মাকে কবর দেয়ায় সমাজচ্যুত হিন্দু পরিবার, পাশে দাঁড়ালো ডব্লিউপিআই
১১ ফেব্রুয়ারি (রেডিও তেহরান):
মৃত মাকে দাহ না করে কবর দেয়ায় পশ্চিমবঙ্গে সমাজচ্যুত এক হিন্দু পরিবারের
পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়া’ (ডব্লিউপিআই)। দলটির উত্তর
২৪ পরগণা জেলার দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে সব ধরণের সহযোগিতার
আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের স্বরূপনগর থানা এলাকার হরিশপুর গ্রামের বিদেশ সরকার নামে এক বাসিন্দার বৃদ্ধা মা তরুলতা সরকার সম্প্রতি মারা গেলে তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে হিন্দু রীতি অনুযায়ী দাহ না করে কবর দেয়ায় ওই পরিবারকে ‘সমাজচ্যুত’ করা হয়েছে। বিদেশ সরকারের এক নিকটাত্মীয় কবর দেয়া এবং শ্রদ্ধা অনুষ্ঠানে সাহায্য করায় নকুল চন্দ্র সানাকেও ‘সমাজচ্যুত’ করেছেন গ্রামের মোড়লরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হিন্দু ধর্মের অবমাননা করেছেন ওই পরিবার।
গ্রামের মোড়লদের পক্ষ থেকে সভা ডেকে ওই দুটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করে সামাজিক বয়কট করা হয়েছে। সমাজচ্যুত করার ঘোষণা দিতে রীতিমত ওই এলাকায় এ সংক্রান্ত পোস্টার লাগিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসী সুভাষ মন্ডল জানান, ‘বিদেশ সরকার সনাতন হিন্দু ধর্মের অবমাননা করেছেন। হিন্দু মতে মৃত্যুর পর মৃতদেহ দাহ করার নিয়ম। তা না করে বিদেশ মায়ের দেহ সমাধিস্থ করেছেন। শ্রদ্ধা অনুষ্ঠানের নামে বাইরে থেকে লোক এনে মাইকে হিন্দু ধর্মের নামে কটূক্তি করা হয়েছে। তার প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা সভা করে ওদের সমাজ থেকে বহিষ্কার করেছে।’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ব্রাহ্মণ ডেকে আদ্যশ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান না করে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজনদের ডেকে ধর্মীয় গান গাওয়ানো হয় এবং শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিচারণা করা হয়।
বিদেশ সরকার তার মায়ের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে কবরস্থ করেন এবং মাথা মুড়িয়ে আদ্যশ্রাদ্ধ না করে শ্রদ্ধা জানাতে স্মরণ অনুষ্ঠান করেন। আর এতেই বিপত্তি শুরু হয়েছে। বিদেশ সরকার অবশ্য কোনো ধর্মের অবমাননা করেননি বলে জানান।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বিদেশ সরকার জানান, ‘গ্রামের মধ্যে এখনো সামাজিক বয়কট করা পোস্টার রয়েছে। এর আগে বাড়িতে ঢিল-পাথর ছুঁড়ে উপদ্রব করা হলেও গতকাল এবং আজ বাড়িতে ঢিল ছোঁড়া হয়নি। অন্যভাবে শাসানো হচ্ছে এবং হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। বিভিন্নস্থান থেকে মানবাধিকার সংগঠন এবং অন্যান্য সংস্থা আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। একটি মুসুরি ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে সেখানে অস্থায়ী চালা তোলা হয়েছে। সেটি এখনো সরানো হয়নি। জমিতে লাগানো লম্বু গাছ কেটে দেয়া হয়েছে। এখন পথে চলতে পারলেও কেউ কোনো কথাবার্তা বলছে না। বিষয়টি নিয়ে স্বরূপনগর থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’
ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ তথা মতুয়া অনুসারী হওয়ার জন্যই তার বিরুদ্ধে অত্যাচার করা হচ্ছে বলেও জানান বিদেশ সরকার।
গ্রামবাসীদের লাগানো পোস্টারে বলা হয়েছে, ‘হিন্দু ধর্মের অবমাননা করায় হিন্দু সনাতন সমাজ থেকে হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদেশ সরকার ও নকুল চন্দ্র সানাকে সমাজ থেকে সম্পূর্ণ বের করে দেয়া হল। তারা কোনোরকম প্রশাসনিক সুবিধা পাবে না, অন্যের সম্পত্তিতে পদার্পণ করতে পারবে না, হরিশপুরের কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না, তাদের জমিতে কেউ চাষাবাদও করতে পারবে না।’
আজ (বৃহস্পতিবার) ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়ার উত্তর ২৪ পরগণা জেলা প্রেসিডেন্ট আব্দুন নাঈম জানান, ‘গতকাল বিকেলে আমরা বিদেশ সরকারের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের আইনি সহযোগিতা থেকে শুরু করে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে ছিলেন জেলা সম্পাদক আইনজীবী রফিকুল ইসলাম, দেগঙ্গা ব্লক প্রেসিডেন্ট গোলাম হোসেন, চাকলা আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এবং দেগঙ্গা ব্লক কর্মী মুহাম্মদ নাসিরউদ্দিন।’
আব্দুন নাঈম জানান, ‘স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে যার যার পছন্দমত ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। এ নিয়ে অসহিষ্ণুতার কোনো স্থান নেই। দেশের আইন এবং বিচার ব্যবস্থাকে যারা চ্যালেঞ্জ জানাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে হবে। ওই পরিবারকে আইনগত ও নীতিগতভাবে, জনমত তৈরি করার মাধ্যমে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।’
পশ্চিমবঙ্গের স্বরূপনগর থানা এলাকার হরিশপুর গ্রামের বিদেশ সরকার নামে এক বাসিন্দার বৃদ্ধা মা তরুলতা সরকার সম্প্রতি মারা গেলে তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে হিন্দু রীতি অনুযায়ী দাহ না করে কবর দেয়ায় ওই পরিবারকে ‘সমাজচ্যুত’ করা হয়েছে। বিদেশ সরকারের এক নিকটাত্মীয় কবর দেয়া এবং শ্রদ্ধা অনুষ্ঠানে সাহায্য করায় নকুল চন্দ্র সানাকেও ‘সমাজচ্যুত’ করেছেন গ্রামের মোড়লরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হিন্দু ধর্মের অবমাননা করেছেন ওই পরিবার।
গ্রামের মোড়লদের পক্ষ থেকে সভা ডেকে ওই দুটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করে সামাজিক বয়কট করা হয়েছে। সমাজচ্যুত করার ঘোষণা দিতে রীতিমত ওই এলাকায় এ সংক্রান্ত পোস্টার লাগিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসী সুভাষ মন্ডল জানান, ‘বিদেশ সরকার সনাতন হিন্দু ধর্মের অবমাননা করেছেন। হিন্দু মতে মৃত্যুর পর মৃতদেহ দাহ করার নিয়ম। তা না করে বিদেশ মায়ের দেহ সমাধিস্থ করেছেন। শ্রদ্ধা অনুষ্ঠানের নামে বাইরে থেকে লোক এনে মাইকে হিন্দু ধর্মের নামে কটূক্তি করা হয়েছে। তার প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা সভা করে ওদের সমাজ থেকে বহিষ্কার করেছে।’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ব্রাহ্মণ ডেকে আদ্যশ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান না করে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজনদের ডেকে ধর্মীয় গান গাওয়ানো হয় এবং শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিচারণা করা হয়।
বিদেশ সরকার তার মায়ের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে কবরস্থ করেন এবং মাথা মুড়িয়ে আদ্যশ্রাদ্ধ না করে শ্রদ্ধা জানাতে স্মরণ অনুষ্ঠান করেন। আর এতেই বিপত্তি শুরু হয়েছে। বিদেশ সরকার অবশ্য কোনো ধর্মের অবমাননা করেননি বলে জানান।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বিদেশ সরকার জানান, ‘গ্রামের মধ্যে এখনো সামাজিক বয়কট করা পোস্টার রয়েছে। এর আগে বাড়িতে ঢিল-পাথর ছুঁড়ে উপদ্রব করা হলেও গতকাল এবং আজ বাড়িতে ঢিল ছোঁড়া হয়নি। অন্যভাবে শাসানো হচ্ছে এবং হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। বিভিন্নস্থান থেকে মানবাধিকার সংগঠন এবং অন্যান্য সংস্থা আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। একটি মুসুরি ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে সেখানে অস্থায়ী চালা তোলা হয়েছে। সেটি এখনো সরানো হয়নি। জমিতে লাগানো লম্বু গাছ কেটে দেয়া হয়েছে। এখন পথে চলতে পারলেও কেউ কোনো কথাবার্তা বলছে না। বিষয়টি নিয়ে স্বরূপনগর থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’
ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ তথা মতুয়া অনুসারী হওয়ার জন্যই তার বিরুদ্ধে অত্যাচার করা হচ্ছে বলেও জানান বিদেশ সরকার।
গ্রামবাসীদের লাগানো পোস্টারে বলা হয়েছে, ‘হিন্দু ধর্মের অবমাননা করায় হিন্দু সনাতন সমাজ থেকে হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদেশ সরকার ও নকুল চন্দ্র সানাকে সমাজ থেকে সম্পূর্ণ বের করে দেয়া হল। তারা কোনোরকম প্রশাসনিক সুবিধা পাবে না, অন্যের সম্পত্তিতে পদার্পণ করতে পারবে না, হরিশপুরের কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না, তাদের জমিতে কেউ চাষাবাদও করতে পারবে না।’
আজ (বৃহস্পতিবার) ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়ার উত্তর ২৪ পরগণা জেলা প্রেসিডেন্ট আব্দুন নাঈম জানান, ‘গতকাল বিকেলে আমরা বিদেশ সরকারের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের আইনি সহযোগিতা থেকে শুরু করে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে ছিলেন জেলা সম্পাদক আইনজীবী রফিকুল ইসলাম, দেগঙ্গা ব্লক প্রেসিডেন্ট গোলাম হোসেন, চাকলা আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এবং দেগঙ্গা ব্লক কর্মী মুহাম্মদ নাসিরউদ্দিন।’
আব্দুন নাঈম জানান, ‘স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে যার যার পছন্দমত ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। এ নিয়ে অসহিষ্ণুতার কোনো স্থান নেই। দেশের আইন এবং বিচার ব্যবস্থাকে যারা চ্যালেঞ্জ জানাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে হবে। ওই পরিবারকে আইনগত ও নীতিগতভাবে, জনমত তৈরি করার মাধ্যমে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।’
No comments