পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে না পারলে ক্ষমতা ছাড়ুন
সহিংসতা
বন্ধ ও দেশের সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে
সরকারকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশের কয়েকটি সমমনা রাজনৈতিক দল।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ আহ্বান জানানো
হয়। গণফোরাম, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক
দল (বাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও নাগরিক ঐক্য যৌথভাবে এ
মানববন্ধনের আয়োজন করে। সভা-সমাবেশসহ গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার নিশ্চিত,
জনগণের জানমাল রক্ষা, সহিংসতা বন্ধ ও সঙ্কট উত্তরণে রাজনৈতিক পদক্ষেপ
গ্রহণের দাবিতে তারা এ কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ
মিছিল বের করা হয়। পুলিশের নিষেধের কারণে বক্তারা মাইক ছাড়াই কর্মসূচিতে
বক্তব্য দেন। বক্তারা বলেন, গণতন্ত্রকে সুনিশ্চিত করতে চাইলে জাতীয় সংলাপের
বিকল্প নাই। সরকার দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ না করতে পারলে এবং
স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে না পারলে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে
নামার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য যা খুশি তাই করছে। বিরোধীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে, জেলে ভরছে। পুলিশ আর জনগণের মধ্যে বিরোধ অসাংবিধানিক শাসনের পরিণতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ওপর গুলি চালাতে পুলিশকে অসম্ভব নির্দেশ দিচ্ছে সরকার। এটা অগ্রহণযোগ্য ও অসাংবিধানিক নির্দেশ। এরকম নির্দেশ সংবিধানের লঙ্ঘন। অসাংবিধানিক আদেশ দিয়ে সংবিধান রক্ষা করা যায় না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন- ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন সংবিধান রক্ষা করার নির্বাচন। এখন সে কথা তিনি ভুলে গেছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে যে কোন সময় সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের সুযোগ আছে। ড. কামাল আরও বলেন, ১৬ কোটি মানুষই আজ সন্ত্রাস থেকে মুক্তি চায়। তারা কার্যকর গণতন্ত্র দেখতে চায়। তারা দেশে বোমাবাজি চায় না। তিনি বলেন, আজ দু’দলই সংবিধান ভঙ্গ করছে, সরকার দেখামাত্র গুলির কথা বলছে আর বিরোধী দল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দু’দলই অসাংবিধানিক কাজ করছে। এ দেশ কোন ব্যক্তি বা দলের নয়। জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা দু’দলের হাত থেকে এ দেশকে বাঁচাবো।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, দ্বিদলীয় রাজনীতি আজ দেশটাকে ধ্বংস করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আজ বাণিজ্য করা হচ্ছে। রাজনীতিতে আদর্শের কোন বালাই নেই। রাজাকার যেমন কোন দিন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না, আওয়ামী লীগও কোন দিন গণতন্ত্রী হতে পারে না। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। সরকার চোরের সরকার। চোরদের মুখে বড় বড় কথা মানায় না। তিনি বলেন, দেশে একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। অস্ত্র দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করছে। ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী এ সরকারের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। তিনি বলেন, সরকার আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছে, যা আইয়ুব-ইয়াহিয়ার আমলেও ছিল না। রক্ত দিয়ে কেনা এদেশ কোন ব্যক্তির একক ইচ্ছায় চলতে পারে না। গত ৮ মাস থেকে গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপ চলছে দাবি করে তিনি বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে মিডিয়া অফিস নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে মানুষ অনেক খবর জানতে পারছে না।
দেশে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সঙ্কট সমাধানের একমাত্র ক্ষমতাপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা। তাকে আমাদের কথাগুলো শুনতে হবে। অথচ তিনি সচিবালয়ে অবস্থান করছেন বলে পুলিশ মাইক ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। গত ১৪ দিনের অবরোধে প্রায় ৩৫ জন মানুষ মারা গেছে। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জিহাদ ঘোষণা করেছে। তারা বাহিনীর উর্দি পরে রাজনৈতিক কথাবার্তা বলছেন। মান্না বলেন, খালেদা জিয়াকে যেভাবে আটকিয়ে রাখা হয়েছে, বিএনপিকে জনসভা করতে দেয়া হচ্ছে না, তার সমালোচনা করি আমরা। কিন্তু আন্দোলনের নামে বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা জনগণ মেনে নিতে পারে না। তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ৮/১০টি ট্রাক দিয়ে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে, তাহলে তো প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য ৩০-৪০টি ট্রাক প্রয়োজন। নিরাপত্তার নামে এ কেমন ভণ্ডামি চলছে? তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘লাইসেন্স টু কিল’ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আপনারা সময় চেয়েছেন সাত দিনের মধ্যে দেশের অবস্থা স্বাভাবিক করে দেবেন। আমি সময় দেয়ার কেউ না। এরপরও যদি নাশকতা, আন্দোলন, অবরোধ ও মানুষ হত্যা বন্ধ করতে না পারেন তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। কারণ আপনাদের বৈধতা নাই। এ গোলমালের শুরু ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যে নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন।
সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে মান্না বলেন, দেশের রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ সব পক্ষকে নিয়ে একটি জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। এই সংলাপের মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধান বের করতে হবে। যাতে পাঁচ বছর পর পর দেশে এমন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আর না আসে।
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দেশ আজ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি বিরাজ করছে। বড় দু’টি দলের এ নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। তাদের একটাই লক্ষ্য যে কোন উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়া আর ক্ষমতায় টিকে থাকা। এ জন্য তারা দেশের সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করছে। তিনি আরও বলেন, অবরোধে এ পর্যন্ত ৩০-৩৫ জন মানুষ মারা গেছেন। সরকার এক ও দুই টাকার নোট বাতিল করে দিচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। গরিব মানুষের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলছে দেশ। এর অবসানে শিগগিরই সংলাপ প্রয়োজন।
ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা দেশের বাকি ৬৩ জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আন্দোলনের নামে একদল ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। অন্যদল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে ফেলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জাতীয় সংলাপ ও নির্বাচন জরুরি। তিনি আরও বলেন, জনগণের মতামত ছাড়া ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন হয়েছে। ভোটারবিহীন এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী দেশ চালাচ্ছেন। এভাবে বাংলাদেশ চলতে পারে না। এই লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। ইতিহাসে স্বৈরাচারের যেমন পতন হয়েছে, টিকতে পারেনি। তেমনি বর্তমান সরকারও টিকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সেক্রেটারি খালেকুজ্জামান বলেন, দেশে বর্তমানে স্বৈরশাসন চলছে। মানুষ দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে। জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সবার মতামতের ভিত্তিতে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। কর্মসূচিতে আরও অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু প্রমুখ।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য যা খুশি তাই করছে। বিরোধীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে, জেলে ভরছে। পুলিশ আর জনগণের মধ্যে বিরোধ অসাংবিধানিক শাসনের পরিণতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ওপর গুলি চালাতে পুলিশকে অসম্ভব নির্দেশ দিচ্ছে সরকার। এটা অগ্রহণযোগ্য ও অসাংবিধানিক নির্দেশ। এরকম নির্দেশ সংবিধানের লঙ্ঘন। অসাংবিধানিক আদেশ দিয়ে সংবিধান রক্ষা করা যায় না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন- ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন সংবিধান রক্ষা করার নির্বাচন। এখন সে কথা তিনি ভুলে গেছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে যে কোন সময় সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের সুযোগ আছে। ড. কামাল আরও বলেন, ১৬ কোটি মানুষই আজ সন্ত্রাস থেকে মুক্তি চায়। তারা কার্যকর গণতন্ত্র দেখতে চায়। তারা দেশে বোমাবাজি চায় না। তিনি বলেন, আজ দু’দলই সংবিধান ভঙ্গ করছে, সরকার দেখামাত্র গুলির কথা বলছে আর বিরোধী দল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দু’দলই অসাংবিধানিক কাজ করছে। এ দেশ কোন ব্যক্তি বা দলের নয়। জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা দু’দলের হাত থেকে এ দেশকে বাঁচাবো।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, দ্বিদলীয় রাজনীতি আজ দেশটাকে ধ্বংস করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আজ বাণিজ্য করা হচ্ছে। রাজনীতিতে আদর্শের কোন বালাই নেই। রাজাকার যেমন কোন দিন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না, আওয়ামী লীগও কোন দিন গণতন্ত্রী হতে পারে না। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। সরকার চোরের সরকার। চোরদের মুখে বড় বড় কথা মানায় না। তিনি বলেন, দেশে একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। অস্ত্র দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করছে। ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী এ সরকারের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। তিনি বলেন, সরকার আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছে, যা আইয়ুব-ইয়াহিয়ার আমলেও ছিল না। রক্ত দিয়ে কেনা এদেশ কোন ব্যক্তির একক ইচ্ছায় চলতে পারে না। গত ৮ মাস থেকে গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপ চলছে দাবি করে তিনি বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে মিডিয়া অফিস নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে মানুষ অনেক খবর জানতে পারছে না।
দেশে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সঙ্কট সমাধানের একমাত্র ক্ষমতাপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা। তাকে আমাদের কথাগুলো শুনতে হবে। অথচ তিনি সচিবালয়ে অবস্থান করছেন বলে পুলিশ মাইক ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। গত ১৪ দিনের অবরোধে প্রায় ৩৫ জন মানুষ মারা গেছে। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জিহাদ ঘোষণা করেছে। তারা বাহিনীর উর্দি পরে রাজনৈতিক কথাবার্তা বলছেন। মান্না বলেন, খালেদা জিয়াকে যেভাবে আটকিয়ে রাখা হয়েছে, বিএনপিকে জনসভা করতে দেয়া হচ্ছে না, তার সমালোচনা করি আমরা। কিন্তু আন্দোলনের নামে বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা জনগণ মেনে নিতে পারে না। তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ৮/১০টি ট্রাক দিয়ে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে, তাহলে তো প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য ৩০-৪০টি ট্রাক প্রয়োজন। নিরাপত্তার নামে এ কেমন ভণ্ডামি চলছে? তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘লাইসেন্স টু কিল’ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আপনারা সময় চেয়েছেন সাত দিনের মধ্যে দেশের অবস্থা স্বাভাবিক করে দেবেন। আমি সময় দেয়ার কেউ না। এরপরও যদি নাশকতা, আন্দোলন, অবরোধ ও মানুষ হত্যা বন্ধ করতে না পারেন তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। কারণ আপনাদের বৈধতা নাই। এ গোলমালের শুরু ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যে নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন।
সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে মান্না বলেন, দেশের রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ সব পক্ষকে নিয়ে একটি জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। এই সংলাপের মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধান বের করতে হবে। যাতে পাঁচ বছর পর পর দেশে এমন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আর না আসে।
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দেশ আজ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি বিরাজ করছে। বড় দু’টি দলের এ নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। তাদের একটাই লক্ষ্য যে কোন উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়া আর ক্ষমতায় টিকে থাকা। এ জন্য তারা দেশের সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করছে। তিনি আরও বলেন, অবরোধে এ পর্যন্ত ৩০-৩৫ জন মানুষ মারা গেছেন। সরকার এক ও দুই টাকার নোট বাতিল করে দিচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। গরিব মানুষের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলছে দেশ। এর অবসানে শিগগিরই সংলাপ প্রয়োজন।
ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা দেশের বাকি ৬৩ জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আন্দোলনের নামে একদল ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। অন্যদল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে ফেলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জাতীয় সংলাপ ও নির্বাচন জরুরি। তিনি আরও বলেন, জনগণের মতামত ছাড়া ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন হয়েছে। ভোটারবিহীন এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী দেশ চালাচ্ছেন। এভাবে বাংলাদেশ চলতে পারে না। এই লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। ইতিহাসে স্বৈরাচারের যেমন পতন হয়েছে, টিকতে পারেনি। তেমনি বর্তমান সরকারও টিকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সেক্রেটারি খালেকুজ্জামান বলেন, দেশে বর্তমানে স্বৈরশাসন চলছে। মানুষ দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে। জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সবার মতামতের ভিত্তিতে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। কর্মসূচিতে আরও অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু প্রমুখ।
No comments