ফুঁসে উঠেছে সিন, ডুবে যাচ্ছে প্যারিস
প্যারিসে ভারী বৃষ্টিতে বেড়ে গেছে সিন
নদীর পানি। গত ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফুঁসে উঠেছে এ নদী।
বন্যার পানি এই নগরের পাতালরেলের কাছাকাছি চলে এসেছে। আলমা সেতুর জুয়াভু
ভাস্কর্য তলিয়ে যাচ্ছে বন্যার পানিতে।
বন্যার পানি ৬ মিটারের বেশি হওয়ায়
ল্যুভর ও অরসে জাদুঘর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং জাদুঘরের কর্মীরা
শিল্পকর্মগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। সিন নদীর পানি ৬ দশমিক ৫
মিটার উঁচুতে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চলতি সপ্তাহান্তে পানি নামবে না।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে প্যারিসে আরও বৃষ্টিপাতের আশংকা করা হয়েছে।
ফ্রান্স, ইউক্রেনসহ ইউরোপের মধ্যাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায়
কমপক্ষে ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ফ্রান্সে দুজন মারা গেছে।
জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলে ১০ জন মারা গেছে। সেখানকার বেশ কয়েকটি শহর ব্যাপক
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোমানিয়ায় দুজন ও বেলজিয়ামে একজন মারা গেছে। অস্ট্রিয়া,
নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডেও বন্যা হয়েছে। হাজার হাজার লোককে নিরাপদ
স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্যারিসে বন্যায় ফ্রান্সের ইনস্যুরেন্স
কোম্পানীগুলোর ৬০ কোটি ইউরোর বেশি ক্ষতি হতে পারে।
পূর্ব সতর্কতা হিসেবে
প্যারিসের ক্লুনি, লা সর্বোন ও সান শেল পাতাল রেলস্টেশনগুলো বন্ধ করে
দেওয়া হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন সড়ক পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। বিভিন্ন সেতু বন্ধ
করে দেওয়া হয়েছে এবং সিন নদীতে জরুরী নয় এমন নৌকা চলাচলও নিষিদ্ধ করা
হয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন জাদুঘর, পার্ক ও সমাধি বন্ধ করে দেয়া
হয়েছে। বন্যার আশংকায় ল্যুভর জাদুঘরের কর্মীরা প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার
শিল্পকর্ম নিচু স্থান থেকে উঁচু স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। ফ্রান্সের
প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ একে ‘ব্যতিক্রমী বন্যা’ বলে অভিহিত করেন। ১৮৭৩
সালের পর গত মে মাসে ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগে ১৯১০
সালের বন্যায় দুই মাস প্যারিস ডুবে ছিল। ওই বছর নদীর পানি ৮.৬২, ১৯৫৫ সালে
৭.১ ও ১৯৮২ সালে ৬.১৮ মিটার পানি বেড়েছিল।
No comments