তিস্তায় পানি প্রত্যাহার
চৈত্রের শুরুতেই তিস্তা নদী থেকে ভারতের আরও পানি প্রত্যাহারের সংবাদ। ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির প্রতিশ্রুতি তো পালিত হয়ইনি, এখন সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। শুক্রবারের প্রথম আলো জানিয়েছে, বাংলাদেশের লালমনিরহাটের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ব্যাপক হারে কমেছে। এই প্রাপ্তির পরিমাণ ১৯৭৩-১৯৮৫ সালের তুলনায় মাত্র ১০ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার আরও বেশি কৃষিজমি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ নদী তিস্তার পানি দিয়ে সেচের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সেচমন্ত্রী টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ‘নিজেদের চাহিদা না মিটিয়ে বাংলাদেশকে পানি দেব কীভাবে?’ সেচমন্ত্রী সম্ভবত আন্তর্জাতিক আইন এবং অভিন্ন নদীবিষয়ক জাতিসংঘের নির্দেশনা ভুলে গেছেন। যৌথ নদীর ওপর কোনো দেশই একক কর্তৃত্ব দাবি করতে পারে না। তাঁর এ অবস্থানের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান অভিন্ন হলে সেটি বাংলাদেশের বড় দুশ্চিন্তার কারণ বৈকি।
বাংলাদেশ সরকার বারবার ভারতকে ‘ন্যায়সংগত’ পরিমাণ পানি ছাড়ার জন্য অনুরোধ করে আসছে। তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি সম্পাদনের জন্য তাগাদারও শেষ নেই। কিন্তু ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণে জরুরি চুক্তি সম্পাদন থেকে বিরত রয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমারে বিমসটেক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ‘তিস্তা চুক্তি কঠিন বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। কূটনৈতিক ভাষায় করা তাঁর মন্তব্যের সারমর্ম হলো এখন তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। ভারতের নীতিনির্ধারকেরা এত দিন বলতেন, চুক্তি না হলেও বাংলাদেশ পানি তো পাচ্ছে। এখন কী বলবেন তাঁরা? তিস্তা নদীনির্ভর সেচ প্রকল্পের ওপর উত্তরবঙ্গের তিস্তা অববাহিকার ৬৩ শতাংশ আবাদি জমি নির্ভরশীল। এ বছর কৃষকেরা বোরো রোপণ করে যেখানে পানির জন্য হাহাকার করছেন, সেখানে ভারতে এই পানি প্রত্যাহার নির্দয় আচরণ ছাড়া কিছু নয়।
বাংলাদেশ সরকার বারবার ভারতকে ‘ন্যায়সংগত’ পরিমাণ পানি ছাড়ার জন্য অনুরোধ করে আসছে। তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি সম্পাদনের জন্য তাগাদারও শেষ নেই। কিন্তু ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণে জরুরি চুক্তি সম্পাদন থেকে বিরত রয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমারে বিমসটেক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ‘তিস্তা চুক্তি কঠিন বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। কূটনৈতিক ভাষায় করা তাঁর মন্তব্যের সারমর্ম হলো এখন তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। ভারতের নীতিনির্ধারকেরা এত দিন বলতেন, চুক্তি না হলেও বাংলাদেশ পানি তো পাচ্ছে। এখন কী বলবেন তাঁরা? তিস্তা নদীনির্ভর সেচ প্রকল্পের ওপর উত্তরবঙ্গের তিস্তা অববাহিকার ৬৩ শতাংশ আবাদি জমি নির্ভরশীল। এ বছর কৃষকেরা বোরো রোপণ করে যেখানে পানির জন্য হাহাকার করছেন, সেখানে ভারতে এই পানি প্রত্যাহার নির্দয় আচরণ ছাড়া কিছু নয়।
আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহবিষয়ক জাতিসংঘের কনভেনশনে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য বণ্টনের কথা বলা হলেও ভারত তা মান্য করছে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে নদীবিশেষজ্ঞ ও আইনবিশারদদের নিয়ে সমীক্ষা করে ভারতের কাছে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে হবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র দপ্তর কি এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রস্তুত? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সর্বতোভাবেই ভারতের প্রতি বন্ধুত্বমূলক আচরণ করেছে এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে। সন্ত্রাস দমন থেকে শুরু করে ট্রানজিটের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে বাংলাদেশ যেখানে উদার মনোভাব দেখাচ্ছে, সেখানে ভারতের দিক থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত নয়। জাতীয় স্বার্থে, উত্তরবঙ্গের মরুকরণ ঠেকানোর স্বার্থে এবং কৃষি অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার খাতিরে বাংলাদেশ সরকারকে কূটনৈতিক পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে।
No comments