মিয়ানমারের কাচিনে নতুন করে সহিংসতায় ঘরছাড়া ৮০০ মানুষ
মিয়ানমারের
উত্তরে কাচিন প্রদেশে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
জাতিগত কাচিন বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সরকারের এ আগ্রাসনে কমপক্ষে ৮০০ মানুষ
ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা। কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি
(কেআইএ) রাজ্যের যোগাযোগমন্ত্রীকে সাময়িক সময়ের জন্য জিম্মি করে। এর
প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এরপর
বৃহস্পতিবার হপাকান্ত এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মিয়ানমারের সংবাদপত্র
ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়, এ লড়াইয়ে শত শত মানুষ সহিংসতা এড়াতে পালিয়ে
যেতে বাধ্য হয়েছে। আর স্থানীয় চার্চগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে আনুমানিক ২০০
ছাত্রছাত্রী। কাচিন পিস নেটওয়ার্কের কর্মী খোন জা বার্তা সংস্থা এএফপিকে
বলেন, হপাকান্ত এলাকার তিনটি গ্রাম থেকে আনুমানিক ৮০০ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে
পালিয়েছে। স্থানীয় আশ্রম আর চার্চগুলোতে তারা আশ্রয় নিচ্ছে। ইরাবতী
জানিয়েছে, আনুমানিক ১০০০ মিয়ানমার সেনাকে সংঘাতময় এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
সরকার সমর্থিত সংবাদপত্র গ্লোবাল নিউ লাইট বলেছে, যোগাযোগমন্ত্রী কামান দু
নঅ’কে আটকের কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিলেও কেআইএ’র এখনও আটকে রেখেছে তিন পুলিশ
সদস্যকে। স্থানীয় এক বিদ্রোহী কমান্ডার জানিয়েছেন, ভোরের আগ দিয়ে গুলি করা
শুরু করে সেনাবাহিনী। এরপর সারা দিন দু’পক্ষের মধ্যে চলে লড়াই। কেআইএ’র
কর্নেল তান সেং এএফপিকে বলেন, এমন তীব্র লড়াই এক বছরের মধ্যে হয় নি।
নভেম্বর মাসে বিদ্রোহী অধ্যুষিত শহর লাইজাতে একটি বিদ্রোহী প্রশিক্ষণ
কেন্দ্রে সেনাবাহিনী হামলা চালায়। এরপর নতুন করে উত্তেজনা দানা বাঁধে। ওই
বোমা হামলায় ২০ জনেরও বেশি ক্যাডেট নিহত হয়। আহত হয় অনেকে। তবে আহতের সঠিক
সংখ্যা জানা যায় নি। ২০১১ সালের জুন মাসে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে ১৭
বছরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কাচিন প্রদেশে
আনুমানিক ১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। চীন সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত ও
প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এ প্রদেশ সহ দেশের অন্যান্য স্থানে জাতিগত
সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বিরোধ নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমার সরকার।
কিন্তু দেশব্যাপী যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আলোচনার
প্রচেষ্টা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনেকটা থমকে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিনের অনাস্থা
আর কাচিনে অব্যাহত লড়াইয়ে হুমকির মুখে পড়েছে সমঝোতা প্রক্রিয়া।
No comments