ফেসবুকে ‘লাইক’ দিলেও হতে পারে জেল
সামাজিক
যোগাযোগের সাইট ফেসবুকে পোস্টিং-এর জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশে বেশ কিছু
মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এবং সেটা করা হয়েছে ‘৫৭ ধারার’ আওতায়৷
ব্লগারদের মতে, এটা বাকস্বাধীনতাকে খর্ব করার একটা প্রচেষ্টা মাত্র৷
গত ৩০শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ ‘‘ইসলামের বিরুদ্ধে অপ্রীতিকর মন্তব্য করার দায়ে মাগুরার এক স্কুলের ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে৷ ১৫ বয়স বছরের কিশোরটি নবম শ্রেণিতে পড়ে৷ তাকে যে আইনে গ্রেপ্তার করা হয়, সেটি প্রণীত হয় ২০০৬ সালে এবং সংশোধিত হয় ২০১৩ সালে৷
সংশ্লিষ্ট আইনের এক্তিয়ারে প্রথম গ্রেপ্তারির ঘটনা ঘটে ২০১৩ সালে৷ সেবছরের এপ্রিল মাসে চারজন ব্লগারকে আটক করা হয় একটি ধর্মের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচারের দায়ে৷ ইতিপূর্বে মৌলবাদীরা নাস্তিক ব্লগারদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন করেছিল৷ সেযাবৎ একশর বেশি মানুষকে ঐ আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
১৪ বছরের কারাদণ্ড, কিংবা জরিমানা
২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন বা আইসিটি অ্যাক্ট দুবার সংশোধন করা হয়েছে৷ এই আইনের ৫৭ ধারাটি বিশেষভাবে বিতর্কিত৷ সেই ধারা অনুযায়ী যদি কেউ ইন্টারনেটে বা ডিজিটাল উপায়ে কোনো ‘‘ভুল বা অশ্লীল লেখা প্রকাশ করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে৷ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে, কিংবা রাষ্ট্র তথা কোনো ব্যক্তির ভাবমূর্তির ক্ষতি করতে পারে, কিংবা কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারে, এমন সব লেখাও এই আইনের আওতায় পড়ে৷
ব্লগাররা এই ধারার অপসারণ দাবি করে আসছেন; যেমন ২০১৩ সালে গ্রেপ্তারকৃত চারজন ব্লগারদের মধ্যে যে তিনজন আজ বিদেশে বাস করছেন৷ তাঁদের একজন, সুব্রত শুভ, আজ সুইডেনে বাস করেন৷ সুব্রত ডিডাব্লিউ-কে বলেন যে, ৫৭ ধারার কারণে আজ অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন; ফলে সরকারের বিরুদ্ধে আর কেউ কিছু লিখতে সাহস পাচ্ছেন না৷ ফেসবুকে একটি মামুলি ‘‘লাইক দেবার অপরাধেই সাত থেকে ১৪ বছরের কারদণ্ড কিংবা এক কোটি টাকা জরিমানা হতে পারে, বলেন সুব্রত৷
রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের হয়রান করার পন্থা?
রাসেল পারভেজ-ও ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন৷ তাঁর মতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আইনটির অপব্যবহার করা হচ্ছে৷ যেমন কিছু মানুষকেআটক করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করার দায়ে৷ গতবছর এক তরুণকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় শেখ মুজিব ও তাঁর কন্যা সম্পর্কে একটি ব্যঙ্গাত্মক গান শেয়ার করার অপরাধে৷ গতমাসে এক সাবেক মেয়রকে গ্রেপ্তার করা হয় শেখসাহেবের বিরুদ্ধে ‘‘অবমাননাকর মন্তব্য করার দায়ে৷ পারভেজ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইন্টারনেটের উপর নজর রাখার জন্য বিশেষভাবে তৈরি৷ ফলে শাসকদলের সদস্যরা তাদের অপছন্দের লোকেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন আর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে৷
ঢাকার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া একাধিক ব্লগারের কৌঁসুলি ছিলেন৷ আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা বাতিল করা উচিত, বলে তিনি মনে করেন৷ বড়ুয়া জনস্বার্থে এই ধারার সাংবিধানিকতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এবং ইতিবাচক ফল পাবার আশা রাখেন, বলে ডিডাব্লিউ-কে জানান৷
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ৫৭ ধারা বাতিল করার আহ্বান নাকচ করলেও, আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ডয়চে ভলের ঢাকাস্থ প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপনকে একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, সরকার ৫৭ ধারা পুনর্বিবেচনা করবেন৷ ‘‘যে সব আন্দোলনকারী এই ধারা বাকস্বাধীনতা খর্ব করছে বলে মনে করেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব, তাঁদের উদ্বেগ বোঝার চেষ্টা করব৷ তবে তিনি আশু পরিবর্তনের কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি৷
সুত্রঃ ডয়েচে ভেলে
গত ৩০শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ ‘‘ইসলামের বিরুদ্ধে অপ্রীতিকর মন্তব্য করার দায়ে মাগুরার এক স্কুলের ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে৷ ১৫ বয়স বছরের কিশোরটি নবম শ্রেণিতে পড়ে৷ তাকে যে আইনে গ্রেপ্তার করা হয়, সেটি প্রণীত হয় ২০০৬ সালে এবং সংশোধিত হয় ২০১৩ সালে৷
সংশ্লিষ্ট আইনের এক্তিয়ারে প্রথম গ্রেপ্তারির ঘটনা ঘটে ২০১৩ সালে৷ সেবছরের এপ্রিল মাসে চারজন ব্লগারকে আটক করা হয় একটি ধর্মের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচারের দায়ে৷ ইতিপূর্বে মৌলবাদীরা নাস্তিক ব্লগারদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন করেছিল৷ সেযাবৎ একশর বেশি মানুষকে ঐ আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
১৪ বছরের কারাদণ্ড, কিংবা জরিমানা
২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন বা আইসিটি অ্যাক্ট দুবার সংশোধন করা হয়েছে৷ এই আইনের ৫৭ ধারাটি বিশেষভাবে বিতর্কিত৷ সেই ধারা অনুযায়ী যদি কেউ ইন্টারনেটে বা ডিজিটাল উপায়ে কোনো ‘‘ভুল বা অশ্লীল লেখা প্রকাশ করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে৷ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে, কিংবা রাষ্ট্র তথা কোনো ব্যক্তির ভাবমূর্তির ক্ষতি করতে পারে, কিংবা কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারে, এমন সব লেখাও এই আইনের আওতায় পড়ে৷
ব্লগাররা এই ধারার অপসারণ দাবি করে আসছেন; যেমন ২০১৩ সালে গ্রেপ্তারকৃত চারজন ব্লগারদের মধ্যে যে তিনজন আজ বিদেশে বাস করছেন৷ তাঁদের একজন, সুব্রত শুভ, আজ সুইডেনে বাস করেন৷ সুব্রত ডিডাব্লিউ-কে বলেন যে, ৫৭ ধারার কারণে আজ অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন; ফলে সরকারের বিরুদ্ধে আর কেউ কিছু লিখতে সাহস পাচ্ছেন না৷ ফেসবুকে একটি মামুলি ‘‘লাইক দেবার অপরাধেই সাত থেকে ১৪ বছরের কারদণ্ড কিংবা এক কোটি টাকা জরিমানা হতে পারে, বলেন সুব্রত৷
রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের হয়রান করার পন্থা?
রাসেল পারভেজ-ও ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন৷ তাঁর মতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আইনটির অপব্যবহার করা হচ্ছে৷ যেমন কিছু মানুষকেআটক করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করার দায়ে৷ গতবছর এক তরুণকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় শেখ মুজিব ও তাঁর কন্যা সম্পর্কে একটি ব্যঙ্গাত্মক গান শেয়ার করার অপরাধে৷ গতমাসে এক সাবেক মেয়রকে গ্রেপ্তার করা হয় শেখসাহেবের বিরুদ্ধে ‘‘অবমাননাকর মন্তব্য করার দায়ে৷ পারভেজ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইন্টারনেটের উপর নজর রাখার জন্য বিশেষভাবে তৈরি৷ ফলে শাসকদলের সদস্যরা তাদের অপছন্দের লোকেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন আর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে৷
ঢাকার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া একাধিক ব্লগারের কৌঁসুলি ছিলেন৷ আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা বাতিল করা উচিত, বলে তিনি মনে করেন৷ বড়ুয়া জনস্বার্থে এই ধারার সাংবিধানিকতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এবং ইতিবাচক ফল পাবার আশা রাখেন, বলে ডিডাব্লিউ-কে জানান৷
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ৫৭ ধারা বাতিল করার আহ্বান নাকচ করলেও, আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ডয়চে ভলের ঢাকাস্থ প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপনকে একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, সরকার ৫৭ ধারা পুনর্বিবেচনা করবেন৷ ‘‘যে সব আন্দোলনকারী এই ধারা বাকস্বাধীনতা খর্ব করছে বলে মনে করেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব, তাঁদের উদ্বেগ বোঝার চেষ্টা করব৷ তবে তিনি আশু পরিবর্তনের কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি৷
সুত্রঃ ডয়েচে ভেলে
No comments