অচল খুলনা, চিংড়ি রপ্তানিতে ধস by রাশিদুল ইসলাম
দেশজুড়ে
২০ দলীয় নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা টানা অবরোধ চলছে। অবরোধের সঙ্গে খুলনা
বিভাগে মাঝেমধ্যে যোগ হচ্ছে হরতাল। অবরোধ আর হরতালে খুলনার জনজীবনে কার্যত
অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে চিংড়ি ও পাট রপ্তানিতে নেমেছে ধস। এই
দুই সেক্টরে প্রতিদিন আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে রপ্তানিকারকদের। বিভিন্ন
সূত্রে জানা যায়, অবরোধ-হরতালে খুলনা থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল কমে গেছে।
অতি জরুরি কোন কাজ না থাকলে লোকজন তেমন একটা বাইরে বের হচ্ছে না। পণ্য ও
যাত্রীবাহী কিছু যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় চালাতে গিয়েও অবরোধকারীদের
প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। পণ্যবাহী যানগুলো গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে
আটকা পড়ে আছে। এতে কৃষক, উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিক ও ব্যবসায়ীদের
উদ্বেগ বাড়ছে। খুলনায় ট্রেনের শিডিউলে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
অবরোধ-হরতালের কারণে নাশকতার আশঙ্কায় ট্রেন তার নির্ধারিত গতি থেকে নেমে
আসায় এ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। নির্ধারিত
সময়ের কয়েক ঘণ্টা পরে স্টেশনের প্লাটফর্ম ছাড়ছে অনেক ট্রেন। আর সময় মতো
ট্রেন না আসার ফলে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া, অনেকে
টিকিট ফেরত দিয়ে চলে যাচ্ছে।
অপরদিকে, নদী পথেও লঞ্চ চলাচল কমে গেছে। লাগাতার অবরোধ আর হরতালের প্রভাব পড়ছে খুলনার নিত্যপণ্যের বাজার ও প্রকাশনা শিল্পে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি বেড়েছে প্রকাশনা শিল্পে ব্যবহৃত কাগজের দাম।
খুলনা বড় বাজারের ব্যবসায়ী মো. সিদ্দিক জানান, ব্যবসায় মন্দা চলছে। এদিকে বাজারে বাইরের ক্রেতা নেই। সবজিসহ দ্রুত পচনশীল পণ্যের দাম কমে গেছে। অপরদিকে মাল আমদানি করা যাচ্ছে না। সুযোগ অনুযায়ী অল্প মাল আনা হচ্ছে। সঙ্গতকারণেই বেড়ে গেছে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম।
মেসার্স তালুকদার ট্রেডার্সের প্রোপাইটার মো. শহিদুল ইসলাম ও রহমান ব্রাদার্সের ম্যানেজার খান মাহাবুবুর রহমান জানান, অবরোধ আর হরতালের কারণে চাল আমদানি করা যাচ্ছে না। আমদানি অনেক কমে গেছে। ফলে চালের দাম বেড়েছে। তারা জানান, তাদের এক একটি গুদামে এখনও পর্যন্ত ৪-৫ শ’ বস্তা চাল মজুত রয়েছে। তবে এ অবস্থা চলমান থাকলে খুলনায় চরম সঙ্কট সৃষ্টি হবে। অপরদিকে, বাজারে বাইরের ক্রেতাদেরও উপস্থিতি কম বলে জানান তারা।
খুলনা জাহান প্রিন্টিং প্রেসে কর্মরত নীতিশ এবং আজিজ প্রেসের একজন কর্মচারী জানান, হরতাল-অবরোধের কারণে চাহিদা অনুযায়ী কাগজ আনা সম্ভব হচ্ছে না। চাহিদার চেয়েও কম কাগজ আসছে। ফলে খুলনায় কাগজের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। আবার প্রিন্টিং মওসুম থাকায় কাগজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় বাজারে সঙ্কট থাকায় বিক্রেতারা সুযোগ বুঝে কাগজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন রিমপ্রতি ৩ শ’ টাকা থেকে ৪ শ’ টাকা।
খুলনার চিংড়ি ও পাটশিল্পে অবরোধ-হরতালের প্রভাব পড়ছে। চিংড়ি শিল্পের কাঁচামাল যোগানের অভাবে হিমায়িত চিংড়ি ব্যবসায়ীরা চাহিদা অনুযায়ী শিপমেন্ট করতে পারছে না। অপরদিকে যথাসময়ে কাঁচা পাট গুদামজাতকরণ ও রপ্তানি করতে না পারায় একই অবস্থা বিরাজ করছে পাট ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ফলে এসব ব্যবসায়ীরা একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তেমনি শ্রমিকরা বেকার হয়ে অলস সময় পার করছেন।
খুলনা চিংড়ি বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহিদুজ্জামান মনজির জানান, অবরোধের কারণে মাছ কোম্পানি মালিকদের শিপমেন্ট করতে আর্থিকভাবে লোকসান হচ্ছে। অবরোধের কারণে সাতক্ষীরা, কয়রা, রামপাল, বাগেরহাট, কালিগঞ্জ, পাইকগাছাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসব চিংড়ি পরিবহন করে মাছ কোম্পানিগুলোতে আনতে সময় বেশি লাগছে। ফলে চিংড়ির গুণগত মান অনেকটা হ্রাস পাচ্ছে।
রূপসা চিংড়ি বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মান্নান জানান, অবরোধের কারণে মধ্যস্বত্বভোগীরা (ব্যবসায়ী) ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এছাড়া, ব্যাংক থেকে যেসব ব্যবসায়ী সিসি ঋণ নিয়েছেন তাদের সুদের বোঝা টানতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন খুলনার সহ-সভাপতি এম খলিলুল্লাহ জানান, দক্ষিণাঞ্চলে অবরোধে চিংড়ি শিল্পে দৈনিক প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি টাকার মতো লোকসান হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে চিংড়ি শিল্পের কাঁচামাল আসতে পারছে না। ফলে এসব মাছ কোম্পানিতে চাহিদা অনুযায়ী শিপমেন্ট করতে না পারায় চিংড়ি শিল্প আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অন্যদিকে, হরতাল-অবরোধের কারণে পাট ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অবরোধে পরিবহন সমস্যার কারণে পাট মোকাম থেকে এনে গুদামজাত করা, এলসি আসা সত্ত্বেও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে গুদামে পাট পড়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে অবরোধ থাকায় পাট পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে বছরের প্রথমে ব্যবসায়ীরা পাট রপ্তানি করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ছেন। এছাড়া, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন। তারা ব্যবসায় মন্দা যাওয়ার কারণে ঋণ দিতে সমস্যার মধ্যে পড়ছেন। ব্যবসায়ীদের গুদামগুলোতে পাট পড়ে রয়েছে। আবার বেশি ভাড়া দিয়ে ট্রাক পেলেও পাট পরিবহনে পাঠালেও তাদের সার্বক্ষণিক মানসিক টেনশনে থাকতে হয়।
সারতাজ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক বদরুল আলম মার্কিন বলেন, পাট পরিবহনের জন্য ট্রাক পাওয়া যায় না। যেগুলো পাওয়া যায় তার ভাড়া দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। ফলে পরিবহনের অভাবে মোকাম থেকে পাট আসছে না। এছাড়া, এলসি আসলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাট রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে খুলনার সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প। সহিংসতার শঙ্কায় ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। ফলে ভরা মওসুমে অনেকটাই পর্যটক শূন্য খুলনা। সুন্দরবন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী আবদুল হামিদ খান বলেন, এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়বে। ইতিমধ্যে স্টাফদের বেতন পরিশোধে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের শুভবুদ্ধি উদয় হোক এই প্রত্যাশা করি। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে হরতাল আর অবরোধ। পরিবহন শ্রমিক মিন্টু হাওলাদার জানান, খুলনা থেকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ রুটের একটি গাড়িতে তিনি হেলপার হিসেবে কর্মরত। কাজে গেলে ২ শ’ টাকা আয় হয় তার। সহিংসতার ভয়ে মালিক গাড়ি ছাড়ছে না। ফলে বেকার হয়ে পড়েছি। খাবার হোটেল ব্যবসায়ী কেরামত আলী জানান, অবরোধের ফলে হোটেলে খরিদ্দার নেই। দিনে ৪/৫ হাজার টাকা বেচাবিক্রি হতো। কিন্তু এখন হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। কর্মচারীদের বেতন ও দোকান খরচই ওঠে না। এভাবে চললে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। হরতাল আর অবরোধে খুলনায় জ্বালানি তেলের ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, খরিদ্দার কমে গেছে। পরিবহন না চলায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী তেল নিতে আসছে না। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে, নদী পথেও লঞ্চ চলাচল কমে গেছে। লাগাতার অবরোধ আর হরতালের প্রভাব পড়ছে খুলনার নিত্যপণ্যের বাজার ও প্রকাশনা শিল্পে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি বেড়েছে প্রকাশনা শিল্পে ব্যবহৃত কাগজের দাম।
খুলনা বড় বাজারের ব্যবসায়ী মো. সিদ্দিক জানান, ব্যবসায় মন্দা চলছে। এদিকে বাজারে বাইরের ক্রেতা নেই। সবজিসহ দ্রুত পচনশীল পণ্যের দাম কমে গেছে। অপরদিকে মাল আমদানি করা যাচ্ছে না। সুযোগ অনুযায়ী অল্প মাল আনা হচ্ছে। সঙ্গতকারণেই বেড়ে গেছে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম।
মেসার্স তালুকদার ট্রেডার্সের প্রোপাইটার মো. শহিদুল ইসলাম ও রহমান ব্রাদার্সের ম্যানেজার খান মাহাবুবুর রহমান জানান, অবরোধ আর হরতালের কারণে চাল আমদানি করা যাচ্ছে না। আমদানি অনেক কমে গেছে। ফলে চালের দাম বেড়েছে। তারা জানান, তাদের এক একটি গুদামে এখনও পর্যন্ত ৪-৫ শ’ বস্তা চাল মজুত রয়েছে। তবে এ অবস্থা চলমান থাকলে খুলনায় চরম সঙ্কট সৃষ্টি হবে। অপরদিকে, বাজারে বাইরের ক্রেতাদেরও উপস্থিতি কম বলে জানান তারা।
খুলনা জাহান প্রিন্টিং প্রেসে কর্মরত নীতিশ এবং আজিজ প্রেসের একজন কর্মচারী জানান, হরতাল-অবরোধের কারণে চাহিদা অনুযায়ী কাগজ আনা সম্ভব হচ্ছে না। চাহিদার চেয়েও কম কাগজ আসছে। ফলে খুলনায় কাগজের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। আবার প্রিন্টিং মওসুম থাকায় কাগজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় বাজারে সঙ্কট থাকায় বিক্রেতারা সুযোগ বুঝে কাগজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন রিমপ্রতি ৩ শ’ টাকা থেকে ৪ শ’ টাকা।
খুলনার চিংড়ি ও পাটশিল্পে অবরোধ-হরতালের প্রভাব পড়ছে। চিংড়ি শিল্পের কাঁচামাল যোগানের অভাবে হিমায়িত চিংড়ি ব্যবসায়ীরা চাহিদা অনুযায়ী শিপমেন্ট করতে পারছে না। অপরদিকে যথাসময়ে কাঁচা পাট গুদামজাতকরণ ও রপ্তানি করতে না পারায় একই অবস্থা বিরাজ করছে পাট ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ফলে এসব ব্যবসায়ীরা একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তেমনি শ্রমিকরা বেকার হয়ে অলস সময় পার করছেন।
খুলনা চিংড়ি বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহিদুজ্জামান মনজির জানান, অবরোধের কারণে মাছ কোম্পানি মালিকদের শিপমেন্ট করতে আর্থিকভাবে লোকসান হচ্ছে। অবরোধের কারণে সাতক্ষীরা, কয়রা, রামপাল, বাগেরহাট, কালিগঞ্জ, পাইকগাছাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসব চিংড়ি পরিবহন করে মাছ কোম্পানিগুলোতে আনতে সময় বেশি লাগছে। ফলে চিংড়ির গুণগত মান অনেকটা হ্রাস পাচ্ছে।
রূপসা চিংড়ি বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মান্নান জানান, অবরোধের কারণে মধ্যস্বত্বভোগীরা (ব্যবসায়ী) ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এছাড়া, ব্যাংক থেকে যেসব ব্যবসায়ী সিসি ঋণ নিয়েছেন তাদের সুদের বোঝা টানতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন খুলনার সহ-সভাপতি এম খলিলুল্লাহ জানান, দক্ষিণাঞ্চলে অবরোধে চিংড়ি শিল্পে দৈনিক প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি টাকার মতো লোকসান হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে চিংড়ি শিল্পের কাঁচামাল আসতে পারছে না। ফলে এসব মাছ কোম্পানিতে চাহিদা অনুযায়ী শিপমেন্ট করতে না পারায় চিংড়ি শিল্প আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অন্যদিকে, হরতাল-অবরোধের কারণে পাট ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অবরোধে পরিবহন সমস্যার কারণে পাট মোকাম থেকে এনে গুদামজাত করা, এলসি আসা সত্ত্বেও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে গুদামে পাট পড়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে অবরোধ থাকায় পাট পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে বছরের প্রথমে ব্যবসায়ীরা পাট রপ্তানি করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ছেন। এছাড়া, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন। তারা ব্যবসায় মন্দা যাওয়ার কারণে ঋণ দিতে সমস্যার মধ্যে পড়ছেন। ব্যবসায়ীদের গুদামগুলোতে পাট পড়ে রয়েছে। আবার বেশি ভাড়া দিয়ে ট্রাক পেলেও পাট পরিবহনে পাঠালেও তাদের সার্বক্ষণিক মানসিক টেনশনে থাকতে হয়।
সারতাজ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক বদরুল আলম মার্কিন বলেন, পাট পরিবহনের জন্য ট্রাক পাওয়া যায় না। যেগুলো পাওয়া যায় তার ভাড়া দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। ফলে পরিবহনের অভাবে মোকাম থেকে পাট আসছে না। এছাড়া, এলসি আসলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাট রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে খুলনার সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প। সহিংসতার শঙ্কায় ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। ফলে ভরা মওসুমে অনেকটাই পর্যটক শূন্য খুলনা। সুন্দরবন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী আবদুল হামিদ খান বলেন, এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়বে। ইতিমধ্যে স্টাফদের বেতন পরিশোধে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের শুভবুদ্ধি উদয় হোক এই প্রত্যাশা করি। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে হরতাল আর অবরোধ। পরিবহন শ্রমিক মিন্টু হাওলাদার জানান, খুলনা থেকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ রুটের একটি গাড়িতে তিনি হেলপার হিসেবে কর্মরত। কাজে গেলে ২ শ’ টাকা আয় হয় তার। সহিংসতার ভয়ে মালিক গাড়ি ছাড়ছে না। ফলে বেকার হয়ে পড়েছি। খাবার হোটেল ব্যবসায়ী কেরামত আলী জানান, অবরোধের ফলে হোটেলে খরিদ্দার নেই। দিনে ৪/৫ হাজার টাকা বেচাবিক্রি হতো। কিন্তু এখন হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। কর্মচারীদের বেতন ও দোকান খরচই ওঠে না। এভাবে চললে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। হরতাল আর অবরোধে খুলনায় জ্বালানি তেলের ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, খরিদ্দার কমে গেছে। পরিবহন না চলায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী তেল নিতে আসছে না। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
No comments