অবৈধ সরকার অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে : শিবির সভাপতি
বাংলাদেশ
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী
সরকারের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অপশাসনে জনগণের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। জনগণের
জন্য অবৈধ সরকার অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে
ছাত্রশিবিরের মাসিক সেক্রেটারিয়েট বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাতের পরিচালনায় এসময় সেক্রেটারীয়েট
সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শিবির সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে তাদের
প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিয়েছে। তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জনগণকে নানাভাবে নিপীড়ন করছে।
এই নিপীড়ণের আরেকটি পদক্ষেপ হলো ২০১৬-১৭ সালের বাজেট। এই বাজেটে জনগণের কথা
বলা হয়নি। বাজেটে শিক্ষাখাতে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা অপর্যাপ্ত।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কিছুটা বাড়লেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশেও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ অনেক বেশি। প্রস্তাবিত
বাজেটে শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে বাজেটে শিশুদের ড্রয়িং
বইয়ের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকাশনা শিল্পে চিলড্রেন পিকচার,
ড্রয়িং কালারিং বইয়ের শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশ ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়।
শতভাগ পাশ করানোর মনোবৃত্তি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে
গেছে, উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি পরীক্ষার সময়ও তা দেখা যায়। এ কারণে শিক্ষিত
বেকারত্বের হার দিন দিন বেড়েই চলছে। বাজেটে শিক্ষিত বেকারদের জন্য কোনো
সুখবর নেই। দেশে বেকার জনগোষ্ঠির সমস্যা দূর করার জন্য কোনো কার্যকর
ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ধোঁকাবাজির মাধ্যমে নিজেদের অযোগ্যতা ও
ব্যর্থতাকে আড়াল করতে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা
হয়েছে। অথচ ৯৭ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার ঘাটতিই রয়েছে।
এই ঘাটতি পূরণে দেশ
বিদেশ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হবে সরকারকে। আর এই বিশাল ঋণের বোঝা বহন করতে
হবে জনগণকে। ইতিমধ্যেই মোবাইল কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত টাকা কেটে নেয়া শুরু
করেছে। ৯৫ মুসলমানের দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য ২০০ কোটি টাকা
বাজেট রাখলেও মুসলমানদের ধর্মীয় স্থান ও অবকাঠামোর জন্য কোনো বরাদ্দ রাখা
হয়নি। সুতরাং এই বাজেটের মাধ্যমে জনগণের সাথে নির্মম তামাশা করেছে সরকার।
অন্যদিকে মাহে রমজানকে সামনে রেখে সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ও সরকারি লোকদের
ছত্রছায়ায় দ্রব্যমূল্যের ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে চলে
গেছে। তিনি আরো বলেন, যাদের আদর্শ ও নৈতিকতা বলতে কিছু নেই তাদের কাছ থেকে
ভালো কিছু আশা করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। জাতির ঘাড়ে চেপে বসা এই অভিশপ্ত
অপশক্তিকে টেনে নামানো ছাড়া জাতির মুক্তি নেই। সুতরাং দেশ ও জনগণের শত্রু
এই আদর্শহীন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করে যেতে হবে।
তিনি সমাগত মাহে রমজানকে সুষ্ঠভাবে পালনের আহবান জানিয়ে বলেন, মাহে রমজান
সেই কুরআন নাযিলের মাস যেই কুরআন বাতিলকে পরাজিত করে ব্যক্তি, সমাজ ও
রাষ্ট্রে ইনসাফপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। সেই কুরআন আজও আছে।
সুতরাং কুরআনের ঝান্ডা উঁচু করে রাখা কাফেলা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের এই
কুরআন নাযিলের মাসে নিজ, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে কুরআন প্রতিষ্ঠায়
সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে।
No comments