স্ত্রীর নগ্ন ছবি প্রকাশের অভিযোগে ইমন কারাগারে
স্ত্রীর নগ্ন ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করার
হুমকি দিয়েছেন সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। শুধু ফেসবুকে আপলোড বা
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিই দেননি, পাঠিয়েছেন দুই বন্ধুর কাছেও। টাকা
চেয়েছিলেন ৫ কোটি। তা না হলে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে তা আপলোড করে দেবেন বলে
হুমকি দিয়েছেন। ইমনের স্ত্রী জিনাত কবির তিথি তার দায়ের করা এজাহারে
অভিযোগ করেছেন, ইমন কৌশলে তার নগ্ন ছবি তুলেছিল। সেই ছবি সে তার দুই বন্ধু
তৌফিকুল আলম চৌধুরী ও দেবাশীষ বিশ্বাসকে ই-মেইল করে পাঠিয়েছেন। জানতে চাইলে
চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন,
ইমন আমাকে তার বান্ধবী কাম স্ত্রী জিনাতের কিছু নগ্ন ছবি পাঠিয়েছিল। আমি
তাকে বলেছিলাম এগুলো আমার কাছে পাঠাচ্ছো কেন? আমি এগুলো দিয়ে কি করবো?
দেবাশীষ বলেন, পরে আমি আমার ফেসবুক থেকে ইমনকে ব্লক করে দিই। তিনি বলেন,
আমার সঙ্গে ইমন বা তার স্ত্রী জিনাতের কারও সঙ্গেই কোন শত্রুতা নেই। তবু
আমাকে কেন জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে আমি বুঝতে পারছি না। অপরদিকে
গ্রেপ্তারের পর রমনা থানায় ইমন সাংবাদিকদের বলেন, আমার কি ওই বয়স আছে যে,
আমি নগ্ন ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করবো? এটা ফালতু কথা। পুলিশ আমার বাসায় গিয়ে
বলে থানায় যেতে হবে। আমি একটি টি-শার্ট ও ট্রাউজার পরেই চলে আসি। এ সময়
তিনি কথিত স্ত্রী তিথির বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবেন বলে হুঁশিয়ারি
উচ্চারণ করেন। এদিকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তারের পর গতকাল শওকত আলী ইমনকে
আদালতে সোপর্দ করে রমনা থানা পুলিশ। ইমনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আমিনুল
হকের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় ইমনের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। আদালত
শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে ইমনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। গত
সোমবার ইমনের স্ত্রী জিনাত কবির রাজধানীর রমনা থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের
৫৭ ধারায় শওকত আলী ইমনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। বুধবার গভীর রাতে
ইমনকে গ্রেপ্তার করে রমনা থানা পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার
এসআই এ কে আজাদ জানান, মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। মামলার
প্রয়োজনে বাদি যাদের কাছে ই-মেইল পাঠানোর কথা বলেছেন তাদেরও থানায় ডেকে
জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
উল্লেখ্য,
প্রথম স্ত্রী বিজরী বরকতউল্লাহর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর জিনাত কবির
ওরফে তিথিকে জড়িয়ে স্ক্যান্ডাল ছড়ান শওকত আলী ইমন। এর আগে ২০১২ সালের ৬ই
ডিসেম্বর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে জিনাত কবিরকে
বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। এ ঘটনায় আদালতে মামলাও
চলছে। বছর দুয়েক আগে জিনাত কবির অভিযোগ করেছিলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত
এক বছর ধরে ইমন তাকে ইস্কাটনে নিজের ফ্ল্যাটে রেখে তার সঙ্গে
স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করে আসছেন। কিন্ত বিভিন্ন বাহানা করে শেষ পর্যন্ত
তাকে বিয়ে না করায় তিনি আইনের আশ্রয় নেন। পরে ২০১২ সালে ৬ই ডিসেম্বর রমনা
থানায় ১০ লাখ টাকার দেনমোহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ইমন-জিনাত।
No comments