জরিপকে পাত্তা দেবেন না: সোনিয়া
খাদ্যের অধিকার সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির পর ভারতের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এবার দেশের সব গরিব মানুষের জন্য বাসস্থান ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিল। আসন্ন লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে দলের নির্বাচনী ইশতেহারে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও সহসভাপতি রাহুল গান্ধী এই ইশতেহার প্রকাশ করেন। নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার অনুষ্ঠানে সোনিয়া বলেন, ‘জনমত জরিপে অনেক কিছুই বলা হচ্ছে।
এসব জরিপকে পাত্তা দেবেন না। কারণ, ২০০৯ সালের জরিপেও কংগ্রেসের পক্ষে ভালো কিছু দেখানো হয়নি। কিন্তু সরকার গড়েছিল কংগ্রেসই।’ কংগ্রেসের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের ‘ট্যাগ লাইন’ হলো ‘আপনার কণ্ঠ, আমাদের প্রতিশ্রুতি’। এই ট্যাগ লাইন বাছার কারণ হলো রাহুল গান্ধী গত কয়েক মাসে সমাজের বিভিন্ন স্তরের অন্তত ১০ হাজার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছেন। অনুষ্ঠানে সোনিয়া সেই কথা জানিয়ে বলেন, গরিব মানুষের জন্য বাসস্থানের বন্দোবস্ত করাটা দল জরুরি মনে করছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেসের সভানেত্রী বলেন, কোনো কোনো দলের কাছে নির্বাচনী ইশতেহার হলো ভোট পাওয়ার দাওয়াই। কংগ্রেস ইশতেহারকে সেই চোখে দেখে না। অনুষ্ঠানে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে এক হাত নিতে ছাড়েননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, ‘আজকাল চারদিকে খুব গুজরাট মডেলের কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু মডেল আছে একটাই। কংগ্রেসের মডেল। যে মডেলের সার কথা হলো সাম্যের সঙ্গে প্রবৃদ্ধি।’ মনমোহন বলেন, বিরোধীরা বলে কংগ্রেসের নীতি নাকি হোঁচট খেয়ে পড়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের রেকর্ড তা বলছে না।
এনডিএ সরকারের আমলে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, আর ইউপিএর দুই মেয়াদের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৮ দশমিক ৪ ও ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। মনমোহনের কথার রেশ ধরে রাহুল গান্ধী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেন, ‘কংগ্রেস আবার সরকার গঠন করবে। ২০০৪ সালে “ইন্ডিয়া সাইনিং”য়ের মতো এবার বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণার “বেলুন” ফুটো হয়ে যাবে।’রাহুল বলেন, ‘মোদি ক্ষমতায় এলে দেশের ক্ষতি হবে। তিনি সবাইকে নিয়ে চলার কথা ভাবতে পারেন না। একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনকে উসকে দেওয়া, বিভেদ সৃষ্টি করা তাঁর নীতি।’ রাহুল দাবি করেন, পাঁচ বছর আগে দলের নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার ৯০ শতাংশ পূরণ করা হয়েছে। জনমত জরিপকে উড়িয়ে দিয়ে রাহুল বলেন, নির্বাচনের ফলাফল সবাইকে ‘অবাক’ করে দেবে। সোনিয়া বলেন, ‘এবারের ভোটে ঠিক হবে, দেশের মানুষ অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে পারবে কি না। আমরা সেই ভারতের জন্য লড়ব, যেখানে বৈষম্য থাকবে না, যেখানে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র অটুট থাকবে।’
No comments