গাজায় নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে ইসরাইল
গাজা হামলায় আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনের মেডিকেল ও মানবাধিকার কর্মীদের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলুর বরাতে বৃহস্পতিবার এ খবর প্রকাশ করেছে ডেইলি সাবাহ। ইসরাইলের হামলায় আক্রান্ত ফিলিস্তিনিদের শরীর পুড়ে যাচ্ছে। আক্রান্তদের শরীরের বিভিন্ন অংশ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে দিতে হচ্ছে। বুধবার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কোদরা বলেন, চলমান গাজা আক্রমণে ইসরাইলি অস্ত্রের আঘাতে আহতদের শরীর পোড়া-কয়লা হয়ে যাচ্ছে। আক্রান্তদের ওপর প্রাথমিক পরীক্ষা চালিয়ে অস্ত্রের প্রকৃতি অত্যন্ত রোমহর্ষক বলে জানা গেছে। তিনি বলন, ইসরাইল এর আগে গাজা আক্রমণে দুবার আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। সেই একই অস্ত্র এখন ব্যবহার করছে। আল কোদরা ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইলের নৃশংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। এদিকে মানবাধিকার সংস্থার প্রত্যক্ষদর্শী কর্মীরা অনলাইনে আক্রান্তদের কিছু ছবি প্রকাশ করেছেন। দুর্বলচিত্তদের এসব ছবি দেখতে নিষেধ করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি ডাক্তাররা বলছেন, রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ায় অনেকেই তাদের অঙ্গ হারাতে বসেছেন। এই হামলায় আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন, গাজা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ পর্যায়ে গেছে। মধ্যপ্রাচ্য কঠিন সময় পার করছে এখন।
বুধবার রাতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জমিন নেতানিয়াহু, ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। মুন বলেন, গাজায় নতুন করে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত। সাম্প্রতিককালে এ অঞ্চলটি চরম দুঃসময় মোকাবিলা করছে। তিনি আরও বলেন, গাজা পরিস্থিতি যে কোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। এ সময় ইসরাইলের রকেট হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের হামলা অগ্রহণযোগ্য তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে, গাজা এলাকায় বৃহস্পতিবার ইসরাইলি বিমান হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন নারী ও চারটি শিশু। গাজায় ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের তৃতীয় দিনে এসব লোক নিহত হল। হাসপাতাল সূত্র এ কথা জানায়। গাজা উপত্যকা থেকে হামাস জঙ্গিদের রকেট হামলা বন্ধে মঙ্গলবার শুরু করা অপারেশন প্রটেকটিভ এজ নামের ইসরাইলি সামরিক অভিযানে এ নিয়ে নিহত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ জনে দাঁড়াল। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা রাতে হামাসের তিন শতাধিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এদিকে এ অভিযান শুরুর পর থেকে ইসলামি জঙ্গি গ্র“পের সাড়ে ৭০০ অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
No comments