সৌদি আরবকে ৫ ও ইরাককে ৩ টুকরো করার নীল নকশা আইএস'র by আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান
মার্কিন, ব্রিটিশ ও ইহুদীবাদী ইসরাইলিদের মুসলিম দেশসমূহ ভাঙ্গার বিস্তৃত পরিকল্পনা এখন বাস্তবে প্রকাশ পাচ্ছে। সউদী আরবকে পাঁচ ও ইরাককে তিন টুকরো করাসহ অন্যান্য মুসলিম দেশও টুকরো টুকরো করার চক্রান্তই বাস্তবায়ন করছে। হযরত নবী আলাইহিমুস সালামগণের পবিত্র মাযার শরীফ একের পর এক ধ্বংস করেও ক্ষ্যান্ত হচ্ছেনা তারা। ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সম্যক অবগত হয়ে প্রতিহত করতে সক্রিয় হতে হবে মুসলমানদের।
সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএল (ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এন্ড লিভান্ট ) বা সংক্ষেপে আইএস এর বর্তমান নেতা আবু বকর বাগদাদি ১৯৭১ সালে ইরাকের সামারা শহরে জন্মগ্রহণ করে। তার আগের নাম ছিল আওয়াদ ইব্রাহিম আলী আল-বাদরি আল-সামারাই। নিজেকে খলিফা ঘোষণার লক্ষ্যে পরবর্তীতে নিজেই আবু বকর নাম ধারণ করে। বাগদাদের ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজ এন্ড হিস্টোরি’র ওপর সে পিএইচডি করেছে বলে দাবি করেছে এই সন্ত্রাসী।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১২ সালে জর্দানে আইএসআইএলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার উদ্দেশ্যে ওই প্রশিক্ষণ দেয় মার্কিনীরা। তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল-এর নেতা ও স্বঘোষিত খলিফা আবুবকর বাগদাদির প্রকৃত নাম ‘শামউন ইয়লুত’ এবং সে ইহুদী বাবা-মায়ের সন্তান।
আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা এনএসএ'র (ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি) সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা দলিল-দস্তাবেজ থেকে এই তথ্য বেরিয়েছে।
মুসলমানদেরকে ও বিশেষ করে সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলমানদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করার জন্যই কথিত এই খলিফা আবুবকর নামটি বেছে নিয়েছে নিজের জন্য। চাঞ্চল্যকর এই খবরটি পরিবেশন করেছে লেবাননের দৈনিক আদদিয়ার।
এর আগে এনএসএ’র সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা দলিল-দস্তাবেজ থেকে এই তথ্য জানা গেছে যে, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ কথিত আবুবকর বাগদাদিকে এক বছর ধরে ধর্মীয় ও সামরিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। জিহাদ ও ইসলামের নামে ইসরাইলের নিরাপত্তা বিরোধী দেশগুলোতে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্যই ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-সিক্স, ইসরাইলের মোসাদ ও মার্কিন এনএসএ’র তত্ত্বাবধানে জন্ম দেয়া হয়েছে ইহুদীবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আইএসআইএল’ বা ‘আইএস’।
ইহুদীবাদী সন্ত্রাসী ‘আইএসআইএল’-এর কিছু বৈশিষ্ট্য:
১. ইহুদীবাদী এই সন্ত্রাসীদের বেশিরভাগই হচ্ছে বহিরাগত অর্থাৎ বিদেশী এবং তাদের খুব কম সংখ্যকই ইরাকের অধিবাসী। আর এদের প্রতি রয়েছে সৌদি ওয়াহাবি সমর্থন। ওয়াহাবিদের মতে তারা নিজেরা ও হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী ছাড়া হানাফি ও অন্য মাজহাবগুলোর সব ইমাম ও তাদের অনুসারীরা সবাই কাফির এবং এদের হত্যা করা বৈধ। অর্থাৎ সুন্নিদের বাকী তিন মাযহাব অনুসারীরা সবাই কাফির এবং এদের হত্যা করা বৈধ। 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীদের প্রত্যেককেই প্রতি মাসে ১০০০-১৫০০ ডলার বেতন দেয়া হয়। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত ও আরব আমিরাত যোগান দিয়ে যাচ্ছে।
২. এইসব সন্ত্রাসীরা যে সব অঞ্চল দখল করেছে সেখানেই নৃশংস ও জঘন্য হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কাউকে এরা রেহাই দেয়নি। শুধু তাই নয় এর আগে সিরিয়ায় দেখা গেছে, এইসব সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করে নিহতদের বুক ও পেট চিড়ে হৃদপিন্ড, কলিজা ইত্যাদি বের করে এনে চিবিয়ে খেয়েছে এবং এ সব দৃশ্যের সচিত্র ভিডিও ফুটেজও এরা প্রকাশ করছে ইন্টারনেটে।
'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসী সেনারা এরই মধ্যে তাদের দখলকৃত অঞ্চলে হাজার হাজার বন্দী সেনাকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেসবের ছবি ইন্টারনেটে পোস্ট করেছে। তাদের সেনারা নানা অঞ্চলে ইরাকি নারীদের সম্ভ্রমহরণ করেছে বলেও খবর এসেছে। সন্ত্রাসী ‘আইএসআইএল’-এর উৎসাহদাতা ওয়াহাবি মুফতিদের ফতোয়া অনুযায়ী বিজিত অঞ্চলের নারীদের স্ত্রীর মত ব্যবহার করা হালাল বা বৈধ। (নাউযুবিল্লাহ)
এরইমধ্যে মসুলে জোর করে নারীদের বিয়ের অথবা সম্ভ্রমহরণের ঘটনার পর চার জন নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর দিয়েছে জাতিসংঘ।
ইরাকে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী দল আইএসআইএল মসুলে শত শত সুন্নি আলেমকে শহীদ করেছে। দলটির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় এই শত শত সুন্নি আলেমকে তারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে আল ইরাকিয়া চ্যানেল খবর দিয়েছে।
অন্য এক ঘটনায় আইএসআইএল-এর সন্ত্রাসীরা মসুলের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমামকে হত্যার পর তার লাশকে টুকরো টুকরো করে। তাদের দৃষ্টিতে ওই ইমামের অপরাধ ছিল এটা যে তিনি তাদের দলে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। স্থানীয় আলেমরা এই নৃশংস ঘটনা ঘটার কথা জানিয়েছেন।
৩. 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীরা সম্মানিত দ্বীন ইসলামসহ নানা ধর্মের অনুসারীদের পবিত্র স্থানগুলোকে ধ্বংস করছে এবং লুটপাট ও নির্বিচারে গণহত্যায় লিপ্ত হচ্ছে। অথচ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম যুদ্ধ-কবলিত অঞ্চলে বেসামরিক পুরুষ, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের হত্যা তো দূরের কথা সেখানকার গাছপালা, ফসল, ক্ষেত-খামার, পশু, পানি ও পরিবেশের ক্ষতি করাকেও নিষিদ্ধ করেছে।
এমনকি সম্মানিত ইসলামী নীতি অনুযায়ী যুদ্ধ-বন্দী বা আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিকেও হত্যা করা নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি ছাড়াও জাহেলি যুগেও আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিকে হত্যা করা কাপুরোষোচিত কাজ বলে বিবেচিত হত।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত কাফির বা অবিশ্বাসী ব্যক্তির লাশকে বিকৃত করাও নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীরা যুদ্ধে নিহত মুসলিম সেনাদের লাশ বিকৃত করা, গাড়ী-চাপা দেয়া ও পদদলিত করা ছাড়াও নিহতদের মাথাকে ফুটবল বানিয়ে ক্রীড়া-কৌতুক করার মত পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠেছে।
পবিত্র কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, কেউ যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে তাহলে সে যেন গোটা মানব জাতিকে হত্যা করলো।
৪. 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীদের অনেকেই আরব দেশগুলোতে হত্যাকান্ড ও ডাকাতির মত সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডের মত কঠোর শাস্তি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিদেশে গিয়ে কথিত জিহাদের নামে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর শর্তে এদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
৫. ইহুদীবাদী এই সব তাকফিরি সন্ত্রাসী যারা নিজেদেরকে জিহাদি বা মুজাহিদ বলে দাবী করে তারা ফিলিস্তিন দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের দিকে ভুলেও একটি গুলি ছুঁড়েনি। একজন ইসরাইলি সেনাকেও হত্যা করেনি। অথচ এ সব সৌদি-কাতারি-তুর্কি-মার্কিন-ইঙ্গ-ফরাসি-জার্মান সমর্থনপুষ্ট তাকফিরি (সালাফী) ওয়াহাবি সন্ত্রাসীরা যেমনিভাবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইরাকে (ওয়াহাবি নয় এমন) লক্ষ লক্ষ নিরীহ মুসলমানকে হত্যা করছে, ঠিক সেভাবেই তারা সিরিয়ায়ও যারা ওয়াহাবি মতাবলম্বী নয় তাদের মধ্য থেকে গত তিন বছরে হাজার হাজার মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
৬. এইসব বিদ্রোহী ও তাকফিরি ওয়াহাবি (সালাফি) সন্ত্রাসী গ্রুপ ও সংগঠন সাম্রাজ্যবাদী বিধর্মী পাশ্চাত্য মদদে সৌদি-কাতারি-তুর্কি-শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক সমর্থিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত।
৭. এই ইহুদীবাদী সন্ত্রাসীরা সিরিয়ায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মাজার শরীফ ধ্বংস করেছে। ইরাকেও আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম দুই ইমাম হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম এবং ইমাম আলী নাকী আলাইহিস সালামের মাজার শরীফ ও গম্বুজ ধ্বংস করেছে।
এই সন্ত্রাসীরা পবিত্র মাজার শরীফ ধ্বংসের ধারাবাহিকতায় বিশিষ্ট নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামদের পবিত্র রওজা শরীফও বাদ দেয়নি। তারা ইরাকের মুসুল শহরে হযরত দানিয়েল আলাইহিস সালাম এবং সর্বশেষ হযরত ইউনুস আলাইহিস সালামের রওজা শরীফও ভেঙ্গে ফেলেছে। (নাউযুবিল্লাহ)
এই সন্ত্রাসীরা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও শুহাদায়ে কারবালা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালামের রওজা শরীফ ধ্বংসের প্রতিজ্ঞা করেছে। তাছাড়া পবিত্র ক্বাবা শরীফও ধ্বংসের ঘোষণা দিয়েছে এই ইহুদীবাদী সন্ত্রাসীরা । (নাউযুবিল্লাহ)
সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএল (ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এন্ড লিভান্ট ) বা সংক্ষেপে আইএস এর বর্তমান নেতা আবু বকর বাগদাদি ১৯৭১ সালে ইরাকের সামারা শহরে জন্মগ্রহণ করে। তার আগের নাম ছিল আওয়াদ ইব্রাহিম আলী আল-বাদরি আল-সামারাই। নিজেকে খলিফা ঘোষণার লক্ষ্যে পরবর্তীতে নিজেই আবু বকর নাম ধারণ করে। বাগদাদের ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজ এন্ড হিস্টোরি’র ওপর সে পিএইচডি করেছে বলে দাবি করেছে এই সন্ত্রাসী।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১২ সালে জর্দানে আইএসআইএলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার উদ্দেশ্যে ওই প্রশিক্ষণ দেয় মার্কিনীরা। তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল-এর নেতা ও স্বঘোষিত খলিফা আবুবকর বাগদাদির প্রকৃত নাম ‘শামউন ইয়লুত’ এবং সে ইহুদী বাবা-মায়ের সন্তান।
আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা এনএসএ'র (ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি) সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা দলিল-দস্তাবেজ থেকে এই তথ্য বেরিয়েছে।
মুসলমানদেরকে ও বিশেষ করে সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলমানদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করার জন্যই কথিত এই খলিফা আবুবকর নামটি বেছে নিয়েছে নিজের জন্য। চাঞ্চল্যকর এই খবরটি পরিবেশন করেছে লেবাননের দৈনিক আদদিয়ার।
এর আগে এনএসএ’র সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা দলিল-দস্তাবেজ থেকে এই তথ্য জানা গেছে যে, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ কথিত আবুবকর বাগদাদিকে এক বছর ধরে ধর্মীয় ও সামরিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। জিহাদ ও ইসলামের নামে ইসরাইলের নিরাপত্তা বিরোধী দেশগুলোতে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্যই ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-সিক্স, ইসরাইলের মোসাদ ও মার্কিন এনএসএ’র তত্ত্বাবধানে জন্ম দেয়া হয়েছে ইহুদীবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আইএসআইএল’ বা ‘আইএস’।
ইহুদীবাদী সন্ত্রাসী ‘আইএসআইএল’-এর কিছু বৈশিষ্ট্য:
১. ইহুদীবাদী এই সন্ত্রাসীদের বেশিরভাগই হচ্ছে বহিরাগত অর্থাৎ বিদেশী এবং তাদের খুব কম সংখ্যকই ইরাকের অধিবাসী। আর এদের প্রতি রয়েছে সৌদি ওয়াহাবি সমর্থন। ওয়াহাবিদের মতে তারা নিজেরা ও হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী ছাড়া হানাফি ও অন্য মাজহাবগুলোর সব ইমাম ও তাদের অনুসারীরা সবাই কাফির এবং এদের হত্যা করা বৈধ। অর্থাৎ সুন্নিদের বাকী তিন মাযহাব অনুসারীরা সবাই কাফির এবং এদের হত্যা করা বৈধ। 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীদের প্রত্যেককেই প্রতি মাসে ১০০০-১৫০০ ডলার বেতন দেয়া হয়। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত ও আরব আমিরাত যোগান দিয়ে যাচ্ছে।
২. এইসব সন্ত্রাসীরা যে সব অঞ্চল দখল করেছে সেখানেই নৃশংস ও জঘন্য হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কাউকে এরা রেহাই দেয়নি। শুধু তাই নয় এর আগে সিরিয়ায় দেখা গেছে, এইসব সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করে নিহতদের বুক ও পেট চিড়ে হৃদপিন্ড, কলিজা ইত্যাদি বের করে এনে চিবিয়ে খেয়েছে এবং এ সব দৃশ্যের সচিত্র ভিডিও ফুটেজও এরা প্রকাশ করছে ইন্টারনেটে।
'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসী সেনারা এরই মধ্যে তাদের দখলকৃত অঞ্চলে হাজার হাজার বন্দী সেনাকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেসবের ছবি ইন্টারনেটে পোস্ট করেছে। তাদের সেনারা নানা অঞ্চলে ইরাকি নারীদের সম্ভ্রমহরণ করেছে বলেও খবর এসেছে। সন্ত্রাসী ‘আইএসআইএল’-এর উৎসাহদাতা ওয়াহাবি মুফতিদের ফতোয়া অনুযায়ী বিজিত অঞ্চলের নারীদের স্ত্রীর মত ব্যবহার করা হালাল বা বৈধ। (নাউযুবিল্লাহ)
এরইমধ্যে মসুলে জোর করে নারীদের বিয়ের অথবা সম্ভ্রমহরণের ঘটনার পর চার জন নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর দিয়েছে জাতিসংঘ।
ইরাকে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী দল আইএসআইএল মসুলে শত শত সুন্নি আলেমকে শহীদ করেছে। দলটির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় এই শত শত সুন্নি আলেমকে তারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে আল ইরাকিয়া চ্যানেল খবর দিয়েছে।
অন্য এক ঘটনায় আইএসআইএল-এর সন্ত্রাসীরা মসুলের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমামকে হত্যার পর তার লাশকে টুকরো টুকরো করে। তাদের দৃষ্টিতে ওই ইমামের অপরাধ ছিল এটা যে তিনি তাদের দলে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। স্থানীয় আলেমরা এই নৃশংস ঘটনা ঘটার কথা জানিয়েছেন।
৩. 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীরা সম্মানিত দ্বীন ইসলামসহ নানা ধর্মের অনুসারীদের পবিত্র স্থানগুলোকে ধ্বংস করছে এবং লুটপাট ও নির্বিচারে গণহত্যায় লিপ্ত হচ্ছে। অথচ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম যুদ্ধ-কবলিত অঞ্চলে বেসামরিক পুরুষ, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের হত্যা তো দূরের কথা সেখানকার গাছপালা, ফসল, ক্ষেত-খামার, পশু, পানি ও পরিবেশের ক্ষতি করাকেও নিষিদ্ধ করেছে।
এমনকি সম্মানিত ইসলামী নীতি অনুযায়ী যুদ্ধ-বন্দী বা আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিকেও হত্যা করা নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি ছাড়াও জাহেলি যুগেও আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিকে হত্যা করা কাপুরোষোচিত কাজ বলে বিবেচিত হত।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত কাফির বা অবিশ্বাসী ব্যক্তির লাশকে বিকৃত করাও নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীরা যুদ্ধে নিহত মুসলিম সেনাদের লাশ বিকৃত করা, গাড়ী-চাপা দেয়া ও পদদলিত করা ছাড়াও নিহতদের মাথাকে ফুটবল বানিয়ে ক্রীড়া-কৌতুক করার মত পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠেছে।
পবিত্র কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, কেউ যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে তাহলে সে যেন গোটা মানব জাতিকে হত্যা করলো।
৪. 'আইএসআইএল'-এর সন্ত্রাসীদের অনেকেই আরব দেশগুলোতে হত্যাকান্ড ও ডাকাতির মত সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডের মত কঠোর শাস্তি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিদেশে গিয়ে কথিত জিহাদের নামে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর শর্তে এদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
৫. ইহুদীবাদী এই সব তাকফিরি সন্ত্রাসী যারা নিজেদেরকে জিহাদি বা মুজাহিদ বলে দাবী করে তারা ফিলিস্তিন দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের দিকে ভুলেও একটি গুলি ছুঁড়েনি। একজন ইসরাইলি সেনাকেও হত্যা করেনি। অথচ এ সব সৌদি-কাতারি-তুর্কি-মার্কিন-ইঙ্গ-ফরাসি-জার্মান সমর্থনপুষ্ট তাকফিরি (সালাফী) ওয়াহাবি সন্ত্রাসীরা যেমনিভাবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইরাকে (ওয়াহাবি নয় এমন) লক্ষ লক্ষ নিরীহ মুসলমানকে হত্যা করছে, ঠিক সেভাবেই তারা সিরিয়ায়ও যারা ওয়াহাবি মতাবলম্বী নয় তাদের মধ্য থেকে গত তিন বছরে হাজার হাজার মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
৬. এইসব বিদ্রোহী ও তাকফিরি ওয়াহাবি (সালাফি) সন্ত্রাসী গ্রুপ ও সংগঠন সাম্রাজ্যবাদী বিধর্মী পাশ্চাত্য মদদে সৌদি-কাতারি-তুর্কি-শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক সমর্থিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত।
৭. এই ইহুদীবাদী সন্ত্রাসীরা সিরিয়ায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মাজার শরীফ ধ্বংস করেছে। ইরাকেও আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম দুই ইমাম হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম এবং ইমাম আলী নাকী আলাইহিস সালামের মাজার শরীফ ও গম্বুজ ধ্বংস করেছে।
এই সন্ত্রাসীরা পবিত্র মাজার শরীফ ধ্বংসের ধারাবাহিকতায় বিশিষ্ট নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামদের পবিত্র রওজা শরীফও বাদ দেয়নি। তারা ইরাকের মুসুল শহরে হযরত দানিয়েল আলাইহিস সালাম এবং সর্বশেষ হযরত ইউনুস আলাইহিস সালামের রওজা শরীফও ভেঙ্গে ফেলেছে। (নাউযুবিল্লাহ)
এই সন্ত্রাসীরা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও শুহাদায়ে কারবালা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালামের রওজা শরীফ ধ্বংসের প্রতিজ্ঞা করেছে। তাছাড়া পবিত্র ক্বাবা শরীফও ধ্বংসের ঘোষণা দিয়েছে এই ইহুদীবাদী সন্ত্রাসীরা । (নাউযুবিল্লাহ)
No comments