পর্যটন এলাকা সুলতান আহমেত ও প্রধান বিপণি এলাকা ইস্তিকলালের কাছে দুই দফা বোমা হামলার ঘটনাও তিনিই সংঘটিত করেন বলে বলা হচ্ছে। বিমানবন্দরের সিসিটিভির ধারণকৃত দৃশ্যে দেখা যায়, গাঢ় রঙের পোশাক পরা তিন ব্যক্তি ঘোরাফেরা করছেন। তাঁদের দুজনের মাথায় বেসবল খেলার টুপি।
হুরিয়াতের খবরে বলা হয়েছে, ঘটনার আগে হামলাকারীরা ইস্তাম্বুলের ফাতিহ এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতেন। এ এলাকায় অনেক সিরীয় ও অন্যান্য আরব দেশের নাগরিকেরা থাকেন। এক বছরের ভাড়া বাবদ হামলাকারীরা অগ্রিম ২৪ হাজার তুর্কি লিরা (৮ হাজার ৩০০ ডলার) পরিশোধ করেন। হামলার পর ওই ফ্ল্যাটটিতেও অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এদিকে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় গত ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত এক ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার সংগঠকদের একজন নিহত হয়েছেন বলে গতকাল কর্মকর্তারা জানান। কুর্দি-অধ্যুষিত তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ওই ব্যক্তি নিহত হন। আঙ্কারার ওই হামলায় নিহত হয়েছিলেন অন্তত ২৮ জন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, ১৭ ফেব্রুয়ারির হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মেহমেত সিরিন কায়া নামের ওই ব্যক্তি। দিয়ারবাকির এলাকার লাইস নামের স্থানে অভিযানে তিনি নিহত হয়েছেন।
No comments