প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে চ্যালেঞ্জে দুই দল
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) আজ বুধবার আবার বৈঠকে বসছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার কংগ্রেস জানিয়ে দিল, এবার তামিলনাড়ুতে কোনো জোট নয়, তারা একাই লড়বে। কংগ্রেসের এই ঘোষণার ঠিক আগে দ্রাবিড় মুনাত্রা কাজাঘাম (ডিএমকে) নেতা এম করুণানিধি ঘোষণা দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাহুল গান্ধী বা নরেন্দ্র মোদি—কাউকেই তাঁরা সমর্থন করবেন না। করুণানিধি গত সোমবার রাতে দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন। তালিকায় তাঁর মেয়ে কানিমোলি, স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে কারাভোগকারী সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এ রাজা এবং দয়ানিধি মারান স্থান পেয়েছেন। ডিএমকের সঙ্গে জোট না হওয়ায় তামিলনাড়ুতে কংগ্রেসের অবস্থান আরও খারাপ হলো। সিইসির বৈঠকে এসব বিষয় মাথায় রেখেই প্রার্থী ঠিক করতে হবে। রেল কেলেঙ্কারি, মুম্বাইয়ের আদর্শ হাউজিং কেলেঙ্কারি ও কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারির তিন নায়ক যথাক্রমে পবন বনসল, অশোক চৌহান ও সুরেশ কালমাডির স্ত্রীদের টিকিট দেওয়া উচিত হবে কি না, সেই বিতর্কের মীমাংসাও এই বৈঠকেই করতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার রেল কেলেঙ্কারির মামলায় বনসলের ভাগনে বিজয় সিংলার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই মামলায় বনসলকে সাক্ষ্য দিতে ডাকা হতে পারে। সিবিআই বনসলকে অভিযুক্ত না করায় তাঁকে টিকিট দিতে কোনো অসুবিধা না থাকলেও কংগ্রেস নেতৃত্ব এই তিনজনের ক্ষেত্রে দ্বিধাবিভক্ত।
এদিকে কাল বৃহস্পতিবার বিজেপির তৃতীয় তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা। নরেন্দ্র মোদি ও রাজনাথ সিংয়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ঠিক করতে বিজেপিকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ওই দিনই নিতে হবে। সিদ্ধান্তটি কঠিন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মেজো ছেলে অনিল শাস্ত্রীকে কংগ্রেস উত্তর প্রদেশ থেকে টিকিট দিতে পারে বলে তাঁর মেজো ছেলে সুনীল শাস্ত্রী বিজেপির টিকিট চাইছেন। টিকিটের দাবি জানিয়েছেন লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মেয়ের ছেলে সিদ্ধার্থনাথ সিংও। দিল্লি থেকে হঠাৎই টিকিট চাইছেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও। তিনি তাঁর জনতা দলকে বিজেপির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন। আন্না হাজারের সঙ্গী সাবেক আইপিএস কর্মকর্তা কিরণ বেদী প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন জানিয়ে এখন বিজেপির টিকিটে দিল্লি থেকে দাঁড়াতে চাইছেন। দুদিনের মধ্যে এসবের মীমাংসা করে বিজেপিকেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এরই মধ্যে বিজেপি-শিবসেনা সম্পর্কে একটু টাল খায় মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) নেতা রাজ ঠাকরের জন্য। ঠাকরে রাজ্যে শিবসেনার বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে মোদিকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন জানিয়েছেন। শিবসেনা এতে ক্ষিপ্ত। বিজেপি-এমএনএস নতুন জোটের সম্ভাবনা নিয়ে দলের মধ্যে কানাকানি শুরু হয়। সামাল দিতে রাজীব প্রতাপ রুডিকে মুম্বাই পাঠানো হয়। শিবসেনা বলেছে, বিজেপির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অটুটই থাকবে। তবে মুখে বললেও সম্পর্কে একটু সন্দেহ ঢুকেই গেছে। এই রাজনৈতিক আবহে গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছান তৃণমূল কংগ্রেসনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বুধবার দুপুরে রামলীলা ময়দানে প্রবীণ গান্ধীবাদী আন্না হাজারের সঙ্গে তাঁর যৌথ জনসভা। তৃণমূলের প্রার্থীদের আন্না হাজারে সরাসরি সমর্থন করছেন।
No comments